আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চুলাচুলি [কতটা গাঁজা খেলে এমন লেখা লিখা যায়???]

আমার কিছু বলার ছিল বেশ কিছুদিন পর কলেজে গেলাম। শুনলাম নতুন একটা মেয়ে নাকি ট্রান্সফার হয়ে আমাদের কলেজে এ্যাডমিশন নিয়েছে। যাইহোক, সময়ের ফেরে দেখা হলো মেয়েটির সাথে। কিন্তু, একবার নজর দিতে পারলাম কি না পারলাম, অমনি চোখ মাটিতে নামিয়ে ফেললাম। ঈদের চাঁদ দেখার মত আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

কালক্ষেপ না করে সেখান হতে প্রস্থান ঘটালাম। কোন রকমে সেদিন কলেজ ছেড়ে বাড়ি এলাম। তারপর এক সপ্তাহ আর কলেজে গেলাম না। তারপর কলেজে গিয়ে আবার সেই একই অবস্থা। কিন্তু, এবার একেবারে সরাসরি কাছে এসে আমাকে প্রশ্ন করলো, “এক্স কিউজ মি।

তোমার নাম কি? বাসা কেথায়?” আমতা-আমতা করে বল্লাম, “না, ইয়ে, মানে, পিওর। বাসা ফেইকবুক”। -“ও! আই সি! আমার বাসা টুইটার। ওকে লিটিল বয়। নাইস টু মিট ইউ।

সি ইউ লেটার। ” বলে চলে গেল। আমি ফেলফেল করে তার প্রস্থান পথে তাকিয়ে রইলাম। পরদিন সকালে ঘুম হতে উঠেই দেখি মোবাইলে একটা মেসেজ। “আজ ক্লাস শেষে দেখা করবা।

নাইলে কিন্তু খবর আছে!” চোখ কঁচলালাম বেশ কিছুটা সময়। অবশেষে দেখলাম, না, ঠিকই এটা একট‍া মেসেজ। কিন্তু নাম্বারটা আননোন! বুকের ভেতরটা ধুকধুক করতে শুরু করল। ছুটে গেলাম টিবির সামনে। গিয়ে দেখি বাংলা সিনেমা চলছে।

একটা ফাইট সিন। দেখতে দেখতে ভিতরে অনেকটা সাহস সঞ্চার হল। নিজেকে অনেকটা নায়ক নায়ক মনে হচ্ছিল। পরক্ষণেই মোবাইলটা হাতে নিয়ে মেসেজ আসা নাম্বারটিতে রিং করলাম। রিং ধরতেই হেব্বি মুড নিয়ে বল্লাম, “হ্যালো”!!! কিন্তু পরক্ষনেই সব ঠান্ডা হয়ে গেল যখন অপর প্রান্ত হতে উত্তর এল, “ওই চেংটা! মেসেজ পাও নাই? এখনো কলেজে আসো না কেন?” আবার শুরু হল বুকের ধুকধুকনি।

সব কেমন ঠান্ডা হয়ে আসছে। বসার স্থানটায় একটু হাত দিয়ে দেখলাম ভিজে যায়নিতো!!! না, ভিজে নাই। ভাবছি, যে মেয়ে!!! এখন যদি তার কথা মত কলেজে না যাই তবে যদি মারে!!! তাই আর সাত-পাঁচ না ভেবে রিক্সা নিয়ে কলেজের দিকে ছুটলাম। কিন্তু কলেজে পৌঁছে ভাড়া মেটাতেই দেখি একদল মেয়ে আমার দিকে ছুটে আসছে। তাড়াতাড়ি রিক্সার পশ্চাদদেশে গিয়ে লুকালাম।

অমনি দেখি অপর প্রান্ত হতে আরো একদল ছাত্রীর আগমন ঘটছে। বুঝতে আর দেড়ী হলো না। সখিনা ও মর্জিনা দুই গ্রুপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হবে। দুইজনই চরম ডেঞ্জারস!!! গতবার এদের সংঘর্ষের মুখে পতিত হয়ে এক ছাত্র পৌরুসত্ব হড়িয়েছে। এই মর্জিনা আমাকে বেশ কয়েকবার প্রেম নিবেদন করেছে।

সাড়া না দেওয়ায় আমাকে রোজই এ্যাডাম টিজিং করতো। পরে এক সিনিয়র বড় বোনের সহায়তায় মুক্তি পেয়েছি। কিন্তু তবু আমার দিক হতে মর্জিনার নেজর সড়েনি। যাইহোক, আজ কি হবে কে জানে! দু’গ্রুপ ক্রমশ্য একে অপরের দিকে এগিয়ে আসছে। বুকের ধুকধুক‍ানি বাড়ছে।

শুরু হলো সংর্ঘষ। সে কি সুকঠিন চুলাচুলি!!! হঠাৎ মর্জিনার নজর পড়লো আমার দিকে। আর যাই কই!!! খাইছি তোরে বলে গলা টিপে ধরার জন্যে এগিয়ে এলো আমার দিকে। আমার প্রাণ যায় যায়.... আমার আর মর্জিনার মাঝে সাড়ে তিন হাত গ্যাপ। অমনি কলেজের ছাদ হতে ঝাঁপ দিয়ে আমার আর মর্জিনার মাঝে এসে উপস্থিত হল সেই মেয়েটি।

শুরু হল আরেক দফা চরম-গরম-কঠিন চুলাচুলি। প্রায় আধা ঘন্টা চুলাচুলির পর অবশিষ্ট চুল নিয়ে সেখান হতে পালালো মর্জিনা। মর্জিনার সাথে চুলাচুলি করতে গিয়ে মেয়েটির কনিষ্টা আঙ্গুল হতে রক্ত ঝঢ়ছে। আমি তৎক্ষনাত আমার শার্টের এক পার্শ্ব ছিড়ে তার আঙ্গুল বেঁধে দিলামলাম। মেয়েটি আমার দিকে মায়া ভরা চোখে তাকালো।

তারপর তার সাথে কল্পনায় একটা লাভ সংয়ের সাথে নাচলাম। এভাবে শুরু হল প্রেম পর্ব। এবার নেক্সট পর্ব। মনে মেয়েটির ও আমার ফেমিলির প্রেম মেনে না নেবার পর্ব। এই পর্বে পাশ করতে পারলেই প্রেম সফল।

কিন্তু ভাগ্যের সেকি নির্মম পরিহাস!!! অমন সময় মোবাইলের সাউন্ডে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। অপর প্রান্ত হতে ফারজানার কন্ঠে ভেসে এলো, “সুপ্রভাত। লাভ ইউ ডিয়ার!!!”  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.