আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রমাদানে আমাদের যা অর্জন করতেই হবে

কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা ৩য় পর্ব কিভাবে শুরু করব বুঝতে পারতেছিনা এই গুরুত্বপুর্ণ বিষয়টা। কেন এই বরকতময় মাসটা আমাদের কাছে একটা পরীক্ষা এবং কত নাম্বার পেলে এপ্লাস অথবা ফেইল করলে কি হবে সেই টা নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। আমার মাথার মধ্যে শুধু একটা জিনিসই ঘোরতে থাকে, আমাকে যেইভাবে হোক পাস করতে হবে। কারন ফেইল করলে এর পরিণতি হবে করুণ এবং ভয়াবহ। আবার যদি পাস করতে পারি তাহলে একবারেই এ প্লাস।

মাঝখানে কিছু নেই। এ প্লাস অথবা লাড্ডু। রমাদান নিয়ে আল্লাহ কোরআনে আয়াত নাযিল করেছেন এবং এই প্রসংগে রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর অনেক অনেক হাদীস আছে। কিন্তু এর মধ্যে যে হাদীসটা আমাকে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করে আবার একই সাথে আমার মধ্যে অনেক ভয়ের সঞ্চার করে সেই প্রিয় হাদীসটা লিখলাম "কাব ইবনে উজরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সঃ) একবার মিম্বারে উঠতেছিলেন, প্রথম ধাপ উঠার পরে উনি বললেন আমিন, দ্বিতীয় ধাপ উঠার পরে উনি আবারো বললেন আমিন। তৃতীয় ধাপ উঠার পরে উনি আবার বললেন আমিন।

রাসুলুল্লাহ(সঃ) মিন্বার থেকে নামার পর সাহাবীরা জিজ্ঞাস করল " হে রাসুলুল্লাহ (সঃ), আমরা আপনাকে আজকে এমন কিছু বলতে শুনেছি যেইটা আগে কখনো শুনি নাই। রাসুলুল্লাহ (সঃ) বললেন, আমি যখন মিম্বারে উঠ্তেছিলাম তখন আমার কাছে জিবরাঈল(আঃ) আমাকে বলল "ধ্বংস হোক সেই সমস্ত লোক যারা রমাদান মাস পেয়েছে কিন্তু নিজেদের গুনাহ ক্ষমা করাইতে পারে নাই। " ( সংক্ষেপিত) জিবরাঈল (আঃ) আল্লাহর পক্ষ থেকে অভিশাপ দিল আর রাসুলুল্লাহ (সঃ) সেখানে আমিন বলল। সহজ কথা, আমরা রমাদান মাস পেলাম কিন্তু আমাদের সব ধরনের গুনাহ ক্ষমা করাইতে পারলাম না, এর রেজাল্ট হচ্ছে আল্লাহর অভিশাপ আমাদের উপর। আল্লাহ ইচ্ছা করলে যে কোন মুহুর্তে তার বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দিতে পারেন কিন্তু রমাদানের চেয়ে উত্তম আর কোন সময় হতে পারে না।

যারা রমাদান মাস পাওয়ার পরে ও গুনাহ ক্ষমা করাইতে পারে নাই তাদের উপর আল্লাহ এবং তার রাসুল (সঃ) এর অভিশাপ। আল্লাহ এবং তার রাসুল (সঃ) এর অভিশাপ নিয়ে কি আমাদের জীবন চলতে পারে? দিন, রাত, সপ্তাহ, মাস বছর সবই আল্লাহর সৃষ্টি। কিন্তু এর মধ্যেও কিছু সময় আল্লাহর কাছে প্রিয় এবং আল্লাহ তার বান্দাদের জন্য আলাদা করে রেখেছেন। তেমনি একটা মাস হচ্ছে রমাদান মাস যেই মাসের এবাদাতের প্রতিদানের ব্যাপারে আল্লাহ কোন হিসাব নিকাশ করেন না। সেই রকম একটা মাস আমরা পাওয়ার পরেও য্দি আমরা আমাদের গুনাহ ক্ষমা করাইতে না পারি তাহলে আমার মনে হয় আমরা খুবই দুর্ভাগা।

আমরা যেমন যে কোন পরীক্ষা দিয়েই অধিকাংশ সময় বুঝতে পারি আমাদের পরীক্ষা কেমন হয়েছে অথবা কোন গ্রেড পাব, এইখানে ও ঠিক রমাদান শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমরা বুঝতে পারব আমাদের রেজাল্ট কি। ঈদের দিন আমাদের জন্য অনেক অনেক আনন্দের দিন। কিন্তু ঈদের দিন সকালে আমরা আমাদের পরীক্ষার রেজাল্ট অবশ্যই পেয়ে যাব। কেউ যদি সত্যি সত্যি চেষ্টা করে রেজাল্ট জানার জন্য তাহলে সে অবশ্যই জানবে। আমরা অবশ্যই বুঝতে পারব আমাদের গুনাহ ক্ষমা হয়েছে কি হই নাই।

তাই রমাদান মাসে আমাদের সর্ব প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্ব্পুর্ণ লক্ষ্য হল আমাদের জীবনের সব গুনাহ মুছে ফেলা। এইটা করতে পারলেই এ প্লাস। পুরা পরীক্ষার খাতায় আর কিছু লিখ্তে পারি আর না পারি অন্তত একটা বাক্য আমরা অবিরাম লিখে যাব সেইটা হল " আল্লাহ, তুমি আমাদের জীবনের সব গুনাহ ক্ষমা করে দাও"। আরও সুন্দর ভাষায় যদি এই কথাটা আমরা আল্লাহের কাছে বলতে চাই তাহলে নিচের দুয়াটা মুখস্ত করতে পারি। রাসুলুল্লাহ (সঃ), যার সমস্ত গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন, তিনিইরমাদান মাসের আল্লাহর কাছে সব্চেয়ে বেশি দুয়া করতেন গুনাহ ক্ষমার জন্য।

দুয়াটা হল للْهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي Allahumma innaka `afuwwun, tuhibbul `afwa, fa`fu `annee O Allah, You are forgiving, and You love to forgive, so forgive me কত কিছুই তো জীবনে মুখস্ত করলাম, বাংলা ব্যকরণের প্রকৃতি - প্রত্যয় থেকে শুরু করে বাংলা গান, হিন্দি গান, কত কিছু, যেইগুলো এখন জীবনে কোন প্রয়োজনেই আসতেছেনা ১০ মিনিট সময় ব্যয় করে আমরা নিশ্চয় এই দুয়াটা মুখস্ত করতে পারি। এই দুয়াটা বার বার আল্লাহর কাছে বলতে পারি যেন আল্লাহ আমাদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন। আমরা সবাই সবার জন্য দোয়া করি যাতে ইনশাল্লাহ আমরা সবায় এপ্লাস পাই ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।