আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কখন যে ভালবেসেছি তোমাকে!! (এক প্রতারকের কাহিনী)

আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !! অনুশেখার বাবার যে আমাকে চড় মেড়ে বসবেন আমি ভাবি নি । চড়টা খাওয়ার জন্য আমি প্রস্তুতও ছিলাম না । ব্যালেন্স হারিয়ে সোজা গিয়ে পড়লাম সোফার কাছে । মাথার মধ্যে কেমন জানি ঝিমঝিম করে উঠল । অনুশেখা একটু দুরে দারিয়ে ছিল ।

ও নিজেও ভাবতে পারে নি যে ওর বাবা আমাকে এভাবে চড় মাড়বেন । “বাবা ওকে মেরো না প্লিজ” উঠে দাড়াতে দাড়াতে আমি অনুশেখার দিকে তাকালাম । ওর চোখে পানি ! আমার জন্য ! আমার মত একটা প্রতারকের জন্য ওর চোখে পানি ! অনুশেখার বাবা ওর দিকে তাকিয়ে বলল “তুই চুপ থাক। তুই এতো বোকা হলি কিভাবে ? আর জোচ্চরটার জন্য তোর মায়া লাগছে কেন?” অনুশেখা তখনও আমার দিকে তাকিয়ে । ওর চোখ দিয়ে দেখলাম পানি গড়িয়ে পড়ল ।

মেয়ে এই কান্ড দেখে ওর বাবা বিরক্ত হলেন । ওর বাবা এবার আমার দিকে চোখ ফেরালেন । “বল হারামজাদা আর কি নিয়েছিস আমার মেয়ে কাছ থেকে?” আমি কিছু বলার আগেই অনুশেখা বলল বাবা “ও আর কিছু নেয় নি । নেকলেসটা ও নিয়েছিল ও নিজেই ফেরত্ দিয়েছে । বাবা ও আর কিছু নেয় নি ।

বাবা প্লিজ ওকে আর মেরো না। ” ওর বাবা আবার ওর দিকে তাকিয়ে বিরক্ত হলেন । আর আমি হলাম বিশ্মিত । সত্যি তো আমার জন্য ওর কেন মায়া লাগছে ! এই মেয়েটা আসলেই এতো বোকা হল কিভাবে? সব কিছু জানার পরও অনুশেখার মনে আমার জন্য মায়া রয়েছে ভালবাসা রয়েছে মেয়েটা আসলেই বোকা । শুধু বোকা না বোকার চুড়ান্ত ।

হঠাত্ আমি লক্ষ্য করলাম আমার চোখ দিয়েও পানি পড়ছে । পানি পড়ছে অনুশেখার বাবার চড়ের জন্য না । অনুশেখার জন্য । তাহলে আমিও কি ওর মত বোকা হয়ে গেলাম? আমার মত প্রতারকও কি তাহলে কাউকে ভালবাসতে পারে?? অনুশেখার বাবা আমাকে পুলিশে দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু অনুশেখার জন্য দিতে পারল না । ওদের বাসা থেকে বের হয়ে হাটছি, মনকে বোঝালাম যে পিছন ফিরে তাকাবো না কিছুতেই ।

কিন্তু না তাকিয়ে পারলাম না । পিছন ফিরে যা দেখবো ভেবেছিলাম তাই হল । অনুশেখা দাড়িয়ে আছে । একদম গেটার কাছেই । মনের মধ্যে আবার সেই অচেনা অনুভূতি হল ।

এটার নামই কি ভালবাসা? আমি হাটতে থাকি আবার । আরো একবার তাকাই পিছনে । সে তখনও দাড়িয়ে । কয়দিন আগেও আমার জীবনটা কেমন ছিল ! অন্য রকম । মেয়েদের কে পটিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা নেওয়াই ছিল আমার কাজ ।

আর কেন জানি মেয়েগুলা পটেও যেত খুব তাড়াতাড়ি । আর একবার পটে গেলে মেয়েগুলার কাছে আমি হয়ে যেতাম দেবতা । যা বলতাম তাই বিশ্বাস করতো কোন কিছু না ভেবে । একবার একটা মেয়ে সাথে পরিচয় হয় ফোনে । মেয়েটার নাম ছিল দিয়া ।

