আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডাক্তার,ঔষধ কোম্পানী,ফার্মেসী ও ডিব্বা কোম্পানীর গ্যাড়াকলে রোগীর ভোগান্তী।

ভাবুক পল্টুর জ্বর কমছেই না। তিন চারদিন হল সে কাছের ফার্মেসীর বুড়া চাচার কাছ থেকে চার পিছ এমক্সিসিলিন আর চারটা নাপা নিয়ে খেয়েছে। কোন কাজ হয়নাই বরং জ্বর বেশ বেড়ে গেছে। মনে হয় এইবার ডাক্তার ছাড়া কাজ হবে না। রাতে পল্টুর জ্বর আরো বাড়ল।

সে সারারাত নির্ঘুম ছটফট করে কাটিয়ে দিল। সকালে সে গেল অত্যাধূনিক নবনির্মিত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে। ত্রিশ টাকা দিয়ে টিকিটি কেটে ডাক্তার দেখালো। ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে পল্টু গেল শহরের সবচেয়ে বড় এবং চালু ফার্মেসীতে। সেখানে সব ঔষধই পাওয়া যায়।

পল্টু ও দোকান স্টাফের কথোপকোথন: পল্টু : সম্পূর্ণ প্রেসক্রিপশানে কত আসে দেখেনতো। দোকানী : (হিসাব করে) মোট ১২০০/= টাকা,এর মধ্যে ৫% ডিসকাউন্ট পাবেন। পল্টু : ৫% ডিসকাউন্ট কেন? দোকানী : আমরা ন্যায্য মূল্য। পল্টু : তাহলে অন্য ফার্মেসীগুলা কি অন্যায্য মূল্য? দোকানী : ঔষধ নিবেন কি না সেটা বলেন। পল্টুর পকেটে মাত্র ১৫০/=টাকা আছে তাই সে বলল আমাকে ১০০/= টাকার ওষুধ দেন।

দোকানী : দুইটা ডিব্বার দামই তো ৮০০/= টাকা। পল্টু ঔষধ না কিনে ফার্মেসী থেকে বেরিয়ে এল এবং পরদিন ঔষধ সেবন না করেই সে সম্পুর্ণ সুস্থ হয়ে গেল। এখন আসা যাক মূল বিষয়ে : ১/পল্টুর সামান্য ভাইরাল ফিবার হয়েছিল। ২/সে এন্টিবায়োটিক সম্পূর্ণ কোর্স না খাওয়ায় পরবর্তীতে এই ঔষধ তার ক্ষেত্রে আর কার্যকরী হবেনা। ৩/যখন সে ডাক্তারের কাছে গেল তখন ডাক্তার তাকে সাধারন ওষুধের সাথে দুইটা ডিব্বা লিখলেন যার দামই ৮০০/= টাকা।

অর্থাৎ তার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে এবং অপ্রয়োজনীয়। বর্তমানে বাংলাদেশে অলিতে গলিতে গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য ফার্মেসী যেগুলোর অধিকাংশের ড্রাগ লাইসেন্স নাই। ফার্মেসীর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ওষুধ কোম্পানীর সংখ্যাও যারা তৈরি করছে নিম্নমানের ঔষধ এবং সরবরাহ করছে মফস্বল এবং গলি ঘুপছিতে গজিয়ে উঠা অনুমোদনহীন ফার্মেসীগুলোতে। অধিক মূনাফার লোভে ছোট ব্যাবসায়ীরা এসব নকল ওষুধ বিক্রি করছে অসচেতন মানুষের কাছে। এছাড়াও বর্তমানে কনটেইনারে আসা চায়নিজ নিম্নমানের ডায়েটারী সাপ্লিমেন্ট,ক্যালসিয়াম এবং মাল্টিভিটামিন ক্যাপসুল ইত্যাদি একই ওষুধ বিভিন্ন নামে বাজারে ছাড়ছে বিভিন্ন ডিসট্রিবিউশন।

সল্পমূল্যের কিন্তু চড়া দামের এসব ক্যাপসুল ওষুধ ব্যাবসায়ীদের কাছে ডিব্বা কম্পেনী নামে পরিচিত। এসব ডিব্বা কম্পেনীর কোন সীমা পরিসীমা নাই। প্রতিদিনই এক দুইটা নতুন ডিব্বা কম্পেনী উদয় হচেছ। এরা ডাক্তারদের চড়া কমিশন দেয় বিধায় ডাক্তাররাও প্রতি প্রেসক্রিপশনে দুই একটা করে ডিব্বা কম্পেনীর ওষুধ লিখছে। ফলে নিম্ন আয়ের রোগীদের পোহাতে হচ্ছে চরম বিড়ম্বনা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।