আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গাজীপুর-৪ আসনের উপ-নির্বাচন ৩০শে সেপ্টেম্বর

আমি নিজের জন্য আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করে গাজীপুর-৪ আসনের উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ গতকাল দুপুরে এ তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ৩রা সেপ্টেম্বর, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ই সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৩ই সেপ্টেম্বর। নির্বাচনে নিবন্ধিত দলের মনোনয়ন বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার শর্ত পূরণ করে তবেই কেবল প্রার্থী হওয়া যাবে।

তবে নিবন্ধিত দলের মনোনয়ন যাকে দেয়া হবে তাকে অন্তত গত ৩ বছর নিবন্ধিত দলের সদস্য পদে থাকতে হবে। বেলা সাড়ে ১২টায় ৪ নির্বাচন কমিশনার, কমিশন সচিবসহ সচিবালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশে নিয়ে তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি। এর আগে সকাল ১১টায় তফসিল চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসে কমিশন। এ বৈঠকে তফসিলের খুঁটিনাটি (মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দিন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন) চূড়ান্ত করা হয়। উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ঢাকার আঞ্চলিক কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদকে।

আর সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছেন গাজীপুর জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান। এ নির্বাচনে মোট ভোটার ২ লাখ ১১ হাজার ৮৮৪ জন ভোটার তাদের ভোটারাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবেন। তাদের জন্য ভোটকেন্দ্র থাকবে ১০২টি, সম্ভাব্য ভোটকক্ষ থাকবে ৪৭২টি। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের ছেলে তানজিম আহমেদ (সোহেল তাজ)। গত ৭ই জুলাই সোহেল তাজ সশরীরে উপস্থিত হয়ে স্পিকার এডভোকেট আবদুল হামিদের কাছে সংসদ সদস্য হিসেবে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন।

এর একদিন পর গাজীপুর-৪ আসন শূন্য হওয়ার বিষয়টি জাতীয় সংসদকে অবহিত করেন স্পিকার। এ কারণে নির্বাচন কমিশনের সামনে আগামী ৫ই অক্টোবরের মধ্যে আসনটির উপ-নির্বাচন সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কারণ, কোন আসন শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্নের বিষয়ে সংবিধানের ১২৩ (৪) অনুচ্ছেদে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। সংবিধানের ওই ধারায় বলা হয়েছে, ‘সংসদ ভাঙিয়া যাওয়া ব্যতীত অন্য কোন কারণে সংসদের কোন সদস্য পদ শূন্য হইলে পদটি শূন্য হইবার নব্বই দিনের মধ্যে উক্ত শূন্যপদ পূর্ণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে। ’ তফসিল ঘোষণা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি কাজী রকিব বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়ার বিষয়ে একেকটি দলের নিজস্ব পলিসি থাকে।

তবে কমিশন আশা করে সব দলই এ নির্বাচনে অংশ নেবে। তিনি বলেন, সংবিধানে কি থাকবে না থাকবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সংসদ। সংবিধানে যেমন নির্দেশনা থাকবে কমিশন তা-ই অনুসরণ করবে। সিইসি বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা প্রয়োজন সে বিষয়ে চারদিক থেকে সবাইকেই সোচ্চার হতে হবে। যাতে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করা যায়।

প্রার্থী হতে আগ্রহীদের জন্য ইসি’র নির্দেশনা: ৩রা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে শুরু করে বিকাল ৫টার মধ্যে রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও তা পুরণ করে জমা দেয়া যাবে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার সময় প্রার্থী বা তার পক্ষে ৫ জনের বেশি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ভিড় করতে পারবেন না। নির্বাচন সামনে রেখে কোন প্রার্থী জনসভা, মিছিল, মিটিং করতে পারবেন না। কেবল পথসভা করতে পারবেন। প্রার্থীদের পোস্টার হতে হবে সাদাকালো।

প্রতিটি পোস্টারের নিচে পোস্টারের সংখ্যা, প্রেসের ঠিকানা, প্রকাশকের নাম দেয়া বাধ্যতামূলক। না হলে সেসব পোস্টার নির্বাচন কমিশনের কাছে অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। পোস্টারের সাইজ হতে পারবে সর্বোচ্চ ২৩ ইঞ্চি বাই ১৮ ইঞ্চি। সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার ননÑ এমন কাউকে পোলিং এজেন্ট করা যাবে না। নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে পোলিং এজেন্টদের দুই কপি ছবি এবং নামের তালিকা রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে।

প্রার্থী হতে ১০ হাজার টাকা জামানত দিতে হবে। নগদ টাকায় জামানত নেয়া হবে না। পে-অর্ডার বা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে রিটার্নিং অফিসারের অনুকূলে এ টাকা জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় হলফনামা আকারে ৮টি তথ্য দিতে হবে। ব্যয়ের উৎসের বিবরণী, আয়কর রিটার্নের কপি জমা দিতে হবে।

মনোনয়ন ফরমে কোন ভুল হলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। তাই সম্ভাব্য প্রার্থীকে সতর্কতার সঙ্গে মনোনয়নপত্র পূরণ করতে হবে। মনোনয়ন দাখিলের আগে প্রার্থীকে অবশ্যই যে কোন তফসিলী ব্যাংকে নতুন হিসাব খুলতে হবে। নির্বাচনের সমুদয় ব্যয় এ একাউন্ট থেকেই করতে হবে। এই একাউন্টের নম্বর, ব্যাংক ও শাখার নাম মনোনয়নপত্রে উল্লেখ করতে হবে।

নির্বাচনের ফলের গেজেটে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব রিটার্নিং অফিসার এবং কমিশনে জমা দিতে হবে। এছাড়া ব্যক্তিগত খরচের হিসাব ফল প্রকাশের ৭ দিনের মধ্যে কমিশনে জমা দিতে হবে। প্রতীক বরাদ্দের আগে কোন প্রচারকাজ চালানো যাবে না। এছাড়া কোন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল বা গ্রহণের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে। লিখিত ছাড়া কোন এজেন্টের অভিযোগ আমলে নেবে না কমিশন।

কোন ভোটার ব্যালট পেপার ব্যালট বাক্সে না ফেলে বাইরে নিয়ে এলে কমিশন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া অন্য কোনভাবে কোন ব্যালট পেপার বাইরে চলে এলে ওই ব্যালট পেপার যে প্রদর্শন করবেন কমিশন তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেবে। কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, এপিবিএন এবং ব্যাটালিয়ান আনসার মোতায়েন করা হবে। তারা মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। প্রতিটি মোবাইল/স্টাইকিং ফোর্সের সঙ্গে ১ জন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে।

নির্বাচনী অপরাধসমূহ বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দেয়া হবে। বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা যে কোন অনিয়মের জন্য ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারবেন। ভোটের দিন নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি থাকবে। ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা ব্যতীত কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।