আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈদ টার্গেটে মাঠে মৌসুমি অপরাধীরা, পদে পদে বিপদে নগরবাসী

এই পৃথিবীতে ভালো মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে শ্রেষ্ঠ আনন্দের আর কিছুই নেই.. নিউ মার্কেট থেকে রিকশায় করে বাসায় ফিরছিলেন হাজারীবাগের বাসিন্দা রাকিব। ঘড়ির কাঁটায় সময় রাত ৯টা। রাকিবকে বহনকারী রিকশাটি আজিমপুরে ইডেন কলেজের সামনে পৌঁছলে এক যুবক রিকশার গতিরোধ করে বলে, 'আসসালামু আলাইকুম মামা, অনেক দিন দেখা নেই। শরীর স্বাস্থ্য ভালো তো?' রিকশাটি থামতেই বদলে যায় সালাম দেওয়া যুবকের কণ্ঠস্বর। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাকিবের পেটে অস্ত্র ঠেকিয়ে সে বলে, 'কী আছে দ্রুত বের কর, নইলে গুলি করে ভুঁড়ি বের করে দেব।

' একপর্যায়ে রাকিবের মোবাইল ফোনসেট ও এক হাজার ৭০০ টাকা নিয়ে হেঁটেই চলে যায় ওই যুবক। ঘটনাটি গত ৩ আগস্টের। ঈদকে সামনে রেখে এমন নানা কৌশলে অপরাধীরা এখন মাঠে নেমেছে। সম্প্রতি ছিনতাইয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠা এসব চক্রকে বলা হচ্ছে 'সালাম পার্টি'। ঈদে ঘরমুখো মানুষ ও বিপণি বিতানের ক্রেতাদের উদ্দেশ্য করে অপতৎপরতা শুরু করেছে বিভিন্ন ধরনের অপরাধীরা।

অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, টানা পার্টি, থুথু পার্টি, সালাম পার্টি, ছিনতাইকারী, নারী পকেটমার, গাড়ি ছিনতাইকারীরা এখন সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর বিপরীতে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ ও র‌্যাব। ভুক্তভোগী, ব্যবসায়ী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের তৎপরতা বাড়ায় ঈদ মৌসুমের অপরাধীরা এবার কৌশল পাল্টে মাঠে নেমেছে। তাই নগরবাসীকে বিভিন্ন ব্যাপারে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশ ও র‌্যাব কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ১১২টি অজ্ঞান, মলম, থুথু, টানা পার্টি ও পকেটমার গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে বলে একটি গোয়েন্দা রিপোর্টে প্রকাশিত হয়।

এই অপরাধী চক্রের সদস্যরা মগবাজার, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, মহাখালী বাস টার্মিনাল, গাবতলী বাস টার্মিনাল, কল্যাণপুর, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, কমলাপুর রেলস্টেশন, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, রামপুরা, বনানী, কাকলী, উত্তরা, গুলশান, বনানী চেয়ারম্যানবাড়ি, আরামবাগ, নিউ মার্কেট, মতিঝিল, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়াসহ কিছু এলাকায় বিচরণ করে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রমজানের শুরুতেই মৌসুমি অপরাধীদের ধরতে রাজধানীতে সাঁড়াশি অভিযান চালায় পুলিশ ও র‌্যাব। এতে বেশ কিছু তালিকাভুক্ত অপরাধী ধরা পড়ে। ফলে মৌসুমি অপরাধীরা সতর্ক হয়ে উঠেছে। ঈদ বাজারের শেষ মুহূর্তে এবং ঈদে বাড়ি ফেরার ভিড়ে অপরাধীরা অভিনব সব কৌশলে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিয়েছে।

সম্প্রতি পুলিশ ও র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া অজ্ঞান পার্টি এবং ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা এমন কিছু তথ্য দিয়েছে। বেপরোয়া শতাধিক 'সালাম পার্টি' গত ২ আগস্ট রাত সোয়া ৯টার দিকে ইস্কাটন থেকে রিকশা নিয়ে মগবাজারে বাসায় ফিরছিলেন কালের কণ্ঠের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক ফরহাদ মাহমুদ। তাঁর রিকশাটি মগবাজারের রাশমনো হাসপাতালের সামনে গেলে এক যুবক হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে, 'আসসালামু আলাইকুম, ভাই কেমন আছেন?' ফরহাদ মাহমুদ বলেন, 'আপনি কে, আপনাকে তো চিনলাম না?' তখন ওই যুবক বলে, 'আমি আপনার পাশের বাসায় থাকি। ' এরপর হ্যান্ডশেকের ছলে কোমরের কাছে নিয়ে অস্ত্র দেখিয়ে বলে, 'টাকা-পয়সা কী আছে দ্রুত বের করেন। ' ওই সময় আরো দুই যুবক রিকশার দুই পাশে দাঁড়ায়।

