আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চলে গেলেন পল্লীকবির আসমানী

www.facebook.com/mahamudul.hasan.9619 ভ্রমন করা, লেখালেখি করা, বিজ্ঞান ওয়েবসাইট দেখা, অনেক বই ও ম্যাগাজিন পড়ি এবং ওয়েবসাইট প্রোগ্রামিং করতে খুব পছন্দ করি। পল্লীকবি জসীম উদদীনের ‘আসমানী’ কবিতার বাস্তব চরিত্র আসমানী বেগম দীর্ঘদিন হৃদরোগ আর কিডনি জটিলতায় ভুগে মারা গেছেন। শুক্রবার রাত পৌনে ৩টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামে নিজের বাড়িতে মৃত্যু হয় তার। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছরের বেশি। তিনি পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।

পারিবারিক কবরস্থানে আসমানীকে তার স্বামী হাসেম উদ্দিন মণ্ডলের কবরের পাশে দাফন করা হবে। আসমানী গত জুন মাসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অবস্থার আরো অবনতি হলে অশীতিপর এই বৃদ্ধাকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে হৃদরোগ ও কিডনির চিকিৎসা নিয়ে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে গত ৫ অগাস্ট গ্রামের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় আসমানীকে।

জনশ্রুতি আছে, ১৯৪৬ সালে আসমানীর গ্রাম রসুলপুরে বসে তাকে দেখেই জসীমউদ্দীন লিখেছিলেন- আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও। বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি, একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি। একটুখানি হাওয়া দিলেই ঘর নড়বড় করে, তারি তলে আসমানীরা থাকে বছর ভরে। পেটটি ভরে পায় না খেতে, বুকের ক-খান হাড়, সাক্ষী দিছে অনাহারে কদিন গেছে তার। মিষ্টি তাহার মুখটি হতে হাসির প্রদীপ-রাশি থাপড়েতে নিবিয়ে দেছে দারুণ অভাব আসি।

পরনে তার শতেক তালির শতেক ছেঁড়া বাস, সোনালি তার গা বরণের করছে উপহাস। ভোমর-কালো চোখ দুটিতে নাই কৌতুক-হাসি, সেখান দিয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু রাশি রাশি। বাঁশির মতো সুরটি গলায় ক্ষয় হল তাই কেঁদে, হয় নি সুযোগ লয় যে সে-সুর গানের সুরে বেঁধে। আসমানীদের বাড়ির ধারে পদ্ম-পুকুর ভরে ব্যাঙের ছানা শ্যাওলা-পানা কিল্-বিল্-বিল করে। ম্যালেরিয়ার মশক সেথা বিষ গুলিছে জলে, সেই জলেতে রান্না-খাওয়া আসমানীদের চলে।

পেটটি তাহার দুলছে পিলেয়, নিতুই যে জ্বর তার, বৈদ্য ডেকে ওষুধ করে পয়সা নাহি আর। " পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের ‘আসমানী’ কবিতাটি ১৯৪৯ সাল তার ‘এক পয়সার বাঁশি’ কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত হয়। পরে তা অন্তর্ভুক্ত করা হয় স্কুলের পাঠ্য বইয়ে। আসমানী ছিলেন, সাহিত্যের পাতায়, কবিতার পাতায়, আরও থেকে যাবেন বহু কাল।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।