আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামাত-শিবিরের ফাদেঁ নচিকেতা............প্রতারক আমিরুল মোমেনীন মানিক

শূন্য আমার কথা পড়ে জানাবো...... আপাতত এটা পড়েন:::::: আমিরুল মোমেনীন মানিক। ইসলামি গানের শিল্পী ও দিগন্ত টেলিভিশনের সাংবাদিক। ছেলেবেলা থেকেই ইসলামি গান করতেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছিলেন শিবিরের সহযোগী সংগঠন বিকল্প সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদের সঙ্গে। তার পরও তিনি দাবি করছেন, শিবিরের সঙ্গে যুক্ত নন।

কৌশলী শিবিরকর্মীর প্রতারণার ফাঁদে পড়ছেন আরও অনেক গুণী শিল্পী। এমনকি ওপার বাংলার জনপ্রিয় শিল্পী নচিকেতাকেও নিয়ে চলছে বাণিজ্য! নচিকেতার গান ও সাক্ষাৎকার নিয়ে এপার বাংলায় ‘আপিল বিভাগ’ নামে বাণিজ্যিকভাবে অ্যালবাম বের করা হয়েছে। কিন্তু বাণিজ্যিক এই অ্যালবামের ব্যাপারে কোনো চুক্তি হয়নি জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী নচিকেতার সঙ্গে! কোনো চুক্তি ছাড়াই অডিও-ভিডিও দুইভাবেই নচিকেতার গান ও সাক্ষাৎকার বাজারে ছেড়েছেন অভিযুক্ত ওই শিবিরকর্মী সাংবাদিক। যেভাবে প্রতারণা ‘আপিল বিভাগ’। ইসলামি গানের শিল্পী আমিরুল মোমেনীন মানিকের বহুল আলোচিত অ্যালবাম।

বাণিজ্যিকভাবে খুব বেশি সুফল না পেলেও জামায়াতের মিডিয়াগুলো এই অ্যালবামটিকে আলোচনার শীর্ষে নিয়ে এনেছে। কিন্তু বাস্তবে বহুল আলোচিত কোনো অ্যালবাম সেটি নয়। বাণিজ্যিকভাবে সফল করার জন্য অ্যালবামটিকে ‘নচিকেতা ও মানিক’-এর যৌথ অ্যালবাম বলে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। অ্যালবামটিতে আমিরুল মোমেনীন মানিকের ১১টি গান রয়েছে। আর পুরো অ্যালবামে অনেকখানি স্থানজুড়ে আছে নচিকেতার বিখ্যাত ৫টি গান আর মাঝে মাঝে নচিকেতার আলাপচারিতা।

২০১১ সালের ১২ জানুয়ারি জামায়াতের সংবাদপত্র দৈনিক সংগ্রামের একটি প্রতিবেদনে এই অ্যালবাম সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘টিভি রিপোর্টার আমিরুল মোমেনীন মানিকের ভিডিও গানের অ্যালবাম ‘আপিল বিভাগ’ ব্যাপক দর্শকপ্রিয় হয়েছে। অ্যালবামটিতে বাড়তি চমক হিসেবে থাকা নচিকেতার ভিন্নধর্মী সাক্ষাৎকারটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আপিল বিভাগ অ্যালবামে মা ও বাবাকে নিয়ে একটি করে গান রয়েছে, যা ইতোমধ্যে এফএম রেডিওতে প্রচার হওয়ায় বিপুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মডার্ন ফোক হিসেবে নির্মিত ঘুড়ি গানটির চিত্রায়ণ হয়েছে কুমিল্লা গোমতী নদীর তীরে। নদী, বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ আর নীল আকাশের নান্দনিক সম্মিলনে এই গানটির ভিডিও এককথায় অসাধারণ।

(২০ জুন, বিকেল ৩টা ৫৯ মিনিট। সাপ্তাহিক কাগজের অফিশিয়াল ই-মেইলে একটি বার্তা আসে। ওই বার্তাটিতে কাগজ-এ প্রকাশিত মন্তব্য প্রতিবেদনে শিবিরকর্মী হিসেবে আমিরুল মোমেনীন মানিক সম্পর্কে বলা হয়েছে। ওই লেখায় জনৈক ‘ফাল্গুনী পোদ্দার’ নিজেকে মন্তব্য প্রতিবেদনের লেখক ও আমিরুল মোমেনীন মানিকের পরিচিত বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি মন্তব্য প্রতিবেদনের লেখকের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করার পাশাপাশি চেষ্টা করেছেন আমিরুল মোমেনীন মানিককে ধোয়া তুলসী পাতা প্রমাণের জন্য।

