আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১০০% পিউর হতে বাকী শুধু গঙ্গা স্নান!

সামান্য একজন ড্রাইভার `আজম` মন্ত্রী সেনগুপ্তের গুপ্তধন ধরিয়ে দিয়ে দেশ জুড়ে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল। অফিস পাড়া-আমলা পাড়া, সংবাদ পাড়া-উকিল পাড়া, মুদিপাড়া-কৃষিপাড়া, বিদ্যালয়-মুর্খালয়, টি স্টল-বৃতল সর্বত্র দাদার গুপ্তধন নিয়ে এতো হৈচৈ হলো, পুঁথিগন্ধময় কাঁদা মাখা-মাখি হলো অথচ দাদার গায়ে এতটুকু দাগ পড়লো না! দাদা কি কচু পাতা? তাহের কমিটি একি বাণী শুনালো? গুপ্তধনের সাথে দাদার সংশ্লিষ্টতা নেই! অবশ্য তিনি পূত-পবিত্র হিসেবে `ডিকার্ড` হবেন তা আমরা আগে থেকেই আন্দাজ করতে পেরেছিলাম। তাহের কমিটির ঘোষণাটি আমাদের আন্দাজেরই প্রতিফলন মাত্র। ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দীনের বিশেষ কৃপায় সেনগুপ্তের দল সরকার গঠন করলেও তিনি ছিলেন `আসল ক্ষমতার` বাইরে। আসল ক্ষমতার লোভ তাকে অস্থির করে রাখতো তাই মাঝে মাঝে সংবাদ কর্মীদের ডেকে নিয়ে অনেকটা উপযাচক হয়ে তিনি বানর ভেংচি দিয়ে বিরোধী দলকে ভয় পাইয়ে দিতেন।

কদাচিৎ সুযোগ বুঝে সরকারকেও কামড়ে দিতেন। প্রধান মন্ত্রীর মনোযোগ আকর্ষণের জন্য চতুর গুপ্ত মিডিয়ার সামনে হাজির করলেন বাঘ তত্ত্ব! বাঘের সাথে তুলনার কথা শুনে `তাঁর মনও` গলে যায়। পুরস্কার হিসেবে লুটপাটের খনি `রেল মন্ত্রনালয়` তুলে দেন সেনগুপ্তের হাতে। মন্ত্রিত্ব পেয়ে বাঘ তত্ত্বের জনক হুমকি দিলেন কালো বিড়ালকে জব্দ করার। কিন্তু তিনি রেলের কালো বিড়ালদের দুধ-ভাতের লোভ সংবরণ করতে পারলেন না।

হাতে যথেষ্ট সময় থাকা সত্বেও ফুরিয়ে যাওয়ার ভয়ে তড়িঘড়ি করে তিনি মুখ দিলেন কালো বিড়ালদের দুধ-ভাতে! ফলে অনভ্যস্ত-অনভিজ্ঞ (?) মন্ত্রীর মুখ পুড়ে ছাই! সরকার পড়লো বেকায়দায়। তারপরও তিনি পোড়া মুখে মিডিয়ার সামনে বানর ভেংচি দিয়েই যাচ্ছিলেন! অবশেষে ঠেলায় পড়ে মন্ত্রীত্ব ছাড়লেন। হায় খোদা! যাদের ঠেলায় পড়ে তিনি গাছে উঠলেন তারা আবার অদৃশ্য শক্তির ঠেলায় পড়ে তাকে গাছ থেকে নামিয়ে দপ্তর বিহীন মন্ত্রী বানালেন! শুধু কি তাই? তাকে পূত-পবিত্র প্রমাণ করার লে সম্মিলিতভাবে কোরাস কণ্ঠে প্রচার শুরু করে, সেনগুপ্ত ষড়যন্ত্রের শিকার। আহারে তাদের ভাবখানা এমন যে, মন্ত্রী সেনগুপ্ত ভাজা মাছটি উল্টিয়ে খেতে জানেন না! মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে নাটের গুরু ইলিয়াস! সে-ই নাকি সাধুতুল্য গুপ্তকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হেয় করেছে! তবে তাহের কমিটি দয়া করে ইলিয়াসকে এ অপবাদ থেকে মুক্তি দিয়েছেন। সে জন্য তাহের কমিটিকে সাধুবাদ জানাই।

এবার ইলিয়াস তার মায়ের কোলে ফিরে গেলেই শান্তি। সরকারের ভিতরে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত আরো মন্ত্রী মশায় আছেন। কিন্তু তাদেরকে পবিত্র করার জন্য তো গুপ্তের মতো কোশেশ করা হয় নি? গুপ্তের বেলায় সরকার এতো সদাশয় কেন? বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর অনুগ্রহ কিংবা রক্ত চক্ষু কি সরকারকে তার প্রতি দরদী হতে বাধ্য করেছে? নচেৎ দূর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে যিনি পদত্যাগ করলেন তাকে আবার তপ্তর বিহীন মন্ত্রী করাটা কি খুবই জরুরী ছিল? তিনি মন্ত্রী না হলে কি দেশ রসাতলে যেতো? দেশের মানুষ কিন্তু সরকারের এই গুপ্ত প্রীতিকে ভালোভাবে নেয় নি। সেনগুপ্তকে পবিত্র করার জন্য বা সাধু প্রমাণের জন্য নিজের নাক কেটে সব কিছুই তো করলেন, গঙ্গা স্নানটা আর বাকী থাকবে কেন? রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গঙ্গা স্নানটাও সেরে ফেলুন। দেখবেন ১০০% পিউর গুপ্ত আবারো মিডিয়ার সামনে কতো সুন্দর করে বানর ভেংচি দিয়ে তাচ্ছিল্যভাব নিয়ে বিরোধী দলকে কতো ভয়ঙ্করভাবে ভয় পাইয়ে দেয়! আর বাকা হাসি দিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলবে, `তিনি ধরলে মাঝে মাঝে ছেড়েদেন, দেখেন না আমাকে ছেড়ে দিয়েছে!`  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।