আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডা. আহমেদ রাশেদুল হাসান শিশু হাসপাতাল এবং ডা. জগতের কুলঙ্গার

আল্লাহ তা'লা বলেন, "নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমাসমূহ এবং ভাগ্য নির্ধারক শরকসমূহ অপবিত্র ও শয়তানের কাজ ছাড়া কিছুই না। অতএব, এগুলো থেকে বিরত থাক যাতে তোমরা সফলতা লাভ করতে পার। " সূরা আল মায়েদা - ৯০ আবারো এক শিশুর প্রাণহানি ঘটল শিশু হাসপাতালের ডা. আহমেদ রাশেদুল হাসানের পৈশাচিত আচরনে। আসুন আমরা দেশবাসি তাকে থু থু ছিটিয়ে সংবর্ধনা দেই। আগে টাকা জমা দেন তারপর ভর্তি এবং চিকিত্সা।

টাকা না থাকলে চিকিত্সা হবে না। গত রবিবার রাতে দিনমজুর সুরুজ আলী মিয়া তার গুরুতর অসুস্থ ১৪ মাস বয়সী ছেলেকে নিয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে গেলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিত্সক ডা. আহমেদ রাশেদুল হাসান তাকে এই কথা বলেন। ছেলে খুবই অসুস্থ, পকেটে টাকাও নেই সুরুজ আলী ঐ চিকিত্সককে বলেন, ‘স্যার আমার সঙ্গে টাকা নেই, আমি দিনমজুর, দয়া করে আমার ছেলেটাকে আগে ভর্তি করান। পরে আমি টাকা যোগাড় করে বিল পরিশোধ করবো ’। অসহায় বাবার এই কাকুতিও ডা. রাশেদুল হাসানের মন গলাতে পারেনি।

নির্দয়ের মতো মুখের উপর বলে দেন, টাকা না হলে এখানে চিকিত্সা হবে না। হাসপাতালের উপ-পরিচালক শাহ আলমকে বিষয়টি জানান সুরুজ মিয়া। তিনি বলেন, টেলিফোনের তার চুরি হয়ে যাওয়ায় সাতদিন ধরে হাসপাতালের ফোন নষ্ট। তবে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দেন সুরুজ আলীকে। নিরুপায় সুরুজ আলী কী এক অক্ষমতায় নিঃশব্দে কাঁদতে থাকেন।

চোখের পানিতে ভিজে যায় ছেলে সাজুর শরীর। একবার ছেলে চোখ মেলে বাবার দিকে তাকালো। এটাই বাবাকে শেষ দেখা। হাসপাতালে ভর্তি করাতে না পেরে সুরুজ মিয়া ছেলেকে নিয়ে যায় মিরপুর ১০ নম্বর বস্তির বাসায়। এর কিছুক্ষণ পর বাবার কোলে মারা যায় সাজু।

অর্থের অভাবে বিনা চিকিত্সায় ছেলের মৃত্যুতে বাবা-মার আহাজারিতে বস্তির বাতাস ভারী হয়ে উঠে। বস্তির লোকজনকেও নীরবে চোখের পানি ফেলতে দেখা গেছে। সাজুর প্রথম হাম হয়েছিল। পরে সর্দি ও কাশি দেখা দেয়। এরপর হয় নিউমোনিয়া।

ধীরে ধীরে শিশুটি দুর্বল ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। খাওয়া বন্ধ। শুধু তাকিয়ে থাকে। টাকার অভাবে সুরুজ আলী ছেলেকে ডাক্তারও দেখাতে পারছিলেন না। ছেলেকে হারিয়ে তীব্র আক্ষেপে সুরুজ আলী বলেন, ‘এ দেশে গরীবের চিকিত্সা নেই ও বিচার নেই।

এদেশে টাকা হলে সবই পাওয়া যায়। ’ এ প্রসঙ্গে শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন বলেন, হাসপাতালে ভর্তি না করানো এবং বিনা চিকিত্সায় শিশুটির মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। অমানবিক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন ঐ চিকিত্সকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। একজন সংকটাপন্ন রোগীর আগে চিকিত্সা, পরে টাকা পয়সার বিষয়। হাসপাতালের দুইটি বেড জরুরি রোগীদের জন্য সবসময় আলাদা করা থাকে।

ওখানে শিশুটিকে ভর্তি করাতে পারতেন ডা. রাশেদুল হাসান। তিনি বলেন, ডা. রাশেদুলকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। নোটিসের জবাব পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঢাকা শিশু হাসপাতালে আর্থিক অনুদানসহ নানাভাবে সরকার সহযোগিতা করে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, দরিদ্র ও গরীব রোগীদের বিনামূল্যে চিকিত্সাসেবা দেয়ার জন্য সরকার এ সহযোগিতা দিয়ে থাকে।

কোন বেসরকারি হাসপাতালে সংকটাপন্ন রোগী যাওয়া মাত্রই তার চিকিত্সা দেয়া বাধ্যতামূলক। ঐ সময় টাকার চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বড়। রোগীর সংকটময় মুহূর্তে দর কষাকষি করা অন্যায়, যা এই পেশার নীতিবিরোধী। অনুসন্ধানে জানা গেছে, নামীদামীসহ রাজধানীর প্রায় সব বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্সাসেবার নামে চলছে বাণিজ্য। তাদের নীতিটাই এমন, আগে টাকা তারপর চিকিত্সা।

রোগী মারা গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাশ আটকে রেখে বিল আদায় করার অভিযোগও আছে বহু। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খন্দকার মো. সিফায়েত উল্লাহ বলেন, শিশুটির অবস্থা ছিল সংকটাপন্ন। তাকে ভর্তি করিয়ে জরুরি চিকিত্সা দেয়াটাই ছিল চিকিত্সকের প্রধান দায়িত্ব। তখন টাকা চাওয়াটাই অমানবিক। তিনি বলেন, শুধু শিশু হাসপাতালেই নয় সব বেসরকারি হাসপাতালের জন্য নিয়মনীতি আছে।

এর ব্যত্যয় ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে। জড়িত চিকিত্সকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান। আমরা জানি তার কিছুই হবে না। কারন এ দেশে আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ নাই। আমরা তার মৃত্যুদন্ড চাই।

সূত্র: ইত্তেফাক ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।