আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিধি-লিপি

বিধির বিধান লঙ্ঘিতে পারে কেউ নাই এমন জন, জগতে তাহার প্রমাণ রয়েছে রাশি,রাশি,অগণন। স্বপ্ন দেখিয়া ফেরাউন রাজা উঠিল ত্রাসেতে জাগি, ব্যাখ্যা তাহার চাহিল যত রাজ জ্যোতিষীরে ডাকি। স্বপ্নের ফল গনিয়া চলেছে,উৎকণ্ঠিত তারা, গণনার শেষে ভয়ে কম্পিত, হয়ে গেল ভাষা হারা। বাদশা শুধান নির্ভয়ে বল কি আছে আমার ঘটে? ভয় পেও না তোমাদের ক্ষতি করব না কোনমতে। আশ্বাস পেয়ে জ্যোতিষীরা কয় শুনুন জনাব তবে, বনি ইসরাইল বংশেতে এক ছেলের জন্ম হবে।

তার হাতে হবে ধ্বংস আপনার জীবন-সিংহাসন, স্বপ্নের কথা ওহে মহারাজ এমনই কঠিন। উৎকণ্ঠিত বাদশা তখন ডাকিলেন পারিষদে, স্বপ্ন এবং জ্যোতিষীর বানি কহিলেন বিশদে। অনেক ভাবিয়া পারিষদগণে ঠিক করিলেন এই, বনী ইসরাইল বংশে কোন ছেলে জন্মাবে যেই, সেই ছেলেকে সঙ্গে সঙ্গে কবর দেয়া হবে। হাজার হাজার কর্মী এ কাজে সদা নিয়োজিত রবে। ঘরে ঘরে যত প্রসূতি মায়ের ভয়ে তটস্থ হিয়া, এই বুঝি যায় জল্লাদে এসে প্রাণের শিশুরে নিয়া।

এমনি করিয়া অগণিত শিশু অকালে হারায় প্রাণ, অসহায় পিতা-মাতার বুকেতে হানিয়া বিশের বান। বিভীষিকাময় হেন রাতে এক ছেলের জন্ম হল, ধরণী উত্তাল-ঝঞ্ঝা-ক্ষুব্ধ, রাত্রি নিকষ কালো। সেই সে রাত্রে গুপ্তচরেরা বাহিরিতে নাহি পারে, খুব চুপি চুপি আলোচনা চলে দুঃখিনী মায়ের ঘরে। বাবা ছিল তার কাঠ-মিস্ত্রী , মা তারে ডাকিয়া কয়, মন বলে মোর এ ছেলে আমার হারা হইবার নয়। বুকের মানিকে তাড়াতাড়ি ভরে লোহার সিন্দুকে, এক্ষণই যাও,ভাসাইয়া দাও নীল নদের বুকে।

থেমে গেল ঝড়, পৃথিবী-উত্তাল,শান্ত হইয়া আসে, আস্তে আস্তে আলোকের রেখা দেখা দিল চার পাশে। ফেরাউন নারী, আছিয়া জননী যেথায় গোসল করে, বাধানো সে ঘাট, কাঁটাবন তীরে ছিল তারি এক ধারে। গোসল সেরে উঠতে দেখেন কাঁটাবনের সাথে, আটকে আছে বাক্স একটা, কি জানি কি আছে তাতে! সাথীদের বলে দেখি কি আছে, বাক্সটা এনে খোল, বাক্স খুলিয়া ভিজিয়া গেল তাহার চোখের কোল। মমতা-সিক্ত মাতৃ-হৃদয় ব্যকুল হইল দেখি, হাত-পা নাড়িয়া খেলিসে সেথায় নবজাত এক একি! কোলে নিয়ে তারে,কহিল স্বামীরে, অনুমতি দাও মোরে, এই শিশুকে রাখব আমি আপন সন্তান করে। বাদশা প্রথমে রাজী হল না, কিন্তু খোদার লিখন, শিশুকে দেখিয়া কোমল হইল তাহার কঠিন মন।

অনুমতি পান আছিয়া তখন,সেই ছেলেকে পোষার, কাঁটাবনে পাওয়া বলে নাম হল তার মুসা। আরব-বিশ্বে ধাত্রী-মায়ের ছিল প্রচলন, রাজপ্রাসাদে হাজার জনের ঘটল আগমন। কিন্তু এ কি! শিশু দেখি কারো দুধ না খায়, খবর পাইয়া ধাত্রীর বেশে আসিল তাহার মায়। মুসা যখন ঠাঁই পেল তার নিজের মায়র কোলে, খুশি মনে মায়ের বুকের দুধ সে মুখে তোলে। আপন মায়ের কোলে মুসা মজার ব্যাপার কেমন, বাদশা পোষেন নিজের শত্রু দিয়ে ভরন-পোষণ।

শেষের টুকু সবার জানা নতুন কিছু নয়, মুসা নবীর হাতে ধ্বংস ফেরাউনের হয়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।