আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

' শহীদী-ঈদ' নজরুলের অসাধারণ কবিতা

জানি না কেন লিখি! তবু লিখি মনের খেয়ালে, পরিবর্তন করার মানসে, পরিবর্তিত হওয়ার মানসে। যদিও জানি সব ব্যর্থ হচ্ছে। তবুও আমি আছি সেদিনের সেই আলোকময় প্রত্যুষার আগমনের অপেক্ষায় (১) শহীদের ঈদ এসেছে আজ শিরোপরি খুন-লোহিত তাজ, আল্লাহর রাহে চাহে সে ভিখ্: জিয়ারার চেয়ে পিয়ারা যে আল্লার রাহে তাহারে দে, চাহি না ফাঁকির মণিমানিক। (২) চাহি না ক’ গাভী দুম্বা উট, কতটুকু দান? ও দান ঝুট। চাই কোরবানী, চাই না দান।

রাখিতে ইজ্জত্ ইসলামের শির চাই তোর, তোর ছেলের, দেবে কি? কে আছ মুসলমান? (৩) ওরে ফাঁকিবাজ, ফেরেব-বাজ, আপনারে আর দিস্নে লাজ,- গরু ঘুষ দিয়ে চাস্ সওয়াব? যদিই রে তুই গরুর সাথ পার হয়ে যাস পুল্সেরাত, কি দিবি মোহাম্মদে জওয়াব। (৪) শুধাবেন যবে-ওরে কাফের, কি করেছ তুমি ইসলামের? ইসলামে দিয়ে জাহান্নম আপনি এসেছ বেহেশ্ত্ ’পর- পুণ্য-পিশাচ! স্বার্থপর! দেখাস্নে মুখ, লাগে শরম! (৫) গরুরে করিলে সেরাত পার, সন্তানে দিলে নরক-নার! মায়া-দোষে ছেলে গেল দোজখ। কোরবানী দিলি গরু-ছাগল, তাদেরই জীবন হ’ল সফল পেয়েছে তাহারা বেহেশ্ত্-লোক! (৬) শুধু আপনারে বাঁচায় যে, মুসলিম নহে, ভন্ড সে! ইসলাম বলে-বাঁচ সবাই! দাও কোরবানী জান্ ও মাল, বেহেশ্ত্ তোমার কর হালাল। স্বার্থপরের বেহেশ্ত্ নাই। (৭) ইসলামে তুমি দিয়ে কবর মুসলিম ব’লে কর ফখর! মোনাফেক তুমি সেরা বে-দীন! ইসলামে যারা করে জবেহ্, তুমি তাহাদেরি হও তাবে।

তুমি জুতো-বওয়া তারি অধীন। (৮) নামাজ-রোজার শুধু ভড়ং, ইয়া উয়া প’রে সেজেছ সং, ত্যাগ নাই তোর এক ছিদাম! কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা কর জড়, ত্যাগের বেলাতে জড়সড়! তোর নামাজের কি আছে দাম? (৯) খেয়ে খেয়ে গোশ্ত্ রুটি তো খুব হয়েছ খোদার খাসী বেকুব, নিজেদের দাও কোরবানী। বেঁচে যাবে তুমি, বাঁচিবে দ্বীন, দাস ইসলাম হবে স্বাধীন, গাহিছে কামাল এই গানই! (১০) বাঁচায়ে আপনা ছেলে-মেয়ে জান্নাত্ পানে আছ্ চেয়ে ভাবিছ সেরাত হবেই পার। কেননা, দিয়েছ সাত জনের তরে এক গরু! আর কি, ঢের! সাতটি টাকায় গোনাহ্ কাবার! (১১) জান না কি তুমি, রে বেঈমান! আল্লা সর্বশক্তিমান দেখিছেন তোর সব কিছু? জাব্বা-জোব্বা দিয়ে ধোঁকা দিবি আল্লারে, ওরে বোকা! কেয়ামতে হবে মাথা নীচু! (১২) ডুবে ইসলাম, আসে আঁধার! ব্রাহিমের মত আবার কোরবানী দাও প্রেয় বিভব! “জবীহুল্লাহ্” ছেলেরা হোক, যাক সব কিছু-সত্য রোক! মা হাজেরা হোক মায়েরা সব। (১৩) খা’বে দেখেছিলেন ইব্রাহিম- “দাও কোরবানী মহামহিম!” তোরা যে দেখিস্ দিবালোকে কি যে দুর্গতি ইসলামের! পরীক্ষা নেন খোদা তোদের হাববের সাথে বাজি রেখে! (১৪) যত দিন তোরা নিজেরা মেষ, ভীরু দুর্বল, অধীন দেশ,- আল্লার রাহে ততটা দিন দিও না ক’ পশু কোরবানী, বিফল হবে রে সবখানী! (তুই) পশু চেয়ে যে রে অধম হীন! (১৫) মনের পশুরে কর জবাই, পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই।

কশাই-এর আবার র্কোবানী!- আমাদের নয়, তাদের ঈদ, বীর-সুত যারা হ’ল শহীদ, অমর যাদের বীরবাণী। (১৬) পশু কোরবানী দিস্ তখন আজাদ-মুক্ত হবি যখন জুলম-মুক্ত হবে রে দীন। - কোরবানীর আজ এই যে খুন শিখা হয়ে যেন জালে আগুন, জালিমের যেন রাখে না চিন্!! আমিন্ রাব্বিল্ আলামিন! আমিন রাব্বিল্ আলামিন!! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।