আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলা পত্রিকার এক ঐতিহাসিক সম্পাদকের পরাজয়

আমি একা নই......আরও অনেকে আমার সাথে । পাঠক ভুল বুঝবেন না। বাংলাদেশের পত্রিকার ইতিহাস দুই টাকা দরে যার হাত ধরে শুরু হয়েছিল আমি সেই সম্পাদকের কথা বলছি জনাব নাঈমুল ইসলাম সাহেবের কথা। ২০০৬ সালের আগে যার চেহারার সাথে আমার মত অকাল বাঙাল ছাড়া অনেকেরই পরিচয় ছিল না। পরিচয় বলতে ছিল উনার প্রকাশিত দৈনিক আমাদের সময়ের দুই টাকার এপিসোডের সাথে।

২০০৬ সালে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের সাথে সাথে টক শো মিডিয়ার কল্যাণে যে কয়জন বুদ্ধিজীবির কথা না শুনলে রাতের ঘুম ঠিক মত হতো না তার মধ্যে একজন ছিলেন নাঈমুল ইসলাম। লোকটা কে আমি বাচাল বলব না। তবে খুব বুদ্ধির ঢেকি বলে মনে করতাম। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পড়ে আমি আর উনার টক শো দেখি না। কারণ এত দিনে বুঝে নিয়েছি নাঈমুল ভায়ের কথা গুলো অনেকটা পেট বাচানোর জন্য বলা ছিল।

সামান্য পত্রপত্রিকা বিক্রি করে নিজের অর্থনৈতিক দৈনদশা কাটতো না তাই টক শো খাতায় নাম লিখিয়েছিলেন। খুজ খবর নিলাম আমাদের নাঈমুল ভাইয়া কোন রাজনৈতিক দলের ছত্র ছায়ার আদম ? কেউ বলল কমিউনিস্ট, আবার কেউ বলল মুক্তিযুদ্ধের ছত্র ছায়ার কোনও বিশেষ দল নেই যখন যে পাত্রে যায় তখন সে পাত্রের রঙ ধারণ করে। থাক সে কথা । ২০১১ সালের ২৬ শে অক্টোবর আমি একটা খবর পড়ি বাংলা নিউজ ২৪ ডট কমে খবর টির শিরোনাম ছিল আমাদের সময়ে হামলা: পাল্টাপাল্টি অভিযোগ খবর টি তে লেখা ছিল মিটিং শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর দুপুর ১ টার দিকে চাকরিচ্যুত সিনিয়র রিপোর্টার বিশ্বজিৎ দত্ত ও স্টাফ রিপোর্টার আমিনুল ইসলাম বহিরাগতদের নিয়ে ইস্কাটন গার্ডেন রোডের বোরাক টাওয়ার অফিসে গিয়ে প্রচন্ড হৈ চৈ ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন এবং মারতে উদ্যত হন। এরা সবাই ছিলেন নাঈমুল ইসলাম এর অনুসারী।

তার আগে উক্ত পত্রিকাটি ব্যবসায়ী নূর আলী দখল করে নেয়। এই সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ হয় ২৯ শে সেপ্টেম্বর ২০১১ সালে খবর টির শিরোনাম ছিল আমাদেরসময়ে ১২ কোটি টাকা খাটিয়ে মুনাফা পাইনি: নূর আলী খবর টি তে লেখা ছিল আমরা ভাবতেই পারি না একজন মা তার সন্তানকে হত্যা করতে পারেন। নাঈমুল ইসলাম খান সে কাজটিই করেছেন। আমরা চেয়েছিলাম তিনি আমাদের সঙ্গে থাকুন। একসঙ্গে পত্রিকাটি অনেক দূরে নিয়ে যাই।

কিন্তু তিনি তা হতে দিলেন না। নুর আলী বলেন আমরা যখন পত্রিকাটি কিনি তখন নাঈমুল ইসলাম খানের সঙ্গে তিনটি শর্ত ছিলো। পত্রিকাটির ইমেজ বাড়িয়ে একে টপ র‌্যাংকিং-এ নিয়ে যাওয়া, আর্থিকভাবে লাভে নিয়ে যাওয়া এবং প্রচার সংখ্যা বাড়ানো। কিন্তু, লাভ তো দূরের কথা, শুধু লোকসানই হতে থাকলো। ‘আমরা পত্রিকাটি যে দামে কিনেছি তা বলতেও লজ্জা লাগে।

এই টাকা দিয়ে একটি নতুন কাগজ শুরু করা যেতো। এখন আমার মূল্যায়ন হলো নাঈমুল ইসলাম সারা জীবন জ্ঞান বিলি করে আমাদের জ্ঞানী করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত উনি এই মিথ্যাচার করছেন কেন ? যা আজকের খবরে প্রকাশ হয়েছে ন্যায়বিচার-বঞ্চিত হয়েছি: নাঈমুল শিরোনামে উনি বলেছেন মামলাটির গুরুত্ব ও তাৎপর্যের তুলনায় এর বিচারকাজটি গতানুগতিক হয়েছে। যতটা গভীরে বিশ্লেষণ করে এর রায় হতে পারতো তা করা সম্ভব হয়নি। আর সে কারণেই আমি ন্যায়বিচার-বঞ্চিত হয়েছি।

পত্রিকার খবর অনুসারে যা জানতে পেরেছি একটি সমঝোতাচুক্তির বিপরীতে আমাদের সময়ের মূল প্রতিষ্ঠান নতুন ভিশনের সকল শেয়ারও তিনি (নাঈমুল) নিজেই হস্তান্তর করেন। এসব কিছুর বিনিময়ে নতুন যৌথ মালিকানাধীন উদ্যোগটির কাছ থেকে ২৯ কোটি টাকা নেন নাঈমুল। কিন্তু মালিকানা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে তার গড়িমসির কারণেই বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তাহলে ভন্ডটা কে এইখানে ? আসলে অর্থ যে মানুষ কে এতটা নিচে পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে নাঈমুল ইসলাম হলো তার একটি জলন্ত প্রমাণ। এখন নাঈমুল কী করবেন ? টিভিতে টক শো বেচবেন ? নাকি নতুন কোনও চাকরি করবেন ?  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.