আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক নব্য এস. আই এর কাণ্ড দেখুন !!

আজ এম . এ শেষ পর্ব পরীক্ষার দ্বিতীয় দিন ছিল । আজ একটু সকালেই হলে ঢুকলাম । ঢুকেই দেখি এক ভাই কিছু হাতে লেখা নোট পড়ছে । কিন্তু সে আমার সবজেক্টএর কিনা জানার জন্য জিজ্ঞেস করলাম। এ কি !মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি ! এযে দেখি আমার বাংলা ফ্যাকালটির ।

পরিচিত হলাম দু'জন দু'জনার সাথে । উনি ছিলেন সদ্য ট্রেনিং শেষ করা পুলিশের এস. আই . অনেক গর্বের সাথেই পরিচয়টা দিলেন । কিন্তু আমারটাও কম ছিল না! আমি বললাম - গ্রামের কোন এক নামকরা প্রতিষ্ঠানে বাচ্চাদের মগজ ধোলাই করে খাই! যাই হোক নব্য এস আই এখন টাঙ্গাইল এর কোন এক থানায় কর্মরত আছে তাও বললেন। যাই হোক ওনার শীট গুলো নিয়ে নাড়াচার করতে করতে ওনা অনেক দুঃখ ভারাক্রান্তের কথাও শুনতে হল । যেমন : " ভাই এক বছর পিটি প্যারেড, ট্রেনিং,আইন ঘাটা ঘাটি করেছি, পাঠ্য বই পড়ার সময় আছে ? বলেন ।

আমি বললাম তাই তো । পড়ার সময় কই ?(যদিও আমরা সব পরীক্ষর্থী সারা বছর ওনার মত করেই পাঠ্য বইতে সময় দিয়েছি। ) আমি ওনাকে বললাম আপনি আগামীবার প্রস্তুতি নিয়ে দিতে পারতেন? এ কথায় তিনি কর্ণপাত না করে বললেন দেখেছেন ! আমার ছিটটা কেমন জায়গায় পড়েছে ! আমি বললাম কেন এ রুমের সব ছিটই তো এমন, ভালই তো ঢাকা কলেজের প্রতিটি রুমের ছিট অনেক সুন্দর । ঢালু লেখেই মজা । উনি তখন বলল না ভাই আমি বলছি সদর আর মকরশলের কথা ! একদম শিক্ষদের চোখের সামনে , একটু যে দেখে শুনে, বলে কয়ে লিখব তারও জো নেই ! আমি তখন বুঝলাম তার দুরাভিসন্ধি ! সে আজ তার ছিট ছেড়ে শেষের দিকের বেঞ্চ এ গিয়ে বসল সুযোগের আশায়।

তার সাথে আর কোন কথা হল না। পরীক্ষার আরম্ভ হল, এস, আই নির্ভাবনায় লিখছে ব্যাক বেঞ্চে । কিন্তু তাকে বার দুয়েক ওয়ার্নিং দেয়া হয়েছিল । তৃতীয় বারের বার এক সিনিয়র শিক্ষক তাকে রেড হ্যান্ডেড বইয়ের পাতাসহ পাকড়াও করে ফেললেন। দেখুন তো পাঠক ,কি উল্টো ঘটনাই না ঘটল পুলিশকে পাড়াও করল শিক্ষক।

হা, হা, হা..... অনেক ধমক ধামকির পর এস. এই রুম ত্যাগ করতে বাধ্য হল । কিন্তু আঙিনা ত্যাগ করতে তার পা আর চলছিল না । আমরা রুমমেটরা লিখছি আর ঘটনা উপভোগ করছি , মাঝে মাঝে ঘার উঠিয়ে মজা বেশি করে লইতেছি! এস আই শেষ পর্যন্ত শিক্ষকের পা ধরতে গিয়েও ব্যর্থ হল এবং পরিশেষে কলেজের বড়ভাই নামক রক্ত মাংসের যন্ত্রের সাহায্য নিল । অনেক হামকি ধামকির পরও কোতেই কোন কিছু যখন হচ্ছিল না , তখন নব্য এস আই মায়া কন্না আরম্ভ করল । আমার সবচেয়ে বেশি আশ্চার্য আর লজ্জা লগছিল এই জন্য যে তার নির্বুদ্ধিতার জন্য ।

সে যখন সবার সামনে তার নিজের পরচিয় দিচ্ছিল কেঁদে কেঁদে তখনই লজ্জা টা বেশি লাগছিল । এ হীন কর্মের জন্য আত্মসম্মানী চরিত্রের কোন মানুষ হলে নিরবে নিভৃতে কক্ষ ত্যাগ করত । কারণ সে তার এই অন্যায় টা আর কাউকে কেঁদে কেটে বলতে যেত না । যেহেতু সে সরকারী কর্মকর্তা ছিল তাই পরের বছর পরীক্ষাটা দিলেও তার মহাভারত অশুদ্ধ হত না । তাছাড়াও তাকে সম্ভবত শুধু ওই সাবজেক্টের জন্যই বহিস্কার করা হয়েছিল ।

তার আরও দুটো পরীক্ষায় ভাল করার সুযোগ ছিল এবং তাতে তার পাশ জুটে যেত । কিন্ত তার নির্বুদ্ধিতার জন্য অনেক দুঃখ হয় । গায়ে আবার বাঘের থুক্কু পুলিশের ছাল লাগিয়েছে, কে জানে তা টাকা দিয়ে কেনা কি না !!!!! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।