ওই লেখাটি প্রকাশের জন্য নানাভাবে ই-মেইলে ও টেলিফোনে অনেকবার যোগাযোগ করা হয় সাপ্তাহিক কাগজের সঙ্গে। ‘জামায়াত শিবিরের কালচারাল নেটওয়ার্ক’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি মন্তব্য প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পাঠানো চিঠির তথ্যের সত্যতা অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। অনুসন্ধান শেষে লিখেছেন শরিফুল ইসলাম পলাশ) সুখের স্বপন গানটির ভিডিওতে মডেল হয়েছেন অভিনেতা জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, কণ্ঠশিল্পী আগুন এবং চ্যানেল আই লাক্স তারকা মীম। ’ অন্য সংবাদপত্রগুলোও এই অ্যালবামকে যৌথ অ্যালবাম বলে ঘোষণা করেছে। জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত ব্লগগুলোতেও এসব নিয়ে বেশ লেখালেখি হয়েছে।

জগাখিচুড়ি বাণিজ্যিক অ্যালবাম! যৌথ বলা হলেও বাস্তবে ‘আপিল বিভাগ’ নচিকেতার সঙ্গে গজলশিল্পী মানিকের কোনো যৌথ অ্যালবাম নয়, বরং এটি আদতে একটি জগাখিচুড়ি টাইপের অ্যালবাম। যেখানে ইসলামি একজন গজলশিল্পী আধুনিক গান গেয়েছেন। সেই গানগুলোকে শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় করার জন্য নচিকেতার নামটি বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। গণমাধ্যমের নামে নচিকেতার সাক্ষাৎকার নিয়ে সেটিকেই কৌশলে ব্যবহার করা হয়েছে। অ্যালবামে নচিকেতার যে গানগুলো রয়েছে সেগুলো ঢাকায় নচিকেতার পুরোনো একটি কনসার্টের ভিডিও থেকে ধারণ করা।

‘বাংলায় গাইবে বিশ্ব’ শিরোনামের ওই কনসার্টে অংশ নেওয়ার এক ফাঁকে নচিকেতা গণমাধ্যমে প্রচারের জন্য ওই সাক্ষাৎকারটি দিয়েছিলেন। এ ছাড়া ওই আলাপচারিতার কিছু অংশ ভারতের অন্য একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া নচিকেতার সাক্ষাৎকার থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে। পুরো অ্যালবামে ব্যবহার করা নচিকেতার কোনো গান নতুন করে ধারণ করা নয়। সেখানে নচিকেতার সঙ্গে ইসলামি গজলশিল্পী মানিকের যৌথ কোনো গানও নেই। তার পরও এই অ্যালবামটিকে ‘নচিকেতা ও মানিক’-এর যৌথ অ্যালবাম বলা হচ্ছে বাণিজ্যিক কারণে।

অথচ বাণিজ্যিকভাবে নচিকেতার পুরোনো গান ও সাক্ষাৎকার নিয়ে সেগুলো সিডি বা ডিভিডি আকারে বাজার ছাড়ার অনুমতি নচিকেতা কাউকে দেননি। সেখানে আমিরুল মোমেনীন মানিকের সঙ্গে নচিকেতার আলাপচারিতার কিছু অংশ রয়েছে। শুধু পুরোনো গান আর কাটপিস করা আলাপচারিতাই নয় ওই অ্যালবামে বাণিজ্যিক কারণে ফারইস্ট ইসলামী ব্যাংকের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র সংযুক্ত করা হয়েছে। সে কারণেই ওই অ্যালবামের পেছনে অর্থায়ন করেছে জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতাকারী বলে অভিযুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট ইসলামী কো-অপারেটিভ ব্যাংক। গান, নচিকেতার আলাপচারিতার কাটপিস আর পুরোনো কনসার্টের গানের সঙ্গে জামায়াতি ব্যাংকের প্রামাণ্যচিত্র মিলিয়ে ‘আপিল বিভাগ’ সত্যিকার অর্থে একটি জগাখিচুড়ি অ্যালবাম।