বড় লোকের মেয়ে । যে আমাকে দিয়া নম্বরটা দিয়েছিল সে বলেছিল যে ওর কাছে একটা N97 আছে । আমার টার্গেট ছিল এই N97 গায়েব করবো । যেদিন ওর সাথে দেখা হয় সেদিনই সুযোগটা চলে আসে । KFC তে দেখা করি ।

দিয়ে চোখ মুখ দেখে আমি খুব ভাল করেই বুঝতে পারছিলাম যে আমাকে ওর পছন্দ হয়েছে । ওর সাথে কথা বলছি এমন সময় আমার ফোনে একটা ফোন আসে । আগে থেকে ঠিক করা ছিল । হ্যালো বলি কিছুক্ষন কথা বলি খুব সিরিয়াস ভাবে তারপর ওহ্ সিট বলে রেখে দিই । দিয়া বলে “কি হয়েছে?” “আমার একটা জরুরী ফোন ছিল এটা ।

মোবাইলে ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেছে । তুমি একটু বসো ব্যালেন্সটা রিচার্য করে নিয়ে আসি। “ দিয়া টোপ গিলে ফেলল । বলে “আমার ফোন দিয়ে কল কর । “ আমি প্রথমে নিতে চাই না ।

পরে নেই । KFC মধ্যে ভীড় ছিল । ওকে বলি তুমি অর্দার দাও । আমি একটু নিড়িবিলি কথা বলে আসছি । তারপর ওখান থেকেই হাওয়া ।

জানি না ও আমার জন্য কতক্ষন অপেক্ষা করেছিল । আমি একজনে সাথে খুব বেশি সময় ধরে থাকতাম না । যত তাড়াতাড়ি কেটে পড়া যায় । কিন্তু অনুশেখার বেলায় সব কিছু অলটপালট হয়ে গেল । আমার কিছু ইনফর্মার আছে ।

তাদের কাছ থেকেই আমি ওর খবর পাই । কদিন ওকে ফলো করি । খোজ খবর নিয়ে জানতে পারি যে অনুশেখার মন অসম্ভব নরম । আমি যতখানি দেখলাম ওর কাছ থেকে খালি হাতে কেউ ফেরত্ যায় নি । আমি এই সুযোগটা নিলাম ।

একদিন অনুশেখা ওর ভার্সিটি থেকে বের হচ্ছে । আমি আমার প্লান মত কাজ করা আরাম্ভ করলাম । ও যখন আমার কাছে চলে এসেছে তখন আমি একটা আইসক্রিম কিনে সবে একটা কামড় দিয়েছি অমনি একটা টোকাই এসে আমার প্যান্ট টান দিল । আগে থেকে টোকাইটা কে ঠিক করা ছিল । “স্যার দেন স্যার।

“ একটু হেসে আমি আমি আইসক্রিমটা দিয়ে দিলাম । ঠিক তখনই কোথ্থেকে যেন আরে একদল টোকাই এসে হাজির । এগুলোও ঠিক করাই ছিল । সবাই কেই কিনে দিতে হল । আমি জানি অনুশেখা আমাকে দেখছে ।

শুধু ও আরো অনেকেই আমাকে দেখছে । যে দেখে দেখুক । এবার হল আসল পার্ট । ওদের আইসক্রিমের দাম দিয়ে আমি এবার আমার জন্য আরো একটা আইসক্রিম কিনতে গেলাম । টাকা দেওয়ার সময় এমন একটা ভাব করলাম যেন আমার কাছে আর টাকা নাই ।

আইসক্রিম ওয়ালাকে আইসক্রিমটা ফেরত্ দিয়ে বললাম “সরি ভাই আর টাকা নাই আমার কাছে। “ তারপর হাটা দিলাম । একটু সন্দেহ ছিল তবুও ভরসা ছিল যে কাজ হবে । কাজ না হলে অবশ্য আরো অন্য ভাবে ট্রাই করতে হত । কিন্তু কাজ হল ।

