আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৪ বছর পুর্তিতে ধীবরের ৩০০তম পোস্ট। ব্লগ ও ব্লগারদের মুল্যায়ন ও বিবিধ। উৎসর্গ সামুর সব ব্লগারদের ( শেষ পর্ব)

সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল (প্রথম পর্বে পাঠকদের শুভেচ্ছা, শুভ কামনা আর ভালোবাসায় আমি আপ্লুত। কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষাটুকুও আমার জানা নেই। শুধু বললো, একজন লেখক বা ব্লগারের সবচেয়ে বড় শক্তি আর অনুপ্রেরণাই হলেন, তার পাঠকরা। প্রবাসে সবচেয়ে ভয়ংকর জিনিসটির নাম হলো ফ্লু। অনাহুতের মত আসবে, ৩-৭ দিন থাকবে, এর পর আবার নিজেই চলে যাবে।

তবে যাবার আগে শরীরের সব কল কব্জা আধা ভেঙ্গে রেখে যাবে। এ কারণেই এক পর্বে আমার এই পোস্টটি সম্পন্ন করতে পারিনি। ) আমার অর্ধ সমাপ্ত পোস্টের প্রথম পর্ব পড়ে হয়তো মনে হতে পারে যে সামুর পিন্ডি চটকানোর জন্যই এই উপলক্ষ্যটি আমি বেছে নিয়েছি। ব্যাপারটা সে রকম কিছু নয়। আপনাদের সবার মতই সামু আমার অতি প্রিয় এবং অতি আপনজন।

আর আপন বলেই সমালোচনার কিছুটা তীর ছুড়েছি। আর আমি কৌতুহল বশত অন্যান্য ব্লগগুলিও ঘুড়ে দেখেছি। সামুর মত পরিবেশ কোথাও নেই। কোন কোনটি দলিয়ভাবে এতটাই বায়াসড যে, ওখানে গেলে মনে হবে কোন দলের অন্তর্জাল ভিত্তিক অফিসে এসে পড়েছি। কোন কোনটা এতটাই "উচু মার্গের" যে সাধারণ মানুষের বোধবুদ্ধির বাইরে।

কোন কোনটা আবার শান্তিনিকেতনের অন্তর্জাল্ ভিত্তিক মুখপাত্র। কিন্ত বাংলাদেশ বলতে যা বুঝায়, সামু ঠিক তেমনি। লুল থেকে উচচমার্গের, সবার জন্য কিছু না কিছু থাকেই। এজন্যই নির্দ্বিধায় বলা যায় এই সামুই হচ্ছে আপনার আমার সবার জন্য উন্মুক্ত সর্বশ্রেষ্ঠ একটি প্লাটফর্ম। তবে সামুর উপরেও ফ্যাসিবাদিদের কু নজর পড়েছে।

শুনেছি গোয়েন্দা দফতর থেকে সামুর উপর নজর রাখা হচ্ছে। এমন কি সামু কর্তৃপক্ষকে পরোক্ষভাবে চাপও দেয়া হয়েছে। সামুতে ছিলেন এমন কিছু ব্লগার যারা অন্য একটি ব্লগের বর্তমান কর্ণধার, তারাও সামুর উপর প্রতিশোধের নেশায় অনেক কিছু করে যাচ্ছেন। সিন্ডিকেট করে সামুর পরিবেশ অস্থির করার ভিলেজ পলিটিক্সের উৎসই সেই ব্লগ এবং ব্লগ মালিক(রা)। যেহেতু সামু আমার, আপনার, সবার জন্য আপন দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে, তাই যে কোন অবস্থাতেই সামুর বিরুদ্ধে করা ষড়যন্ত্র কে সফল হতে দেয়া যাবে না।

এজন্য আহবান করছি, সবাই সজাগ থাকুন, সতর্ক থাকুন, এবং অশুভ সিন্ডিকেটের সাথে কোন রকম সহযোগিতা করবেন না। বরং যারা করবে, ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের বয়কট করুন। স্বমহিমায় উজ্জল সামুর কিছু ব্লগার আমি নিজে খুবই সামান্য। মানুষ ও লেখক হিসাবে। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান বুদ্ধিতে যাদেরকে আমার উজ্জ্বল মনে হয়েছে, তাদের নিয়ে এই অংশটুকু।