কেঁচো খুঁড়তে সাপ! ফাল্গুনী পোদ্দার নামের একজন বেশ কদিন ধরেই আমিরুল মোমেনীন মানিকের পক্ষে সাফাইকারী কাগজের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগ করছিলেন। তার সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, ‘আমীরুল মোমেনীন মানিক এই সময়ের আলোচিত শিল্পী। দেশে ও বিদেশে সবাই তাকে চেনেন। তিনি ভালো গান করেন বলেই দুই বাংলার জনপ্রিয় শিল্পী নচিকেতা তার সঙ্গে গান করেছেন। ’ কিন্তু কেন নচিকেতা ঘোষ শিবিরের এই কর্মীর সঙ্গে গান করলেন।

কেনই বা বাণিজ্যিকভাবে তার গান ব্যবহার করার অনুমতি দিলেন? তিনি জেনে শুনেই শিবিরের পাতানো ফাঁদে পা রাখলেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর মেলেনি। উত্তর জানতে কাগজের পক্ষ থেকে আমরা মুঠোফোনে যোগাযোগ করি দুই বাংলার জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী নচিকেতা ঘোষের সঙ্গে। আলাপকালে পুরো বিষয়টি শোনার পর তিনি বিস্মিত হন। জানিয়ে দেন বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে তিনি তার কোনো গান-সাক্ষাৎকার নিয়ে কোনো ধারণের বাণিজ্যিক ভিডিও সিডি প্রকাশের অনুমতি দেননি। আমিরুল মোমেনীন মানিক বা লেজার ভিশন নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার লিখিত কোনো চুক্তি হয়নি।

আর এভাবেই ফাঁস হয়ে পড়ে জামায়াত-শিবিরের ফাঁদে নচিকেতার বন্দি হয়ে পড়ার ঘটনা। নচিকেতার মতো শিল্পীর জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে জামায়াত-শিবিরের ইসলামি গজলশিল্পীর বাণিজ্যের কথা জেনে বিম্মিত হন অনেকেই। নচিকেতা ঘোষসহ বাংলাদেশের বরেণ্য অভিনেতা ও কণ্ঠশিল্পী যারা ওই অ্যালবামে তার সঙ্গে কাজ করেছেন, তারা এমন প্রতারণার খবরে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। শহীদুল্লাহ ফরায়েজী (আমি তার সঙ্গে ছিলাম একজন শিল্পী হিসেবে। তার অতীত কী? কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সেটা ব্যবহার করা হচ্ছে কি না? সেগুলো সেভাবে জানার সুযোগ ছিল না।

কিন্তু নচিকেতার অনুমতি না নিয়ে তার গান ও সাক্ষাৎকার ব্যবহার করা হয়েছে, তেমনটা আশা করিনি। কারণ যেকোনো শিল্পীর সৃষ্টিকেই বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই তার অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি না নিয়ে কিছু করা হলে সেটা আমরা চাই না। ভবিষ্যতে এই দিকগুলো অবশ্যই খেয়াল করতে হবে। ) কে এই মানিক? কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আমিরুল মোমেনীন মানিক জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এখনো তিনি নানাভাবে জামায়াত-শিবিরের হয়ে কাজ করছেন। এই অভিযোগের বিপরীতে পাঠানো ইমেইল বার্তায় দাবি করা হয়েছিলো, ‘তিনি কখনো জামায়াত শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তাদের কোনো কর্মসূচিতেও তিনি অংশ নেননি। ’ কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। ২০০৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি সেখানে বিকল্প সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

ছেলেবেলা থেকেই ইসলামি গজল পরিবেশন করার সুবাদেই শিবিরের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। সেই সুবাদেই শিবিরের ওই অঙ্গসংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছিলেন মানিক। রাবি শিবিরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট অনুযায়ী এই বিকল্প সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদ তাদেরই অঙ্গ সংগঠন। রাবি শিবিরের ওয়েবসাইট (Click This Link) বলা হয়েছে, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রামবামপন্থী নাস্তিকবাদী অপসংস্কৃতির বিভীষিকা থেকে তরুণ সমাজকে মুক্ত করে সুস্থ ও পরিশীলিত সংস্কৃতির আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করছে-বিকল্প সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদ। সুদীর্ঘ ৫০ বছর বয়সী মতিহার সবুজ চত্বরে বিকল্প সৃষ্টি করেছে সুস্থ ও দেশজ সংস্কৃতির উদ্দীপ্ত আলোকময় ইতিহাস।

