আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ ৩রা রমাদ্বান শরীফ। সাইয়্যিদাতুন নিসায়িল আলামিন, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পৃথিবীতে আগমনের দিন

সাইয়্যিদাতুন নিসায়িল আলামিন, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক বিছাল শরীফ হিজরী ১১ সনে ৩রা রমাদ্বান শরীফ-এ সোমবার বাদ আছর । এ উপলক্ষে উনার মুবারক জীবনী থেকে সংক্ষিপ্ত অংশ উপস্থাপন করা হলো। পরিচিতি: বিশ্বের সকল মহিলার সাইয়্যিদ, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমাম হুসাইন আলাহিস সালাম উনাদের সম্মানিতা মাতা, হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অত্যন্ত স্নেহময়ী কন্যা এবং উনার সর্বপ্রথম আহলিয়া হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম উনার চার কন্যার একজন। তিনি রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বকনিষ্ঠা কন্যা ছিলেন। উনার পবিত্র মুখমণ্ডল মুবারকের দীপ্তি ও লাবণ্যের কারণে উনাকে ‘‘আয যাহরা’’ বলা হত।

বিলাদত শরীফ: অনেকের মতে তিনি নুবুওওয়াত প্রকাশের ৩ বৎসর পূর্বে ২০ জুমাদাল উখরা শুক্রবার ছুবহে ছাদিকের সময় বিলাদত শরীফ লাভ করেন। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বয়স মুবারক ছিল ৩৭ বৎসর। যেমনিভাবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোন পুত্র সন্তানই জীবিত থাকেননি, তদ্রূপ উনার অপরাপর কন্যাদের থেকে উনার বংশীয় ধারা বন্ধ হয়ে যায়। কেবল হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম হতে উনার বংশধারা চালু রয়েছে। শৈশব অবস্থায়: তিনি হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম ও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোলে অত্যন্ত স্নেহ ও আদরে লালিত পালিত হন।

নুবুওওয়াত প্রকাশের ৭ম বছরে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম, হযরত ফাতিমা বিনতে আসাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা, হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও বনু হাশিমের কয়েক ব্যক্তি শিয়াবে আবী তালিব নামে এক গিরিপথে অবস্থান গ্রহণ করেন। অল্প বয়স্ক হয়েও ওইস্থানে অবরুদ্ধ অবস্থায় অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্টে মাতা-পিতা এবং বংশের অন্যদের সঙ্গে অবস্থান করে জিহাদের কঠিন পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেন। কাফিরদের অবরোধ শেষ হলে নুবুওওয়াত প্রকাশের ১০ম বর্ষে পবিত্র রমযান মাসে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার আম্মা বিছাল শরীফ লাভ করেন, হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম। চাচা আবু তালিবও ইতোমধ্যে ইন্তিকাল করে। এমতাবস্থায় হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মাতা হযরত ফাতিমা বিনতে আসাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উপরোক্ত মুরব্বীদের শূন্যস্থান পূরণ করেন।

হযরত ফাতিমা বিনতে আসাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা চল্লিশ বৎসর পূর্বে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শৈশবে লালন পালন করেছিলেন। এখন তিনি হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার দেখাশুনায় আত্মনিয়োগ করলেন। সাত বছর বয়স মুবারক হতে তিনি গৃহের কাজ কর্ম এবং পিতার খিদমত করতে লাগলেন এবং হযরত ফাতিমা বিনতে আসাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার কাজেও সাহায্য সহযোগিতা করতেন। তিনি উনার সম্মানিতা মাতার স্থলাভিষিক্তও ছিলেন। তাই রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত এবং বিভিন্ন কাজে সাহায্য করতেন।

হাদীছ শরীফ-এ ও ইতিহাসে উল্লেখ আছে যে, একদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মসজিদুল হারামে নামায পড়ছিলেন। তখন আবু জেহেল উনাকে ঠাট্টা বিদ্রূপ করতে লাগল এবং এক পর্যায়ে সে একজনকে বলল: অমুক স্থান হতে উটের নাড়িভুঁড়ি নিয়ে এসো। নাড়িভুঁড়ি আনা হলে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সিজদায় গেলেন, তখন আবু জেহেল উনার পিঠের উপর রেখে দিল। হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম সংবাদ পেয়ে অল্প বয়স্কা হওয়া সত্ত্বেও বাড়ি হতে মসজিদুল হারামে আসলেন এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পিঠ মুবারকের উপর হতে উক্ত নাড়িভুঁড়ি নামিয়ে ফেললেন। হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন তায়িফ গমন করেন তখন হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম পবিত্র মক্কা শরীফ-এ ছিলেন।

