আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করে সমস্যা সমাধান করুন-১

বিজ্ঞানের ক্লাসকে ধর্মের ক্লাস বানাবেন না। বিজ্ঞানের ক্লাসে কোন নিউটনের বাণীর প্রতি অন্ধ বিশ্বাস ও ভক্তি নিয়ে বসবেন না। প্রতি ক্ষেত্রে সন্দেহ করুন, প্রশ্ন করুন অবিরত। বিজ্ঞান কারো বাণী দিয়ে চলেনা। বিজ্ঞান চলে যুক্তি ও প্রমাণের উপর।

প্রতি লাইনে লাইনে প্রমাণ চ بسم الله الرحمن الرحيم সকল প্রশংসা আল্লাহর । তাঁর গুণগান গাওয়ার সাধ্য নাই আমার । অগণিত রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক বারবার , ঐ নবীর উপর, উম্মতের কল্যাণ চিন্তায় যিনি ছিলেন বেকারার । আমাদের জীবনের সকল সমস্যা দূর করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। ঐ আল্লাহর কাছে দোয়া করে সকল সমস্যা কিভাবে দূর করা যায় তা নিয়ে আমার এই লেখা।

দোয়া যে কত মহামূল্যবান এবং গুরুত্বপূর্ণ জিনিস তা বুঝার জন্য নীচে কিছু হাদিসের ভাবানুবাদ দেয়া হলোঃ (১)যে বিপদ নাযিল হয়েছে এবং যে বিপদ এখনও নাযিল হয়নি অর্থাৎ আসেনি উভয়ক্ষেত্রেই দোয়া ফলদায়ক। সুতরাং আল্লাহর বান্দাগণ!তোমরা বেশী বেশী আল্লাহর কাছে দোয়া কর। (২)তোমরা আল্লাহর নিকট তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ চাও । কেননা,আল্লাহর কাছে চাইলে আল্লাহ খুশী হন। আর বিপদ থেকে মুক্তির অপেক্ষা করা অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবাদত।

(৩)যে আল্লাহর কাছে চায় না ,আল্লাহ তার উপর রাগ করেন । (৪)যার জন্য দোয়ার দরজা খোলা হয়েছে , তাঁর জন্য রহমতের দরজাসমূহ খোলা হয়েছে এবং অন্য যেকোন কিছু চাওয়া থেকে আল্লাহর নিকট আফিয়াত চাওয়া তাঁর কাছে বেশী প্রিয় । (আফিয়াত হলোঃ দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি ও নিরাপত্তা )। (৫) তোমাদের রব লজ্জাশীল ও বড় দানশীল; বান্দা আল্লাহর কাছে দুই হাত উঠালে উহা খালি ফিরিয়ে দিতে আল্লাহ লজ্জাবোধ করেন। (৬) দোয়া ছাড়া অন্য কিছু তকদীরকে ফিরাতে পারেনা এবং নেক আমল ছাড়া অন্য কিছু আয়ু বাড়াতে পারেনা।

আর নিশ্চয়ই মানুষ নিজের পাপাচারের কারনে রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়। (এই হাদীসে তকদীর বলে শর্তযুক্ত তকদীর বুঝানো হয়েছে ,চূড়ান্ত ও অকাট্য তকদীর বুঝানো হয়নি। আল্লাহই সর্বাধিক অবগত। ) (৭)কোন গুণাহের কাজ অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার দোয়া ছাড়া কোন মুসলমান আল্লাহর কাছে যে কোন দোয়া করুকনা কেন, আল্লাহ পাক তাকে তিনটি জিনিসের যেকোন একটি অবশ্যই দান করবেন। হয় যেটা চেয়েছে সেটাই দান করবেন অথবা উহা তার পরকালের জন্য জমা রাখবেন অথবা উহার অনুরূপ কোন অমঙ্গলকে তার থেকে দূরে রাখবেন।

সাহাবীগণ বললেন ,তবে তো আমরা অনেক দোয়া করব। হুজুর(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ আরো অধিক দানকারী। (৮) দোয়া হলো এবাদতের মগজ। (৯)আমি কি তোমাদেরকে এমন জিনিসের কথা বলব না যা তোমাদেরকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করবে এবং তোমাদের জন্য অধিক রিজিক নিয়ে আসবে? (তা হলো) তোমরা দিন-রাত আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকো। কেননা দোয়াই হলো মুমিনের অস্ত্র স্বরূপ।

