আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রথ ম্যালা বিষয়ক

গনতন্ত্রের শুদ্ধতা চাই আজ সিলেটে রথের ম্যালায় গিয়াছিলাম, যাবার প্রস্তুতি নিতেছিলাম প্রায় চার দিন থেকে, ম্যালায় কি কি কিনবো তার ও একখান লিস্টি বানাইয়া ফেলিয়াছিলাম ১ বাশের বাঁশি(সামনে বেলুন লাগানো থাকে , ফুঁ দিয়া বেলুন ফুলাইতে হয়, তারপর বেলুনের বাতাস বাইর হউয়ার সময় পোওওওওওওও কইরা বাজে) ২ কাঠের ঠ্যালা গাড়ি(কাঠের হাতলের সামনে দিটা চাক্কা থাকে তার উপর পাখা থাকে তিন খান, হাতল ধইরা দৌড় দিতে হয় চাকা কট কট করে আর পাখনা ঘোরে, ব্যাপক মজা!!) ৩ টমটম(সুতা বাধা দুই চাকার গাড়ি সুতা ধইরা দৌড় দিতে হয়), ৪ কাঠের বন্দুক(এর ভিতর ইটা দিয়া লোড কইরা ট্রিগার চাপলেই কেল্লাফতে), ৫ স্টিলের বন্দুক(যাহার ভিতরে বারুদের রিল ঢুকাইতে হয় এবং পটাশ পটাশ ফাটে) ৬ মাটির বাঘ, ভাল্লুক, বক, টিয়া, হরিন (এগুলারে সামনে সাজাইয়া, কাঠের বন্দুক দিয়া শিকার করার ব্যাপক (হিংস্র) আনন্দ ) ৭ রকেট (কাচের পাইপ এ থাকে লাল নীল পানির মাঝে , সেই ফানেল উল্টাইলে শাই শাই করে রকেট ওপরে ওঠে) ৮ বাঘের মুখোশ (প্লাস্টীকের) ৯ ডুগডুগি খাবারের ও একটা লিস্টি আছিল ১ গজা (গাঁজা নহে গজা) ২ পাপড় (থালার সমান সমান পাপড়) ৩ গরম পিয়াজু (আলুজি বা ডালুজি নয় সলিড পিয়াজি) ৪ বাতাসা ৫ খৈ ৬ গুড়ের জিলাপী যাহোক আমার বিশাল লিস্টি লইয়া মেলায় যাইয়া যারপরনাই হতাশ, সেখানে আমার লিস্টির কিছুই নাই, আছে ব্যাটারিতে চলা বেঞ্জ ফেরারি, বেন টেন, পকেমন, রোবোকপ, মেয়েদের হরেক কস্মেটিক্স, ফ্রিজ ওভেন, গ্রোসারি, সালোয়ার কামিজ গেঞ্জি, কঙ্কাল সদৃশ গলার মালা, ব্যাটারি চালিত এ কে ৪৭, কলাশনিকভ, চাবি দেয়া বাঘ হাতি ঘোড়া, ভ্যানিটি ব্যাগ, দাবাং, ওয়ান্টেড জিন্সের প্যান্ট, ফুচকা, বার্গার, পেটিস। জুয়ার টেবিল জমজমাট, পাখির দোকান যেখানে দুর্লভ সাদা ঘুঘু ঘুপচি খাচায় বিক্রি হচ্ছে, পরিবেশ অধিদপ্তর কে কাচকলা দেখিয়ে। হায়রে রথের ম্যালা!!! আমার প্রজন্মের সবকিছুই পালটে গেছে!! আমি ভাবছি আমাদের পিতাদের প্রজন্ম এই পৃথিবীতে বেঁচে আছে কিভাবে!!! তবে ম্যালায় একটি বস্তু কিনিয়াছি যাহা ব্যাপক পছন্দ হইয়াছে, এক বৃদ্ধ বেহালা নামক একটি বাদ্যযন্ত্র বিক্রি করিতেছিল (হাতে তৈরি) ইহার আভিধানিক নাম আমি জানিনা, তবে ইহা বেহালা গোত্রিয় বটে, ইক্টা মাটির ডুঙ্গির সাথে এক খানা বাশের কঞ্চি বাধিয়া , তাহাতে টান টান সুতা বাধানো হইয়াছে, এবং উহা বাজাইবার উদ্দেশে একটি ধনুকের ন্যায় কঞ্চি দেয়া হয়েছে, ব্রিসশ যখন তা বাজাইয়া শাহ আব্দুল ফকিরের গান ধরিয়াছিলেন, চিত্ত ব্যাপক বিনোদিত হইয়াছিল, ভগ্ন হৃদয়ে বঘরে আসিয়ে ভাবিলাম বেহালা বাজাইয়া চিত্ত প্রসন্ন করিতে উদ্যত হই, প্রথমবার গুতা দেয়ার পরে যে শব্দ বাহির হইল তাহা যদি সঙ্গিত হয় তবে আমি বেথভেন হইয়া যাব। তবু আমি অধির আগ্রহে সেই বাদ্যযন্ত্রই বাজাইয়া যাইতেছি(ইহাকে যদি বাজানো বলে তবেই)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।