আপনারা সবাই নিশ্চয়ই মাহফুজুর রহমানকে চিনেন। সে বহু প্রতিভার অধিকারী। একাধারে ডক্টর, কাককণ্ঠী গায়ক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, কোকিলকণ্ঠী গায়িকার স্বমীসহ আরো অনেক কিছু। এই ইভা রহমান কিন্তু বাসায় কাজের মেয়ের ক্যাটগরির ছিল। এটিএন বাংলা আজ তাকে তথকথিত জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী বানিয়ে ছেড়েছে।
বাংলাদেশের বহুল পরিচিত একটি টিভি চ্যানেলের মালিক হয়ে মাহফুজ ধরাকে সরা জ্ঞান করে।
সে নিজেকে বর্তমানে জাতিসংঘের মহাসচিবের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। সাগর রুনি হত্যার পর সন্দেহের তীর তার দিকে মারা হয়। কিন্তু সে একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। তাই কোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির মুখোমুখি তিনি হননি।
যদিও সন্দেহের বশে এদেশের অনেককে গ্রেফতার করে রিমাণ্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। যেমন নরসিংদীর জনপ্রিয় মেয়র লোকমান হত্যার পর পরই ঢাকা থেকে বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বিডিআর বিদ্রোহের জন্য নাসির উদ্দিনকে পিন্টুকে গ্রেফতার করে এখনো কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্টে আবদ্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু এতবড় আলোচিত একটা ঘটনার জন্য সন্দেহজনক প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে রিমাণ্ডে নেওয়া হয়নি তা আমরা জানি।
সম্প্রতি সে লন্ডনে একটি কমি্উনিটি সমাবেশে যে বক্তব্য দিয়েছে তার জন্য সমগ্র সিলেটিদের কাছে এমনকি গোটা দেশবাসীর কাছে তাকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে।
কেউ যদি আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে তাহলে কি তাকে অভদ্র বলা যায়? তাহলে তো অনেক কবিকে আমরা অভদ্র বলতে পারি। ঠিক তেমনি দেশের বাঘা বাঘা অনেক রাজনীতিবিদতকেও অভদ্র বলা যায়।
আঞ্চলিক ভাষা হলো মায়ের ভাষা। এ ভাষায় কথা বলাটা গর্বের। কেউ যদি মনে করে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলাটা অভদ্রতা তাহলে তার চেয়ে বড়ো অভদ্র ও মূর্খ আর দ্বিতীয়টি হয় না।
মাহফুজুর রহমান ঠিকই সে রকম একটি লোক।
সিলেট বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি জনপদ। ৩৬০ আউলিয়ার এই পূণ্যভুমির ইতিহাস ঘাটলে অনেক গৌরবময় বিষয় পাওয়া যায়। এদেশ যখন একুশটি জেলায় বিভক্ত ছিল তখন একটি সময় ১৭টি জেলার ডিসি ছিলেন এই সিলেটের। এছাড়া অনেক গণ্যমাণ্য ব্যক্তিত্ব এই সিলেট থেকে উঠে এসেছিলেন।
তারা কোনোক্রমেই অভদ্র ছিলেন না। তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কারো যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে ইতিহাস ঘেটে দেখতে পারেন
আমি যতদূর জানি, মাহফুজুর রহমান অল্পশিক্ষিত। সঠিকভাবে জানি না। তার কথা শুনে সেই প্রবাদটার যথর্থতা পাওয়া গেলা।
সত্যিই তো অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী। সে আবার ডক্টর। কোথা থেকে সে পিএইচডি করল? জানতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে।
সাগর রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সে যা বলল, তার জন্য তাকে রিমাণ্ডে নেওয়া উচিত। তাকে রিমাণ্ডে নিলে কিছুটা হলেও রহস্য উদ্ধার হবে বলে আমি মনে করি।
এই প্রসেঙ্গ একটি ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। আমি তখন ভার্সিটিতে সবে ভর্তি হয়েছি। প্রথম বর্ষের কথা বলছি। একদিন স্যার একটি মজার ঘটনা বলেছিলেন। বিষয়টি আসলে খুবই মজার ছিল।
স্যার এটাকে বাস্তব ঘটনা বললে আমার কাছে কেন যেন অবাস্তব মনে হয়েছিল। তবে একেবারে অবাস্তব মনে হয়নি। কারণ : ওই স্যার সাধারণত ফাও কথা বলেন না।
তো এবার মজার বিষয়টা শুনুন। স্যার যে দেশটির নাম বলেছিলেন সেটির কথা এখন পুরোপুরি মনে নেই।
তবে যতদূর মনে হয় ফ্রান্স অথবা স্পেন এর ঘটনা হবে এটি। এক ধনী লোক তার ঘোড়ার উপর চড়ে নদীর পাড় দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে অনেক বড় ধনী। তার সম্পদের কোনো অভাব নেই। তো ঘোড়ার চড়ে রাস্তা দিয়ে যাবার সময় সে একটি বিরাট গেইট দেখতে পেল।
গেইটটি দেখতে খুবই সুন্দর ছিল।
তাই সে ভিতরে ঢুকে পড়ল। ভিতরে ঢুকে সবুজ ক্যাম্পাস দেখে তার ভালো লেগে গেল। আশেপাশের লোকদের জিজ্ঞেস করে সে জানতে পারল এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃপক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য সে প্রশাসনিক ভবনে গেল।
বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ তার টাকা-পয়সার কথা শুনে তাকে একখান ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করল। লোকটি অনেক টাকার বিনিময়ে অফারটি লোফে নিল। যথারীতি একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হলো।
লোকটি ডিগ্রি নিয়ে চলে গেল। রাস্তায় হঠাৎ তার মনে পড়ল, আরে আমার তো টাকা-পয়সার কোনো অভাব নাই।
আমি তো ইচ্ছা করলে আমার ঘোড়ার জন্য একটি ডক্টরেট ডিগ্রি নিতে পারি। যেই ভাবা সেই কাজ। লোকটি আমার বিশ্ববিদ্যালয় অভিমুখে রওয়ানা হলো। গিয়ে কতৃপক্ষকে তার ঘোড়ার জন্য একটি ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদানের জন্য অনুরোধ জানাল। তখন কর্তৃপক্ষ বলল, স্যার আমরা শুধু গাধাকে ডক্টরেট ডিগ্রি দিই।
ঘোড়াকে দিই না।
অনেক দিন পর এই কাহিনী লিখতে বসলাম সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যের জের ধরে। এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান তথাকথিত ডক্টরেট ডিগ্রিধারি অল্পশিক্ষিত এক মুর্খের মন্তব্য অনেক দিন পর আমাকে এই ঘটনা মনে করিয়ে দিল।
এই বদমাইসটি আবার বিয়ে করেছে ইভার মতো কাজের মেয়ে টাইপের একটি মেয়েকে। কিন্তু মিডিয়ার মালিক হওয়ার বদৌলতে সেই কাজের মেয়ে ক্যাটাগরির ইভা আজ দেশের অন্যতম একজন কণ্ঠশিল্পী।
আর মাহফুজুর রহমানও একজন কণ্টশিল্পী। হায়রে ক্ষমতা! ক্ষমতা কাককেও কোকিল বানিয়ে ছাড়ে। এই তথাকথিত ডক্টর আজ বেশি বেড়ে গেছে। এখনই এই বদমাসটাকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।