রাজনীতির ময়দানে কোণঠাসা জঙ্গি-মৌলবাদীরা এখন অপ্রচারের প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে ইন্টারনেটকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী প্রচারণা, যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রশ্ন তোলা ও সর্বোপরি সরকারবিরোধী প্রচারণার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন বাংলা ব্লগ ও সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবকে। বিভিন্ন 'ফেক (ভুয়া) অ্যাকাউন্ট'-এর মাধ্যমে চলছে এই অপপ্রচার। নিজেরা স্বতন্ত্র সাইটও বানিয়েছে বেশ কিছু। জামায়াত-শিবির ও হিজবুত তাহরীরের আইটি (তথ্যপ্রযুক্তি) বিশেষজ্ঞ দলের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে এসব ব্লগ, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং ওয়েবসাইট।

ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ে দেখা যায়, নতুন তরুণদের মধ্যে জনমত গড়ে তোলাই এসব অপ্রচারের লক্ষ্য। সাধারণ ব্লগারদের অভিযোগ, ইন্টারনেটে কনটেন্ট তৈরিসহ আপলোডের ক্ষেত্রে দেশের নামিদামি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ এমনকি বুয়েটের শিক্ষার্থীদেরও কাজে লাগানো হচ্ছে। বেশ কিছু মেধাবী তরুণ 'পেইড ব্লগার' হিসেবে কাজ করছেন। বিভিন্ন ফোরামে প্রচারণা চালানোসহ জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের অনলাইনে জবাব দেওয়ার কাজ করেন এরা। বর্তমানে মৌলবাদীদের একটি অন্যতম সাইট হচ্ছে 'ফ্রিজামাতলির্ডাস'।

এখানে প্রতিদিন জামায়াত-শিবিরের নানান খবরাখবর আপডেট করা হয়। সেই সঙ্গে করা হয় সরকারের তীব্র সমালোচনাও। সাইটটির ফেসবুক পেজে যে কোনো নতুন পোস্ট এলেই সেখানে মুহূর্তেই কয়েকশ 'কমেন্ট' ও 'লাইক' চলে আসে। তাদের মূল বক্তব্য 'জামায়াত নেতাদের মুক্তি আন্দোলন', 'এই গ্রেফতার নেহাৎ ক্ষমতার অপব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়' এবং 'রাজনৈতিক এই নিপীড়ন মানবতাবিরোধী'। আরেকটি বাংলা ব্লগ 'সোনার বাংলাদেশ' নিয়মিত প্রকাশ করে মৌলবাদীদের বিভিন্ন চিন্তাভাবনা।

ওই ব্লগটি নিজেদের নিরপেক্ষ প্রমাণ করতে কয়েকজন প্রগতিশীল লেখকের লেখা প্রকাশ করলেও তাদের মূল লক্ষ্য জামায়াত-শিবিরকে প্রমোট করা। শাহরিয়ারের স্বপ্নবিলাস নামে একটি ব্লগে লেখা হয়েছে, 'ধর্মনিরপেক্ষ বিষবৃক্ষের ফল যৌনসন্ত্রাস/ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রতিহত করুন'। একই সাইটে 'ইভ টিজিং, পরকীয়া : ধর্মনিরপেক্ষ বিষবৃক্ষের ফল' শীর্ষক লেখায় উল্লেখ করা হয়েছে, 'আওয়ামী লীগ সরাসরি ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী, আর বিএনপি যদিও অনেকটা ধর্মনিরপেক্ষ নীতিতেই চলে তবে ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় ইসলামী অনুশাসনকে তারা কিছুটা মূল্যায়ন করে। তাই তো চারদলীয় জোটকে বলা হয় বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী জোট, অপর দিকে আওয়ামী নেতৃত্বাধীন মহাজোট ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী জোট। ' সূত্র: ।