যেহেতু ব্লগে সময় খুব বেশি দেয়া হয় না, তাই প্রতিটি মেধাবি ব্লগারকে চেনা আমার পক্ষ্যে সম্ভব হয়নি। একারণে হয়তো কারো কারো নাম বাদ পড়ে যেতে পারে। এটা আমার ব্যার্থতা ধরে নিয়ে ক্ষমা সুন্দর দৃস্টিতে দেখার একান্ত অনুরোধ রইলো। জুলভার্ণঃ বাস্তব এবং অন্তর্জাল দুই যায়গাতেই আপন মহিমায় উজ্জ্বল এই অগ্রজ। ব্লগে প্রচন্ড জনপ্রিয়, সুলেখক এই অগ্রজ মানুষটির প্রতি্টা লেখাই স্বতন্ত্র মৌলকত্বের দাবিদার।

তাছাড়া দেশ, দেশের মানুষ আর সমাজের প্রতি তীব্র দায়িত্ববোধ থেকেই, বাস্তবের প্রচন্ড ব্যাস্ততার মাঝেও তিনি তার কলমকে চালু রেখেছেন। অথচ কিশোর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনকারি এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাইটিকে , কুচক্রি সিন্ডিকেটের কিছু সামুর প্রতিনিধি ব্লগার, স্বাধীনতা বিরোধিতার ট্যাগ করে অশ্লিল বাক্যবাণে অভিমানে দূরে সরে যেতে বাধ্য করেছে। আমাদের এই ভাইটি এখন চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান করছেন। আসুন আমরা সামু কর্তৃপক্ষ্যের কাছে, আহবান জানাই যেন জুলভার্ণকে আবারো ফিরিয়ে আনা হয়, এবং ওই সব কুচক্রি ব্লগারদের বিরুদ্ধে নীতিমালা ভঙ্গের দায়ে শাস্তি দেয়া হয়। বাংলাদেশ জিন্দাবাদঃ ইনিও আমার মত কট্টর জাতিয়তাবাদের বিশ্বাসি।

লেখার আগে যেমন পড়াশুনা করেন, তেমনি লেখায় সুত্র দিতেও ভোলেন না। সুতরাং তার যুক্তি খন্ডানোটা অনেকের জন্যই অসম্ভব হয়ে পড়ে। যাই লিখেন যুক্ত আবেগ পুরোটা দিয়েই লিখেন। তবে তার লেখার বিষয়বস্ত নির্বাচনে আরো ডাইভার্স হলে, গুণমুগ্ধের সংখ্যা আরো বেড়ে যাবেই বলে আমি বিশ্বাস করি। দিনমজুরঃ বাম ঘরানার হলেও ইনি আমাদের অনেকের পছন্দের ব্লগার।

লেখেন খুবই কম। তবে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে যখনই প্রয়োজন হয়েছে, তিনি কলম হাতে তুলে নিয়েছেন। ফেলানি হত্যা টিপাই মুখ বাধ ইত্যাদি বিষয়ে তার লেখাগুলি ক্লাসিকের পর্যায়ে পড়ে। আশা করবো, তিনি আরো নিয়মিতভাবে লিখে আমাদের সমৃদ্ধ করবেন। দাসত্বঃ আরেকজন প্রচন্ড রকমের মেধাবি এবং দেশপ্রেমিক একজন ব্লগার।

তবে ইনি এত কম লেখেন যে, খুব কম ব্লগারই তার লেখা উপভোগের সুযোগ পেয়েছে। একপেশে এক দলকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবিদের ক্রমাগত প্রচারনার বিপরীতে ইনার কয়েকটি লেখাই যথেষ্ঠ। ইতিহাস যদি মুদ্রা হয়, তাহলে তার বিপরীত পিঠ পাঠ করার জন্য দাসত্বের লেখাই যথেষ্ঠ। তার প্রতিটা লেখাই যে প্রচন্ড পরিশ্রমের ফসল, সেটা খুবই সুস্পস্ট হয়ে উঠে। যুক্তি-ইতিহাস-তথ্যসুত্র, এক জন নিরপেক্ষ ইতিহাসবিদের মতই তিনি এই তিনটি বিষয়কে যুক্ত করে তার প্রতিটা লেখা সাজিয়ে থাকেন।

