আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গাড়ি পোড়ানো মামলা: এজাহারের সঙ্গে ঘটনার অমিল

বাস পুড়েছে সত্য। তবে বাস পোড়ানো মামলার এজাহারের বিবরণ ঠিক নেই। বাসের চালক ও যাত্রীদের বক্তব্য অনুযায়ী, ঘটনার স্থান ও সময় ছাড়া বাকি সবই সাজানো। মামলার এজাহারে বাদী তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইসমাইল মজুমদার তাঁর ‘চোখে দেখা’ ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। এতে বলা হয়, রোববার রাত নয়টা পাঁচ মিনিটে ফ্যালকন টাওয়ারের সামনে এসে তিনি দেখতে পান, ছয়-সাতটি মাইক্রোবাসে এক থেকে ৩৬ নম্বর আসামিরা বাসটির গতি রোধ করছেন।

বাসটি থামাতে না চাইলে বাসে থাকা ১ ও ২ নম্বর আসামি (কন্ডাক্টর ও হেলপার) চালককে জিম্মি করে জোর করে বাসটি দাঁড় করান। এ সময় তিন থেকে ৩৬ নম্বর আসামি বাসে ভাঙচুর চালান। এসআই ভাঙচুরকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। ভাঙচুরের ভয়ে যাত্রীরা বাস থেকে নেমে গেলে একজন আসামি বাসে অগ্নিসংযোগ করেন। তদন্ত শেষে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, হরতাল সফল করার জন্য আসামিরা মুঠোফোনের মাধ্যমে যে কথাবার্তা বলেন, তা ধারণ করা সিডি সংগ্রহ করা হয়েছে।

এক থেকে ৩৬ নম্বর আসামি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সবাই ছয়-সাতটি মাইক্রোবাসে করে ঘটনাস্থলে এসে বাসটির গতি রোধ করেন। এরপর ১ ও ২ নম্বর আসামি সোহেল মিয়া ও জসিম বাস ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। তবে বাসটির চালক ও যাত্রীরা প্রথম আলোকে বলেন, বাসটির চাকা ফেটে যাওয়ায় তা মেরামতের সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত বাসে আগুন দেয়। মাইক্রোবাস দিয়ে বাস থামানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি।

ঘটনাস্থলে বাসচালক আবু বকর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, উত্তরা থেকে আসার পথে বাসের সামনের একটি চাকা ফেটে যাওয়ায় তিনি বাসটি থামান। হেলপার জসিম ও কন্ডাক্টর সোহেলকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সেই বাসের চাকা খুলছিলেন। এমন সময় বাসের পেছন দিকে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত। তাঁরা তাদের দেখেননি। ঘটনার একই বর্ণনা দেন কয়েকজন যাত্রীও।

এজাহারে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া হেলপার ও কন্ডাক্টরসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার পরিকল্পনা ও অর্থায়নকারীর নাম। তাঁরা হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির সাত ও জামায়াতের একজন নেতা। বাসটির মালিক তৌহিদুল ইসলাম গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর চালক আবু বকরের ফোন পেয়ে তিনি গিয়ে দেখেন, বাসটি পুড়ে গেছে। বাসে কে আগুন দিল, তা চালক বা যাত্রীরা কেউ তাঁকে বলতে পারেননি। তিনি পুলিশকেও এ কথা বলেছেন বলে জানান।

তবে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বাসের দুই কর্মীকে ধরে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় পুলিশ বলছে, চার-পাঁচ দিন পর কর্মীদের বিষয়ে জানাবে। কিন্তু এখনো কিছু বলেনি। ত্যক্তবিরক্ত তৌহিদুল বলেন, তিনি কোনো দোষ করেননি, অথচ ভোগান্তির শিকার। তাঁর উপার্জনের অবলম্বন বাসটি বিনা কারণে ২৫ দিন ধরে আটকে রেখেছে পুলিশ।

কবে ছাড়বে বা আদৌ ছাড়বে কি না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারাবন্দী হেলপার জসিমের বাসা তেজগাঁও রেল কলোনিতে। তাঁর স্ত্রী শাহিনা প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে সাক্ষাতের সময় জসিম তাঁকে বলেছেন, কারা যেন বাসে আগুন দিয়েছে। এ জন্য পুলিশ তাঁকে ধরেছে। তাঁরা ভেবেছিলেন পুলিশ জিজ্ঞাসা করে ছেড়ে দেবে।

জসিমকে বাসমালিক বলেছিলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে যা, সকালে ছাড়ায়া আনুমনে’। জসিমের বিরুদ্ধে গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগ শুনে শাহিনা বলেন, ‘হায় আল্লাহ, হ্যাতে গাড়িত আগুন দিব ক্যা, হেয় তো গাড়ির ইস্টাপ। ’ দুই কর্মী সম্পর্কে বাসমালিক তৌহিদুল বলেন, ‘মামলার বিষয়গুলান দ্যাখতাছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা। আমি এহন কিছু কইবার পারুম না। আপনারা অবস্থা বোঝেন না।

’ সুত্র : প্রথম আলো বাংলাদেশে পুলিশের অবস্থা দেখেন! সামন্য বিশ্বাসযোগ্য একটা কাহিনী লেখার মত লোকও পুলিশ ডিপার্টমেন্টে নাই? এফডিসির আশেপাশে যে প্রোডাকশন বয়গুলো এর চেয়ে ভাল কাহিনী লিখতে পারত। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.