একটু পরেই অনুশেখা আমাকে থামার জন্য ডাকদিল । পিছন ফিরে দেখি ও আমার দিকে এগিয়ে আসছে । হাতে দুটো আইসক্রিম । আমার দিকে একটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল “প্লিজ নিন” । আমি খানিকটা অবাক হওয়ার ভান করলাম একটু খুশিও হলাম ।

“Thank you” “আপনি কি এমন কাজ প্রায়ই করেন?” “কি রকম কাজ?” আমি না বোঝার ভান করি । “এই যে একটু আগে যা করলেন “ আমি হাসি । বলি “আসলে ব্যপারটা ওরকম না । কেউ যদি আমার কাছে কিছু চায় আর সেটা যদি আমার কাছে থাকে তাহলে কেন জানি দিয়ে দেই”। “কিন্তু তাই বলে পকেট খালি করে দেওয়া তো ঠিক না “।

‘ঠিক না । তবুও । দেখুন এই যে ঐ বাচ্চা গুলো আইসক্রিম পেয়ে যে আনন্দিত হয়েছে , ওদের মুখে যে হাসি এসেছে , এর কি কোন তুলনা আছে বলুন? কাউকে কষ্ট দেওয়া খুব সহজ কিন্তু কাউকে আনন্দ দেওয়া খুব কঠিন । কারো মুখে একটু হাসি আনতে যদি আমার খানিকটা কষ্ট হয় , হোক না” । আমার কথা গুলো মনে হল অনুশেখার পছন্দ হয়েছে ।

ও হাসলো । সত্যি খুব সুন্দর করে হাসল । যদিও আমার সব কিছু প্লান করা তবুও কেন জানি অনুশেখার হাসি দেখে বুকের মাঝে একট অদ্ভুদ অচেনা অনুভূতি হল “আপনার হাসিটা অনেক সুন্দর” । ও আবার হাসলো । “আপনি কোথায় থাকেন?’ কি কথার কি উত্তর ।

“আমি থাকি আজিমপুর” । “ওমা সে তো অনেক দুরে । আপনি যাবেন কিভাবে?” “বাসে|” । “কিন্তু আপনার কাছে তো টাকা নাই” । নিজের জ্বিব কাটলাম ।

তাইতো ভুল হয়ে যাচ্ছিল । বললাম “সমস্যা নাই । চলে যাবো” । “যদি কিছু মনে না করেন তাহলে আমি আপনাকে পৌছে দেই ? আমার সাথে গাড়ি আছে” । আমি একটু খুশি হলাম ।

বললাম “আপনার বাসা কি ঐ দিকেই । "না ঐ দিকে না । এইতো কাছেই” । “না না তাহলে যাওয়ার দরকার নাই । সত্যিই বলছি একদমই প্রয়োজন নাই” ।

“তাহলে এতো দুর আপনি কিভাবে যাবেন ? আপনার কাছে তো কোন টাকা নেই” । আমি মনে মনে খানিকটা অবাক না হয়ে পারলাম না । এই মেয়েটা আসলেই এরকম কেন ? আমি অপরিচিত একটা মানুষ আধা ঘন্টাও হয়নি এর সাথে কথা বলছি । তবুও আমি কিভাবে বাড়ি যাবো তা নিয়ে সে চিন্তিত । কেন? এরকম মানুষ কি আছে আজকাল? “কি ভাবছেন” ? “ভাবছি .... আচ্ছা আমার নাম কি বলুন তো?” “ নাম তো বলেন নি আপনি ! কি নাম আপনার?” “ আমরা কথা বলছি কতক্ষন?” “ এই ২০ মিনিট প্রায়” ।

“তাহলে একজন অপরিচিত মানুষের জন্য এতো চিন্তিত?” অনুশেখা কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থাকল । তারপর বলল “চিন্তা করছি কারন আমার কাছে মনে হয়েছে আপনি একজন ভাল মানুষ । একজন ভাল মানুষের একটু উপকার করতে পারলে আমার খুব ভাল লাগবে” । “এতো তাড়াতাড়ি কিন্তু মানুষকে চেনা যায় না” । অনুশেখা হাসল ।

