আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈদে ঘরমুখো যাত্রীর খোঁজে বিআরটিসি

আহমেদ জামাল: ঈদে যাত্রী খুঁজে পাচ্ছে না বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন বিআরটিসি। ট্রেন, লঞ্চ, স্টিমার ও বেসরকারি বাসের অগ্রিম টিকিটের জন্য যখন ঘরমুখো মানুষ যুদ্ধ করছে, তখন বিআরটিসি’র বিভিন্ন কাউন্টারে চলছে নীরবতা। কাউন্টারের সামনে ঈদের অগ্রিম স্পেশাল টিকিট বিক্রির ঘোষণা দিয়ে বসে আছে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থাটির কর্মীরা। কিন্তু যাত্রীর দেখা মিলছে না। গতকাল রাজধানীর কমলাপুর, মতিঝিল, কল্যাণপুর, কোনাপাড়া ঘুরে দেখা গেছে এমন অবিশ্বাস্য দৃশ্য।

সংস্থার পরিচালক (টেকনিক্যাল) কর্নেল আবদুল্লাহিল করিম বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন। তবে প্রচারণার অভাবে বিআরটিসি’র বিষয়ে যাত্রীদের এমন উদাসীনতা হতে পারে বলেও ধারণা করেন তিনি। বিআরটিসি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ঈদ উপলক্ষে দেশের উত্তর ও পূর্ব-দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে ২৪০টি বাস চলাচল করবে। এর মধ্যে ৫৫টি বাস ডবল ডেকার। ঈদের আগে ৩ দিন ও পরে ৩ দিনের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থাটি অগ্রিম স্পেশাল টিকিট ছাড়ার ঘোষণা দেয় গতকাল।

কিন্তু বিভিন্ন কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেল অবাক করা দৃশ্য। কাউন্টার খুলে বিআরটিসি’র কর্মীরা বসে থাকলেও যাত্রীদের নেই কোন আনাগোনা। চেয়ারে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন টিকিট কাউন্টারের কর্মীরা। তবে বেলা সাড়ে ১২টায় কমলাপুর কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেল টিকিট ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ নেই। ঈদের অগ্রিম স্পেশাল টিকিট বিক্রির ঘোষণা সংবলিত কাগজ শোভা পাচ্ছে কাউন্টারের সামনের গ্লাসে।

বুকিং ক্লার্ক অন্য কাজে চলে গেছেন বলে জানান পাশের কাউন্টারের কর্মী। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এখানকার ট্রাফিক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, বিআরটিসি’র অগ্রিম টিকিটের বিষয়ে মানুষ টেলিফোনসহ নানাভাবে খোঁজ নিচ্ছে। তবে এখনও আসতে শুরু করেনি। ২-১ দিনের মধ্যে আশা করি পুরোদমে টিকিট বিক্রি শুরু হবে।

প্রায় একই রকম দৃশ্য দেখা গেছে, বিআরটিসি’র কল্যাণপুর কাউন্টারে। গতকাল সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই কাউন্টারে ১২টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-রংপুরের ১১টি এবং ঢাকা রাজশাহীর ১টি। দুপুরের পর দেখা যায় কাউন্টারম্যান ফেরদৌস অলস সময় কাটাচ্ছেন। তিনি জানান, রাজশাহীর টিকিট ৩৫০ এবং রংপুরের টিকিট ৪০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

সারা বছর আমরা এখান থেকে টিকিট বিক্রি করি না। ঈদ এলেই কেবল ঈদ স্পেশাল টিকিট বিক্রি করি। অনেকেই জানেন না যে, এখান থেকে টিকিটি বিক্রি করা হয়। এ কারণে যাত্রী নেই বললেই চলে। তিনি জানান, যে কয়টি টিকিট বিক্রি হয়েছে সবই সকালের দিকে।

দুপুরের পর মাত্র ১টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। এখানকার ট্রাফিক অফিসার নূরে আজম জানান, ঈদ উপলক্ষে আমাদের পর্যাপ্ত গাড়ি রয়েছে। পুরাতন ৬০টি গাড়ির পাশাপাশি নতুন ২৯টি গাড়ি আনা হয়েছে। সবগুলো বাসই দ্বিতল। প্রত্যেক বাসে ৭৪টি করে আসন রয়েছে।

রাজশাহীর যাত্রী ইমন জানান, বাসের টিকিটের জন্যে গাবতলী ও কল্যাণপুরের কয়েকটি কাউন্টার ঘুরেছি। ১৮ই আগস্টের টিকিট পাইনি। পরে এখানে এসে সহজেই বিআরটিসি বাসের টিকিট কিনে নিলাম। রাজধানীর অন্য কাউন্টারগুলোতেও একই অবস্থা বলে জানা গেছে। এদিকে ঈদ স্পেশাল টিকিট বিক্রির বিষয়ে শিগগিরই রাজধানীর বিভিন্ন বাস কাউন্টারে ব্যানার টাঙানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ।

উদ্দেশ্য সংস্থার ঈদ স্পেশাল সার্ভিসের বিষয়ে যাত্রীদের আকৃষ্ট করা। এ ব্যাপারে বিআরটিসি’র পরিচালক কর্নেল আবদুল্লাহিল করিম বলেন, সড়কপথে নানা ঝক্কি ঝামেলার কারণে ঘরমুখো মানুষ সবার আগে রেলপথকে প্রধান্য দেয়। এর পর মানুষের পছন্দের তালিকায় থাকে গাবতলী-সায়েদাবাদকেন্দ্রিক বেসরকারি কোচ সার্ভিস। এসব পরিবহন থেকে টিকিট পেতে ব্যর্থ হলে মানুষ বিআরটিসি’র দিকে আসে। এছাড়া কিছু সংখ্যক যাত্রী ট্রেনের ছাদে, লঞ্চের ডেকে ওভার লোডিং হয়ে ঝুলে বাড়ি যেতে হয়তো বা আনন্দ উপভোগ করে বলে মন্তব্য করেন বিআরটিসি’র এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন ট্রেন, বাস ও লঞ্চের ১৫, ১৬, ১৭ই আগস্টের টিকিটের জন্য মানুষ যেন পাগলপ্রায়। অথচ ওইসব তারিখের পর্যাপ্ত টিকিট বিআরটিসি’র আছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।