আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লাল ফিতায় বাধা প্রেমের গল্প

রাজনীতি আর ধর্ম নিয়ে আলোচনার শেষ নাই। আসুন একটা প্রেমের গল্প শুনি চার বছর আগের ঘটনা। একদিন আমার অধঃস্তন এক কর্মী এসে বলল বিয়ে করবে। আমি বললাম: এতো সুসংবাদ। আগে বাড়ো।

সে মুখ নীচে করে বসে থাকলো। কোন সমস্যা ? : সে বিদেশী। আমি গম্ভীর মুখে বললাম : কোন দেশী ? : পাকিস্তানী। আমি মোটামুটি রেগেই গেলাম। :তুমি ঢাকা ভার্সিটি থেকে অসাধারন রেজাল্ট করা ছেলে।

চাকরীতে নুতন। যা সিনসিয়ারিটি তাতে তুমি অনেকদুর যাবে। কেন এসব পাগলামি? এর আগে এরকম যে কয়টা বিয়ে হয়েছে তার কোনোটাই টিকেনি। আর এই বিয়ে করতে হলে তোমাকে আর কেউ না, স্বয়ং মহামান্য প্রেসিডেন্টের পারমিশন নিতে হবে। তাছাড়া আর কোন দেশ পেলে না ? পাকিস্তান ?? দেখা হল কিভাবে? : সে বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছিল যাদের বাসায় তার বাসায় আমি টিউশনি করতাম।

:বেশ ভালো। মেয়ে'র বাবা মা জানে ? : মা জানে। বাবা জানে না। :পাকিস্তানে অনার কিলিং এর কথা শুনেছো ?আমি বললাম। (এ প্রসংগে আরেক গল্প পুনশ্চতে) :না স্যার।

: যা পরিস্থিতি তাতে এ বিয়ের অনুমতি পেতে ২/৩ বছর লাগতে পারে। ততদিন ওয়েট করতে পারবে ? : নো প্রবলেম স্যার। আপনি একটু ট্রাই করলেই হবে। :হুমম। তোমাকে ভাবার সময় দিলাম।

২ মাস পর দেখা করবে। আমি ডিসিশন দিলাম। হাসিমুখে সে বিদায় হল। দুমাস পর সে আবার হাজির। নাছোর বান্দা।

বললাম দরখাস্তটা রেখে যাও। আমি আরো দুমাস সময় দিলাম। তারপর পাঠাবো। ততদিন পর্যন্ত চিন্তা ভাবনা করো। কিছুদিন পর তার পোস্টিং হল ঢাকায়।

ভাবলাম ক্ষমতার কেন্দ্রে যাচ্ছে। অনুমতি পেতে সুবিধা হবে। সে চলে গেল । মাঝে মাঝে তার সাথে দেখা হয়। : কতদুর ? : স্যার।

বস কে জানাইসি। বলছে ওয়েট করতে। আজ প্রায় চারবছর হল। তার বিয়ের বয়স অনেক আগেই পার হয়েছে। আর দরখাস্ত ? একধাপ ও পেরোয়নি।

বংগভবন তো অনেক দুর। তার বন্ধুদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। হু ইজ দিস গার্ল ? সে মেয়েও বিশাল রেজাল্ট করে পিএইচডি করছে। তারও এক কথা। অন্য কোথাও বিয়ে করবে না।

এভাবে লাল ফিতায় বেধে আছে দুটি জীবন পুনশ্চ: অনার কিলিং নিয়ে এক পাকিস্তানী সহকর্মীর সাথে কথা বলছিলাম। সে জানালো তার বন্ধুর প্রেমে পড়েছিল পাকিস্তান সিনেটের এক প্রভাবশালী সদস্যের মেয়ে। পিতামাতা কে রাজি করাতে না পেরে সে পালিয়ে এক আইন সংক্রান্ত এনজিও'র কাছে আশ্রয় নেয়। সেখানে তার মা দেখা করতে যায়। মেয়ে কে না ফিরাতে পেরে সংগে যাওয়া দেহরক্ষীকে গুলির আদেশ দেন মা।

দেহরক্ষী যে ঐ মেয়ে কে কোলে পিঠে মানুষ করছে, কোনা দ্বিধা ছাড়াই গুলি করে মেয়েটিকে মেরে ফেলে। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।