আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চুলাচুলি-2 [গাঁজার পরিমাণটা এবার জানি কত!!!]

আমার কিছু বলার ছিল স্বপ্নে তার.....সাথে হয় দেখা, বসে বসে ভাবি, তা একা একা.... সে স্বপ্নে আসে তবু, স্বপ্নের চেয়েও মধুর...... তাকে পাবার আশায়, দু' চোখ রাখা দূর বহুদূর....... বুঝতে পেরেছেন পাঠক, কে সে? হ্যাঁ। ঠিক ধরেছেন। সেই মেয়েটি.... সবে মাত্র চোখ লেগেছে। অমনি হাজির!!! ক্লাস শেষে কলেজের খোলা মাঠে লোক-লজ্জার মাথা খেয়ে শুয়ে আছে আমার কোলে মাথা রেখে। চারপাশে ঘুরে ফিরছে ছাত্রছাত্রী ও কলেজ স্টাফরা।

আমি বিলি কেটে তার মাথা হতে উঁকুন আনছি। আমার পড়নে লুঙ্গি ও গলায় গামছা। তার পড়নে বেনারশি শাড়ি। দু’চোখ বন্ধ করে মিষ্টি জর্দা দিয়ে বানানো পানের খিলি চুইনগাম স্টাইলে চিবুচ্ছে। এমন সময় হঠাৎ দেখতে পেলাম মর্জিনা আট-দশটা চেংটি মাইয়া নিয়া এগিয়ে আসছে।

হাতে চাইনিজ ক্ষুর!!! শুরু হলো বরাবরের মত আমার বুকের ধুকধুষকানি। কি করবো বুঝতে না পেরে দিলাম মেয়েটির কাঁধে নাড়া। -আহ্‌... কি করছো! ভাল করে বিলি কেটে উকুঁন আনো। -মমমমমর্জিনা!!!! মর্জিনাআআআআ..... -মানে!!! ততখনে আমাদের চারপাশ ঘিরে ফেলেছে মর্জিনা ও তার চেংটিরা। আমি মেয়েটির পেছনে জড়ো-সড়ো হয়ে বসে আছি।

আমার কলিজা কাঁপছে। মর্জিনা বিকট হাসি হেসে বল্লো, -সেদিন আমার সাথে বেদম চুলাচুলি করেছিস। আজ তোর মাথা না নেড়া করে ছাড়ছি না!!! হোহেহিহেহেহেহে..... মেয়েটি- ওই!!! তুই কেমন মায়ের বেটিরে!!! ‍আট-দশজন নিয়ে এসেছিস!!! বাবাকে বলিস তোর মায়ের কাপড় কাচবার সময় তোকে সাথে নিতে!!! বেস্‌স.... আর কি!!! মর্জিনা তার দল নিয়ে ধরতে যাবে মেয়েটির চুলে। অমনি মর্জিনাকে ধাক্কা দিয়ে তার চেংটিদের উপর ফেলে মুখ নাড়া দিয়ে পানের পিক ছিটিয়ে আমায় নিয়ে ছুটে চললো মেয়েটি। ছুটছিতো ছুটছি।

এরই মাঝে আমার লুঙ্গির কাছা গেলো খুলে। কি আর করা!!! তা নিয়েই দে ছুট। এক হাতে ধরে রেখেছি লুঙ্গি। আর পারছি না। আর একটু হলে হয়তো আমাকে কাঁধে করে ছুটতে হতো মেয়েটিকে।

এমনি করে এসে পৌছোলাম একটি ভাঙ্গা টিনের টয়লেটের সামনে। আমায় টয়লেটে ঠুকিয়ে খিল এটে দিলো মেয়েটি। আমি তখন লুঙ্গিটা কোন রকম ঠিক করে ভাঙ্গা টিনের দেওয়ালের ফাঁক দিয়ে দেখলাম, মেয়েটি শাড়ির আঁচল টেনে কোমড়ে গুঁজে নিয়ে টয়লেটের পাশ থেকে পরে থাকা ঝাটাটি হাতে উঠিয়ে বলছে, -ওই!!! এতোক্ষণ সাথে অবলা পোলামানুষ ছিলো বইলা কিছু করলাম না!!! এইবার আয়!!! মর্জিনার দল একের পর এক ক্ষুর ছুড়ে মারছে। মেয়েটি এপাশ-ওপাশ হয়ে, মাথা নিচু করে, লাফ দিয়ে, একের পর এক ক্ষুর ফিরিয়ে চলছে..... ঝাটার বারিতে সিক্স-ফোর হয়ে কয়েকটি ক্ষুর পাল্টা আঘাত আনলো মর্জিনার দলের উপর। এভাবে শেষ ক্ষুরটি পর্যন্ত নিক্ষেপিত হলো।

যাইহোক। মেয়েটির কোথাও লাগলো না। আমি তখন থরথর করে কাঁপছি। টয়লেটের ভিতরের পরিবেশ তখন মাথায় ছিলো না। এবার মেয়েটি গণঝাটার বাড়ি শুরু করলো।

