আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুষকে না বলি, ঘুষখোরদের ঘৃনা করি।

আত্মার উন্নতি বিকাশ সাধন ও প্রশান্তি লাভের জন্য পাপমুক্ত কর্মের প্রয়োজন। তাই সৃষ্টিকর্তা মানুষকে তাঁর কর্মপন্থা নির্বাচনের পূর্ণ স্বাধীনতা বা স্বেচ্ছাধিকার দিয়েছেন। কাজের ভালো মন্দের জন্য মানুষ নিজেই দায়ী। কারণ ভালো করা বা মন্দ করার মানুষের স্বেচ্ছাধিকারভূক্ত। যদি ভালো বা মন্দ করার শক্তি আল¬াহ মানুষকে প্রদান করেছেন।

নিজের অবস্থান অনুযায়ী কর্ম করে অর্থ উপার্জন করা আর উপার্জন অনুযায়ী ব্যয় করার মাধ্যমে জীবন-যাপন করাই প্রতিটি ধর্মের শিক্ষা। তবে মানুষের প্রবৃত্তি সদা সর্বদা অন্যায় অসত্য ও পাপের প্রতি প্ররোচিত ও প্রলুদ্ধ হয়। এজন্যই কামনা বাসনা ও ঐশ্চর্যের প্রতি মানুষ বেশি ঝোকে। আর ধর্ম ও সমাজ নিষিদ্ধ কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন টাকা। বিলাসবহুল জীবন, মাত্রাতিরিক্ত চাহিদা, কোটিপতি হওয়ার বাসনা মানুষে অর্থলিপ্সা করে তোলে আর অবৈধ উপায়ে টাকা উপর্জনের লিপ্সা মানুষের অর্ন্তনিহিত শক্তি।

নীতিজ্ঞান (Moral sense) ন্যায়পরায়নতা (Justice) পাপ-পুন্য, ন্যায়-অন্যায়কে চেনেনা। ঘুষখোর ও দূর্নীতিবাজদের বিবেক নেই। তারা কোন ধর্মের লোক নয়। ঘুষখোর,দূর্নীতিবাজরা বিদ্ধান হলেও এরা জ্ঞান পাপী ইবলিশ শয়তান। ইংরেজীতে বলা হয় Rough Diamond | এরা সমাজ, রাষ্ট্র বিশেষ করে সাধারণ জনগণের জন্য জুম্মন কসাই।

জীবনকে একমাত্র ভোগবাদী দর্শনে বিশ্বাসীরাই ঘোষকোর হয়। ঘোষখোররা আত্মীয়তার মাধ্যেও স্বার্থকেন্দ্রকি হয়। অনেকে ধর্মীয় লেবাস ধরে বাড়িয়ে কথা বলে। মানুষ পার্থিব ভোগ এবং ইন্দ্রিয় তৃপ্তিকে জীবনের চরমলক্ষ্য বলে মনে করে অবৈধ উপার্জনে লিপ্ত থাকে। অসত্য উপায়ে উপর্জন করতে করতে এক সময় জীবনটাই পাপ পঙ্খিলতায় পূর্ণ হয়ে যায় তা পাপী ব্যক্তি বুঝেনা।

টাকা মানুষকে মেধাশুন্য করে তোলে। ঘুষখোর ,দূর্বল ও দূর্নীতিগ্রস্থ ব্যক্তি দ্বারা পরিচিালিত প্রতিষ্ঠানটির স্বাভাবিক কার্যক্রম বিনষ্ট হয়। যেমন সম্প্রতি তালসারা দরবার শরীফে ডাকাতি করে ধরা পড়ে র‌্যাব-৭ এর কর্মকর্তা লে.কর্ণেল জুলফিকার আলী মজুমদার। রুশ প্রবাদ আছে টাকা যখন কথা বলে তখন সত্য চুপ করে থাকে। মনিষী ‘কিরণ’র মতে সে টাকা চায় যে পৃথিবীর সবকিছু চায়।

কিন্তু নিয়তি বড় নিষ্ঠুর ও নির্মম যে দূর্নীতিবাজ ব্যক্তিরা সমাজসেবা করেও অমর হতে পারেননি। তাই অবৈধ অর্থ নশ্বর আর সৎপথের উপর্জন অবিনশ্বর। নেশা জাতীয় দ্রব্য সামগ্রী যেমন বিবেক ও ভালো-মন্দের চিন্তা বিভ্রমকারী তেমনি টাকা আসক্তিরা ভালো-মন্দের বিভ্রমকারী। কোন প্রকারে টাকা নিজ পকেটে নিতে পারলেই হলো। নেশার উপকরণের অর্থ যোগান করতে যেমন চিনতাই, চুরি, ডাকাতি, রাহাজানিসহ বিভিন্ন লিপ্ত হয়।

