আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইভ টিজিং রোধে এটা হতে পারে অন্যতম একটি পন্থা। বয়েজ স্কুল vs গার্লস স্কুল

গালাগালি পাঠাতে srsnipun@gmail.com ফেসবুকে আমি http://www.facebook.com/mrlazy4200 পোষ্টের মূল বিষয় বছর খানেক আগের একটা সাড়াহীন লেখা। কিছুদিন আগে পড়ার পর আজ হথাৎ নিজের কথাও মিক্স করতে ইচ্ছে হল। সারা বিশ্বে যখন নারী-পুরম্নষ একই সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উন্নয়নের কথা ভাবছে, তখন কিছু স্কুল-কলেজের কারণে বাংলাদেশ গোটা বিশ্ব থেকে কয়েক ধাপ পিছিয়ে রয়েছে। শহরের দুটি খ্যাতনামা কলেজের কথাই ধরা যাক না কেন, একদিকে ভিকারম্নননিসা নূন কলেজ, অপরদিকে নটরডেম কলেজ- কে কার থেকে এগিয়ে? উত্তর দেয়া কঠিন। তবে প্রশ্ন থেকেই গেল, কেন ভিকারম্নননিসার মতো একটা ভালো কলেজে ছেলেরা পড়তে পারবে না, আর কেনই বা নটরডেম কলেজে মেয়েরা পড়তে পারবে না? ক্ষতিটাই বা কোথায়? আসুন কিছু ঘটনা দেখি, ঘটনা ১ ইডেন কলেজের ছাত্রী রেজোয়ানা।

সে একদম ছেলেবেলায় অর্থাৎ নার্সারিতে পড়েছিল কো-এডুকেশনে, তারপর ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত কো-এডুকেশনে পড়লেও তা ছিল ভিন্ন ভিন্ন শিফটে অর্থাৎ ছেলেদের আলাদা শিফটে আর মেয়েদের আলাদা শিফটে। আবার ৫ম থেকে এস,এস,সি পর্যন্ত গার্লস স্কুলে। কলেজে গিয়ে উইমেন্স কলেজে, এখন সে অনার্স করছে ইডেন থেকে। অর্থাৎ জীবনের বেশিরভাগ সময়েই সে লেখাপড়া করেছে মেয়েদের মাঝে। যার ফলশ্রম্নতিতে নিজের অজান্তেই তার মনে যেমন দানা বেঁধেছে পুরুষ বিষয়ক অদম্য কৌতূহল তেমনি পুরুষ ভীতিটাও কিন্তু কম নয়।

ঘটনা ২ একই রকম সমস্যার কথা বলেছেন, কলেজ অব হোম ইকোনোমিক্সের ছাত্রী দোলা। একটানা পাঁচ বছর মেয়েদের সাথে লেখাপড়া করতে গিয়ে আপনা থেকেই নিজের মধ্যে একপ্রকার জড়তা তৈরি হয়ে গিয়েছিল। যা তিনি বুঝতে পারলেন চাকরি জীবনে পা দিয়ে। একই সাথে পুরুষ কলিগদের সাথে কাজ করতে গিয়ে কথা তো বলতেই হয়, এমনকি একই রিকশায় চড়ে কাজে বেরোতে হয়। যা তিনি খুব সহজভাবে করতে পারেন না, কথা বলতে গেলেই আটকে যায়, দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগেন।

একই রিকশায় উঠলে ভয় পান কেউ দেখে ফেললে না জানি কী বলবে। যে প্রতিক্রিয়াটা কো-এডুকেশনে অনেক আগেই তৈরি হয়ে যায়। আর চাকরি জীবনে তা হয়ে ওঠে আরো সহজ। ঘটনা ৩ আমারই রুমমেটের কথা। ছোট বেলা থেকেই পড়া লেখা করেছে বয়েজ স্কুলে।

এরপর কলেজও বয়েজ কলেজ। সারা জীবন বাস করেছে চট্টগ্রামের এক মফস্বল শহরে। এর পর হঠাৎ করে ভার্সিটিতে এসে পড়ল। ঢাকা শহরের প্রাইভেটের মেয়েরা তার চেহারার জন্যই হোক বা লাজুক প্রকৃতি দেখে ইমপ্রেস হওয়ার কারনেই হোক, মেয়েরা ওর সাথে সেধে কথা বলতে আসে। কিন্তু ওর লজ্জা তাতে আরও বেড়ে যায়।

