আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক নজরে দেখে নিই-

বিএনপি জামায়াত আমলে যেসব দলীয়করণ ও প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়েছিলো: ১। জন-প্রশাসন . প্রশাসন দলীয়করণ না করার ওয়াদা ভঙ্গ। হাওয়া ভবনের নির্দেশে গণবদলি, ৫ হাজার ১১৯ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা ও পদোন্নতি স্থগিত করা; . ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে জোটের পক্ষে কাজ করার পুরষ্কার হিসেবে তৎকালীন ৩৯ জন ডিসিকে শূন্যপদ না থাকা সত্ত্বেও যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। পদোন্নতি পেয়ে তারা দলবেধে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন কৃতজ্ঞতা জানাতে; . সম্প্রতি দলীয় বিবেচনায় ৩৭৮ জন সিনিয়র সহকারী সচিবকে উপসচিব করা হয়েছে। বিএনপি-জামাতদলীয় আনুগত্য না থাকার কারণে বাদ পড়েছে প্রায় ২০০ কর্মকর্তা; (উধরষু ঝঃধৎ, ঋবনৎঁধৎু ৮, ২০০৬) . প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর ২০০৫ বিএনপি দলীয় রাজনৈতিক সভায় যোগ দিয়েছে কেবিনেট সেক্রেটারি এএসএম আব্দুল হালিম; . চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে দলীয় বিবেচনা সর্বকালের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে।

প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়গুলোতে বর্তমানে প্রায় ২৪০ জনকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া; (উধরষু ঝঃধৎ, ঋবনৎঁধৎু ৮, ২০০৬) . রাষ্ট্রপতির কোটায় পদোন্নতির বিধানের ক্ষেত্রেও পার্সেন্টেজ উঠিয়ে দলীয় বিবেচনায় যত খুশি পদোন্নতির বিধান করা; . যোগ্যতার সকল মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বিএনপি-জামাত রাজনীতির সমর্থক না হওয়ার কারণে প্রশাসনে ওএসডির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬৫ জন (২১ আগস্ট ২০০৩ পর্যন্ত)। বর্তমানে ৩৭৮ জনকে উপসচিব করায় এই সংখ্যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি দাঁড়িয়েছে। ২। পুলিশ প্রশাসন .ক্ষমতায় এসে এ পর্যন্ত সহস্রাধিক পুলিশ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা (অতিরিক্ত আইজি-৬, ডিআইজি-১৯, অতিরিক্ত ডিআইজি-৫, এসপি-৪০, এএসপি- ২, এসআই-৪৪৮, সার্জেন্ট-২, আর্মড এসআই-১৯, এএসআই-৯৫, হাবিলদার-৩৫, নায়েক-১২, ও কনস্টেবল-৩২৫)। . সম্পূর্ণ দলীয় বিবেচনায় সকল নিয়মনীতি ভঙ্গ করে অনুগত কর্মকর্তাগণকে পদোন্নতি দেওয়া; . সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার জন্য সেনাবাহিনী হতে চাকরিচ্যুত এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহুদুল হক এবং আশরাফুল হুদাকে চুক্তিভিত্তিক আইজিপি নিয়োগ।

একইভাবে পরবর্তীতে আব্দুল কাইয়ুমকে আইজিপি এবং র‌্যাব- এর ডিজি আব্দুল আজিজ সরকারকে অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ। উপমহাদেশে পুলিশের ইতিহাসে এই ধরনের বেআইনি নিয়োগের দৃষ্টান্ত নেই। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত আইজিপি শহুদুল হক আদালত অবমাননার জন্য হাইকোর্ট কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও আইন ভঙ্গ করে তাকে স্বপদে বহাল রাখা; . ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য আগামী নির্বাচনের পূর্বেই কোন নিয়মনীতি অনুসরণ ছাড়াই বিএনপি ও জামাতের ২৯৯ জন ক্যাডারকে এএসপি, ১,৪২২ জন ক্যাডারকে এসআই, ২৬৮ জন ক্যাডারকে সার্জেন্ট এবং দলীয় বিবেচনায় ২৪,২৭০ জনকে কনস্টেবল পদে নিয়োগ দিয়ে সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ সমাপণান্তে পদায়নের ব্যবস্থা করা। এছাড়াও দলীয় ক্যাডারদের চাকরি প্রদানের লক্ষ্যে আরও ২০০জন এএসপি, ২৬৩ জন এসআই ১১৮ জন সার্জেন্ট এবং ৪০৬জন কনস্টেবল নিয়োগ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। . দলীয় বিবেচনায় সন্ত্রাসী, অপরাধমূলক ও জঙ্গি তৎপরতায় লিপ্ত আসামিদেরকেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