“আমার মন বলছে আপনি ভাল মানুষ” । “ওকে ওকে মেনে নিলাম আমি ভাল মানুষ । তাহলে আমার একটা উপকার করুন” । “বলুন প্লিজ । আমাকে ২২ টাকা দিন আর আপনার মোবাইল নাম্বরটা” ।

অনুশেখা খানিকটা অবাক হল । “২২ টাকা?” “ব্যাখ্যা করছি । ২২ টাকা হল বাস ভাড়া । মোবাইল নাম্বরটা হল ঐ ২২ ফেরত্ দেবার জন্য” । অনুশেখা হেসে ফেলল ।

বলল “আপনি যে ভাল মানুষ তার প্রমান কিন্তু আবার দিলেন । “কিভাবে দিলাম । আমি নিজেই তো বুঝলাম না” । ও কিছু বলল না । ব্যাগ থেকে চকচকে একটা ১০০ টাকার নোট বের করে দিল ।

“২২ টাকা” । “সরি এর থেকে ছোট নোট আমার কাছে নেই” । তারপর ও মোবাইল নাম্বার দিল । বলল “আমার নাম অনুশেখা । আপনার ?” “ইফতেখার হাসান ।

তবে অপু বলে ডাকলে ভালো হয়” । তারপর আমি চলে আসি ওখান থেকে । ঐ দিন বিকালেই ১০০ টাকা অনুশেখার নাম্বরে পাঠিয়ে দিই । কিন্তু ওকে কল করি না । কেন জানি খুব ইচ্ছা করছিল ওর সাথে কথা বলার জন্য ।

কিন্তু করি না । অনুশেখাকে ফোন করি আরো ৩ দিন পর । মেয়েদের সাইকোলজি আমি মোটামুটি ভাল বুঝি । তাই আমি জানতাম আমার সাথে কথা বলার জন্য অনুশেখা অপেক্ষা করে আছে । ফোন দিলাম আমি “হ্যালো? অনুশেখা?” “ওহ্ আপনি? আমিতো ভেবেছিলাম আপনি হয়তো আমাকে আর ফোনই করবে না ।

টাকা পাবার পর আমি ওয়েট করছিলাম যে আপনি ফোন করবেন” । “সরি । আসলে সত্যি বলতে কি আমারও খুব ইচ্ছা করছিল আপনাকে ফোন করি । কিন্তু দ্বিধার কারনে করতে পারি নি । আপনি কি না কি মনে করেন?” “বলেছে আপনাকে ! কিছু মনে করলে কি আপনাকে ফোন নম্বর দিতাম বলুন ? আমি সত্যি আপনার ফোনের জন্য অপেক্ষা করে ছিলাম” ।

কিছুক্ষন নিরবতা । “আপনার কি আজ বিকালে একটু সময় হবে?” “আমি বলি কেন বলুন তো?” “আমি আপনার সাথে একটু দেখা করতে চাচ্ছিলাম” । “বিকালে তো আমার একটু কাজ আছে” । “ও” অনুশেখাকে মনে হল যেন একটু হতাশ হল । “তবে” ।

“তবে?” “আপনি ইচ্ছা করলে এখন আমার সাথে দেখা করতে পারেন । আমি এখন ঐখানেই আছি যেখানে আমাদের দেখা হয়েছিল” । “সত্যি?” “আপনি একটু দাড়ান আমি এক্ষুনি আসছি। “ তারপর সেই একই কাহিনী । দেখা করা ।

ঘন ঘন দেখা করা । ফোনে কথা বলা । রাতের পর রাত কথা বলা । একসময় আই লাভ ইউ বলা । অন্য দের বেলায় আমিই বলতাম কিন্তু এবার অনুশেখা বলল ।

