আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“ রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চুক্তি বাতিল কর, সুন্দরবন রক্ষা কর” ঃ অবিলম্বে “সুন্দরবন রক্ষামঞ্চ” করতে হবে

যদি ঠাঁই দিলে তবে কেন আজ হৃদয়ে দিলে না প্রেমের নৈবদ্য গতকাল (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে সুন্দরবন বিধ্বংসী রামপাল কয়লা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ উপলক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ), বাস্তবায়ন চুক্তি (আইএ), যৌথ উদ্যোগ চুক্তির সম্পূরক (এসজেভিএ) স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে মূলত বিজয় হল ভারতীয় পুঁজির করপোরেট আগ্রাসনের, বিজয় হল ভারতীয় আধিপত্যবাদ আর লুণ্ঠনের আর হেরে গেল এই অসম চুক্তির আয়োজনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ করে আসা নানান মহল! Click This Link রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চুক্তি কিভাবে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থিঃ প্রস্তাবিত তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবন বিধ্বংসী হতে বাধ্য রামপালে প্রস্তাবিত তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এমনিতেই সুন্দরবন বিধ্বংসী- শব্দ দূষণ, তাপ দূষণ, বায়ু দূষণ, বর্জ্য দূষণসহ সর্বপ্রকার দূষণে সুন্দরবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। “রামপাল কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ শুরু থেকেই হাজার হাজার মানুষের জীবন জীবিকা ধবংস করে কৃষি জমির উপর এই বিদ্যুৎ নির্মাণ প্রকল্পের বিরোধী করে আসছে। তারা সংবাদ সন্মেলন করে বলেছেন : ” প্রস্তাবিত এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিশাল এলাকার মধ্যে বসতবাড়ি, ধানী জমি, মৎস খামার, চিংড়ি চাষ প্রকল্প, সবজি ক্ষেত, গরু-মহিষ উৎপাদন খামার, দুগ্ধ খামার, মসজিদ মাদ্রাসা মক্তব কবরস্থান ও অন্যান্য ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতি মৌসুমে কয়েক কোটি টাকার মাছ, ধান, গরু-মহিষের মাংস এই এলাকা থেকেই উৎপাদন করা হয়। কৃষি জমি অধিগ্রহনের এই উদ্যোগের সাথে সাথে আমাদের রুটি-রুজির সংস্থান আর বাপ-দাদার ভিটে-মাটি সবই যেতে বসেছে।

... বিদ্যূৎ কেন্দ্র স্থাপিত হলে হয়তো কিছু লোকের কর্মসংস্থান হবে কিন্তু জমি অধিগ্রহণের ফলে কৃষি জমি ও কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত যে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ কর্মহীন আর উদ্বাস্তু হয়ে পড়বে তাদের সবাইকে পুনর্বাসন করা আদৌ সম্ভব নয়। ক্ষতিপূরণ হিসেবে হয়তো কিছু টাকা মিলবে কিন্তু তা দিয়ে নতুন করে কৃষি জমি কেনাও দূরহ। এ অনিশ্চয়তা থেকে আমরা কৃষি জমি রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেছি। ” [সূত্র- ১] কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র মারাত্মক পরিবেশ দূষণ ঘটায় বলে সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংরক্ষিত বনভূমি ও বসতির ১৫ থেকে ২০ কিমি এর মধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়না। ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে প্রস্তাবিত ১৩২০ মেগাওয়াট রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সুন্দর বন থেকে মাত্র ১৪ কিমি দূরে যা সরকার নির্ধারিত সুন্দরবনের চারপাশের ১০ কিমি এনভাইরনমেন্টালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া(ইসিএ) থেকে ৪ কিমি বাইরে বলে নিরাপদ হিসেবে দাবী করা হয়েছে।