নাহিয়ান বিন হোসেনঃ ব্লগে তরুণ উদিয়মান এই ব্লগারের প্রতিটা লেখা বা মন্তব্যে দেশপ্রেম ফুটে উঠে। তার লেখা বা মন্তব্য এতই ক্ষুরধার যে, সেগুলি ছুড়ি হলে বিপরীত আদর্শের ব্লগারদের রক্তপাত ঘটে যাওয়া বিচিত্র কিছু ছিল না। দেশের স্বার্থহানির বিরুদ্ধে সদা সজাগ এই মেধাবি তরুণকে দেখলে মনে হয়, আমাদের তরুণদের মধ্যে এখনও সব শেষ হয়ে যায়নি। স্বাধীকারঃ আরেকজন ক্ষুরধার লেখনির অধিকারি প্রচন্ড দেশপ্রেমিক একজন মানুষ। কি মন্তব্যে কি ব্লগিং এ সব যায়গাতেই তার ভাষার প্রাঞ্জলতা, যুক্তির শক্ত বাধনের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়।

এদের মত ব্লগাররা যতদিন থাকবেন, ততদিন অন্তত অন্তর্জালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারিরা কোন সুবিধা করতে পারবে না। শায়মাঃ এর লেখার সবচেয়ে আগ্রহজনক বিষয় হলো, এর ব্লগের হিট। ১৮ + ট্যাগিং বা ক্যাচাল ছাড়াই যে কারো ব্লগে ভিন্ন ভিন্ন মতাদর্শি এত এত লোকের সমাগম হতে পারে, না দেখলে বিশ্বাস করা মুশকিল। ভাববেন না যে লুলামির কারণেই তার ব্লগে এত লোকের সমাগম। প্রচন্ড আত্মমর্যাদাশীল এই মেয়েটির লেখার হাত কিন্ত দুর্দান্ত ! যদিও লেখার বিষয়বস্ত একটাতেই আবদ্ধ।

ভারসাম্যঃ নিকের মতই ইনার আদর্শিক অবস্থান। মন্তব্য কিংবা ব্লগ যাই লিখুন না, কেন চমৎকার ভারসাম্য বজায় থাকে। যার কিনা তার অর্জিত জ্ঞান, যুক্তি ও আবেগের চমৎকার সম্মিলনেরই বহিঃপ্রকাশ। রেজোয়ানাঃ আমাদের এই বোনটিকে নিয়ে আমরা নির্দ্বিধায় মহা গর্বিত হতে পারি। বগ্লার ইমন যুবায়ের যেমন প্রাচীন বাংলার ইতিহাসকে লেখায় লেখায় আমাদের পরিচিতি করিয়ে দেবার কাজে নিয়োজিত, তেমনি আমাদের এই বোনটি আক্ষরিক অর্থেই রোদে পুড়ে বৃস্টিতে ভিজে, বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষনায় নিয়োজিত।

শুধু তাই না, সেগুলি আবার আকর্ষনীয় করে আমাদের সামনে তুলেও ধরেছেন। তবে ইদানিং বোধ হয় লেখালেখি কমিয়ে দিয়েছেন। বিডি আইডলঃ সমসাময়িক বিশ্বের চলচিত্র নিয়ে ইনার লেখাগুলি অত্যন্ত মনগ্রাহি। শুধু চলচিত্র নিয়েই নয়, দেশের স্বার্থহানির বিরুদ্ধেও ইনার কলম অত্যন্ত সরব। সামুতে এক সময় অনেক লিখলেও, এখন অনিয়মিত।

