আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শবে বরাত

আসসালামু আলাইকুম। সবাইকে শবে বরাতের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমি ও আল্লাহর রহমতে ভাল আছি। 'শব’ ফারসি শব্দ।

অর্থ রাত বা রজনী। বরাত শব্দটিও মূলে ফারসি। অর্থ ভাগ্য। দু’শব্দের একত্রে অর্থ হবে, ভাগ্য-রজনী। বরাত শব্দটি আরবি ভেবে অনেকেই ভুল করে থাকেন।

কারণ ‘বরাত’ বলতে আরবি ভাষায় কোন শব্দ নেই। শবে বরাত বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের মুসলমানগণ বিভিন্ন কারণে এটি পালন করেন। এই বিশেষ রাতের ব্যাপারে কুরআনে তেমন কোনো উল্লেখ পাওয়া যায় না। ইমাম তিরমিযী কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে পাওয়া যায়, ঐ হাদিস মতে, এক রাতে আয়েশা [রা.] ঘুম থেকে উঠে পড়লেন কিন্তু জনাব মুহাম্মদকে [স.] বিছানায় দেখতে পেলেন না। তিনি মহানবীকে [স.] খুঁজতে বের হলেন এবং তাঁকে জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে দেখতে পেলেন।

মহানবী [স.] বললেন, ১৫ শাবানের রাতে আল্লাহ সর্বনিম্ন আকাশে নেমে আসেন এবং লোককে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা করেন । আরবি বারো মাসের মধ্যে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মাস হলো শাবান। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ "যখন শা'বানের মধ্য রাত্রি আসবে তখন তোমরা সে রাতের কিয়াম তথা রাতভর নামায পড়বে, আর সে দিনের রোযা রাখবে; কেননা সে দিন সুর্য ডোবার সাথে সাথে আল্লাহ তা'আলা দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন: ক্ষমা চাওয়ার কেউ কি আছে যাকে আমি ক্ষমা করে দেব। রিযিক চাওয়ার কেউ কি আছে যাকে আমি রিযিক দেব। সমস্যাগ্রস্থ কেউ কি আছে যে আমার কাছে বিমুক্তি চাইবে আর আমি তাকে উদ্ধার করব।

এমন এমন কেউ কি আছে? এমন এমন কেউ কি আছে? ফজর পর্যন্ত তিনি এ ভাবে বলতে থাকেন"। হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৪৪, হাদীস নং ১৩৮৮) বর্ণনা করেছেন। মানব সন্তান পৃথিবীতে যাতে সুখ ও সমৃদ্ধি লাভ করতে পারে সেজন্য দিয়েছেন অসংখ্য নিয়ামত, সেই সঙ্গে দিয়েছেন হালাল-হারাম বেছে চলার জন্য সুনির্দিষ্ট বিধান। দিবস-রজনীর পরিবর্তন এবং আসমান-যমীন সৃষ্টির মধ্যেও রয়েছে অফুরন্ত নিদর্শন। এই রাতে অবশ্যই প্রিয় মানুষের সাথে দেখা করবেন ।

আর যদি দেখা করা সম্ভব না হয় তাহলে অবশ্যই ফোনে অনেকক্ষন কথা বলবেন । হে খোদা, তুমি তো কেবল মুসলমানের আল্লাহ নও, তুমি সবার আল্লাহ। সারা দুনিয়াকে আনন্দময় করে দাও । ে বিশেষ পদ্ধতির কোন নামাজ বা আমল নেই। স্বাভাবিক পদ্ধতিতে যত ইচ্ছা নফল নামাজ পড়া যাবে।

তেলাওয়াত জিকির করা যাবে, দরূদ শরীফ, ইসতেগফার পড়া ও দোয়া করা যাবে। শাবানে আল্লাহ পাকের দরবারে বান্দার বাৎসরিক আমল পেশ করা হয়। এ জন্য নবী করীম (সাঃ) ইরশাদ করেন- রোজাদার অবস্থায় আমার আমল আল্লাহ দরবারে পেশ হওয়া আমার কাছে পছন্দনীয়। এই রাতে কমপক্ষে ২ রাকাত করে ১২ রাকাত নফল নামায ও ৪ রাকাত ছালাতুত্ তাছবীহ্ নামায পড়া অতি উত্তম। হিন্দু ধর্মে গয়া কাশী, ইসলাম ধর্মে মক্কা, মদিনা, জেরুজালেম ইত্যাদি।

এগুলো স্থান এবং পবিত্র। স্থান নিকটেও হতে পারে দূরেও হতে পারে। মসজিদ পবিত্র, মন্দির পবিত্র, গির্জা পবিত্র –এগুলো স্থানীয়। নামাযের নিয়ত আরবীতেbr /> “নাওয়াইতুআন্ উছল্লিয়া লিল্লা-হি তা‘আ-লা- রাক‘আতাই ছালা-তি লাইলাতিল বারা-তিন্ -নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কা‘বাতিশ্ শারীফাতি আল্লা-হু আকবার”। বাংলায় নিয়ত:- “ আমি ক্বেবলামূখী হয়ে আল্লাহ্ এর উদ্দেশ্যে শবে বরাতের দু‘রাক‘আত নফল নামায আদায়ের নিয়ত করলাম- আল্লাহু আকবার”।

