আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাছ রপ্তানী বন্ধ তবুও ইলিশের আকাল

সরকার রমজান মাসে চিংড়ি ছাড়া সব ধরনের মাছ রপ্তানী বন্ধ করেছেন তারপরও মাছের আকাল কমছে না। বিশেষ করে ইলিশ মাছ এখনো ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। এর প্রধান কারণ চোরাপথে প্রচুর ইলিশ চলে যাচ্ছে ভারতীয় বাজারে। বিশেষ করে সাগর উপকুলে যেখানে ইলিশ ধরা হয় তার আশে পাশেই রয়েছে অসংখ্য ভারতীয় ট্রলার যারা ছোট জেলেদের কাছ থেকে ইলিশ কিনে ভারতে পাচার করে দেয়। ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে ইলিশ মৌসুমে আমি নিজে দেখেছি কিভাবে বাংলাদেশের ইলিশ ভারতে চলে যায়।

এবার এর পরিমাণ আরো বেড়েছে। বিশেষত সরকার ইলিশ বা মাছ রপ্তানী নিষিদ্ধ করার পরই ভারতের ট্রলাররা নতুন করে ইলিশ সংগ্রহ শুরু করে। বাংলাদেশ ভারতের জলসীমায় সারি সারি নৌকা যেন জাল পেতে রেখেছে। তাদের কাছে বাংলাদেশের জেলেরা ইলিশ দিয়েই আবার চলে যায় মাছ ধরতে। ভারতীয় ট্রলারে ইলিশ সরবরাহ করতে গিয়ে জেলেরা যে সুবিধা পায় তা হলো: ১. তুলনামূলক ভাবে বেশি দামে ইলিশ বিক্রী করতে পারে।

দেশীয় মহাজনরা সেই দাম সাধারণ জেলেদের দেয় না। ২. নগদ টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু দেশীয় মহাজনরা আগেই টাকা দিয়ে জেলেদের আটকে রাখে। যে কারণে মাছ ধরে নগদ টাকার বড়টাই ঋণের টাকা শোধ করতে হয়। ৩. মাছ ধরে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নিকটস্থ আড়তে যেতে জলদস্যুদের কবলে পড়ার আশংকা থাকে।

সেক্ষেত্রে ভারতীয় ট্রলারে মাছ বিক্রী করাটা নিরাপদ। অথচ এই ইলিশ সংরক্ষণের জন্য সরকার শত শত কোটি টাকা খরচ করছে। জাটকা বন্ধ করার জন্য সরকার জেলেদের ভর্তুকী দিচ্ছে। শত শত মিটার কারেণ্ট জাল পোড়ানো হচ্ছে। অথচ এই মাছ দেশের মানুষের ঘরে আসছে না।

সমস্ত প্রণোদনার সুফল চলে যাচ্ছে ভারতীয়দের হাতে। রপ্তাণী হলে কিছু বৈদেশিক মুদ্রা আসতো এখন তাও আসছে না। ইলিশকে বাংলাদেশের মানুষের পাতে দিতে হলে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। প্রথমত নৌটহল বাড়াতে হবে যাতে ভারতীয় ট্রলাররা মাছ নিতে না পারে এবং জেলেরা যাতে নিরাপদে বাজারে মাছ নিয়ে আসতে পারে। মহাজনদের আধিপত্য খর্ব করতে হবে যাতে জেলেরা ন্যায্য মূল্য পায় এবং ক্রেতারা সঙ্গত মূল্যে মাছ ক্রয় করতে পারে।

জেলেদের সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে যাতে তারা জাল ও নৌকার মালিক হতে পারে এবং প্রতিযোগিতা করে আহরিত মাছ বিক্রী করতে পারে। মাছ ধরা থেকে বাজারে আসতে প্রায় ১১/১২ বার হাত বদল হয়। এর ফলে জেলে যে মাছ বিক্রী করছে ২০ টাকা সেই মাছ ঢাকার বাজারে ২০০/৩০০ টাকা। মধ্যস্থ কারবারীদের আধিপত্য, রপ্তানীকারকদের মাছ কিনে স্টক করে রাখা এর প্রধান কারণ। ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ।

ইলিশের জন্য আমাদের অবদান সবচেয়ে বেশি। আমাদের জেলেরাই ইলিশ সংরক্ষণ করে। আমাদের সরকারই এর জন্য হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে। অতএব দেশের মানুষকে বঞ্চিত করা যাবে না কোনো ভাবেই। এখনই প্রয়োজন জনমতের এবং সচেতনতার।

সমন্বিত উদ্যোগের। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।