মিল্টনঃ জনপ্রিয় সুলেখক একজন পুরানো ব্লগার । কিছুটা অনিয়মিত হলেও, তিনি নিজে যেমন লিখেন, তেমনি অন্যান্য লেখকদেরও নিয়মিত উৎসাহ দিয়ে থাকেন। কবি ও কাব্য এবং গানচিলঃ বাংলাদেশের চলচিত্র এবং সঙ্গিত নিয়ে ইনাদের জ্ঞান আমাকে মুগ্ধ করেছে। তথাকথিত আধুনিকতা আর অবক্ষয়ের ভীড়ে, স্বর্ণালি অতীতকে যখন আমরা যারা খুজে ফিরি, তখন এই দুজনের লেখা আমাদের আশার আলো যোগায়। ফিউশন ফাইভঃ ব্লগে এটা ওপেন সিক্রেট যে এই নিকটা ৫ জনে মিলে চালায়।

এর মধ্যে একজন অত্যন্ত মেধাবি, যুক্তিপরায়ন এবং প্রচন্ড রকমের শক্তিশালি লেখক। আশা করবো, ব্লগের স্বার্থেই এই লেখকটি এই নিকের একক সও্বা গ্রহন করুন। তোমোদাচিঃ সামুতে গর্ব করার মত আরেকজন ব্লগার। সাম্প্রতিককালে দেশের অর্থনীতির মত জটিল ও বোরিং ইস্যুতে ইনার সুলেখ্য লেখা স্টিকি হয়েছিল। ৩০,০০০ - ৪০,০০০ হিট অর্জন করা অসম্ভব একটা ব্যাপার।

অথচ তার সুলেখনির কল্যাণেই সেটা সম্ভব হয়েছে। আমার মনে হয় এই ধরণের লেখককের সামুতে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে রাখা উচিত। স্বপ্নরাজঃ দেশের স্বার্থে নিঃস্বার্থ ক্ষুরধার লেখনির আরেকজন মেধাবি লেখক। টিপাইমুখ বাধের বিরুদ্ধে সামুতে যে ৪ জন আমরা আমাদের প্রোপিকে প্রতিবাদ ধরে রেখেছি, তাদের মধ্যে একজন। বাকিরা হলেন, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, এবং বাবু>বাবুই>বাবুয়া।

সময়ের স্বল্পতায় এবং ব্যাক্তিগত ব্যাস্ততার কারণে আমাদের স্বপ্নরাজ ভাই, লেখালেখি প্রায় ছেড়ে দেয়াতে আমরা ভালো কিছু লেখা , পড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। অরণ্যে রোদনঃ নতুন ব্লগার, কিন্ত ভীষন রকমের প্রতিশ্রুতিশীল। আমার বিশ্বাস নিয়মিত লিখলে এই নতুন ব্লগারটি একদিন সামুতে শক্ত অবস্থানে চলে আসবে। ব্লগে রম্য লেখক কয়েকজন মানুষের মুখে হাসি ফোটানোটা সবচেয়ে কঠিন একটা কাজ। সেই কঠিন কাজটি যারা ব্লগে করে আসছেন, তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করছি।

দুর্যোধনঃ ব্লগের রম্য জগতের একচ্ছত্র সম্রাট বলা যায় ইনাকে। মহা গোমরা মুখের মানুষটির মুখেও ইনার লেখা হাসি ফোটাতে পারে। তবে তার এই মেধা যদি হিন্দির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যেতো, তাহলে তার কর্ম দেশের জন্য আরো বেশি মুল্যবান প্রতিয়মান হতে পারতো। শিশির সিন্ধুঃ ইনি বাস্তব জীবনের ঘটে যাওয়া স্থান কাল পাত্র নিয়ে যেভাবে রম্য করে লিখেন, তাতে হাসি আটকে রাখা ভীষন মুশকিল। এ ধরণের মেধাবিরাই যুগে যুগে আমাদের দেশকে সমৃদ্ধ করেছেন।