ইতোমধ্যে বিকল্প সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদ তার বর্ণাঢ্য কর্মতৎপরতার ১৪ বছরে পা রেখেছে। ’ মানিক ছাত্রজীবনে শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকার নামে তিনি সহিংস কর্মসূচি এড়িয়ে চলতেন। সেখানে শিবিরের ক্যাডারদের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত একাধিক সূত্র জানায়, রাজশাহীতে অবস্থানকালে ছাত্র ইউনিয়ন ও উদীচীর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মানিকের একাধিকবার মারামারি হয়েছে।

কিন্তু ভীষণ কৌশলী হওয়ার কারণে সব সময়ই আইনি জটিলতার বাইরে ছিলেন। শিবিরের এই ক্যাডার মানিক ঢাকায় আসার পরও জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছেন। বর্তমানে সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছেন জামায়াত-নিয়ন্ত্রিত দিগন্ত টেলিভিশনে। জামায়াতের সঙ্গে সখ্যের কারণে এই গজলশিল্পীকে জামায়াতি প্রচারমাধ্যমগুলো বিখ্যাত বানানোর চেষ্টায় মত্ত। মানিক দ্য রিপাবলিক অব ইয়াং মিউজিশিয়ানস বাংলাদেশ ও জামায়াতের সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রত্যয় শিল্পীগোষ্ঠীর সঙ্গেও জড়িত।

দায়িত্বশীলরা বলছেন নচিকেতার সাক্ষাৎকার ও অ্যালবাম তৈরির সময় আমিরুল মোমেনীন মানিকের সঙ্গে ছিলেন যমুনা টিভির আমিনুর রহমান লিটন। অ্যালবামের গায়ে মতামত জানানোর জন্য তার সেলফোন নম্বরটিও ব্যবহার করা হয়েছে। তার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আমি মানিকের অতীত কিছু জানি না। শিবিরের সঙ্গে ছিলেন কি না, সেটাও চিন্তা করিনি। ভালো গান করে আর নচিকেতার সঙ্গে কয়েকটা কাজ করছে, সে কারণে তার সঙ্গে ছিলাম।

অ্যালবাম প্রকাশের জন্য নচিকেতার অনুমতি আমার জানামতে আছে। আমরা ওনাকে বলেছিলাম, একটা ডিভিডিতে সাক্ষাৎকারটা ব্যবহার করব। সেটা রেকর্ড করা আছে। আর অ্যালবামটি প্রকাশ করেছে লেজার ভিশন। তারা সবকিছু ঠিক না করে অ্যালবাম করবেন, সেটা আমার মনে হয় না।

’ ওই অ্যালবামটি ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বাজারে ছেড়েছে লেজার ভিশন। এ প্রসঙ্গে লেজার ভিশনের কর্ণধার এম আরিফুর রহমান কাগজকে বলেন, ‘অ্যালবামটির বাজার মোটামুটি ভালোই ছিল। খুব বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে তেমনটা নয়। তার পরও চাহিদা খারাপ ছিল না। আর ওই অ্যালবামের জন্য নচিকেতার সঙ্গে বা তার প্রতিনিধির সঙ্গে লেজার ভিশনের কোনো চুক্তি হয়নি।

আমরা চুক্তি করেছি সাংবাদিক মানিকের সঙ্গে। এটা নিয়ে কোনো আইনি জটিলতা হলে সেটার দায়ভার মানিককেই বহন করতে হবে। ’ (‘প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নচিকেতার নাম ব্যবহার করা হয়েছে’ রবি চৌধুরী আমার মনে হচ্ছে, ফারইস্ট ইসলামী কো-অপারেটিভ ব্যাংকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ওই অ্যালবাম বের করা হয়েছে। অ্যালবামে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নচিকেতার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। শিল্পীর কাছ থেকে অনুমতি না নিয়ে তার সৃষ্টিকর্ম নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে কিছু করা প্রতারণা।

