আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেন নামাজ পড়ি না?

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লা। প্রথমে আমি একটা হাদীস দিয়ে শুরু করি যাতে আপনারা বুঝেন কোন দায়িত্ববোধ থেকে আমি ব্লগটি লিখছি। একদিন মুসা (আঃ) বললেন, "হে আল্লাহ! যে ব্যাক্তি মানুষকে নেক কাজের উপদেশ দেয়, আর মন্দ কাজ হতে বিরত রাখে তার প্রতিদান কি?" আল্লাহ পাক বলেন, "আমি তার প্রতিটি কথার বিনিময়ে এক এক বত্‍সরের এবাদতের নেকী দান করি। এমন ব্যাক্তিকে আমি জাহান্নামের শাস্তি দিতে লজ্জাবোধ করি। " তাই ঈমানদার ব্যাক্তির অবশ্য কর্তব্যহচ্ছে অন্যকে সত্‍ কাজের উপদেশ দেওয়া এবং নিজেও সত্‍ কাজ করা এবং অসত্‍ কাজহতে বিরত থাকা।

প্রথমেই আমি নামাজ সমন্ধে কিছু কথা বলতে চাই। আমি প্রায়ই দেখি নামাজের সময় হয়েছে, আযান হচ্ছে অথচ ছেলেরা আড্ডা দিচ্ছে। বিশেষ করে আসর ও মাগরিবের সময় চা'র দোকানের আড্ডা দেখলে আর মসজিদে লোকের অবস্হান দেখলে মনে হয় আমাদের দেশে মুসলমানের সংখা খুবই কম। আর মহিলাদের হ্মেত্রে তারা সংসারের কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন, ভাবলেন কাজ সেরে নামাজ পড়ে নিবেন। এভাবেই নামাজের সময় পার হয়ে যায়, আর পড়া হয় না।

এভাবেই আমরা দিনের পর দিন নামাজ কাজা করে চলেছি। তাই মা, বোন এবংভায়েরা আমার আসুন একটু নামাজী হওয়ার। ইসলামের ৫টি ভিত্তি। ঈমান, নামাজ, রোজা, হাজ্জ ও যাকাত। ঈমানের পরেই নামাজের স্হান।

নামাজ হল আল্লাহপাকেরসামনে হাজির হওয়া তার ডাকে সাড়া দেওয়া। আল্লাহ পাক তার বান্দাকে রোজ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার হুকুম করেছেন। আল্লাহ পাক কোরআন শরীফ এর ৮২ জায়গায় ৮২ বার হুকুম করেন "বান্দা তোমরা নামাজ কায়েম কর" হুজুর (সাঃ) বলেন "নামাজ বেহেশতের চাবি" চাবি ছাড়া যেমন তালা খোলা যায় না তেমনি নামাজ ছাড়া বেহেশত পাব না। তাই আসুন আজ এবং এখন থেকেই চেষ্টা করি বেহেশতের চাবি সংগ্রহ করার। হুজুর (সাঃ) বলেন, "মুমিন আর কাফেরদের মধ্যে পার্থক্য হল নামাজ।

মুসলমান নামাজ পড়ে আর কাফেররা পড়ে না" হুজুর (সাঃ) আরো বলেন, "হাসরের মাঠে সর্বপ্রথম হিসাব লওয়া হইবে নামাজের। " আল্লাহ পাক কোরআন শরীফে ঘোষণা করেন"নিশ্চয় নামাজ কুপথ ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে" হুজুর (সাঃ) বলেন, "যখন কোন মুসলমান ব্যাক্তি আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির আশায় নামাজ পড়ে, তখন তাহার পাপসমূহ গাছের পাতার ন্যায় ঝরিয়া পড়ে। " আল্লাহ পাক প্রিয় নবী সাঃ কে ডেকে বলেন "হে আমার হাবিব! আমি আপনার উম্মতের উপর ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরয করেছি। যে ব্যাক্তি এই ৫ ওয়াক্ত নামাজসময়মত আদায় করবে, আমি তাকে বেহেশতে প্রবেশ করাইবার ওয়াদা করলাম। আর যে ব্যাক্তি সময়মত নামাজ আদায় করবে না, আমি তার জন্য দায়ী নই।

অর্থাত্‍, সেই ব্যাক্তি দোজখের মধ্যে কঠিন শাস্তি ভোগ করবে। " প্রিয় নবী যখন মেরাজের রাত্রে আল্লাহ পাকের সাথে দেখা করে আসতেছিলেন, তখন তিনি বললেন, "হে আল্লাহ! আমি যখন দুনিয়াতে যেয়ে আমার উম্মতকে বলব যে, আমি আল্লাহ পাকের সাথে দেখা করে আসলাম, মেরাজ করে আসলাম, তখন আমার উম্মতেরা কাঁদবে আর বলবে, আহারে আমরা আল্লাহর সাথে দেখা করতে পারলাম না। তখন আমি কি বলব?" আল্লাহ পাক বলেন,"আপনাকে এত উপরে তুলিয়া আমি আল্লাহ নিজে আপনার সংগে দেখা করেছি, আপনার উম্মত নামাজের সেজদায় পড়ে গেলে আমি আল্লাহ নিজে যাইয়া দেখা করবো। " হুজুর (সাঃ) বলেন, "মুসলমানদের জন্য মেরাজ হল নামাজ। যদি কেউ ইচ্ছা করে ১ ওয়াক্ত নামাজ কামাই দেয়, তবে তাকে ২০০০০০৮৮ বত্‍সর জলন্ত আগুনে জ্বলতে হবে।

" আরো একটি হাদীসে হুজুর (সাঃ) বলেন,"তোমরা এই দোয়া কর, হে আল্লাহ আমাদের মধ্যে কাওকে তুমি হতভাগ্য বঞ্চিত করো না। " অতপর নিজেই প্রশ্ন করলেন, "তোমরাকি জানো হতভাগ্য বঞ্চিত কে?" সাহাবীগণ জানিতে চাহিলে তিনি বলেন,"যে ব্যাক্তি নামাজ ছাড়িয়া দেয় সেই হতভাগ্য বঞ্চিত। ইসলামে তার কোন অংশ নেই। " নামাজ ঈমানদারদের জন্য মেরাজ সমতুল্য। আল্লাহ পাক নামাজের প্রথম সেজদায় মানুষকে জানিয়ে দেন যে, তোমাকেএই মাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছি।

দ্বিতীয় সেজদায় জানিয়ে দেন আবার এই মাটির সাথেমিলিয়ে দেব। আল্লাহু আকবার বলে দাড়ানোর সময় জানিয়ে দেন, কেয়ামতের দিনআবার এই মাটি থেকে জীবিত করে দাঁড় করাব। নামাজ ছাড়া কেউ আল্লাহর দরজায় পৌছাতে পারেনি। মা, ভাই ও বোনেরা আমি যতটুকু জানি ততটুকু দিয়েই আপনাদের বোঝাতে চেষ্টা করলাম। নামাজ আল্লাহর অধিকার, তা অবশ্যই আমাদের আদায় করতে হবে।

নামাজ না পড়ে আমরা জান্নাতে জায়গা করতে পারবনা। তাই আসুন আমরা নামাজী হওয়ার চেষ্টা করি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।