তায়িফ হতে তিনি অবসন্ন এবং দুশমনদের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় ফিরে আসেন। হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তখনও উনার সেবা শুশ্রূষা করেন হিজরত: নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মদীনা শরীফ-এ হিজরত করছিলেন তখন হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম অসাধারণ সাহসিকতার সাথে পরিসি‘তি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শয্যায় হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে রেখে মক্কা শরীফ হতে হিজরত করেন। সকাল বেলায় হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এক একটি আমানত উহার মালিকের নিকট পৌঁছিয়ে দিলেন। নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গৃহ হতে অন্যান্য কতিপয় মহিলাসহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম স্বদেশ ত্যাগের উদ্দেশ্যে সফরের আসবাবপত্র তৈরি করলেন।

উনার মধ্যে কোনরূপ ভয়-ভীতি, আবেগ-উৎকন্ঠা, দীর্ঘ সফরের দুশ্চিন্তা কিংবা শত্রুর আক্রমণের ভয়ের চিহ্ন ছিল না। মহিলাদিগের কাফিলা নিয়ে হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তরবারি হাতে রওয়ানা হলেন। উটের উপর ছিলেন হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম, হযরত ফাতিমা বিনতে আসাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা, হযরত ফাতিমা বিনতে যুবায়ের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা, হযরত ফাতিমা বিনতে হামযা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা। একই নামের একাধিক মহিলাকে একসঙ্গে নেয়ার উদ্দেশ্য সম্ভবতঃ ইহাই ছিল যে, রসূল তনয়া যেন শত্রুর আক্রমণ হতে রক্ষা পান। (অবশ্য একসঙ্গে নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যগণ উনারাও ছিলেন)।

হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি মহিলাদেরকে সঙ্গে নিয়ে শত্রুদের সম্মুখে বিপদসঙ্কুল রাস্তা অতিক্রম করছিলেন। দাজনান নামক স্থানে কয়েকজন অশ্বারোহী কাফিলা বাধা দেয়ার চেষ্টা করে, কিন্থ শেরে খোদা হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হুঙ্কার দিয়ে তরবারি কোষমুক্ত করলে আক্রমণকারীরা ভয়ে পালিয়ে যায়। উনারা নিরাপদে পবিত্র মদীনা শরীফ-এর উপকন্ঠে কুবায় পৌঁছে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতে হাজির হলেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে অভ্যর্থনা জানালেন এবং সকলকে সঙ্গে নিয়ে মদীনা শরীফ-এ প্রবেশ করলেন। অন্য এক বর্ণনা মতে দেখা যায়, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত আবু রাফি’ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদেরকে মক্কা শরীফ-এ প্রেরণ করেন উনার আত্মীয় ও পরিবার-পরিজনকে মদীনা শরীফ-এ আনার জন্য।

সম্ভবত উনারাও এক সঙ্গে ছিলেন। শাদী মুবারক: পবিত্র বদর জিহাদের পর (২ হিজরী) জিলহজ্জ মাসে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার শাদী মুবারক-এর অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। গাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে এ অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কন্যার মোহর ধার্য করেন পাঁচশত দিরহাম। এ পরিমাণ মোহর এখনও বরকতময় বলে গণ্য করা হয় যা ‘মহরে ফাতিমী’ হিসেবে মশহুর।

স্বামীগৃহে তুলে দেয়ার সময় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উপঢৌকন হিসেবে দশটি জিনিস প্রদান করেন। শয়ন চৌকী, দুইটি তোষক, একটি চাদর, পানির পাত্র, মশক, কলসি, বদনী, মাটির দুইটি পাত্র, একটি কাঠের পেয়ালা ও যাঁতা মুবারক। হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সহযাত্রীদের সাথে হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন নাস সালাম উনারা এবং বনী হাশিম ও আনছারদিগের মহিলাগণ সানন্দে বরের ঘর পর্যন্ত গমন করেন। সন্তান-সন্ততি: ১৫ই শা’বান ৩য় হিজরী সনে হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেন। ৪র্থ হিজরী শাবান মাসে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেন।

সম্ভবতঃ ৫ম হিজরীতে হযরত জয়নব আলাইহাস সালাম, ৬ষ্ঠ হিজরীতে হযরত রোকাইয়া আলাইহাস সালাম, ৭ম হিজরী সনে হযরত উম্মে কুলছুম আলাইহাস সালাম এবং ৯ম হিজরী সনে হযরত মুহসিন আলাইহিস সালাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেন। বিছাল শরীফ: হিজরী ১১ সনের প্রথম দিকে মুহররমের পর নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কয়েক দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ তিনি পবিত্র বিছাল শরীফ লাভ করেন। এতে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি শোকে দুঃখে কাতর হয়ে পড়েন। এ শোক উনার বিছাল শরীফ-এর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফ-এর পরে মাত্র ছয় মাস যমীনে ছিলেন।