নচিদার কাছ থেকে অনুমতি না নিয়ে তারা এই কাজ কেন করলেন, সে বিষয়ে আমি লেজার ভিশনের সঙ্গে কথা বলব। এমন প্রতারণার ঘটনায় ওপার বাংলায় বাংলাদেশের ভাবম–র্তি ক্ষুণœ হবে। ) ‘আমার সঙ্গে কারও কোনো চুক্তি হয়নি, আমি তো চিনিই না তাদের কাউকে’ কাগজ: নচিদা নমস্কার। নচিকেতা: নমস্কার। কাগজ: চিনতে পেরেছেন? নচিকেতা: হ্যাঁ, আপনার এসএমএস পেয়েছি।

কী ব্যাপার বলুন তো! অডিও নিয়ে কী হয়েছে, কিছুই তো জানি না আমি! কাগজ: আমিরুল মোমেনীন মানিক নামের একজন অডিও অ্যালবাম বের করেছে। ‘আপিল বিভাগ’ সেই অডিও অ্যালবামের নাম। সেখানে আপনার ইন্টারভিউ রয়েছে। গান রয়েছে। নচিকেতা: বলেন কী! সেখানে আমার নাম রয়েছে? কাগজ: শুধু নাম নয়, কাভারে ছবিও রয়েছে আপনার।

নচিকেতা: কাভারে আর কিছু লিখেছে? কাগজ: লিখেছে টিভি রিপোর্টার মানিকের আপিল বিভাগে নচিকেতা। নচিকেতা: মানে! কাগজ: মানে জানতে চাইছি বলেই তো ফোন করেছি। বিষয়টা আপনি জানেন কি না? নচিকেতা: আমি কিছুই জানি না। এভাবে নাম-ছবি দিয়ে অডিও বেরিয়ে যাবে… কাগজ: পত্রপত্রিকায় নিউজও হয়েছে। বড় অনুষ্ঠান করে অডিও রিলিজও করেছে।

নচিকেতা: কারা করেছে রিলিজ? কাগজ: আমিরুল মোমেনীন মানিক। নচিকেতা: না, মানে কোন কোম্পানি ছেড়েছে ওটা? কাগজ: লেজার ভিশন। নচিকেতা: কিন্তু আমার সঙ্গে তো কারও কথাই হয়নি। আমার নাম দিয়ে এভাবে অডিও অ্যালবাম রিলিজ করা, এটা তো জালিয়াতি। অনুমতি ছাড়া অমনটা করতেই পারে না কেউ।

কাগজ: কিন্তু সে বলছে, আপনার সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছে। চুক্তি হয়েছে। চুক্তির কপি আছে… নচিকেতা: বাজে কথা বলার একটা সীমা থাকে। আমার সঙ্গে কারও কোনো চুক্তি হয়নি। আমি তো চিনিই না তাদের কাউকে।

ছেলেটার নাম বলুন তো আবার। তার ব্যাকগ্রাউন্ড কী? খুব ক্ষমতাশালী কেউ? এখানে তো পলিটিক্যাল ক্ষমতা দিয়ে লোকে নানান কিছু করে। কাগজ: রাজশাহী ইউনিভার্সিটিতে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে জড়িত ছিল। অ্যাকটিভলি ছিল। ইসলামি গান করত।

নচিকেতা: কী ভয়ংকর। আপনি এসব না জানালে তো এর কিছুই জানতামই না। মানিকের সঙ্গে আমার গান কেন থাকবে। ইমপসিবল। আপনি তো ফেরদৌসের বন্ধু।

আমি ফেরদৌসের ছবিতে গান করেছি। নতুন ছবিতেও করছি। ফেরদৌসকে বিষয়টা জানান। রবি চৌধুরীর সঙ্গেও আমার ভালো পরিচয়। তাকেও জানাতে পারেন বিষয়টা।

আমরা শিল্পী। মানুষের জন্য গান গাই, কাজ করি। তার মানে এই নয় যে কোনো মানুষ চাইলেই আমাদের নিয়ে যেকোনো ব্যবসা অনুমতিহীনভাবে করতে পারবে। ‘এই ধরনের প্রতারণা দেশের জন্য লজ্জাজনক’ ফেরদৌস নচিদার সঙ্গে আমার পরিচয় দীর্ঘদিনের। আমার নিজের ছবিতেও তিনি গান করেছেন।