অথচ যে ভারতীয় এনটিপিসি বাংলাদেশে সুন্দরবনের পাশে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করতে যাচ্ছে সেই ভারতেরই ওয়াইল্ড লাইফ প্রটেকশান অ্যাক্ট ১৯৭২ অনুযায়ী, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৫ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে কোন বাঘ/হাতি সংরক্ষণ অঞ্চল, জৈব বৈচিত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বনাঞ্চল, জাতীয় উদ্যান, বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য কিংবা অন্যকোন সংরক্ষিত বনাঞ্চল থাকা চলবে না। অর্থাৎ ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসিকে বাংলাদেশে সুন্দরবনের যত কাছে পরিবেশ ধ্বংস কারী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে দেয়া হচ্ছে, তার নিজ দেশ ভারতে হলে সেটা করতে পারতো না! .------------------ প্রকৌশলী কল্লোল মুস্তফা Sundarban is dying!!! Proposed new look of our glamorous, exotic Sundarban! Aren't they beautiful? We are indebted to our present and former governments for their heart and soul efforts to make us 'developed'! And at the same time, we are also grateful to 'world's largest democratic country India' for their unconditional and collateral free friendship!!! Hats off to both of them!!!! Photo courtesy-Gangchil Trisha ৮৫% মালিকানাই থাকবে এনটিপিসি’র যৌথ প্রকল্প বলে ঊল্লেখ করা হলেও মাত্র ১৫% বিনিয়োগ করেই সিংহভাগ মালিকানা থাকবে ভারতীয় কোম্পানির । এনটিপিসি ও পিডিবির যৌথভাবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। মোট ব্যয়ের ৩০ শতাংশ অর্থাৎ তিন হাজার ৯৬০ কোটি টাকা ব্যয় করবে পিডিবি ও ভারতীয় কোম্পানি অর্থাৎ প্রত্যেকে ১৫% করে বিনিয়োগ করবে। বাকি ৭০ শতাংশ বা ৯ হাজার ২৪০ কোটি টাকা অর্থায়ন হবে ঋণের মাধ্যমে যা এনটিপিসি বিভিন্ন ব্যাংক ও দাতা সংস্থার কাছ থেকে সংগ্রহ করবে।

কাজেই দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ৮৫% মালিকানাই থাকবে এনটিপিসি’র। বাস্তবে এটি মূলত ভারতীয় মালিকানা ও ব্যাবস্থাপনায় একটি ভারতীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রই হবে, যে বিদূৎ কেন্দ্র থেকে সরকার বেসরকারি বিদ্যূৎ কেন্দ্র বা আইপিপি’র কাছ থেকে যেমন চড়া দামে বিদ্যুৎ কেনে সেভাবে কিনবে। চড়া দামে বিদ্যুৎ কিনতে হবে ভারতীয় কোম্পানি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের বিক্রয় মূল্য কত হবে তাও নির্ধারণ করা হয়নি এই চুক্তিতে। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এনটিপিসি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সাথে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের যৌথ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি হওয়ার আগে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পিডিবি কী দামে বিদ্যুৎ কিনবে, জ্বালানি হিসেবে কয়লার মূল্য কত হবে এসব বিষয় চূড়ান্ত করার কথা ছিল। পিডিবি ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এনটিপিসিকে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণের জন্য প্রাক সমীক্ষা করতে দায়িত্ব দিয়েছিল।

ভারতের এনটিপিসি প্রাক সমীক্ষা শেষে পিডিবির কাছে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ১৪ টাকা দাবি করেছিল। এনটিপিসি আবার প্রাক সমীক্ষা করে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য আট টাকা ৫৫ পয়সা করার কথা বলে। পরে এ বিষয়ে এক মত না হওয়ায় এখন মূল্য নির্ধারণ ছাড়াই বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হওয়ার পর মোট ব্যয় ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতি ইউনিট জ্বালানির মূল্য সমন্বয় করে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। “কিন্তু পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে এমনকি বেসরকারি খাতের প্রস্তাবিত মূল্যের চেয়েও বেশি মুল্যে এই রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে হবে বাংলাদেশকে।

