আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অ আ আজকের লেখালেখি - ৬১

কাঁদছো !! কান্নাতে তোমাকে দারুণ দেখায় ! কাল থেকে ঈদের ছুটি শুরু । হঠাৎ এই সময় ছেলেবেলাকার ঈদের ছুটির দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ছে। পুরো একমাস আমাদের স্কুল বন্ধ থাকত এবং আমরা সচারচর এত দীর্ঘ ছুটি কোন সময় পেতাম না। রমজান মাস পুরোটাই আমরা বাড়ীতে কাটাতাম। প্রতিবছর অপেক্ষা করতাম ,"কবে রমজান মাস আসবে " ।

রোজার সময় ছোট ছিলাম বলে রোজা রাখতে পারতাম না তাও জোর করে হলেও খেয়ে খেয়ে রোজা রাখতাম। আমার মা আমার ছোট্ট গ্লাসে আলাদা করে লেবু শরবত দিতেন, আমার ছোট্ট মেলামাইন প্লেটে অনেক ইফতারের খাবার থাকত। আমি খুব অস্থির ছিলাম বলে পা দুলিয়ে দুলিয়ে অপেক্ষা করতাম, আর কিছুক্ষন পর পর মাকে বলতাম, "মা আযান পড়ছে না কেন? "। মা হাসতেন। প্রতিবছর রোজার সময় স্কুল টিচাররা চাপিয়ে দিত একগাদা হোমওয়ার্ক এবং মিড টার্ম পরীক্ষা।

সবসময় গায়ে হাওয়া লাগিয়ে উড়ার জন্যে শেষ মুহূর্তে বই-খাতা নিয়ে পড়তে বসতাম। আর অংক কষতাম সেই লসাগু, গসাগু, বানরের বাঁশ বেয়ে উঠা, সরল অংক নামের কঠিন অংক, ঐকিক নিয়ম, সুদকষা, এ্যালজেবরা, জ্যামিতি। হাজার রকম টেনশনসম্বলিত সংখ্যামালা। সকালে রোজ আতিক স্যারের কাছে গিয়ে গনিত চর্চা, দুপুরে ঘুম চোখে বাংলা ব্যাকারন, ইংরেজী ট্রান্সলেশন, রচনা। বিকালবেলাতে সবকিছু ফেলে দিয়ে ফুটবল মাঠে।

শেষমেষ পা ব্যথ্যা নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে বাড়ী ফেরা। বাড়ী ফিরে ইফতার শেষে আবার সেই পড়ার টেবিল। রোজ রোজ চলতে থাকত এই সহজ নিয়মের সরল দিনগুলি। চাঁদরাত ছিল আমাদের বন্ধু মহলে উৎসবের রাত। বিকাল শেষ হয়ে আসা আকাশে সরু চাঁদের হাসি দেখে আমরা খুশীতে হৈচৈ করতে করতে এলিফেন্ট রোডে ছুটে যেতাম, নতুন জুতা , পাঞ্জাবীর ও নতুন টুপির খোঁজে; কখনো সখনো লিভাইস জিনস প্যান্ট সংগে ক্যাটস আইয়ের শার্ট।

সব্বাই মিলে একগাদা শপিং শেষে দুরপাল্লা রিকশা ভ্রমনে বাড়ী ফেরা। আমাদের চাঁদরাতের আড্ডা চলতো দীর্ঘ রাত অব্দি। একসময় আবার কাল দেখা হবে বলে আমরা সবাই বাড়ী ফিরতাম এবং ঘুমুতে যেতাম আগামী কালের সুন্দর ঈদের স্বপ্ন নিয়ে। ১৩ই আগষ্ট, ২০১২ ------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------- লেখালেখি ৩৬৫ প্রজক্টে ৬১/৩৬৫ পুরাতন লেখালেখিগুলো ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।