নচিদা এভাবে প্রতারণার শিকার হবেন, এটা দুঃখজনক। তার মতো একজন প্রগতিশীল মানুষ শিবিরকর্মীর সঙ্গে সখ্য গড়বেন, গান করবেন, এটা হতেই পারে না। আমরা যারা দুই বাংলায় কাজ করি, তাদের কাছে এই ধরনের প্রতারণার খবর দেশের জন্য লজ্জাজনক। এই প্রতারকদের শাস্তি হওয়া উচিত। ‘আমি আপনাকে কাগজপত্র দেব কেন? আপনাদের যা ইচ্ছা লেখেন, প্রমাণ করেন’ আমিরুল মোমেনীন মানিক অভিযুক্ত গজলশিল্পী চলমান বিতর্ক প্রসঙ্গে আমিরুল মোমেনীন মানিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

তার ই-মেইলে ৭টি প্রশ্নও পাঠানো হয়। সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি দেননি। ২৭ জুন সকালে আমিরুল মোমেনীন মানিক মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন। কথা তার সঙ্গে… কাগজ: আপনার সঙ্গে কথার সূত্র ধরে কিছু প্রশ্ন পাঠানো হয়েছিল… আমিরুল মোমেনীন মানিক: আমি ঢাকার বাইরে আছি। আমার লোকজন ফোন করে বলেছে প্রশ্নগুলোর কথা।

আমি ঠিক জানি না কেন এই প্রশ্নগুলো এখন উঠছে। আমি জানি না এর আগে কোথায় কী লেখা হয়েছে। সত্যি বলতে, আমি সাপ্তাহিক কাগজ পড়ি না। বলুন, কী জানতে চান? কাগজ: নচিকেতার সাক্ষাৎকার ও পুরোনো গান নিয়ে অ্যালবাম প্রকাশের জন্য তার সঙ্গে লিখিত চুক্তি করেছিলেন কি না? আমিরুল মোমেনীন মানিক: চুক্তি করেছি। উনি যখন ঢাকায় এসেছিলেন তখন তার ম্যানেজার মৃš§য়দার মাধ্যমে তার সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল।

চুক্তি না থাকলে লেজার ভিশনের মতো প্রতিষ্ঠান কীভাবে অ্যালবাম বের করে? নচিকেতা অনেক বড় মাপের শিল্পী। তার অনুমতি ছাড়া কিছু করার প্রশ্নই আসে না। কাগজ: নচিকেতা কাগজকে বলেছেন, বাংলাদেশে কারও সঙ্গে নচিকেতার চুক্তি নেই… আমিরুল মোমেনীন মানিক: আমার সঙ্গে নচিদার চুক্তি হয়েছে। তার সমস্ত প্রমাণ আমার কাছে আছে। আমি ঢাকায় ফিরলে কপি দিতে পারব।

ফিরতে আরও দু-এক দিন লাগবে। কাগজ: আপনি কখনো জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবির কিংবা এর অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত ছিলেন কি না? আমিরুল মোমেনীন মানিক: না, আমি শিবিরের সঙ্গে ছিলাম না। আর থাকলে সেটা গোপন করার কী আছে। শিবির তো কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। আমি একসময় বিকল্প সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে ছিলাম।

বিকল্প একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন। সেটি শিবিরের কোনো সংগঠন নয়। আমি ২০০১ সাল থেকেই বামধারার সংগঠনগুলোর সঙ্গে ছিলাম। কাগজ: রাবি শিবিরের ওয়েবসাইটেও স্বীকার করা হয়েছে যে, বিকল্প সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদ তাদের অঙ্গসংগঠন… আমিরুল মোমেনীন মানিক: আমি সেসব জানি না…। আমি শিবিরের কোনো মিছিলে কখনো যাইনি।

কিন্তু এই প্রশ্নগুলো এখন আসছে কেন? আর কাগজ এই পুরোনো প্রসঙ্গ নিয়ে এত দিন পর প্রশ্ন তুলছে কেন? আর আমি আপনাকে কাগজপত্র দেব কেন? আপনাদের যা ইচ্ছা লেখেন, প্রমাণ করেন। বি.দ্র.: রিপোর্টটি প্রকাশের পর সম্ভবত রাজশাহী শিবিরের ওয়েবসাইটের আলোচিত লিঙ্কটি মুছে দেয়া হয়েছে..... কারণ লেখাকালীন সময় এই লিঙ্কটি পাওয়া যায়নি..... সূত্র: মূল সূত্র::::::::::  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.