আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মগের মুল্লুক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

ব্যান ব্যান ব্যান ব্যান মগের মুল্লুক শব্দটা কোথা থেকে এসেছে জানেন??? আমি নিশ্চিন্ত হয়ে বলতে পারব না। তবে আমার ধারনা আগে মগদের এলাকায় কোন নিয়ম কানুন ছিলনা বলে সেখান থেকেই মগের মুল্লুক শব্দের উৎপত্তি। কিন্তু সেখানে ও মনে হয় জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটির মত খারাপ অবস্থা ছিলনা। জাহাঙ্গীরনগর একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু চলে নিজেদের ইচ্ছা মত।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়র আসন সংখ্যা কত জানেন?? এটা নির্ভর করে আপনি সাধারন স্টুডেন্ট নাকি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর কর্মচারীদের কোন আত্মীয়। সাধারন স্টুডেন্ট হলে সীট ২২০০। কিন্তু পোষ্য হলে অসংখ্য । আপনি ঠিক এ পড়েছেন অসংখ্য। ধরেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়র জেনেটিক্স এ আপনি পরতে চান।

জেনেটিক্স ডি ইউনিট এ। আসন ২০ টি। তাই খুব কঠিন চান্স পাওয়া। কিন্তু পোষ্য হলে কোন ব্যাপারই না। ১০০ নাম্বার এ মাত্র ৩৫ পেলেই চলে।

আর উচ্চপদস্থ কর্মচারীর ( ভিসি, হেড এক্সাম কন্ট্রোলার) পোষ্য হলে শুধু পরীক্ষা দিলেই চলে ৩০,২০ যাই পান । এবং আপনি যে কোন বিষয়ে (জেনেটিক্স থেকে ফার্মেসি, সিএসই থেকে কেমিস্ট্রি সব) পরতে পারবেন শুধু আইবিএ তে পোষ্য কোটা নাই। তাছাড়া সকল বিষয় পোষ্যদের জন্য উন্মুক্ত। এবং যখন যা ইচ্ছা তাই নিয়ম করে ভিসি। গতবছর আইটি department এর পরীক্ষার দিন হঠাৎ শিক্ষাত্রি ক্যালকুলেটর নিয়ে নেয়া হয়।

ভিসির নোটিশ। কিন্তু যে সব কেন্দ্রে শিক্ষকদের ছেলেমেয়েরা ছিল তাদের ক্যালকুলেটর নেয়া হয়নাই আইটির পরীক্ষায় থাকে ৫০ নাম্বার ম্যাথ এবং ৫০ নাম্বার ফিজিক্‌স এর ম্যাথ। সময় ৬০ মিনিট। ক্যালকুলেটর ছাড়া ফিজিক্‌স এর অঙ্ক কেমনে করে বলেন তো?? আর অপশন গুলা ছিল খুব কাছাকাছি। ভিসির দুজন ভাগ্নে পরীক্ষায় ৭ ও ১২ পেয়ে ও এখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়র স্টুডেন্ট।

এ সব পোষ্যরা এত মেধাবি(!!) যে ৩৫ তুলতে পেরেছে ২-৩ জন। তাই এ বার শিক্ষকরা দাবি করেছে যেন পোষ্যদের আলাদা পরীক্ষা নেয়া হয় যাতে সবাই চান্স পায়। প্রত্যেক পোষ্যর জন্য একটা সীট চাই চাই... এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কোটা, সংগীত কোটা তো আছেই। সংগীত কোটা খুবই মজার সিস্টেম। ৩৫ অথবা এর চেয়ে একটু বেশি পেলে আপনি ভিভা বোর্ড এর সামনে একটা গান গাবেন।

তাহলেই আপনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়র স্টুডেন্ট। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়র এর বি বি এ department এর হেড হলেন বায়েস। তার ২ জন সুকন্যার একজন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এ চান্স পায় নাই। কিন্তু তারা economics (বায়েস আগে economics department এর হেড ছিল) এ শুধু পরেই নাই তাদের ১ম বানিয়ে দেয়ে হয়েছে। এখন একজন মার্কেটিং এর শিক্ষক এবং অন্য জন economics এর।

এবং তারা শিক্ষক হিসেবে ও অসাধারন(!!!!!!!!)। তাদের নিজেদের ও ধারনা নাই তারা কোন সাবজেক্ট এর শিক্ষক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এ ম্যাথ department এ আসন ৬০ টি। সম্পূর্ণ department এ স্টুডেন্ট সে হিসেবে ৩০০-৪০০। সেখানে সম্প্রতি ম্যাথ department এ একসাথে ৯ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে!! গত ৩ বছরে দুটি ইনস্টিটিউটসহ পাঁচটি অনুষদের মোট ৩৩ বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৮৭ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ আসন সংখ্যা সম্ভবত ৪৫০০। সেখানে ইউনিট ৫ টি । ক খ গ ঘ চ। ভর্তি পরীক্ষায় ২ টা ইউনিট এর ফরম কিনলেই হয়। মোট খরচ হয় ৮০০ টাকা (চ ইউনিট এ কম মানুষ ই পরীক্ষা দেয়) ।

জাহাঙ্গীরনগর এ প্রতিটা সাবজেক্ট যেন এক একটা ইউনিট। ল তে ৬০ টা আসন, বিবিএ তে ১৮০ টা আসন নিয়ে এক একটা ইউনিট। বায়োলজি এর বিষয় গুলা নিয়ে একটা ইউনিট আবার সি এস ই, ফিজিক্‌স এই সব সাবজেক্ট নিয়ে আলাদা ইউনিট। মানে আপনি যদি পরীক্ষা দিতে চান সব গুলা তে তবে আপনের খরচ হবে ২৪০০ টাকা। ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি করে গত বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়র আয় ৩৭ কোটি টাকা।

সায়েন্স, আর্টস, কমার্স এর বিষয় নিয়ে তিনটা ইউনিট করলে একজন স্টুডেন্ট এর ফর্ম খরচ হত এখন যা হয় তার অর্ধেক...... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।