ইশতিয়াক আহমেদ চয়নঃ সম আদর্শের হলেও, ইনি রম্য লেখক। মেধায় কারো চেয়ে পিছিয়ে নেই। চির উৎসাহ ও শুভ কামনা ইনার জন্য। যে ব্লগারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার জানা নেইঃ কথায় বলে দুঃসময়ে যারা সঙ্গি তারাই প্রকৃত আপন। এরকম কিছু ব্লগার আমার ব্লগিয় কিছুটা দুঃসময়ে আমার সঙ্গি হয়ে নিয়মিত উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিতেন।

এবং এখনও দিয়ে আসছেন। উপরে যাদের নাম বললাম, উনাদের বেশিরভাগ তো আছেনই, সঙ্গে এই ব্লগারদের ভুমিকা আমার সামুর জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করেছে। আপনাদের সবাইকে আমার সকৃতজ্ঞ শ্রদ্ধা। সারথী মন, সবুজ সাথী, চেম্বার জজ, লুৎফল কাদের, নিশাচর, সুচিন্তিত মতবাদ, এস এইচ খান, বান_দর, বড় ঠাকুড়, ইন্দুর, অলস ছেলে, মিথুন ১, স্পেলবাইন্ডার, ভুদাই, মশিউর মামা, বিদ্রোহি রণক্লান্ত, বাংলাদেশি পোলা, কামরুল হাসান শাহী, বিতর্কিত বিতার্কিক, নানাভাই, আমি মাতাল, বৃস্টির কান্না, ক্ষুধিত পাষাণ, আমি বীরবল, জোছনার আলো, ইমুব্লগ, পরিযায়ি, ফ্লাইওভার, মুখ ও মুখোশ, অনিরুদ্ধ, চাপাডাঙ্গার চান্দু, ধৈঞ্চা, রাহী আবদুল্লাহ, আমি বীরবল, শিপু ভাই। অনিচ্ছাকৃতভাবে কারো নাম বাদ পড়লে, আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

আমার ব্যার্থতাঃ সামুর ৪ বছরে আমার সবচেয়ে বড় ব্যার্থতা দুটা। এক হলো সময়ের কারণে সময় মত মন্তব্যের জবাব দিতে না পারা। দ্বিতীয়টা হলো বাংলাদেশের চলচিত্রের ইতিহাস নিয়ে শুরু করা চমৎকার একটি সিরিজ শেষ করতে না পারা। পাঠকদের অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও লেখাটি শেষ করতে না পারার একটা চরম অতৃপ্তি আমার মাঝে প্রবল। (মে, ২০১০) যে লেখাটি সবচেয়ে মনযোগ আর যত্নের সাথে লিখেছিলাম কাঁটাতারের বেড়ায় ফেলানি।

শিলার যৌবন আর মুন্নির বদনাম। এই লেখাটিই আমার সামু জীবনে সবচেয়ে বেশি পাঠক প্রিয়তা অর্জন করেছিল। ছোট ব্যার্থতার মধ্যে আছে, গল্প না লিখতে পারা। চেস্টা করেছিলাম, কিন্ত্ সেই মেধা আমার নেই। এর পরেও দুই একটা গল্প মনে হয় খুব খারাপ লিখিনি।

নতুন ধারার দুটি সিরিজঃ একটা স্বপ্ন সিরিজ, রম্য করে লেখা। আরেকটি খুব চাছাছোলা ভাবে লেখা (নাম দিয়েছি যাহা বলিবো সত্য বলিবো) খারাপ সময়ঃ সামুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারি সিন্ডিকেট আমার একটি নির্দোষ লেখাকে টার্গেট করে ব্যাপক প্রচারণা চালায়। যার নেতৃত্বে ছিল ব্লগ জগতের চোরঞ্জিত, কিছুদিন আগে যার চৌর্যবৃত্তির ইতিহাস চারিদিকে ছড়িয়ে গিয়েছে এবং ব্লগ ও ব্লগের বাইরে যে চড় থাপড় খেয়েছে। তবে মিথ্যা দিয়ে সত্য ঢেকে রাখা যে যায় না, তার প্রমান আমার কমেন্ট ব্যান থেকে মুক্তি এবং ঐ গ্রুপের জটিল মস্তিকের ফালতুদের কোনঠাসা হয়ে যাওয়া। ভালো সময়ঃ যখন ফেলানি ও টিপাইমুখ বাধের বিরুদ্ধে মোটামুটি একটা সাড়া জাগাতে পেরেছি, তখনই মনে হয়েছে যে আমার পরিশ্রম সার্থক।