অথচ গত ২০ ডিসেম্বর ওরিয়ন গ্রুপের সাথে পিডিবির চুক্তির সংবাদ থেকে দেখা যাচ্ছে কয়লাভত্তিকি কন্দ্রেগুলোর মধ্যে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় ৫২২ মেগাওয়াটের কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট ৪ টাকা এবং খুলনার লবণচোরায় এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ২৮৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি কেন্দ্র তিন টাকা ৮০ পয়সা দরে বিদ্যুৎ কিনবে পিডিবি”। [সূত্র ঃ১] যেখানে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পিডিবি প্রতি ইউনিট ৪ টাকা দরে কিনবে সেখানে ভারতীয় কোম্পানি থেকে তা চড়া দামে ( প্রাক সমীক্ষা অনুসারে ৮ টাকা ৮৫ পয়সা; এই দাম উৎপাদনকালে বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে আরও বাড়তে পারে)কিনতে হবে এবং এই অন্যায্য উচ্চ দামে ২৫ বছর যাবত বিদ্যুৎ কিনতে গিয়ে বাংলাদেশ কোটি কোটি টাকা গচ্চা দিতে হবে আর পরিপূর্ণভাবে বিশাল অঙ্কের মুনাফা লুটে নিবে ভারতীয় কোম্পানি! তেল খরচ নিয়ে এনটিপিসির অন্যায্য দাবি আবার আন্তর্জাতিক বিধান অনুযায়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে এক লিটার তেল প্রয়োজন হলেও এনটিপিসি কিন্তু প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য দুই লিটার তেল দাবি করছে। এনটিপিসির এই অন্যায্য দাবি মেনে নিলে বাংলাদেশের বিপুল অর্থ লোকসান গুনতে হবে। কোম্পানিকে ১০ বছরের কররেয়াত সুবিধা দিয়ে দিচ্ছে সরকার ঃ ভয়াবহ ভারতীয় লুণ্ঠনের পথ প্রশস্ত হবে কাঁচামাল আমাদের, জমি/ভূমি আমাদের, দ্বিগুণ পরিমাণ তেল আমরা সাপ্লাই দিব, আমাদেরই কৃষিজমি-বসত ভিটা-জল-জঙ্গল-জীবন ও অর্থনীতি ধবংস করে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে- তারপরও মাত্র ১৫% বিনিয়োগ করে আর দাতা সংস্থার কাছ থেকে ঋণের ব্যবস্থা করে (এই ঋণ আমাদেরই পরিশোধ করতে হবে) অন্যায়ভাবে ৮৫% মালিকানা তুলে দেয়া হল ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসির হাতে আর সেই এনটিপিসি নিজের ইচ্ছামত চড়া দামে উৎপাদিত বিদ্যুৎ আমাদের কাছেই বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা লুটবে। এই সব কিছুই ভয়াবহ ভারতীয় লুণ্ঠনের পথ প্রশস্ত করে দিবে যে লুণ্ঠন ঔপনিবেশিক আমলের অবাধ লুণ্ঠনের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।

খোদ ভারতের মাটিতে বিনিয়োগ করেও এতো মুনাফা লুটতে পারবে না কোন ভারতীয় কোম্পানি। কিন্তু ভারতীয় লুণ্ঠন আর আধিপত্যবাদের কাছে জাতীয় স্বার্থকে বিকিয়ে দেয়ার এটাই শেষ পদক্ষেপ না, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিক্রি করে যে পরিমাণ মুনাফা করবে ভারতীয় কোম্পানি তার পুরোটাই যেন ভারতে নিয়ে যেতে পারে তার জন্য কোম্পানিকে ১০ বছরের কররেয়াত সুবিধা দিয়ে দিল সরকার। এই কররেয়াত সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা লোকসান মেনে নিয়ে সরকার ভয়াবহ ভারতীয় লুণ্ঠনের পথ প্রশস্ত করে দিচ্ছে। এ ধরনের অন্যায্য, অসম চুক্তি যা সম্পূর্ণভাবেই বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো হয়েছে কিনা আমাদের জানা নেই। এ ধরনের অসম চুক্তি স্বাক্ষরের মানে হচ্ছে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদী পুঁজির অধীনস্ততা মেনে নেয়া।

এই অন্যায্য চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আঞ্চলিক আধিপত্যবাদী ভারতের নয়া-উপনিবেশবাদী শোষণ-নিপীড়নকেই তরান্বিত করা হবে। নিষ্ক্রিয় বিরোধী দল ঃ প্রতিবাদহীনতায় তরান্বিত হচ্ছে ভারতীয় লুণ্ঠন এই রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে ভারতীয় কোম্পানির সাথে যে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী চুক্তির আয়োজন পাকাপোক্ত করা হল তার প্রতিবাদে বিরোধী দল বিএনপি-জামাত জোটকেও আমরা উচ্চকণ্ঠ হতে দেখি নাই, এতোগুলো হরতাল দেয়া হল কোথাও এই সুন্দরবন বিধ্বংসী চুক্তির ইস্যু অন্তর্ভুক্ত করা হল না! গণতান্ত্রিক কাঠামোতে বিরোধী দলের দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী যে কোন কার্যকলাপের কার্যকর প্রতিবাদ জানানো। এই দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ অবহেলা করে বিরোধী দল বাংলাদেশে চলমান ভারতীয় লুণ্ঠনকে পরোক্ষভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদী পুঁজির অধীনস্ততা মেনে নিয়ে আর যাই হোক গণমানুষের রাজনীতি হবে না! আমাদের দাবিঃ ১। ভারতের কোম্পানির সাথে চুক্তির বিভিন্ন শর্ত এবং প্রস্তাবনায় সম্পূর্ণ ভাবে বাংলাদেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতীয় লুণ্ঠনকে তরান্বিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে এ চুক্তি স্বাক্ষরের তীব্র প্রতিবাদ জানাই ।