ফলে মর্জিনা দল ও চুল নিয়ে পালালো। মেয়েটি এবার একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে আমাকে টয়লেট হতে বের করে এনে নিজের হাতে সুন্দর করে লুঙ্গিটা পরিয়ে দিলো। শুরু হলো আরেক দফা গানের সাথে নাচানাচি। নাচশেষে মেয়েটির মটরসাইকেলে করে আমাকে বাড়িতে ড্রপ করে দিয়ে গেল। আমি গুনগুন করতে করতে ঘরে ঠুকছি।

অমন সময় আম্মু সোফায় বসে প্রশ্ন করলো, মেয়েটিকে!!! আমি থথমথ খেয়ে উত্তর করলাম, “না মানে, আমি তাকে ভালবাসি। ” আম্মু অগ্নি চক্ষু ধারণ করে,“কি!!! এতো বড় স্পর্ধা!!!! লজ্জা করে না তোমার মায়ের সামনে দাড়িয়ে ভালবাস‍ার কথা বলতে!!! আজ হতে তোমার বাড়ির বাইরে যাওয়া বন্ধ!!!” দু’তলার ঘরে আম্মু আমায় দড়জা বন্ধ করে রাখলো। রাতে আমাদের কাজের মেয়ে চামেলি খাবার নিয়ে ঘরে ঢুকে, -লন ভাইজান। খাইয়া লন। -“নিয়ে যা তোর খাবার।

” এই বলে চামেলিকে আমি খাবারসহ ধাক্কা মারলাম। সারারাত ঘুম হলো না। হাত কেটে রক্ত বেড় করার সাহস পেলাম না। তাই মুখের লালা দিয়ে সারা ঘর জুড়ে ভালবাসার কথা লিখলাম। গেয়ে ফেললাম একটা বিরহের গান।

পরদিন সকালে মটরসাইকেলের হর্নে ঘুম ভেঙ্গে জালনায় গিয়ে দেখি মেয়েটি! আমি গদগদ হয়ে ছুটে এসে দেখি দরজা লাগানো। শুরু করলাম চিৎকার-চেঁচামেচি ও কান্না। মেয়েটি সব বুঝতে পেরে মন খারাপ করে চলে গেল। এভাবে কিছুদিন পার হলো। এদিকে আমার বিয়ের তোড়-জোড় চলছে।

ভাবছি আত্মহত্যা ছাড়া বুঝি আর কোন পথ নেই। এরমাঝে এই খবর মর্জিনার কানেও পৌছালো। মর্জিনা দলবল নিয়ে এসে বাড়িচুক্তি আমাদের সবাইকে তুলে নিয়ে গেলো। আমাদের নিয়ে গোডাউনে আটকে রাখলো। মর্জিনা এর মাঝে মেয়েটিকে জানিয়ে দিলো, যদি ১ ঘন্টার মাঝে মর্জিনার সামনে এসে নেড়া মাথা না হয় তবে আমার লাশ ফেলে দেবে।

তারপর মিউজিকের তালে ওয়েস্টার্ন ড্রেসে কিছু ছেলে নাচ গান শুরু করলো আর মর্জিনা তার দলসহ তা উপভোগ করতে লাগলো। আমরা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আছি। নাচ শেষে ঘড়ির কাঁটা টিক টিক করে উঠলো। মানে ১ ঘন্টা শেষ। এমন সময় পাশের কাঁচের দেওয়াল ভেঙ্গে মটরসাইকেল নিয়ে ঢুকলো মেয়েটি।

‍আমার দেহে সাহস সঞ্চারিত হলো। মেয়েটির সাথে মৌমাছির পালের মত ঢুকে গেলো আমাদের কলেজের সব ছাত্রী। শুরু হলো নরম-গরম-জটিল-কঠিন চুলাচুলি। এর মাঝে মেয়েটি এসে আমাদের মুক্ত করলো। আমি পুলিশে ফোন দিলাম।

পুলিশ এসে মর্জিনাকে দলসহ চুল ধরে টেনে নিয়ে গেল। মেয়েটিও চলে যেতে লাগলো। আমি পেছন হতে ডাকছি, “প্লিজ যেও না........”, “যেও না প্লিজ....”....... আমার চিৎকারে পশের ঘর হতে আম্মু দৌড়ে এসে আমি শুয়েশুয়ে এমন কাতরাচ্ছি দেখে বললো, “কি হয়েছে!!! এমন করছো কেন? কোন দুঃস্বপ্ন দেখেছো?” আমি মাথা নাড়লাম। আম্মু মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বল্‌লো, “ঘুমাও। ” আমি চোখ বন্ধ করলাম।

কল্পনায় আবার ভেসে এলো মেয়েটির মুখ। তুমি যেখানে, আমি সেখানে, সেকি জাননা.......... একই বাঁধনে, বাঁধা দু'জনে, ছেড়ে যাব না.........  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।