খুব সুন্দর ভাবে বলল । আমরা সেদিন বসুন্ধারার কাশবনে গিয়ে ছিলাম । চারিদিকে শুভ্র কাশফুল । তার মাঝে আমরা দুজন বসে । ও কি যেন বলতে চাচ্ছিল ।

আমি বুঝতে পারছিলাম ও কি বলবে । তবুও বললাম “তুমি কি বলবা আমাকে ! তোমার মুখ দেখে মনে হচ্ছে কিছু বলতে চাও” । “তুমি বুঝো না কি বলতে চাই” । “কি?” ওর চোখের দিকে ভাল করে তাকাই । “কোথায়? কি বলতে চাও বলো প্লিজ” ।

ও খানিকটা যেন মুখ কালো করলো । অন্য দিকে তাকালো । আমি ওকে ধরে আমার দিকে ঘুরালাম । বললাম “প্লিজ বলো” । ও কিছুক্ষন আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলো ।

আমি খুব অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম ওর চোখে পানি জমতে শুরু করেছে । কি অদ্ভূদ সুন্দর সেই দৃশ্য ! “অপু আমি জানি না এটাকে সত্যিই ভালবাসা বলে কি না কিন্তু দিনের একটা মুহুর্তও আমি তোমার কথা চিন্তা না করে থাকতে পারি না । আমার মনে হয় আমি তোমার প্রেমে পড়েছি” । আমি হাসলাম । “মনে হয়? সিওর না?” এবার অনুশেখার চোখ দিযে টুপ করে পানি গড়িয়ে পড়ল ।

“যাও তুমি একদমই সিরিয়াস না । আমি আমি ....” ও উঠে যেতে চাইল । আমি ওর হাত ধরে আটকালাম । “অনু কোথায় যাও ? বস বাবা, আমি সিরিয়াস । সত্যি ।

“ অনুশেখা বসল । আমি ওর চোখ মুছে দিলাম । বললাম “তুমি আজকে বললে । তুমি যে দিন থেকে আমার প্রেমে পড়েছ আমি সেদিন থেকেই জানি। তোমার চোখ দুটো আমাকে চিত্কার করে বলেছে যে I LOVE YOU . আর আমিও তোমাকে ভালবাসি ।

অনেক আগে থেকেই তোমাকে ভালবাসি । ভালবাসি । “ তারপর তারপর থেকে আমাদের দিন গুলোর যেন রঙিন হয়ে উঠল । আমি সাধারনত একটা মেয়ের সাথে খুব দিন থাকি না । কিন্তু অনুশেখার সাথে অনেকদিনের রিলেশন হয়ে গেল ।

তাহলে কি আমি ওর উপর সত্যি সত্যি ফল করেছি ? নাহ্ ! এরকম হলে হবে না । তারপর ওর কাছ থেকে বড় কিছু হাতানোর চেষ্টা করলাম । এবং খুব সহজেই তা হয়েও গেল । ওর কাছ থেকে প্রায় লাখ টাকার নেকলেসটা হাতিয়ে নিলাম । এখন গায়েব হবার পালা ।

কিন্তু আমি কিছুতেই ওর কাছ থেকে গায়েব হতে পারলাম না । ওর ঐ নেকলেসটাও মেরে দিতে মন সায় দিলো না । ওকে না দেখে থাকতেও পারলাম না । প্রতি দিন ওর সাথে দেখা হয় কথা হয় । কিন্তু কি হল জানি না কাল রাতে ওকে ফোন করে সব কিছু সত্যি সত্যি বলে দিলাম ।

আর আজ সকালে নেকলেসটা ফেরত্ দিতে এসে এই বিপত্তি । ভদ্রলোক বেশ জোড়েই চড়টা মেড়েছে । এখনও ব্যাথা করছে । একা একা হাটছি আর অনুশেখার কথা ভাবছি । ও কি এখনও আমাকে ভালবাসবে ? নাকি ঘৃণা করবে ? যদি ঘৃণা করে তাহলে ? ওকে না দেখে কিভাবে থাকবো ? কিভাবে দিন কাটবে ? কিন্তু যদি ও আমাকে ঘৃণাই করবে তাহলে ওর চোখে পানি ছিল কেন ? ও আমাকে এখনও ভালবাসে ।

