আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাতের গল্পকথা (২)

সোডিয়াম লাইটের মায়াবী আলো যখন বদলে দেয় সব রং, সিগারেটের নীলচে ধোঁয়ায় আমি নীলমানবীর শরীর সীমানা এঁকে যাই নিখুত। আমার লোমশ হাতের সবকটি ইন্দ্রিয় নৈশব্দচকিত; তালুবন্দী করে রাখা আছে স্বপ্নবৃন্ত। উষ্ণতা ছড়ানো শিহরণকে উপেক্ষা করে আমি আবার বলতে শুরু করি, "বোধ হওয়ার পরপরই আমাকে নানা পরিস্থিতি সামলে নিতে হয়েছে। তুলতুলে নরম শরীরটা সেই ছোটবেলা থেকেই বাঁচিয়ে চলতে হয়েছে। " "কার কথা বলছ?" "আমার নিজেরই।

" বলতে গিয়ে হঠাৎ আড়ষ্ঠের মত আটকে যাই আমি। এতদিন যা বলা হয়নি কাউকে তা হঠাৎ বলতে গিয়ে এক মুহুর্তেই সামলে নিই নিজেকে। অপ্রকাশিত দূর্ঘট ঘটনাগুলোর তারঃস্বর চীৎকার শুনতে পাই পষ্ট। ছি ছি, কী করছি এটা! কিছু কথা যে নিজের বউকেও বলতে নেই! "বলো-? কী হল, চুপ করে রইলে যে, তারপর?" বুঝলাম, আমার প্রসঙ্গ পাল্টানোর চিরায়ত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে এবার। একটু যেনো বিরক্তি প্রকাশ করে বলি, "চুলটা বেধে নাও।

বারবার চোখে লাগছে। ব্যান্ডটা খুঁজে পেয়েছ পরে?" "আচ্ছা, আমি বাধছি। তুমি বলতে থাকো। " আমার চতুর ছলাকলা তাকে ভ্রমিত করতে পারেনি-এ ব্যপারে নিশ্চিত হবার আগেই একটা রামধরা খেলাম বেমক্কা। "এইভাবে অনেকদিন তুমি অনেক কথা আধাআধি রেখে দিয়েছ।

আজ পুরোটা বলতে হবে। " "শোনো, বাজে কথা বলবে না। আমি তোমাকে কিছুই লুকাই না। অন্তঃত বিয়ের পর থেকে। " "আচ্ছা বাবা, ঠিক আছে।

বল এবার। " "ধুর! বলার মুডটাই ত নষ্ট করে দিলে! কাল সকাল সকাল উঠতে হবে আবার। " আমি এই মোক্ষম সুযোগটা কিছুতেই হাতছাড়া করলাম না। আমি জানি, এরপর কী থেকে কী হবে। আর হঠাত একরাশ স্বস্তির নিঃশ্বাস কোথা হতে যেনো বুনো ফুলের পাপড়ির মত ছিটিয়ে পড়ে চোখে-মুখে।

আমার না বলা শব্দকথা আমার চারপাশে গুনগুন করে কী যেনো বলতে চায়। আমি মুক-বধিরের মত সেইসব গুনগুন কাব্য হজম করে যাই। রাতঘুমে আমি বারবার আধোচৈতন্য হয়ে রই। আমার চারপাশে ঘুরে ঘুরে চলে গুনগুন কাব্যের দল। আমাকে বারবার প্রতিবার টেনে আনে আমার স্বপ্নকৈশরে।

আমি ছুটে বেড়িয়ে আসি। আর আবার আমাকে টেনে নেয় আমার গুনগুন কাব্য। নিশুতি রাতে আমি দৌড়ে পালাতে থাকি। অসাঢ় হয়ে আসে আমার দুই পা। আছড়ে পড়ি মাটিতে।

হুড়মুর করে উঠে আবার দৌড়াই। আমার পেছনে পড়ে থাকে অপরিচিত বুনো জঙ্গল। সামনের বাঁকটা পেরুলেই আমাদের বাড়ির টিনের চালা দেখা যাবে। বাড়িতে ফিরেই এর চুড়ান্ত বিহিত হবে আজ। একদলা থুতু মাটিতে ফেলে আমি পেছন ফিরে চীৎকার করে বলতে থাকি,'কুত্তা, আমার মা-বাবাকে নিয়ে খারাপ কথা বলবি না।

প্রতিবার একটা কথাই আমাকে অশরীরী আত্মার মত তাড়া করে,‌‌‍ 'প্রতিটা মানুষই তার মা-বাবার সেক্স মিটানোর ফলাফল মাত্র। ' (চলবে) প্রথম অংশ পড়তে চাইলে- Click This Link তৃতীয় অংশ পড়তে চাইলে- Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।