আমি জানিনা যে আমি জানিনা, আর আমি যে জানিনা আমি জানিনা সেটাও আমি জানিনা। অর্থাৎ আমি জানি যে আমি জানি, কিন্তু আসলে আমি জানিনা (লেখার যাবতীয় কিছু একান্তই আমার ব্যাক্তিগত মতামত এবং কোন রকম পড়াশোনা ছাড়া একবসায় লেখা। লেখার মূল উদ্দেশ্য আপনাকে জানানো নয়, আরও জানার ব্যাপারে আগ্রহী করা। এটাকে কোথাও রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করলে বিপদে পড়বেন)
ফেসবুকের বুকে প্রো পিক দেয়ার জন্য সবারই কমবেশি ফটো এডিটিং করা/দেখা হয়ে গেছে। সামুতেই অনেক ফটোব্লগে কমেন্ট আছে যে এডিটিং খুব সুন্দর হইসে।
এখন ব্যাপার হচ্ছে, এই জিনিসটাকে এডিটিং বলতে বেশিরভাগ ফটোগ্রাফারেরই আপত্তি আছে। এটাকে মূলত বলে পোস্ট প্রসেসিং, যেটার মধ্যে পড়ে কালার টোন চেন্জ করা, ক্রপ করা, লাইটিং চেন্গ করা, স্যাচুরেশন বাড়ানো কমানো, ডিজিটাল ফ্রেম লাগানো (আমরা সচরাচর যেগুলো করি আরকি)। আর এর চেয়ে বেশি, যেটা এক্সট্রিম পর্যায়ের, সেটাকে বলে ফটো ম্যানিপুলেশন। এখন পোস্ট প্রসেসিং এর সীমানা কোথায় শেষ আর ফটো ম্যানিপুলেশন এর সীমানা কোথায় শুরু এটা বলা দুষ্কর (আমি আসলে জানি না)। এটুকু বলা যেতে পারে যদি ছবিতে কোন এলিমেন্ট যোগ করা হয় যেটা আগে ছবিতে ছিল না বা ছবি থেকে কোন এলিমেন্টকে মুছে ফেলা হয় তাহলে সেটাকে ফটো ম্যানিপুলেশন বলা চলে।
ফটো ম্যানিপুলেশন কথাটা শুনতে নেতিবাচক শোনালেও এই সময়ে ফটো ম্যানিপুলেশনকে আসলে ডিজিটাল আর্ট হিসাবেই বিবেচনা করা হয়। কেন, সেটা নিচের ছবিগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন।
ফ্লিকারে কয়েক ধরনের লোক আছেন, একদল ফটো জার্নালিস্ট, যারা এডিটিং (এই পোস্টে সবার বোঝার সুবিধার জন্য এডিটিং টাই ব্যাবহার করলাম) এর ধার ধারেন না (পেপারে প্রতিদিন যে ধরণের ছবি দেখেন আরকি)। অর্থাৎ ছবিতে যাকে দেখা যাচ্ছে আর সে যা করছে (এইসব ছবি সাধারণত প্রকৃতির হয় না) সেটাতেই আপানর মনোযোগ থাকবে। ছবি তোলার স্কুল পাঠশালাতে মূলত এই জিনিসগুলোই শেখানো হয়।
এর উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের এই মুহূর্তের সবচেয়ে বিখ্যাত ফটোগ্রাফারদের একজন http://www.flickr.com/photos/mrhasan/
এম আর হাসানের ছবি দেখতে পারেন। শুরুর দিকের ছবিগুলো দেখে মনে হবে খুবই সাধারণ, কিন্ত বাংলাদেশের বেশিরভাগ ফটো এক্সিবিশনে উনি বিচারক থাকেন।