সাংবাদিক ফরহাদ কিছুটা দেরি করলে তাঁর ডান পায়ের হাঁটুতে আঘাত করে পকেটে থাকা চার হাজার ৭০০ টাকা ও একটি স্যামসাং টাচ মোবাইল ফোনসেট নিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে ছিনতাইকারীরা। একই দিন ফকিরাপুল মোড় থেকে রিকশায় করে মৌচাক মার্কেটে যাওয়ার পথে রাজারবাগ দুই নম্বর গেটের কাছে যানজটে সালাম পার্টির কবলে পড়েন ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন মাহি। গত ৪ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে একই কায়দায় হাইকোর্টের সামনে থেকে হালিমা নামে এক নারীর স্বর্ণের চেইন, নগদ তিন হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় সালাম পার্টির সদস্যরা। এমনিভাবে প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীতে সালাম পার্টির ছিনতাই চলছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কাকরাইলে কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির সামনে, মালিবাগ রেলগেট এলাকা, রাজারবাগ এক ও দুই নম্বর গেট এলাকা, খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে, মগবাজার ওয়্যারলেস এলাকা, ইস্কাটন রোড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা, হাইকোর্ট এলাকা, আজিমপুর ইডেন কলেজের সামনের রাস্তা, সংসদ ভবন থেকে আগারগাঁও তালতলা, মহাখালী থেকে বনানী, মিরপুর চিড়িয়াখানা রোড, যাত্রাবাড়ী থেকে চিটাগাং রোড, সায়েদাবাদ, খিলক্ষেত থেকে বিমানবন্দর, নাবিস্কো থেকে মগবাজারসহ রাজধানীর শতাধিক পয়েন্টে সক্রিয় সালাম পার্টির সদস্য রয়েছে।

সন্ধ্যার পর এ পার্টির সদস্যরা নির্জন স্থানে রিকশা থামিয়ে অস্ত্রের মুখে পথচারী ও যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নেয়। প্রায় প্রতিদিন এক বা একাধিক ব্যক্তি এই সালাম পার্টির শিকার হয়ে সর্বস্ব হারালেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করে না। সালাম পার্টি ছাড়াও পেশাদার ছিনতাইকারীরা নতুন সব কৌশলও ব্যবহার করছে। গত বুধবার ভুয়া পুলিশ সেজে ছিনতাই করার সময় গুলশান এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে খেলনা পিস্তল, হ্যান্ডকাফ ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।

গুলশান থানার ওসি রফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, গুলশান প্রাইম ব্যাংক থেকে এক লোক টাকা তুলে বের হলে ছয় ছিনতাইকারী এক ব্যক্তিকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। সেখানে মারধর করে ওই ব্যক্তির টাকা কেড়ে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে বসিয়ে রাখে। একই ব্যাংক থেকে আরেক ব্যক্তি টাকা তুলে বের হলে তাকেও পুলিশ পরিচয়ে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করলে চিৎকার করে ওঠে ভুক্তভোগী। সামনে থাকা টহল পুলিশ টিম চিৎকার শুনে ওই গাড়িকে চ্যালেঞ্জ করে। ছিনতাইকারীরা গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় গুলশান এভিনিউ ১১৩ নম্বর রোড থেকে মাইক্রোবাসটিকে আটক করা হয়।

ওই সময় তিনজনকে গ্রেপ্তার করলেও বাকি তিনজন পালিয়ে যায়। সামসুল হক ওরফে বাচ্চু ওরফে সাগর, মিলন হোসেন ও আনোয়ার হোসেন ওরফে নয়ন নামের গ্রেপ্তারকৃত তিনজন জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাই করে আসছে। ঈদের আগে ব্যাংক থেকে টাকা তোলার প্রবণতা বেশি থাকে। পুলিশ পরিচয়ে কোনো ব্যক্তিকে সহজে ঘায়েল করা যায় বলে তারা এ পদ্ধতি বেছে নিয়েছে। ওসি রফিকুল ইসলাম আরো বলেন, এ ঘটনার পর ব্যাংক এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ডাকাতি ও ছিনতাই প্রতিরোধ টিমের (পশ্চিম) সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মিশুক চাকমা বলেন, রমজানে ছিনতাই প্রতিরোধে রাজধানীর সব মার্কেট ও এর আশপাশে ডিবির আলাদা আলাদা টিম কাজ করছে। একজন ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্য ডিউটি করেন। এর বাইরে মোবাইল ডিউটি তো আছেই। এর পরও নির্জন গলিতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

