আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আর কতো গোপন সংগঠন ? (!!!)

বাংলাদেশটাকে পাকিস্তান বানাতে আর কতোগুলো ধর্মভিত্তিক সংগঠন প্রয়োজন? এরা তো নিজেরা নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে। কী আর ধর্ম কায়েম করবে, ধর্মের শাসন প্রতিষ্ঠিত করবে! সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় একটি খবর পড়ে রীতিমতো আতকে উঠি। ধর্মভিত্তিক গোপন সংগঠন হিজবুত তওহিদের নতুন ইমামকে মানতে রাজি না হওয়ায় সেই সংগঠনের এক সদস্য খুন হয়েছেন । তাঁর নাম খালেদ মাহমুদ ওরফে মিঠু (৩০)। তিনি গুলশানের একটি প্রতিষ্ঠানে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে চাকরি করতেন।

পত্রিকায় প্রকাশিত (দৈনিক প্রথম আলো, ২২ এপ্রিল ২০১২)-১৫ এপ্রিল বরিশালের আগৈলঝাড়ায় একই সংগঠনের প্রতিপক্ষের হামলায় আহত খালেদ মাহমুদ গত শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে মারা যান। খালেদের মৃত্যুর খবর পেয়ে ভাটারা থানার পুলিশ অ্যাপোলো হাসপাতালে যায়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউজ্জামান বলেন, ‘খালেদ হিজবুত তওহিদের সদস্য ছিল বলে আমি শুনেছি। এ ব্যাপারে বরিশালের আগৈলঝাড়া থানায় মামলা হবে। ’ নিহত খালেদের বাবা ফজলুল হক বলেন, তাঁর বাসা সাভারে হলেও কর্মস্থলে যাওয়ার সুবিধার্থে খালেদ কয়েক বন্ধুসহ রাজধানীর কাঁটাবনে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

খালেদ ১৪ এপ্রিল রাতের বাসে তিন বন্ধুসহ বরিশালের আগৈলঝাড়ার দত্তেরাবাদে মামার বাড়ি যান। এই চারজনই হিযবুত তওহিদের সদস্য। তাঁরা পরদিন ১৫ এপ্রিল বিকেলে আবার ঢাকার বাস ধরতে টেম্পোযোগে মাহিলারা এলাকার দিকে রওনা হন। পথে আরেকটি টেম্পো ও দুটি মোটরসাইকেলে আসা কিছু যুবক তাঁদের গতি রোধ করেন। ওই যুবকেরা তাঁদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অন্য একটি গ্রামে নির্জন স্থানে নিয়ে যান এবং পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন।

চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এসে তাঁদের উদ্ধার করে। পরে তাঁদের বরিশাল মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ঢাকায় আনা হয়। ফজলুল হক বলেন, তিন মাস আগে হিযবুত তওহিদের প্রধান (ইমাম) বায়েজীদ খান পন্নী মারা যান। তাঁর স্থলে আরেকজন ইমাম নিযুক্ত হন।

নতুন ইমামকে মানা না-মানা নিয়ে দলটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। খালেদরা ছিলেন নতুন ইমামকে না মানার দলে। তিনি বলেন, নতুন ইমামকে অমান্যকারীদের জোর করে মানানোর নির্দেশ ছিল সংগঠনের উচ্চপর্যায় থেকে। এরই অংশ হিসেবে তাঁর ছেলের ওপর হামলা হয়েছে বলে ফজলুল হক দাবি করেন। তবে তিনি হিযবুত তওহিদের নতুন ইমামের নাম জানেন না বলে দাবি করেন।

খালেদ বরিশাল কেন গিয়েছিলেন, এ প্রশ্নের জবাবে তাঁর বাবা বলেন, ‘আমি জানি না। তবে তাঁকে যেতে নিষেধ করেছিলাম। ’ মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে আগৈলঝাড়া থানার ওসি অশোক কুমার নন্দী ওই হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তবে কারা, কেন হামলা করেছে তা তিনি জানাতে পারেননি। পরিবার থানায় অভিযোগ দিলে তদন্ত করে দেখা হবে বলে ওসি জানান।

তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো ২২ এপ্রিল ২০১২ মূল ঘটনা: গত ১৬ জানুয়ারী ২০১২ তারিখ, হিযবুত তাওহীদের প্রতিষ্ঠাতা ও সংগঠনের ইমাম মোহাম্মদ বায়েজীদ খান পন্নী মৃত্যুবরন করেন এবং অতি গোপনীয়তার সাথে তার দাফন সম্পন্ন হয় । তার মৃত্যুর ৪০ (চল্লিশ) দিনের মাথায় টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে সংগঠনের তৎকালীন সমন্বয়ক মোহাম্মদ সেলিম (৪০), পিতা –নুরুল হক, সাং -সোনাইমুরী, জেলা -নোয়াখালী নুতন ইমাম হিসাবে আত্বপ্রকাশ করে। সংগঠনের আদর্শ অনুযায়ী নুতন কোন ইমামের স্থান থাকতে পারে না এবং পূর্বতন ইমামের মৃত্যু নিয়ে সংগঠনের কতিপয় সদস্যদের মাঝে সন্দেহের কারনে সংগঠনের কেউ কেউ নুতন নেতৃত্বকে অস্বীকার করে এবং এর প্রতিবাদ করে। সংগঠনের কতিপয় সদস্যের ধারনা, বায়েজীদ খান পন্নীকে বিষপ্রয়োগেও হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। উল্লেখ্য, বায়েজীদ খান পন্নীর জীবিতবস্থার শেষের দিকে অর্থাৎ তিনি যখন অসুস্থ ছিলেন তখন তৎকালীন সমন্বয়ক মোহাম্মদ সেলিমের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় কতিপয় নেতার কিছু কার্যকলাপ ও নির্দেশ সংগঠনের আদর্শবিরোধী ভেবে কতিপয় সদস্য এর প্রতিবাদ করে আসছিল বলে জানা যায়।

ইমামুজ্জামানের মৃত্যুর পর নুতন নেতৃত্ব আত্ম-প্রকাশের পর হতেই দলের মধ্যে মতবিরোধ চরম আকার ধারন করে। নুতন নেতৃত্বকে যারাই প্রশ্নবিদ্ধ করে তাদের তালিকা নির্ধারনপূর্বক মোনাফেক হিসাবে চিহ্নিত করা হয় এবং তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে নির্দেশ জারী করা হয়। জানা যায়, বায়েজীদ খান পন্নীর মৃত্যুর পর গত তিন মাসে ঢাকতেই নুতন নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্যশীল সদস্য কর্তৃক প্রায় ৯৬ জন হিযবুত তাওহীদ সদস্য যারা নুতন নেতৃত্বকে মেনে নেয়নি তাদেরকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। এমনকি কাউকে কাউকে মেরে ফেলারও চেষ্টা করা হয় বলে জানা যায়। (এই ঘটনার শিকার খালেদ) এরই ধারবাহিকতায়, গত ১৫ এপ্রিল ২০১২ তারিখ, হিযবুত তাওহীদের প্রাক্তন চার সদস্য (১) খালেদ মাহমুদ মিঠু, পিতা: ফজলুল হক (২) হিযবুল্লাহ সিদ্দিক, পিতা: আবুল খায়ের সিদ্দিক,(৩) ইমরান হোসেইন, পিতা: সিরাজ মোল্লা ও (৪) ওয়াহেদুল ইসলাম শাহিন, পিতা: আমীর হোসেন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বরিশাল আগৈলঝরাতে অবস্থিত খালেদ মাহমুদের দাদা বাড়ীতে বেড়াতে যায়।

একই দিন সকালে স্থানীয় মাহিলারা বাজারে নাস্তা করতে গিয়ে তাদের সাথে স্থানীয় হিযবুত তাওহীদ সদস্য সুমন মল্লিক, সুজন মোল্লা ও আলম বালির সাথে দেখা হয়। এসময় তাদের মধ্যে নুতন নেতৃত্বকে মানা না মানা নিয়ে বিতর্কও হয় বলে জানা যায়। একপর্যায়ে, বেড়াতে আসা চার জন প্রাক্তন হিযবুত তাওহীদ সদস্য খালেদের দাদা বাড়ীতে ফিরে যায়। অতপর একই দিন দুপুরে উক্ত চার জন অটোরিক্সা করে খালেদের মামা বাড়ী বাড়ীতে যাওয়ার সময় স্থানীয় ডিএসবি বাজারে সকালে নাস্তা করার সময়ে বিতর্কে জড়ানো তিন জন হিযবুত তাওহীদ সদস্যের নেতৃত্বে দেশী অস্ত্রসহ প্রায় ৪০ জন হিযবুত তাওহীদ সদস্য কর্তৃক আক্রমনের স্বীকার হয়। একপর্যায়ে তাদেরকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে আঘাত করতে থাকে।

এসময় গ্রামবাসী তাদের আর্তনাদ শুনে এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে দুই রাউন্ড ফাকা গুলিও ছোড়া হয়। একপর্যায়ে গ্রামবাসীর ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসলে তাদের একজনকে পার্শ্ববতী খালের মধ্যে ফেলে দিয়ে আক্রমনকারীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। গ্রামবাসীরা তাদেরকে মুমূর্ষাবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসে এবং অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় গত ১৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখ খালেদ মাহমুদ মিঠুকে এপোলে হাসপাতালে এবং বাকি তিন জনকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অতপর এপোলো হাসপাতালে আসিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অদ্য ২১ এপ্রিল ২০১২ তারিখ খালিদ আহমেদ মিঠূ মৃত্যুবরন করে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।