এসআই হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে রমনা বটমূলে বোমা হামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি মিজানুর রহমান স্বাধীন, জেএমবি জঙ্গি নেতা মাসুদ রানা প্রমুখ। একইভাবে জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থায় (এনএসআই) নিয়োগ পেয়েছে ছিনতাই ও অপহরণ মামলায় কুমিল-ায় গ্রেফতারকৃত আসামি চট্টগ্রামের দলীয় ক্যাডার একরামুল হক। . বিএনপি-জামাতের ক্যাডার না হওয়ার কারণে পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণের শেষ সপ্তাহে ২৯ জন এএসপি এবং ২১ জন এসআইকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া; . পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর হিসেবে রাজশাহী জেলা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ১৬ জন। তার মধ্যে ৮ জন গোদাগাড়ি উপজেলার। এই ৮ জনের মধ্যে ৭ জনই ছাত্রদল নেতা; . পুলিশ বাহিনীকে দুর্বল, অকার্যকর এবং পুলিশের ওপর জনগণের আস্থা নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে সেনা সদস্যদের সমন্বয়ে পুলিশের পাল্টা র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটিলিয়ন (র‌্যাব) গঠন করা হয়েছে।

২০০৫-০৬ অর্থবছরের বাজেটে র‌্যাবের একজন সদস্যের বরাদ্দ দুইজন পুলিশ সদস্যের সমান। ফলে পুলিশ সদস্যের মাঝে অসন্তোষ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের মর্যাদা ক্ষুণœ ও তাদেরকে দলীয় স্বার্থে পুলিশি ভূমিকায় নামিয়ে বিতর্কিত করা; . অতীতে রক্ষীবাহিনীর বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালালেও রক্ষীবাহিনী যা করেনি, র‌্যাব ও পুলিশ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের আইন করে বিনা বিচারে মানুষ হত্যার মতো আইন, মানবাধিকার ও সংবিধান বিরোধী কাজ করাচ্ছে; . আইন-শৃঙ্খলার নামে চিতা, কোবরা প্রভৃতি নামে আরো অ্যালিট বাহিনী গড়ায় পুলিশের মধ্যে আস্থা হ্রাস ও পারস্পরিক অবিশ্বাস সৃষ্টি। ৩। বিচার বিভাগ . প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগ পৃথক করণের প্রতিশ্র“তি ভঙ্গ করেছে জোট সরকার। এ ব্যাপারে মাসদার হোসেন মামলার রায় কার্যকর করার ব্যাপারে ২১ বার সময় নিয়েও সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করে চলেছে জোট সরকার।