এখনও বাসে । আমার মন বলছে ও আমাকে ভালবাসে । ওর চোখ বলছে যে ও আমাকে ভালবাসে । আর.... যদিও এখনও আমার বিশ্বাস হচ্ছে না তবুও আমাকে স্বীকার করতেই হচ্ছে যে আমি সত্যি সত্যি অনুশেখার প্রেমে পড়ে গেছি !! আমি জানতাম অনুশেখা আমাকে ফোন করবে কিন্তু এতো জলদি ভাবিনি । পরদিন ওর ভার্সিটির সামনে এসেছি ওকে দেখবো বলে ।

এমন সময় অনুশেখার ফোন । ফোন রিসিভ করার পরও ও কোন কথা বলে না । আমিও চুপ । কি বলব ভেবে পাই না । কেবল ওর নিঃস্বাসের শব্দ শুনতে পাচ্ছি ।

কতক্ষন চুপ ছিলাম জানি না ও ই আগে মুখ খুলল । বলল “কাল রাতে আমি একটুও ঘুমাতে পারি নি । কতবার চেষ্টা করলাম তোমাকে ঘৃণা করতে । একটুও পারি নি । একটুও না ।

তুমি আমার সাথে যা ই করনা কেন যে ভাবে আমাকে নিয়ে খেলা করনা কেন আমিতো তোমাকে সত্যি ভালবেসেছিলাম । একে বারে মন থেকে । আমি কিভাবে তোমাকে ভুলে যাবো? বল? কিভাবে তোমাকে ঘৃণা করবো বল?” আমি কি বলব খুজে পাচ্ছি না । কি বলা উচিত্ তাও জানি না । খুব বলতে ইচ্ছা করছে যে আমিও সত্যি তোমাকে ভালবাসি ।

কিন্তু একথা কি ও বিশ্বাস করবে ? “আমার মন কি বলছে জানো? কি আমি জানতে চাই । তুমি আমার আশে পাশে আছো । তুমি আমার কাছা কাছি থাকলে এই ফিলিংসটা আমার সব সময় হয়” । আমি খানিকটা অবাক হলাম । আমি এখানে এসেছি ওর জানার কথা নয় ।

ও কিভাবে বুঝল ? “অনুশেখা আমি তোমার ভার্সিটির সামনে” । “সত্যি?” কিছুক্ষন পরেই ও চলে আসল । ওর চোখ ফোলা ফোলা । রাতে কেঁদেছে অনেক । ও আমার সামনেই দাড়িয়ে ।

কিছু বলতে যাবো এমন কোথা থেকে যেন একদল টোকাই এসে আমাকে ঘিরে ধরল । “স্যার আইসক্রিম খামু স্যার । সেই দিন খাওয়াই ছিলেন । আইজাকাও খাওয়ান স্যার” । আমি ওকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম "বিশ্বাস কর আমি আজ এ সব ঠিক করি নি ।

সত্যি বলছি । বিলিভ মি" অনুশেখা হেসে ফেলল । “আমি জানি” । আমার আরো খানিকটা কাছে এসে বলল “তবে আজ থেকে কথা দাও আমার সাথে তুমি আর কখনও মিথ্যা কথা বলবা না । প্রমিজ মি” ।

আমার সত্যি বিশ্বাস হচ্ছিল না যে অনুশেখা আমাকে মাফ করে দিচ্ছে । সত্যি কি এটা হচ্ছে ...... আমার কথাঃ লেখাটা আমি প্রথম দিকে একবার লিখেছিলাম । তিন পর্বের গল্প । আজ আবার পোষ্ট করলাম । লেখাটা খানিকটা বাস্তবতা বিবর্জিত ।

কিন্তু আমার মনে হয় আপনার লেখাটায় মেয়েটা আর ছেলেটার ভালবাসার কথাটা চিন্তা করবেন । ভালবাসায় কি না হয় !! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।