একান্ত পর্যবেক্ষণঃ লুলিয় ছবি বা ১৮+ ট্যাগ মার্কা লেখায় পতঙ্গের মত দলে দলে ভিজিট পড়ে। কিন্ত এই পন্থায় খুব বেশিদিন টিকেও থাকা যায় না। বরং সম্মান হানি হয়। কেন আওয়ামি লিগ ও ভারত বিদ্বেষঃ সন্ত্রাস, দখলবাজি এবং ভিন্নমতের প্রতি অসহিঃষ্ণ মারদাঙ্গা মনোভাব, ইতিহাসকে আকড়ে থেকে অতীত মুখি রাজনীতি, এবং স্বাধীনতার কৃতিত্বকে স্বীয় স্বার্থে কুৎসিতভাবে ব্যাবহার করার কারণেই আঃ লিগের প্রতি সমালোচনার তীর। তাছাড়া নির্লজ্জভাবে সব সময় ভারত মুখাপেক্ষিতা আমাকে আঃ লিগকে দেশপ্রেমহীন বলে মনে হয়।

আর স্বাধীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বরাবর শত্রুতামুলক দাদাগিরি করার জন্য আমি প্রচন্ড রকম ভারত বিদ্বেষি। নতুনদের জন্যঃ ব্লগ কোন ব্লগারের জন্য চিরস্থানি ঠিকানা নয়। পুরানোরা চলে যাবে নতুনরা আসবে, এই অমোঘ সত্য চিরদিন থাকবে। তবে ব্লগ আর ফেসবুকের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে আগে। হিটের জন্য না লিখে নিজের জন্য লিখতে হবে।

যে বিষয়ে লিখছেন, তার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসি হতে হবে। জানার পরিধিও ক্রমান্ব্য়ে বাড়াতে হবে। সমালোচনা এবং ভিন্নমতকে মর্যাদা দিয়ে সসম্মানে গ্রহন করার মানসিকতা থাকতে হবে। নিজের পোস্টে মন্তব্য করার সময় যেমন, তেমনি অন্যের পোস্টে মন্তব্য করার সময়ও সম্মানের সাথে করতে হবে। ভিন্নমতধারি বা সমালোচকদের শত্রু জ্ঞান না করে, বরং বন্ধু ভাবুন।

প্রাপ্ত তথ্য গুলি যাচাই বাছাই করে দেখুন, কেননা আমরা অনেক সময় মনে করি যেহেতু জানি সেটাই মহাসত্য। খুজাখুজি করলে সেটা অনেক সময় সত্য নাও হতে পারে। আর আপনার পোস্টে ছোট বড় যে রকমই মন্তব্য আসুক, সিরিয়াল মেইনটেইন করে অবশ্যই জবাব দেবার অভ্যাস করুন। নতুবা আপনার পোস্টে আসতে পাঠকরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। ভুল করলে, স্বীকার করতে মোটেও দ্বিধায় ভুগবেন না।

হুজুগে গা ভাসাবেন না। প্রশংসা করুন কিংবা নিন্দা সেটা আপন বিবেচনাকে কাজে লাগিয়ে এর পর করবেন। সবশেষে জানা বোন আর আরিলকে , সামুর মত মুল্যবান একটি সম্পদ আমাদের উপহার দেবার জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। বিশেষ করে জানা বোনকে, যিনি বেশ কয়েকবার আমার কয়েকটি পোস্টে এসে মন্তব্য করেছেন এবং পোস্টের শোভা বর্ধনে ভুমিকা রেখেছেন। বাংলা ব্লগিং, সামু এবং সামুর সব ব্লগার দীর্ঘজীবি হোক এই শুভকামনা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।