আবার একদল আছে ফটো আর্টিস্ট, তারা নিজেরা ছবি তোলেন, তারপর সেটাকে নানাভাবে "এডিট"/ম্যানিপুলেট করেন। সাধারণত ল্যান্ডস্কেপ ছবিই বেশী দেখা যায়। উদাহরণ হিসেবে http://www.flickr.com/photos/arifgraphy/
এই ছবিগুলো দেখতে পারেন।
আমার খুব পছন্দ ওনার ছবিগুলো।
নতুন যারা ফটোগ্রাফার (যেমন আমি) তারা সাধারণত প্রথম দিকে দিকে কোনদিকে যাবে বুঝতে পারে না। তাদের ফ্লিকার প্রোফাইলে দেখা যায় কিছু ছবি মনভরে এডিট করা, আবার কিছু ছবিে ডকুমেন্টারি স্টাইল ফটোগ্রাফি।
এইখানে আরেকটা জিনিসটা বলে রাখি, এইমাত্র যেই শ্রেণীবিভাগ করলাম, সেটা সম্পুর্ণ আমার মনগড়া। ফটোগ্রাফির শেণীবিভাগ মূলত করা হয়, প্রোট্রেইট, ম্যাক্রো, ল্যান্ডস্কেপ, ডকুমেন্টারি, ফ্যাশন এইভাবে।
আমি এইভাবে শ্রেণীবিভাগ করলাম বোঝানোর সুবিধার জন্য ।
তো যা বলছিলাম, ফ্লিকারে শেষ গ্রুপে আছেন গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা। ওনারা আসলে চিত্রশিল্পী, শুধু ক্যানভাসের জায়গায় ফটোশপে ছবি আকেঁন।
শুধু প্রথম গ্রুপের ফটোগ্রাফাররাই পুরষ্কার যেতেন এমনটা নয়, পরের দুই শ্রেণীর জন্যও প্রতিযোগীতা হয় (যদিও অনেক কম)।
নিচের ছবিগুলো একটা ফ্লিকার গ্রুপ Magnificent Manipulated Masterpieces থেকে নেয়া।
এই গ্রুপে কিছুদিন পরপর একটা মজার প্রতিযোগীতা হয়। একটা ছবি দেওয়া হয় সোর্স ইমেজ হিসেবে তারপর গ্রুপ মেম্বারদের বলা হয় এটাকে ইচ্ছামত ম্যানিুপুলেট করতে। মনে রাখবেন এডিট নয় ম্যানিপুলেট করাটা ব্যধ্যতামূলক। একটাই শর্ত ছবিতে সোর্স ইমেজ টা থাকতে হবে।
এই বারে প্রতিযোগীতায় সোর্স ইমেজ ছিল এটা:
এইবার দেখেন সবাই মিলে এই ছবিটাকে ক্যামনে কোপায়:
এন্ট্রি ১: light from heaven
এন্ট্রি 2: Waiting
এন্ট্রি 3: É madrugada
এন্ট্রি ৪: The Night
এন্ট্রি ৫: Stairway to heaven
এন্ট্রি 6: Water world
এন্ট্রি ৭: Professor Godchaux's New Orleans School For Young Ladies
এন্ট্রি ৮: The Gatekeeper
এন্ট্রি ৯: Caitlyn and the Wolf
এন্ট্রি ১০: নাম নাই
এন্ট্রি ১১: নাম নাই
এন্ট্রি ১২: Once upon a time in Venice
এন্ট্রি ১৩: Legend of the Guardians
এন্ট্রি ১৪: La maison coquillage
এন্ট্রি ১৫: Apocalypse Now !
এন্ট্রি ১৬: Stairway to Heaven
প্রতিযোগীতা এখনো চলছে।
বাংলাদেশের ফ্লিকার গ্রুপ টিটিএল এ ও এ ধরণের একটা থ্রেড খোলা হয়, সেটার নাম পিপি বোনানজা। সেটার ছবি অন্য কোন একদিন।
(পোস্ট টা ব্লগার ফলে পরিচয়কে উৎসর্গ করা হল। শুভ জন্মদিন ফলে পরিচয়) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।