২। আমরা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরোধী নই কিন্তু বিদ্যুৎ সংকটের অজুহাতে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবন বিধ্বংসী ও প্রাণ-পরিবেশ-প্রতিবেশ-জীবন-জীবিকা ধ্বংসকারী কোন প্রকল্প মেনে নেয়া যায় না। তাই অবিলম্বে সুন্দরবন বিধ্বংসী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প ও স্বাক্ষরিত চুক্তি বাতিল করতে হবে! পরিবেশ সমীক্ষা করে অন্য কোন নিরাপদ জায়গায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করার দাবি জানাই। ৩। যে কোন কোম্পানিকে মুনাফার উপর কর মওকুফের মত জাতীয় স্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত নিষিদ্ধ করতে হবে।

বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক ছাত্র-শিক্ষক-জনতাকে এই ভারতীয় আধিপত্তবাদ আর লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। এই মুহূর্তে ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধ ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জনতাকে এই ভারতীয় আধিপত্যবাদ আর লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। ভারতীয় পুঁজির করপোরেট আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধ ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই সূত্র ঃ ১। Click This Link সুন্দরবন রক্ষামঞ্চ করতে হবে সুন্দরবন আমাদের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা বর্ম, অসাধারণ জীববৈচিত্রের আধার, বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত অমূল্য সম্পদ।

কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারনে আমাদের চোখের সামনে এই সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাক তা আমরা চাই না! আমাদের বিদ্যুৎ সংকট আছে তা আমরা জানি, কিন্তু বিদ্যুৎ সংকটের চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এদেশের গর্ব সুন্দরবন রক্ষা করা! এছাড়া অন্য কোন নিরাপদ জায়গায় এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে তো কোন অসুবিধা নাই। ভারত যদি তার বনাঞ্চল রক্ষার জন্য ১৫ কি মি ‘এর মধ্যে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র আইন করে নিষিদ্ধ করতে পারে তাহলে আমরা ভারতকে অনুসরণ করছি না কেন? যে ভারতীয় কোম্পানিকে এই রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে তারা নিজেরাই তো ভারতের মধ্যপ্রদেশে একই ধরণের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে নাই কেননা তা ভারতের কৃষিভূমি ও বনভূমি ধংস করবে! তাহলে আমরা কেন আমাদের সুন্দরবন বিধ্বংসী এই প্রকল্প অনুমোদন করবো? এই রকম একটা ব্যাপার সুন্দরবনের চৌহদ্দির আশেপাশে বসায় দিলে কেমন হয়? বাঘ তো বাঘ, কুইচ্ছারাও সুন্দরবন ছাইড়া পলাইবো! সুন্দরবনকে কয়ালা ভিত্তিক দূষণের ধংসযজ্ঞ থেকে রক্ষা করা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব, সুন্দরবন রক্ষা তাই আমাদের প্রাণের দাবি! তাই আজ সুন্দরবন রক্ষার জন্য অবিলম্বে দেশের জনসাধারণকে “সুন্দরবন রক্ষামঞ্চ” গঠন করতে হবে। এই মঞ্চ থেকে আমাদের একটাই দাবি থাকবে “ রামপাল চুক্তি বাতিল কর। সুন্দরবন রক্ষা কর” উপায় একটাই গণপ্রতিরোধ ভারতের সাথে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চুক্তি সম্পন্ন হল, সুন্দরবন বিধ্বংসী এ চুক্তি অর্থনৈতিকভাবেও বাংলাদেশের জন্য মোটেই লাভজনক নয়, তা চুক্তির বিভিন্ন প্রস্তাবনায় সুনিশ্চিত! তো এখন উপায়? উপায় একটাই গণপ্রতিরোধ, যে গণপ্রতিরোধ এশিয়া এনার্জিকে পাততাড়ি গুটিয়ে পালাতে বাধ্য করেছে ফুলবাড়ি কয়াল খনি থেকে, যে গণপ্রতিরোধ আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর স্থাপনের জীবন- জীবিকা বিধ্বংসী চক্রান্ত রুখে দিয়েছিল, যে গণপ্রতিরোধ জন্ম দিয়েছিল কানসাট ফেনোমেনা , সেরকম একটা গণপ্রতিরোধ দরকার রামপালে, খুলনায়! স্থানীয় জনতার সাথে বুদ্ধিবৃত্তিক ফোর্স এর মেলবন্ধনেই একমাত্র তা সম্ভব! মূল ধারার রাজনীতিবিদরা যখন এর প্রতিবাদ করবে না, আর কথিত বুদ্ধিজীবীরা যখন এসব নিয়ে লেখলে তাদের বুদ্ধি ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকায় আছেন তখন স্থানীয় গনমানুষের দেশপ্রেম আর সচেতন নাগরিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া সুন্দরবন রক্ষা করা যাবে না মূল ধারার মিডিয়ার ভূমিকা কাম্য ঃ আর মূল ধারার মিডিয়াকে অতিদ্রুত সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা করার আহবান জানাই! দায়সারা গোছের প্রতিবেদন দিয়ে লাভ নাই, মিডিয়ার উচিত রামপাল চুক্তি বাতিলের জন্য জন সচেতনতা মুলক কলাম, প্রতিবেদন ছাপিয়ে এ কাজে হেল্প করা! ভারতের কর্পোরেট পুঁজির আগ্রাসনের কাছে মাথা নত না করে জাতীয় স্বার্থে মিডিয়ার ভূমিকা আশা করি! মিডিয়া যদি এখন এই দায়িত্ব পালন না করে তাহলে তাদের এই নিষ্ক্রিয়তা দেশদ্রোহিতার শামিল বলেই চিহ্নিত হবে, মুখে দেশপ্রেমের বুলি আওড়াবেন আর দেশের প্রয়োজনে দায়সারা ভূমিকা পালন করবেন তা হয় না! রাজনীতিবিদদের কাছে আবেদন দেশের স্বার্থে এক হোন, গণবিরোধী চুক্তিকে না বলুনঃ শুধু ভোটের রাজনীতির জন্য ভারতের কৃপা লাভের আশায় সরকারী দল যেভাবে এই অন্যায্য চুক্তি স্বাক্ষর করল এবং একই কারনে মানে ভারতকে খুশী রেখেই ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যেভাবে বিরোধী দল প্রতিবাদ না করে ভারতীয় আগ্রাসনকে মেনে নিচ্ছে তা বাংলাদেশের জনগন ক্ষমা করবে না! দেশের মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলার উচিত ফুলবাড়ি , কানসাট, আর আড়িয়াল বিলের জনতার গণ প্রতিরোধের কথা চিন্তা করা, তারা যদি জাতিয় স্বার্থ না দেখেই চলতে থাকে তাহলে গণপ্রতিরোধের জোয়ারে ভেসে যাবে নষ্ট ভ্রষ্ট সব বুর্জোয়া রাজনীতির হিসেব নিকেশ! প্রয়োজন আইনি লড়াইও অন্য সব আন্দোলনের পাশাপাশি আদালতে রিট করে আপাতত কাজ বন্ধ করার পদক্ষেপ নেয়া হউক। ( প্রবাসি ) আইনি লড়াইয়ে যেতে হবে আমাদের! ভারতের আইন অনুসারেই বনভূমি ও কৃষিভূমিতে বা এর ১৫ কিলো মিটার ের মধ্যে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন নিষিদ্ধ! এই আইন বাংলাদেশে আছে বলে মনে হয় না, তবু সুন্দরবন ধ্বংসকারী প্রকল্প কেন বাতিল করা হবে না এই মর্মে হাইকোর্টে রিট করা যেতে পারে।

বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক আইনবিদ ও আইনজীবীদের সহায়তা দরকার! প্রতিরোধী কর্মসূচী ১। সুন্দরবন বাঁচাও- রামপাল প্রকল্প বাতিল করো। সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলBy Anha F. Khan and Nomanee Al-Haseeb Friday, April 26, 2013 4:30pm in UTC+07 রাজু ভাষ্কর্য চত্ত্বর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় Click This Link যে সুন্দরবন আমাদেরকে আইলা সিডরের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করেছে, কাঠ দিয়ে, মাছ দিয়্‌ খাদ্য দিয়ে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে, সে সুন্দরবন যে নিজেই এখন বিপন্ন, সেটা স্পষ্ট। সুন্দরবনকে ভালোবেসে অষ্টমাশ্চার্য বানানোর জন্য আমরা লাখ লাখ ভোট দিয়েছি, রাস্তায় নেমে ক্যাম্পেইন করেছি। আজ যখন আমাদের প্রিয় সেই সুন্দরবনের অস্তিত্বটাই বিপন্ন তখন কি আমরা সুন্দরবন বাচানোর জন্য প্রতিবাদ করব না? সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, বানর, ইরাবতি ডলফিন থেকে শুরু করে সুন্দরী বৃক্ষদের মিছিল সমাবেশ করার ক্ষমতা থাকলে এতদিনে তারা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসত, সব কিছু অচল করে দিত।

এদের হয়ে সুন্দরবন রক্ষার দ্বায়িত্ব এখন আমাদেরই। বন্ধুগণ, চুক্তি কিন্তু হয়ে গেছে, সরকার কিন্তু কাজ শুরু করে দিয়েছে: 'বাগানের চারা গাছ রে, ডেকে ডেকে বলি, ডেকে ডেকে বলি, রাস্তায় নেমে আয়। ২। সবুজ বন্ধন- An Human chain for our pride SHUNDARBAN By বাঁচাও সুন্দরবন- বাঁচাও বাংলাদেশের হৃদয় Sunday, April 28, 2013 12:00pm in UTC+07 আমাদের চিরায়ত আন্দোলন চলতে থাকবে। মানবতার স্বপক্ষে।

কিন্তু মনোযোগের কেন্দ্র থেকে সরবে না দেশের সম্পদ চুরি। জানি বিদ্যুৎ আমাদের প্রয়োজন। তাই বলে সুন্দরবনকে ধ্বংস করে কেন! জাতীয় সম্পদের এমন অপব্যবহার কোন কারণে? যে সুন্দরবন বাংলাদেশের হৃদয় সেই বাংলাদেশের হৃদয়কে উপড়ে নেয়ার সুযোগ আমরা দেবোনা। আসুন সবুজ বন্ধন তৈরি করে আমরা নেমে আসি রাস্তায়। যেখানে থাকি, সেখান থেকে।

রাস্তার পারে- ফুটপাতে হাতে সবুজ কিছু নিয়ে- বা সবুজ পোশাক পড়ে। আসুন আজ সুন্দরবনের জন্য নিজেরা আবার এক হই একই দাবী নিয়ে.. Click This Link ৩। প্রতিবাদী সমাবেশ আছে ২৯ এপ্রিল ঃ Monday, April 29, 2013 অপরাজেয় বাংলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের স্বার্থে সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে বিদ্যুৎ প্রকল্প করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী ২৯ এপ্রিল , সোমবার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলায়, সকাল ১২.৩০০ টায়, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের উদ্যোগে ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে আপনি আমন্ত্রিত। https://www.facebook.com/events/564561856899494 পুনশ্চঃ একনজরে ক্ষতি ! ---------------- ১৩০০ মেগার একটি কয়লা চালিত বিদ্দুতকেন্দ্র বছরে সুন্দরবনের বাতাসে কি পরিমান বিষাক্ত রাসায়নিক মিসাবে তার একটি আনুমানিক হিসাবঃ ২৬০০০ টন সালফার ডাই অক্সাইড।

এসিড বৃষ্টির মূল নিয়ামক। ২৬৫২০ নাইট্রোজেন অক্সাইড। এসিড বৃষ্টির অন্যতম এবং রাসায়নিক কুয়াসার মুল নিয়ামক। ৯.৬২ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাই। ১৩০০ টন ক্ষুদ্র কণা ( ক্ষতিকর রাসায়নিক যুক্ত) ।

৫৭২ টন হাইড্রোকার্বন । ১৮৭২ টন কার্বন মন অক্সাইড । ৩২৫ হাজার টন রাসায়নিক সমৃদ্ধ ছায় এবং ৫১৮ হাজার টন রাসায়নিক কাঁদা । ৫৮৫ পাউন্দ আরসেনিক, ২৯৬ পাউন্দ সিসা , ১০ পাউন্দ ক্যাডমিয়াম, এরসাথে থাকবে ইউরেনিয়ামের মত তেজস্ক্রিয় পদার্থ। ।

(চারু তুহিন)  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।