(১০) সতর্কতা অবলম্বন করা তকদীরের লিখন খণ্ডাতে পারে না কিন্তু দোয়া আগত ও অনাগত উভয় প্রকার বিপদেই উপকারী। (অনেক সময় এমন হয় যে) বিপদ আসতে থাকে আর পথিমধ্যে দোয়ার সাথে সাক্ষাত হয় , অতঃপর কেয়ামত পর্যন্ত উভয়ের মধ্যে লড়াই চলতে থাকে। (১১) দোয়া করতে তোমরা কেউ অক্ষম হয়ো না। কেননা দোয়া চালিয়ে যাওয়া অবস্থায় কেউ কখনো ধ্বংস হয় না। (১২) হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি আমাকে যতক্ষণ ডাকবে এবং আমার নিকট আশা পোষণ করবে, তোমার গুনাহ যাই থাকুক না কেন, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিব।

আর তাতে আমি কোন পরওয়া করব না। (১৩) যে ব্যক্তি কোন প্রকার অভাবের শিকার হয়ে তা মানুষের কাছে বলল, তার অভাব কখনো মোচন করা হবে না। আর যে অভাবের শিকার হয়ে তা আল্লাহর কাছে পেশ করল, আল্লাহ তাকে সত্বর অথবা বিলম্বে রিজিক দিয়ে সাহায্য করবেন। (হাদীসগুলো মূলতঃ আত তারগীব ওয়াত তারহীব ও মেশকাত শরীফ থেকে নেয়া হয়েছে। ) দোয়া কিভাবে কবুল হবে তা জানতে হলে নীচে দেয়া কিছু হাদীসের ভাবার্থ পড়ুন।

(১) যে ব্যক্তি ভালবাসে যে, দুঃখের সময় আল্লাহ তাঁর দোয়া শুনবেন, সে যেন সুখের সময় বেশী করে দোয়া করে। (২) তোমরা কবুলের বিশ্বাসের সাথে দোয়া কর এবং জেনে রাখ যে, আল্লাহ অমনোযোগী , অবহেলাকারী অন্তরের দোয়া কবুল করেন না। (৩) হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেন,বান্দা আমার প্রতি যেমন ধারনা রাখে আমি তার সাথে তেমনই আচরণ করি এবং বান্দা যখন আমাকে ডাকে আমি তার নিকটেই থাকি। (৪)কোন মুসলমান তার অপর মুসলমান ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে যে দোয়া করে,উহা কবুল করা হয়। তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত থাকেন,যখনই সে তার (অনুপস্থিত)ভাইয়ের জন্য কল্যাণের দোয়া করে,নিযুক্ত ফেরেশতা বলেন,আমীন এবং তোমাকেও ঐরূপ দেয়া হোক।

(৫)বান্দার দোয়া কবুল করা হয়,যতক্ষন না সে গুনাহের কাজের অথবা আত্মীয়তা বন্ধন ছেদের দোয়া করে এবং যতক্ষন না সে তাড়াহুরা করে। জিজ্ঞাসা করা হইল,ইয়া রাসূলাল্লাহ!তাড়াহুরা করা কি? হুজুর(সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)বললেনঃ এরূপ বলা যে, আমি(এই)দোয়া করেছি,আমি(ঐ)দোয়া করেছি,কৈ আমার দোয়া তো কবূল হতে দেখলাম না; অতঃপর সে ক্লান্ত হয়ে (অথবা এই অর্থ হবে যে,বিরক্তি বোধ করে,অধৈর্য হয়ে)দোয়া ছেড়ে দেয়। (৬)আমাদের প্রতিপালক(এর রহমত)প্রতি রাত্রের শেষ তৃতীয় ভাগে এই নিকটতম আসমানে নেমে আসে এবং তিনি বলতে থাকেনঃ কে আছ যে আমাকে ডাকবে আর আমি তার ডাকে সাড়া দিব?কে আছ ,যে আমার কাছে চাইবে,আর আমি তাকে তা দান করব এবং কে আছ,যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আর আমি তাকে ক্ষমা করব? {আরেকটি কাজ করবেন, প্রতিদিন সকল মূমিন নর-নারীর জন্য সাতাশ বার ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। তাহলে আপনি মুস্তাজাবুদ্দা'ওয়াত হতে পারবেন। } এছাড়া কোন্‌ কোন্‌ ব্যক্তিদের দোয়া কবুল হয়,কখন কখন দোয়া কবুল হয়(যেমন আযান ও একামতের মধ্যবর্তী সময়, ফরজ নামাজের পর),দোয়ার কি কি আদব আছে,কেন দোয়া কবুল হয় না (যেমন হারাম খেলে,সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ না করলে ইত্যাদি) এগুলো আলেমদের থেকে বা সাধারণ দোয়ার কোন বই থেকে অবশ্যই বিস্তারিত জেনে নেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.