শবে বরাতের নামায দু‘রাকাত করে যত বেশী পড়া যায় তত বেশী ছওয়াব। নামাযের প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাছ, সূরা ক্বদর, আয়াতুল কুরছী বা সূরা তাকাছুর ইত্যাদি মিলিয়ে পড়া অধিক ছওয়াবের কাজ। আপনি যে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে দাড়িয়েছেন মানের মধ্যে এমন ভাব আনলেই আপনার নিয়ত হয়ে যাবে। আরবি, বাংলা যে কোন ভাষাতেই নিয়ত করতে পারেন। রাসুল (সাঃ) এর দাত ভেঙ্গে যাওয়ার পরে তিনি হালুয়া রুটি খেয়েছিলেন তাই আমরাও এদিনে হালুয়া রুটি তৈরি করে তা গরীবদের মাঝে বিতরণ করি।

শবে বরাতে পটকা, আতশবাজি ফোটানো, আলোকসজ্জাকরণ প্রভৃতি কুসংস্কারে ছেয়ে গেছে আমাদের সমাজ। কোরআন-হাদীসে এ সম্পর্কে কোন কথা উল্লেখ নেই। এসব কুসংস্কার থেকে আমাদের সমাজকে রক্ষা করা আমাদের সকলের কর্তব্য। শবে বরাত বলুন আর লাইলাতুল বারায়াত বলুন কোন আকৃতিতে শব্দটি কুরআন মাজীদে খুজে পাবেন না। সত্য কথাটাকে সহজভাবে বলতে গেলে বলা যায় পবিত্র কুরআন মাজীদে শবে বরাতের কোন আলোচনা নেই।

সরাসরি তো দূরের কথা আকার ইংগিতেও নেই। অনেককে দেখা যায় শবে বরাতের গুরুত্ব আলোচনা করতে যেয়ে সূরা দুখানের প্রথম চারটি আয়াত পাঠ করেন। যারা বিশেষ খাবার তৈরি করতে চান তাদের জন্য এই রেসিপি। ছোলার ডালের হালুয়া- উপকরণ : ছোলার ডাল হাফ কেজি, দুধ ১ লিটার, চিনি ১ কেজি, ঘি চারভাগের এক কাপ, এলাচ গুঁড়ো হাফ কাপ, দারুচিনি গুঁড়ো সোয়া কাপ, গোলাপ পানি ১ টেবিল চামচ। কিসমিস ৫ টেবিল চামচ, পেস্তা বাদাম কুচি ৩ টেবিল চামচ।

প্রণালী : ছোলার ডাল, কোড়ানো নারকেলে, দুধ দিয়ে সেদ্ধ করে শুকিয়ে গেলে গরম অবস্থায় কেটে নিতে হবে। কড়াইতে ঘি দিয়ে ডাল বাটা দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে চিনি দিয়ে আরো নাড়তে হবে। এলাচ, দারুচিনি গুঁড়ো দিতে হবে। হালুয়া তাল বেঁধে উঠলে কিসমিস, গোলাপ পানি দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে-চেড়ে চুলা থেকে নামিয়ে বরফি করা চাইলে বড় খাঞ্জায়মি লাগিয়ে পেস্তা বাদাম কুচি ছিটিয়ে গরম হালুয়া ঢেলে সমান করতে হবে। ঠান্ডা হলে ছাঁচে বসিয়ে বিভিন্ন নকশা করে পরিবেশন করুন।

আর একটি চমৎকার রেসিপি দিলাম- বাসায় তৈরি করে আমাকে জানাবেন। শুকনো খেঁজুরের হালুয়া-উপকরণ : শুকনা খেঁজুর ২৫০ গ্রাম, চিনি ১ কাপ, গুঁড়ো দুধ ১ কাপ, পেস্তা কুঁচি পৌনে ১ কাপ, পানি ২ কাপ, কাঠ বাদাম কুচি, ঘি ৩+৬ টেবিল চামচ। প্রণালী : খোরমা ২৪ ঘন্টা আগে ভিজিয়ে রাখুন। ২৪ ঘন্টা পরে খোরমা ছেঁকে ভেতরের আটিটা ফেলে দিন। এবার খোরমা ও ২ কাপ পানি, কাঠ বাদাম, গুঁড়ো দুধ একসঙ্গে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করুন।

এবার অন্য একটি পাত্রে ২ টেবিল চামচ ঘি দিয়ে খোরমার মিশ্রণটা ঢেলে দিন। একটু পানি শুকানোর পর চিনি দিন। কিছুক্ষণ ভুনার পর বাকি ৬ টেবিল চামচ, ঘি দিন। এরপর নামিয়ে একটু ঠাণ্ডা হলে পেস্তা কুচি দিন। , خَيْرُ يَوْمٍ طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ يَوْمُ الْجُمُعَةِ فِيهِ خُلِقَ آدَمُ وَفِيهِ أُدْخِلَ الْجَنَّةَ وَفِيهِ أُخْرِجَ مِنْهَا وَلَا تَقُومُ السَّاعَةُ إِلَّا فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ “ আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সেই তাওফিক দান করুন।

আমীন। শবে বরাত অবশ্যই উদ্যাপন করতে হবে শরীয়ত সম্মতভাবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।