আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভিক্ষুক মাতার অর্থে রেশমার এস এস সি পাশ ঃ অর্থ সংকটে অনিশ্চিত উচ্চশিক্ষা

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার আধ্যাত্মিক সাধক হযরত সোলাইমান শাহ্ চিশতী (রঃ) মাজারে ৩ দিনব্যাপী ওরশ মোবারক আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে। প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করতে না পারলেও ভিক্ষুক মায়ের টাকায় রেশমা এবার এস এস সি পরীক্ষায় ৩.৬৩ (এ মাইনাছ) গ্রেড পেয়ে পাশ করেছে। মেধাবী ছাত্রী রেশমা এ বছর কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কুরিপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এ ফলাফল করেছে। রেশমা উচ্চতর শিক্ষা গ্রহনে আগ্রহী কিন্তু আর্থিক সংকটের কারনে তার উচ্চশিক্ষা গ্রহন করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। রেশমার মাতা জাহেরার জন্ম হতদরিদ্র ঘরে।

জন্মের কিছুদিনের মাথায় পিতা ও মাতা মারা গেলে জাহেরার নাম ওঠে এতিমের খাতায়। সাবালিকা হবার পর বিয়ে হয় মিরপুরের ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের চৌদুয়ার গ্রামের ইব্রাহিমের সাথে। সেটিও সতীনের সংসার। ইব্রাহীমের ঘরে জাহেরার দুই সন্তান। দুটিই কন্যা সন্তান।

বড় মেয়ের নাম শাহনাজ। ছোটটির নাম রেশমা। রেশমা জন্মের কিছুদিনের মধ্যেই জাহেরাকে ফাঁকি দিয়ে স্বামী ইব্রাহিম সকল সম্পত্তি লিখে দেন তার প্রথম স্ত্রীর নামে। এর কিছুদিন পরই ইব্রাহিম মারা যায়। জাহেরা পিতা,মাতা, স্বামী ও স্বামীর ভিটা হারা হয়ে কন্যা শাহনাজ ও রেশমাকে নিয়ে অকুল পাথারের মধ্যে পড়েন।

কিভাবে শাহনাজ ও রেশমাকে মানুষ করবেন আকাশ-কুসুম চিন্তার একপর্যায়ে পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কুরিপোল গ্রামের ভূমি অফিসের নিম্নপদস্থ কর্মচারী খেজুর আলীর বাড়ীতে জায়গা হয় তাদের। খেজুর আলীও তাদের বিনামূল্যে থাকার জায়গা করে দেয়। কিন্তু কিভাবে চলবে তাদের সংসার। এক পর্যায়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে পা বাড়ায় জাহেরা। বড় মেয়ে শাহনাজ অল্পবিস্তর লেখাপড়া জানলেও অর্থের অভাবে লেখাপড়াতে করাতে পারেনি।

অন্যের বাড়ীতে মেয়ে দুটিকে কাজের বুয়া না বানিয়ে বড় মেয়ে রেশমাকে সংসারের বোঝা হিসাবে রেখে ছোট মেয়ে রেশমাকে ভর্তি করে দেয় কুরিপোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। রেশমা মেধাবী হওয়ায় ২য় শ্রেনী থেকেই ক্লাসে তার রোল নম্বর ১-৩ এর মধ্যে রেখেই কৃতিত্বের সাথে ৫ম শ্রেনী পাশ করে কুরিপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ৬ষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেনী পর্যন্ত মেধা তালিকায় থেকে এস এস সির টেষ্ট পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪.৯২ জিপিও পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। শিক্ষকদের আশা ছিলো এস এস সিতে রেশমা জিপিএ-৫ পাবে। কিন্ত পরীক্ষা শুরুর আগের রাতে জলবসন্ত রোগে আক্রান্ত হলে অসুস্থ অবস্থায় পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়।

যার কারনে আশানুরুপ ফলাফল করতে পারেনি সে। রেশমার মা জাহেরা খাতুন চান ভিক্ষাবৃত্তি করেই রেশমাকে উচ্চ শিক্ষিত করতে। রেশমাও চায় উচ্চ শিক্ষিত হয়ে ভালো একটা চাকুরী করে সংসারে মায়ের দুঃখ লাঘব করতে। এ জন্য রেশমা ও রেশমার মা জাহেরা খাতুন সমাজের সকল শ্রেনী ও পেশার মানুষের কাছে দোয়া ও সহযোগীতা কামনা করেছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।