আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামানত হারানোর হ্যাটট্রিক করা দিলীপ বড়ুয়া এসব কি বলেন?

এই সময়ের রাজনীতির বহুল আলোচিত, বিশেষ বিবেচনায় বা টেকনোক্রাট কোটায় বর্তমানে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া। গত দুই দশকে তিনটি সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনবারই জামানত হারিয়েছেন। জামানত হারানোর হ্যাটট্রিক করেছেন। এর মধ্যে একবার মাত্র দেড় হাজার ভোট পেলেও বাকি দুবার মিলিয়ে এক হাজার ভোটও পাননি, দুই দফায় পেয়েছেন মাত্র ৮১১ ভোট। যে কারণে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে তাকে প্রার্থী হিসেবেই মনোনয়ন দেয়নি ক্ষমতাসীন মহাজোট।

সেই দিলীপ বড়ুয়া প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও 'নাইট' বিজয়ী ব্যক্তিত্ব স্যার ফজলে হাসান আবেদের জনপ্রিয়তা নিয়ে। এর প্রতিবাদ জানানোয় প্রবীণ আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের বিরুদ্ধে জনগণের সম্মানহানিরও অভিযোগ তুলেছেন দিলীপ বড়ুয়া। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে সাম্যবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রামের একটি আসন থেকে অংশ নেন দিলীপ বড়ুয়া। তিনি নিজেই দলটির সভাপতি। চট্টগ্রাম-১ আসনে সেবার মোট এক লাখ ২৯ হাজার ১০৫ জন ভোট দিয়েছিলেন।

কিন্তু দীলিপ বড়ুয়া পেয়েছিলেন এক হাজার ৫৫২ ভোট। যে কারণে তার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য কমিশনকে দেওয়া জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়। পরের বার ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম-১ আসন থেকেই নির্বাচন করেন দিলীপ বড়ুয়া। কিন্তু '৯১-এর তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ মানুষ তার পক্ষে ভোট দেন। মাত্র ৫১১ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় দফায় জামানত হারান তিনি।

২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে আগেরবারের তুলনায় অর্ধেক মাত্র ৩০৭ ভোট পেয়েছিলেন বর্তমান শিল্পমন্ত্রী। ফলে গত ২২ বছরে তিনটি সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রায় পাঁচ লাখ ভোটারের মধ্যে আড়াই হাজার মানুষও তার পক্ষে সমর্থন জানায়নি। যে কারণে হারাতে হয়েছে সব কটিরই জামানত। আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে সর্বশেষ তিন নির্বাচনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দিলীপ বড়ুয়াকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। কারণ এ আসনটি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট হারাতে চায়নি।

এ জন্য চট্টগ্রাম-১ আসনে মহাজোটের এই অন্যতম শরিক দলের সভাপতি হয়েও মনোনয়ন পাননি দিলীপ বড়ুয়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মহাজোটে দিলীপ বড়ুয়াকেই সবচেয়ে ভাগ্যবান শরিক বলে মনে করা হয়। কারণ তিনি নির্বাচনে অংশ না নিয়েই শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। গাড়িতে উড়িয়েছেন দেশের পতাকা। এই দিলীপ বড়ুয়া সম্প্রতি হিলারি ক্লিনটনের সফরে ইউনূস ও আবেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার পক্ষে সমর্থন দেওয়ার সমালোচনায় মুখর হয়েছেন।

ইউনূস ও আবেদকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছেন রাজনীতিতে এসে জনসমর্থন প্রমাণ করুন। সবার মনে প্রশ্ন, জনপ্রিয় দিলীপ বড়ুয়া না ইউনূস-আবেদ। প্রবীণ আইনজীবী সর্বজনগ্রাহ্য ব্যক্তিত্ব রফিক-উল হক বলেছেন, ইউনূসের নখেরও যোগ্য নন দিলীপ বড়ুয়া। রফিক-উল হকের এ মন্তব্য বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর সকালে মন্ত্রণালয়ে গিয়েই সরকারি তথ্যবিবরণীর মাধ্যমে জবাব দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী। তার নিজের জীবনের নানা রাজনৈতিক বিবরণী দিয়েছেন।

মুক্তিযুদ্ধের আগে-পরে বিভিন্ন সময়ে কারাদণ্ড ভোগের বর্ণনা দিয়েছেন। রফিক-উল হকের বক্তব্যকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন। কিন্তু ঘুণাক্ষরেও জানাননি জনসমর্থনের পাল্লাটি তার কোন জায়গায়। সংসদ নির্বাচনে তার অতীত ইতিহাস। শিল্পমন্ত্রী হিসেবে দিলীপ বড়ুয়ার যে জীবনী দেওয়া হয়েছে সরকারের ওয়েবসাইটে, সেখানেও বেশ গর্বের সঙ্গে আন্দোলন ও কারাবরণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

কিন্তু তিনবারই জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া বা সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথাও উল্লেখ নেই দিলীপ বড়ুয়ার জীবনীতে। তাই জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি নিজের জনপ্রিয়তা পরিসংখ্যান মানুষকে জানাতেও লজ্জাবোধ করেন এই প্রবীণ বাম নেতা? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.