অর্ধশত অজ্ঞান পার্টির টার্গেট ঈদযাত্রী ঈদের আগে রাজধানীতে অজ্ঞান ও মলম পার্টির তৎপরতা বেড়েছে। রমজানের প্রথম ২০ দিনে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছে দুই শতাধিক মানুষ। এসব চক্র নিয়ন্ত্রণে রমজানের আগে থেকেই অভিযান শুরু করে পুলিশ ও র‌্যাব। অভিযানে দেড় শতাধিক অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্য ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে থামেনি অপতৎপরতা।

গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর টার্মিনালগুলোতে কমপক্ষে ৫০টি অজ্ঞান পার্টি চক্র সক্রিয় আছে। সূত্র জানায়, মগবাজার, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, মহাখালী বাস টার্মিনাল, গাবতলী বাস টার্মিনাল, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, কমলাপুর রেলস্টেশন, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, রামপুরা, বনানী, কাকলী, উত্তরা, গুলশান, বনানী চেয়ারম্যানবাড়ি, আরামবাগ দেওয়ানবাগ শরীফের পাশে, ফার্মগেট, আসাদগেট, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, খিলগাঁও ফ্লাইওভার, ফকিরেরপুল বাজার, দৈনিক বাংলা মোড়, মতিঝিল কালভার্ট রোড ও মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বেশি তৎপর। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার নগরীর প্রতিটি থানার অফিসার ইনচার্জদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পর থেকেই পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দারাও ছদ্মবেশে বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করে। পাশাপাশি পকেটমার ও টানা পার্টির সদস্যদের নিয়ন্ত্রণেও কাজ করছে প্রশাসন।

ডিবির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মোখলেছুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, রাজধানীতে তাদের মতো অন্তত ৫০টি গ্রুপ কাজ করছে। তারা টার্মিনাল এলাকায় অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের তৎপরতা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে। এর ভিত্তিতে পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। গত ৫ আগস্ট সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান পার্টির ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তাদের কাছ থেকে নেশাজাতীয় ট্যাবলেট, ওষুধ মেশানো খেজুর ও হালুয়া উদ্ধার করা হয়।

ডিবির সহকারী কমিশনার লুৎফুল কবির চন্দন জানান, নগদ টাকা আছে এমন ব্যক্তিকে টার্গেট করে কৌশলে খেজুর ও জুস খাইয়ে অজ্ঞান করে এ চক্রটি। পরে সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা ও মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। তারা আগে থেকেই বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে ওত পেতে থাকে। ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ ও ব্যবসায়ীরাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। টানা পার্টিও তৎপর গত সোমবার রাত ৯টার দিকে রামপুরা চৌধুরীপাড়ার গৃহিণী আয়শা বেগম ও তাঁর মেয়ে রুপা আক্তার মৌচাক মার্কেট থেকে ঈদের কেনাকাটা করে বাসায় ফিরছিলেন।

মালিবাগ রেলক্রসিং পার হতেই মোটরসাইকেলযোগে আসা তিন ছিনতাইকারী পথরোধ করে দাঁড়িয়ে ছোঁ মেরে দুটি শপিং ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। একই দিনে একইভাবে খিলগাঁওয়ের মোটর পার্টস ব্যবসায়ী শওকত হোসেনের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যায় টানা পার্টি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, আগাম তৎপরতার কারণে এবারের ঈদ বাজারে টানা পার্টি ও পকেটমারের উপদ্রব কমেছে। রাজধানীর নিউ মার্কেটে রমজানের প্রথম দিন থেকেই পুলিশ ও র‌্যাবের অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হয়েছে। সেখানে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩০টি ব্যাগ খোয়ানোর অভিযোগ গেছে বলে জানা গেছে।

নিউ মার্কেট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান বলেন, একেক এলাকায় একেকজন তালিকাভুক্ত অপরাধী এসব অপকর্ম চালায়। এবার রমজানের আগেই শহীদনগর, যাত্রাবাড়ী ও মিরপুরের তিনটি চক্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোর্স নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। ব্যাগ ছোঁ মেরে নেওয়ার সময় তিন কিশোর অপরাধীকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। এক নারীকেও কাপড় চুরির অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়।

সূত্র: কালের কন্ঠ ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।