ফলে সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে রীট মামলা চলছে; . আওয়ামী লীগ আমলের ২২ জন বিচারপতি নিয়োগকে স্থায়ী করা হয়নি। অন্যদিকে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতা যাচাই না করেই দলীয় ব্যক্তিদের (যার মধ্যে ঘুষখোর ফায়েজি ও জাল সার্টিফিকেটধারী শহীদুল ইসলামের মতো দলীয় অযোগ্য ব্যক্তিও রয়েছে) নতুন বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে; . দলীয় বিবেচনায় বিচারক নিয়োগের উলঙ্গ নমুনা পাওয়া যায় বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করার আদেশ দানের ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের বিচারকদের বিব্রত বোধ করার মাধ্যমে; . একইদিনে ১২ শত মামলায় জামিন দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টিকারী বিচারপতি মোজাম্মেলকে বিএনপি এমপি বানিয়েছে; . চাকরিরত বিচারক রেজাউল করিম চুন্নু কিশোরগঞ্জে দলীয় জনসভায় অংশ নিয়ে আগামী নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রচার করছে; . বিএনপির এক সময়ের আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও সাবেক প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান পদে বসানোর উদ্দেশ্যে বিচারকদের চাকরির বয়স ২ বৎসর বাড়ানো হয়েছে। এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদটিকে দলীয়করণ ও বিতর্কিত করা হয়েছে; . সুপ্রিম কোর্ট সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও পরোয়ানা ছাড়া ৫৪ ধারা এবং ডিএমপি অধ্যাদেশ ‘৮৬তে গ্রেফতার নিষিদ্ধ এবং ১৬৭ ধারার অপব্যবহার করে পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া নিষিদ্ধ করে সুস্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও সরকার তা অমান্য করে সংবিধান লংঘন ও আদালত অবমাননা করে চলেছে; . বিচার বিভাগের ও উচ্চতর আদালতের স্বাধীনতার পরিপন্থি দ্রুত বিচার আদালত গঠনের নামে সংবিধানের ১০৯ ও ১১০ অনুচ্ছেদ লংঘন করেছে জোট সরকার; . বিরোধীদল বার কাউন্সিলে নির্বাচিত হয়ে প্রাধান্য বিস্তার করছে বলে বার কাউন্সিলের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা খর্ব করার উদ্দেশ্যে বার কাউন্সিল আইন সংশোধন করেছে। এর বিরুদ্ধে আপিল করলেও সরকার পক্ষ কারসাজি করে অনির্দিষ্টকালের জন্য শুনানি বিলম্বিত করছে; .আওয়ামী লীগ আমলে গঠিত ‘ল কমিশন’কে অকার্যকর করে রেখেছে দলীয় স্বার্থে। ৪।

নির্বাচন কমিশন . বিরোধী দলের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও একতরফাভাবে দলীয় অনুগত বিচারপতি এম, এ আজিজকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করা হয়েছে; . নির্বাচন কমিশনকে বিএনপি-র অঙ্গসংগঠনে পরিণত করা এবং হাইকোর্টের রায় বানচালের উদ্দেশ্যে বিএনপি-জামাত জোটের অনুগত বিতর্কিত ব্যক্তি স.ম. জাকারিয়া ও বিচারপতি মাহফুজুর রহমানকে কমিশনার নিয়োগ দেয়া হয়েছে; . দলীয় আনুগত্যের কারণে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে নির্বাচন কমিশন অস্বীকৃতি জানিয়েছে; . নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনস্ত করে অকার্যকর করা হয়েছে; . উপজেলা নির্বাচন অফিসার হিসেবে ছাত্রদল ও শিবিরের ৩০০ ক্যাডারকে নিয়োগ দান করা হয়েছে; . নির্বাচন কমিশনের দলীয় চরিত্রের কারণে তথাকথিত ভোটার তালিকা তৈরিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে জোটের ক্যাডাররা অংশ নিয়েছে; . স্বয়ং নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশে ভূয়া ভোটার তালিকা প্রণয়ন। প্রায় ২ কোটি ভূয়া ভোটার এবং ৫০ লক্ষাধিক মানুষকে ভোটার তালিকাভুক্ত না করে নির্বাচন কমিশন যে বিতর্কিত ভোটার তালিকা করেছে, খোদ জোট সরকার বেকায়দায় পড়ে তার সত্যতা স্বীকার করলেও নিজেদের দায়-দায়িত্ব স্বীকার করছে না। ভোটার তালিকা প্রণয়নের নামে ১৬৬ কোটি টাকা লোপাট; . বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই। ৫। কর্ম-কমিশন . জোট সরকারের গত ৪ বৎসরে পিএসসির সকল পরীক্ষারই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে।

উদ্দেশ্য দলীয় অযোগ্য ক্যাডারদের পাশ করিয়ে নিয়ে সরাসরি চাকরি প্রদান; . দলীয় বিবেচনায় অযোগ্য পিএসসি সদস্যকে তার সহকর্মীদের দ্বারা মার খেতে হয়েছে; . শিবির, ছাত্রদল ক্যাডারদের দলীয় বিবেচনায় নিয়োগের কারণে জনপ্রশাসন মেধাশূন্য, আদর্শহীন, সন্ত্রাস, জঙ্গিদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে; . প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দলীয়করণের উদ্দেশ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়েছে। (চলবে) Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।