ওয়াকিদীর বর্ণনা মতে, তিনি হিজরী ১১ সনে ৩রা রমাদ্বান শরীফ-এ সোমবার বাদ আছর বিছাল শরীফ লাভ করেন। বিছাল শরীফ-এর পূর্বে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হযরত আসমা বিনতে উমায়েছ আলাইহাস সালামকে ওছিয়ত করে যান যে, ইহা মহিলা অথবা পুরুষের জানাযা তা যেন কেউ বুঝতে না পারে এবং উনাকে যেন রাত্রে দাফন করা হয় যাতে উনার শরীর মুবারক দেখা না যায়। উনার জানাযার নামায হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পড়ান। উনার মাযার শরীফ পবিত্র জান্নাতুল বাকীতে অবসি‘ত। ফযীলত ও বুযূর্গী: হযরত মুহাদ্দিছীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাহিম উনারা এ ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার আকৃতি ও প্রকৃতি, চলাফেরা এবং কথাবার্তায় হুবহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতিচ্ছবি ছিলেন।

উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম বলেন, উঠা-বসা, চালচলন ও আচার ব্যবহারে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে অধিক সামঞ্জস্যশীল হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম অপেক্ষা আর কাউকে আমি দেখিনি। (তিরমিযী শরীফ) হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার বিলাদত শরীফ-এর কিছুদিন পরই উহুদের জিহাদ সংঘটিত হয়। তখন হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কোল মুবারকে ছিলেন নবজাতক। এতদসত্ত্বেও তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহত হওয়ার সংবাদ পেয়ে জিহাদের ময়দানে ছুটে যান। স্বহস্তে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্ষতস্থান ধৌত করেন এবং ওষুধ লাগিয়ে দেন।

হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম যাঁতা দিয়ে গম পেষণ করতেন, খাবার রান্না করতেন, ঘর গৃহস্থালীর কাজকর্ম, সন্তানদিগের লালন পালন, স্বামীর খিদমত ও উনার কাজে সহযোগিতা এবং পিতার জিহাদের যাতায়াতের প্রস্থতিমূলক কাজকর্ম করতেন। এ সকল দায়িত্ব এমন সুষ্ঠু ও সূচারুরূপে সম্পন্ন করতেন, যার ফলে সন্তানগণ উত্তম সন্তানে পরিণত হয়েছেন, স্বামী সর্বদা সন্থষ্ট রয়েছেন, পিতা সর্বদা স্নেহপ্রবণ রয়েছেন। খন্দকের জিহাদে ঘরের সকল পুরুষ জিহাদের ময়দানে ছিলেন। হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম একদিন গৃহে রুটি তৈরি করে জিহাদের ময়দানে গিয়ে পিতাকে খেতে দিয়েছিলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কয়েকদিন ধরে খন্দক খোঁড়ার কাজে ব্যস্ত ছিলেন।

কন্যার এ কাজে খুশি হয়ে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: সাবাস বেটী! আজ তিন দিন পর আমি এ খাবার পেলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে উম্মতের সকল মহিলা অথবা মু’মিনদের সকল মহিলার ‘সাইয়্যিদাহ’ বলে উল্লেখ করেছেন (বুখারী শরীফ) হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি ‘আল-ইছাবা’ গ্রনে‘ উল্লেখ করেন যে, হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম বিশ্বের সকল মহিলাদের ‘সাইয়্যিদাহ’। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্নেহ ভালবাসা বশত হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মান করতেন এবং কোন কোন সময় নিজের জায়গায় বসাতেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দীর্ঘদিন পর্যন্ত নামাযের সময় হযরত যাহরা আলাইহিস সালাম উনার গৃহের নিকট আসতেন এবং ডেকে বলতেন, নামাযের সময় হয়েছে। আল্লাহ পাক আপনাদের উপর রহম করুন।

হে আহলে বাইত! আল্লাহ পাক আপনাদের হতে নাপাকী দূর করতে এবং আপনাদেরকে পবিত্র করতে চান। (দুররে মনছুর) হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন কোন সফরে গমন করতেন তখন সর্বশেষে এবং যখন সফর হতে প্রত্যাবর্তন করতেন তখন সর্বপ্রথম হযরত ফাতিমা আলাইহাস সালাম উনার সাথে সাক্ষাৎ করতেন। (মুসনাদে আহমদ) এ মুবারক বিছাল শরীফের দিনে উনার জীবনী মুবারক থেকে শিক্ষা নিয়ে আল্লাহ ওয়ালা হওয়ার কোশেশ করা সকল মুসলমানদের কর্তব্য। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।