তেমনি টাকার আসক্তিরা ঘুষ দূর্নীতি,ফাইল আটকানো, খারাপ ব্যবহার, অন্যায় আচরণ করে থাকে। বড় চেয়ার ও বিচারের আসনে বসলে টাকার নেশা হিতাহিত ও ভালো-মন্দ জ্ঞানকে শুন্য করে। কম সময়ে কোটিপতি, বাড়ি গাড়ির ইত্যাদির মালিক হওয়ার নেশা মানুষকে বোধ, বুদ্ধি, বিবেককে নষ্ঠ করে। ধর্মে মানুসকে সৃষ্ঠির সেরা জীব হিসাবে যেমন আখ্যা দিয়েছেন তেমনি আখ্যা দিয়েছেন মানুষ জীব জন্তুর চেয়েও অধম। কিন্তু ইতিহাস পড়লে দেখা যায় টাকার জন্য কেউ আমর হননি, হয়েছেন মানবীয় কাজের জন্য।

বর্তমান প্রজন্ম ও আগামী প্রজন্মের জন্য যারা ভালো পথ ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করেছেন তারা কেউ কোটিপতি নয় কিংবা টাকার জোরে করেননি। অঢেল বনাঢ্য পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন তারাও অমর হয়েছেন কঠোর সাধনা, কষ্ঠ আর মানব কল্যাণময় কাজের জন্য। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত চষে মাইকেল এইচ হার্ট যে, ১০০ মনিষী বের করেছেন তরা কেউ ধনাঢ্য ও টাকাওয়ালা ছিল। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.), ইমাম আবু হানিফা, হযরত মুসা (আ.), হযরত ইসা (আ.) জাবির ইবনে হাইয়ান, ইমামা বোখারী (র.), আল ফারাবী, মহাকবি ফেরদৌসী, ইমাম গাজ্জালী (র.) আল¬ামা শেখ সাদী (র.), কাজী নজরুল ইসলাম, মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক পাশা, গৌতম বুদ্ধ, স্বামাী বিবেকান্দ, শ্রী রামকৃষ্ণ, শ্রী চৈতন্য, আলেকজান্ডার ফ্লেমিং, লেনিন, মাওসেতুং বারট্রান্ড রাসেল, কালমার্কস, ডা.হ্যানিমেন, লেভ তলস্তয়, উইলিয়াম সেক্সপিয়ার, জন মিলটন, সক্রেটিস, মার্টিন লুথার কিং, আব্রাহাম লিঙ্কন, পে¬টো, লুই পাস্ত্তর, কনফুসিয়াস, অ্যরিষ্টটল, ইবনে সিনা, জন কিটস, টমাস আলভা এডিসন প্রমুখ, সাধনা, কষ্ঠ আর মানব কল্যাণময় কাজের জন্য পৃতিবীতে অমরত্ব লাভ করছেন। আমরা যে হাজী মুহাম্মদ মহসীনের নাম স্মরণ করি তা তাঁর ধনের জন্য নয় দয়া ও দানশীলতার জন্য।

মহানবী হয়রত মুহাম্মদ (সঃ) বলেন মানবদেহে এমন এক টুকরা মাংস আছে, যে মাংস টুকরা যখন পবিত্র হয় তখন সমস্ত দেহই পবিত্র হয় আর সে মাংস টুকরা যখন অপবিত্র হয়ে পড়ে তখন সমস্ত দেহই অপবিত্র হয়ে যায়। আর তা হলো কলব বা অন্তর। আর টাকাকে সৃষ্ঠিকর্তা কি মনে করেন তা জানতে দেখুন তিনি কাদেরকে টাকা দিয়েছেন। সৎ উপার্জনকারী ব্যক্তিগত, সামাজিক ও পারিবারিক এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে সুখ, শান্তি শৃঙ্খলা ও উন্নতি লাভ করে। সৎ ব্যক্তিরা গরীব হলেও মহান আল¬াহর সাহায্য পায়।

বিপদে আপদে মুক্তি পায়। বালা-মুসীবতে, রোগ শোকে ও সুখ-দুঃখে প্রবল আত্ন উন্নতি ঘটায় মৃত্যুকালে সততার জন্য প্রশান্তি লাভ করে। মনে অসৎ উপজর্নের কোনরূপ হা-হুতাশ বা আপসোস থাকেনা। পাপের প্রায়চিত্ত ভোগেনা। মৃত্যুতে সকলেই সমবেদনা ও দোয়া করে।

আসুন বিকন স্কট এ শে¬াগানে বলি 1. টাকায় টাকা আনতে পারে কিন্তু সম্মান আনতে পারেনা। 2. For the love of money is the root of all evils 3. টাকাই জীবনের সবকিছুু নয়, অর্থের দাপটে করায়ত্ত করা সম্পদ টেকসই হয়না। 4. আত্মাকে কলুষমুক্ত করতে হালাল উপর্জন করি। 5. আল¬াহ প্রদ্ত্ত শ্রেষ্ট নেয়ামত সন্তান সন্তন্তিকে হালাল রিজিক দিয়ে বড় করি। 6. মৃত্যুকালে প্রশান্তিতে মরি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।