আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুনিরীয়া তরিক্বত তথা কাগতিয়া সিলসিলার বৈশিষ্টঃ (পর্ব – ৪)

[ মৌখিক জিকিরঃ মুনিরীয়া তরিক্বত তথা কাগতিয়া সিলসিলায় মৌখিক জিকির হল, বাদে নামাজে ফজর খতম শরীফ পাঠ করা হয়, ২০০ বার দরুদ শরীফ ও ১০০ বার “হাছবুনাল্লাহু ওয়া নে’মাল ওয়াকিল নে’মাল মাওলা ওয়া নে’মান নাছির”। বাদে নামাজে মাগরিব ফাতেহা শরীফ, সুরা ফাতেহা ৩ বার, সুরা ইখলাস ৯ বার, দরুদ শরীফ “ছল্লাল্লাহু আলাইকা ইয়া মুহাম্মদু” ১১ বার। বাদে নামাজে এশা, দরুদ শরীফ “ছল্লাল্লাহু আলাইকা ইয়া মুহাম্মদু” ৯০০ বার। এই সিলসিলায় দৈনিক ১,১১১ বার দরুদ শরীফ পাঠ করা হয়। হাদীছের আলোকে “দলায়েলুল খায়রাত” শরীফে আছে ১বার দরুদ শরীফ পাঠের বদলে আল্লাহ বান্দার প্রতি ১০টি রহমত বর্ষণ করেন।

তাঁর আমলনামা থেকে ১০টি গুনাহ মুছে ১০টি নেকী লেখা হয়। এখন হিসাব করলে দেখা যায়, এ সিলসিলার মুরিদদের প্রতি দৈনিক ১১,১১০টি রহমত বর্ষিত হয়,এবং ১১,১১০টি গুনাহ আমলনামা থেকে মুছে ১১,১১০টি নেকী লেখা হয়। যে ব্যক্তি দৈনিক ১০০০ বার দরুদ পাঠ করবে হাশরের মাঠে তাঁর সুপারিশের দায়িত্ব হুজুরপাক(সঃ) নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। উল্লেখ্য, এই সিলসিলায় দৈনিক ১,১১১ বার দরুদ শরীফ পাঠ করা হয়। তাছাড়াও সুরা ইখলাস প্রবিত্র কোরানের এক তৃতীয়াংশের মর্যদা রাখে।

এই সিলসিলায় ৯বার সুরা ইখলাস এবং ৩বার সুরা ফাতেহাও পাঠ করা হয়। উল্লেখ্য, সুরা ফাতেহা পাঠে দুনিয়ার সকল মুছিবত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। মুনিরীয়া তরিক্বত তথা কাগতিয়া সিলসিলায় ক্বলবী জিকিরঃ ফজর ও মাগরিব নামাজান্তে মোরাকাবা (ধ্যান) বা দরুদ পাঠ করার সময় ছাড়াও আরো আন্যান্য সময় বা সর্বক্ষণ অর্থাৎ মহান মোর্সেদ হযরত শায়খ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ছাহেব এর কাছ থেকে সামনা-সামনি বসে তাওয়াজ্জুহ ফয়েজ নেওয়ার পর, ক্বলব কিংবা আন্যান্য লতিফা সমূহে গরম,ঠান্ডা, ভারী ও নড়াচড়া অনুভূত হওয়া, মূলত এসব হল ক্বলবী জিকির বা অন্তরের জিকিরের বৈশিষ্ট। ক্বলবী জিকির কোরআন পাকের আয়াত অনুযায়ী দাড়ানো,বসা ও শোয়া অবস্তায় অহরহ চলতে হবে। ঘুমন্ত অবস্তা ছাড়াও স্বাভাবিক চলাফেরা করার সময়ও ক্বলবী জিকির অনুভূত হয় কাগতিয়ার আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিটি মুরীদের ক্বলবে (আলহামদুলিল্লাহ)।

কাগতিয়ার মহান মোর্সেদ হযরত শায়খ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ছাহেব এর সিনা মোবারক থেকে নিক্ষিপ্ত তাওয়াজ্জুহ(নূর) মুরিদের ক্বলবে যাবার পর, ওই নূর জিকির করতে শুরু করে এবং মুরিদের স্ব স্ব ক্বলবে জিকির অনুভুব করতে পারে। আল্লামা শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী(রহঃ)বলেন, “পীর সাহেবকে আগে নিজের লতিফায় (ক্বলব,রুহ,সির,খফি ইত্যাদি)কিংবা সর্বাঙ্গে জারী করে নিজেকে মোরাকাবা বা ধ্যানের নূরে আলোকিত করতে হয়, তারপরই আশেক মুরিদের ক্বলব বা অন্যান্য লতিফা কিংবা সর্বাঙ্গে ওই নূর নিক্ষেপ করা যায়”। অন্যান্য হক সিলসিলার পীর মাশায়েখগন বা উঁচুস্তরের মুরিদেরা দীর্ঘদিন ধরে সুকঠিন রেয়াজতের মাধ্যমে “ক্বলবী জিকির” এর নূর নিজেদের ক্বলবে আনতে সক্ষম হন। কিন্ত মুনিরীয়া তরিক্বত তথা কাগতিয়া সিলসিলায় “তাওয়াজ্জুহ ও ইন্দিরাজুন নেহায়া ফিল বেদায়া” সংযুক্ত থাকার ফলে এ সিলসিলার অনুসারিরা মহান মোর্সেদ হযরত শায়খ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ছাহেব এর সামনা-সামনি বসে তাওয়াজ্জুহ নেওয়ার পর, মাত্র ২/১ মিনিটের ব্যবধ্যানে নিজেদের ক্বলবকে ক্বলবি জিকিরের নূরে আলোকিত করতে পারে। ঘড়ি যেমনিভাবে যে কোন স্থানে,সর্বাবস্থায় টিক টিক শব্দ করে চলতে থাকে।

তদ্রূপ,মুরিদের ক্বলবে নিক্ষিপ্ত নুরও যে কোন স্থানে যে কোন অবস্থায় জিকির ও তসবীহ পাঠ করে। কাগতিয়ার মহান মোর্সেদ হযরত শায়খ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ছাহেব এর সামনা-সামনি বসে তাওয়াজ্জুর মাধ্যমে মুরিদের ক্বলবে যে নূর নিক্ষেপ করেন,মুলতঃ সেই নূর বা জিকির হল, হুজুরেপাক(সঃ) এর সিনা মোবারক থেকে,হযরত আলী(রাঃ)’র মাধ্যমে প্রদত্ত নূর বা জিকির অর্থাৎ, যে নূর মোবারক হযরত আদম(আঃ)এর কপাল ও শাহাদাত আঙ্গুল মোবারকে জিকির ও তসবীহ পাঠ করেছিলেন (আলহামদুলিল্লাহ)। এখন দেখুন, কাগতিয়া সিলসিলা কতো উঁচুস্তরের, এবং আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন ও হুজুরেপাক(সঃ)কেমনভাবে এ সিলসিলাকে কবুল করে নিয়েছেন। (চলবে) তরিকত কি ও কেন পীরের কাছে যাব? ( পর্ব-১ ) তরিকত কি ও কেমন পীরের কাছে যাব? ( পর্ব-২ ) তরিকত কি ও কেমন পীরের কাছে যাব? ( পর্ব-৩ ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।