আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অজয় রায়ের তীরের অন্বেষায় ....

সব ভাল কথাই ভাল নয়........... ৩রা আগষ্ট শুক্রবার সকাল ১০.০০ ঘটিকা। পাবলিক লাইব্রেরীর সেমিনার কক্ষে উপস্থিত হলাম। এর আগের দিন আমার এক রাজনৈতিক সহকর্মী আমাকে ফোন করে জানায় যে, অজয় দা’র একটি বইয়ের মোড়ক উন্মেচন হবে, থাকতে হবে। সকাল ১০.৩০ ঘটিকায় একে একে সবাই অনুষ্ঠানে আসতে থাকেন। একজন গুনী ব্যক্তি, যার মাঝে এখনো জীবন্ত বৈষম্যহীন সমাজের নেশা।

তার এই অনুষ্ঠানে আরো অনেক গুনী ব্যক্তিদের আগমন হচ্ছে, যারা শুনেছেন যে আজ অজয় দা’র বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হবে, তারাই ছুটে চলে আসছে মিলনায়তনে। অজয় দা’কে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদ বিরোধী মঞ্চের বিভিন্ন কর্মসূচীর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে। আমি মনে করি তিনি এই সংগঠনের একজন স্বার্থক সমন্বয়ক। ব্যক্তি জীবনেও তিনি অসাধারণ একটি মানুষ। যাকে কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে।

সমাজ, রাষ্ট্র তথা জনগণের কথা ভাবতে এখনো নিবিঢ় ভাবে তাকে জাগিয়ে তুলে। আজন্ম এক সমাজতন্ত্রমনা এই মানুষটিকে বৈষম্যহীন এক রাষ্ট্রের স্বপ্ন প্রতিনিয়ত তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। আর তার এই ভাবনার কেন্দ্রে অতীতের প্রকৃত গণকল্যাণমুখী শক্তিগুলি ভেঙ্গে যাওয়ার সূক্ষ কারণগুলো তিনি খুঁজতে চেয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় তার তীরে অন্বেষণে: স্বাধীন বাংলাদেশ নামক ২য় খন্ডের বইটিতে তার জীবনের অভিজ্ঞতাগুলো খুব দৃঢ় ভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন। সোভিয়েত রাষ্ট্র কিভাবে বিপর্যস্ত হলো, কেন হলো, তার গভীরের তাৎপর্য কি? কেউ কখনো গভীরে ভাবেনি।

আজ বহুদিন পর যখন গণতন্ত্রের যুগেও প্রকৃত গণতন্ত্র চর্যা ব্যহত হচ্ছে তখন সেই সমাজতন্ত্র কিংবা কমিউনিষ্টবাদীদের নতুন করে ভাবিয়ে তোলাই স্বাভাবিক। অজয় রায় এই ভাবনাগুলোকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করেছেন। কারন তিনিও অনেক প্রশ্নের উত্তর পাঠকের হাতে ছেড়ে চিয়েছেন। আর তাই আলোচনার এক পর্যায়ে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেই দিয়েছেন, লেখক নিজেকে ভাবিয়ে তোলার সাথে সাথে পাঠককেও ভাবিয়ে তুলতে চেয়েছেন। এটাও ভাল লক্ষণ, যার সুন্দর উত্তর হয়ত তার কাছে নেই কিন্তু পাঠক তার এই প্রশ্নের ফলে নিজেকে ভাবিয়ে তুলো আরো গ্রহনযোগ্য কোন কারণ খুঁজে বের করবেন।

অজয় রায় বইটির নাম দেন “তীরের অন্বেষায়: স্বাধীন বাংলাদেশ” অনেকেই আবার বইয়ের নামের সাথে আলোচনার স্বার্থকতা খুঁজেছেন। আর নামের সার্থকতা নিয়েও বলেছেন, আরেকটু ভিন্ন ভাবে নামটা হলে ভাল হতো। তাতে বইয়ের বিষয়বস্তুটা একটা বিস্তৃত হতো না, কারণ স্বাধীন বাংলাদেশ বলতে বিশাল একটি বিষয়। যাই হোক সেদিনের সেই অনুষ্ঠানে আমি সবার আলোচনা খুব মনযোগ দিয়ে শুনছিলাম। আমি এখনো সেই যোগ্যতা অর্জন করিনি যে তার চিন্তাধারার সমালোচনা করব।

তবে আমি মনে করি, কালকে অতিক্রম করে বুঝতে পারি প্রকৃতপক্ষে কোন কালটা সঠিক ছিল। আবার অনেক সময় সেই কালও সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না। যদি সমাজতন্ত্রের ভাবনা সত্যিকার কল্যাণের জন্য হয়, তাহলে কেন এই সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে গেল। তাতে কি কোন দূর্বৃত্তায়নের প্রতিচ্ছায়া ছিল। কিংবা বিশ্ব নেতাদের ভাবিয়ে দিয়েছিল যে, সমাজতন্ত্রে বৈষম্য সম্ভব নয়, যা গণতন্ত্রের আড়ালে সম্ভব।

এই গণতন্ত্র আর সমাজতন্ত্রের দৃশ্যত শক্তি দিয়েই কি অদৃশ্য কামনাগুলি প্রতিষ্ঠার জন্য কোন একটা মহল উঠেপড়ে লেগেছিল? তাহলে কি সোভিয়েত ভাঙ্গার পিছনে তৃতীয় কোন হাত ছিল? তাকলে তারা কারা এবং কেন সোভিয়েত রাষ্ট্রের বিস্তৃতি ঘটেনি? কিছু প্রশ্ন আর গঠন মূলক আলোচনার মাধ্যমে শ্রী অজয় রায় তার বইটির সমাপ্তি টেনেছেন। বইটি কখন কোন আলোক রেখা ফুটায় বলা যায় না। এমনও হতে পারে এই আলোচনা থেকেই এক সময় ইতিহাসের অনেক গভীরের কথা বেরিয়ে আসবে। প্রকাশনা অনুষ্ঠান ড. নূর মোহাম্মদ তালুকদার এর পরিচালনায় সভাপতিত্ব করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। আলোচনা করেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, রাশেদ খান মেনন এম.পি, নুহ-উল-আলম লেনিন এবং প্রাণবন্ত সমালোচনা করেন অধ্যাপক এম এম আকাশ।

তাছাড়াও দর্শক সাড়িতে ছিলেন বিভিন্ন গুনীজন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।