এমনকি মেয়েদের সাথে কথা বলতে গেলেই ওর গা-হাত-পা শক্ত হয়ে আসে। এমনকি অনেক সময় মুখ থেকে কথাও বের হয় না। অথচ মেয়েদের প্রতি তার দুর্নিবার আগ্রহ! (কেউ অন্য অর্থে নিয়েন না)। আমার রুম মেট বিধায় আমি খুব ভালো ভাবে জানি। ঘটনা ৪ কো-এডুকেশনে পড়ুয়া ছাত্রী আরজুপনি।

ছোট থেকেই ছেলেদের সাথে লেখাপড়া করেছ। ফলে তার অনেক ছেলে বন্ধুও তৈরি হয়ে গেছে। আর বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে পেয়েছে ছেলেদের সাথে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কথা বলার প্রবনতা, একা একা চলাফেরা করার স্বাধীনতা আর ছেলেদেরকে একজন ভালো বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করার মানসিকতা। যা তার চাকরি জীবনে একটি সুফল বয়ে আনার পক্ষে সহায়ক হয়ে দাড়ায়। যথেষ্ট পরিমাণে উৎসাহ থাকা সত্ত্বেও ছেলেমেয়েরা কো-এডুকেশনে পড়তে পারছে না।

এর কারণটা শুরু হয় পরিবার থেকে, ধর্মীয় মূল্যবোধ আর সামাজিক অসঙ্গতি থেকে। একটা মেয়েকে যখন কলেজে ভর্তি করা হয়, তখন অনেক ক্ষেত্রেই তার নিজস্ব মতামতকে পাত্তা না দিয়েই ভর্তি করা হয় উইমেন্স কলেজে। ধারনা করা হয়,উইমেন্স কলেজই মেয়েটির জন্য যথেষ্ট নিরাপদ। তার অর্থ কী দাঁড়াল? কো-এডুকেশনে মেয়েরা নিরাপদ নয়। সম্পূর্ণ নেতিবাচক একটি ধারণা।

একটু ভালোভাবে লক্ষ করলেই দেখা যাবে, গার্লস স্কুলের মেয়েদেরকেই রাস্তাঘাটে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কো-এডুকেশনে ছেলেরাই ছেলেদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। আর তাই কো-এডুকেশনেই মেয়েরা সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। ইভটিজিং রোধে এটা হতে পারে অন্যতম একটা সফল উপায়। কোনো কিছু যখন খুব বেশি সহজলভ্য হয়ে যায়, তখন তার অপব্যবহার করতে দেখা যায়।

কো-এডুকেশনেও তাই হয়। কো-এডুকেশনে ছেলেমেয়ের বন্ধুত্ব খুবই সাবলীল একটা ব্যাপার যা অনেক সময় উচ্ছৃঙ্খলতা-অশ্লীলতায় রূপ নেয়। এর কারণ হিসেবে অবশ্যই কো-এডুকেশনকে দায়ী করা ঠিক নয়। সবার শেষে আমার নিজের ঘটনা (সবার শেষে কারন এতক্ষণে অনেকেই বোর হয়ে চলে গেছেন)। খুলনা জিলা স্কুলে থেকে এস,এস,সি পাশ করি ২০০৯ সালে।

এর পর ভর্তি হলাম কম্বাইন্ড কলেজে। প্রথম প্রথম অনেক লজ্জা পাইতাম। মেয়েদের সাথে পারত পক্ষে কথাই বলতাম না। পরবর্তীতে একটা লম্বা সময় পর পরিবেশের কারনে স্বাভাবিক হই। যতদিন স্বাভাবিক হতে পারতাম না, আমার নিজের কাছেই কতটা খারাপ লাগতো আমি জানি! আমারা ফ্রেন্ডরা এক সাথে আড্ডা দিতাম।

আমাদের সাথে যত মেয়ে যোগ দিত আমি যেন তত দূরে সরে যেতাম। বেশ একা একা লাগতো। উপরে উল্লেখিত প্রথম ৩টি ঘটনাই কাল্পনিক। কারো সাথে মিলে গেলে আমি কিছু জানিনা। নাম গুলো আমার নিজের খেয়াল খুশি মত বসাইছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।