মেনে নিব না, আসে যদি ইসলামের উপর কোন আঘাত। মাঠে নেমেছি, হয় সফলতা নয়ত চাই শাহাদাত। https://www.facebook.com/altamash.bd
রমযানে তারাবী না পড়ালে হাফেজদের কোরআন শরীফ ইয়াদ থাকে না।
তাই আব্বুর কড়া নির্দেশ যে কোনমূল্যে রমযানে তারাবী নামায পড়াতে হবে।
দাড়ি সবেমাত্র ওঠছে, তাই যে কোন মসজিদে তারাবীর ইন্টারভিউতে এটাই প্রথম অযোগ্যতা।
হেফজ শেষ করেছিলাম নয় বছর বয়সে।
কিন্তু হাফেজ হলেই তো আর হয় না, নামায পড়ানোর বালেগ হওয়াও লাগে।
বালেগ হওয়ার পর প্রথম বছরেও তারাবী হল না আমার কোন জায়গায়।
সবাই বলে আমি নাকি পিচ্ছি।
অবশেষে তিন বছর পূর্বে প্রস্তাব পেলাম, একটা সংরক্ষিত এলাকায় দশ দিনে খতমে কোরানের তারাবী পড়ানোর।
তিন বছর ধরে সেখানে পড়াচ্ছি তারাবীর নামায।
কিন্তু সমস্যা বেঝে গেল এবার।
কারণ, ৫-ই মে এর পরে আমরা অনেকেই প্রতিজ্ঞা করেছি,
আলেমদের উপরে রাতের আধাঁরে লাইট নিভিয়ে গুলি চালানোর ঘটনা এবং ঘটনার হোতাদের যারা সমর্থন করে, আমাদের পিছনে তাদের নামায হবে না এবং তাদের জানাযায় কোন দিন অংশ নিব না।
আর দুঃখজনক হলেও সত্য, আমার পিছনে যারা নামায পড়ত তাদের বেশীর ভাগই হল কট্টর লিগার।
মায়া লাগছে বেচারাদের জন্য।
এত কষ্ট করে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই ঘন্টা দাঁড়িয়ে নামায পড়বে অথচ তাদের নামায হবে না।
তাই জীবনে এই প্রথম বারের মত ওয়াদা ভঙ্গ করব।
রমযানের চাঁদ দেখা যাওয়ার সাথে সাথেই তাদের কাছে ফোন করে জানিয়ে দিব, বিশেষ সমস্যার কারণে আমি এবার আপনাদের নামায পড়াতে পারছি না।
দেখ শালা, আলেমদের গায়ে যারা গুলি চালায়, তাদের সমর্থন করস?
নে, এবার বুঝ মজা।
হয়ত এমন দিনও তোরা দেখে যেতে পারবি, যেদিন তোদের মৃত্যুর পরে মসজিদের মাইক থেকে কেউ ইন্নালিল্লাহ বলবে না, তোদের মৃত্যু সংবাদ শুনে সবাই বলবে, আলহামদুলিল্লাহ।
--------------------------------------------------------
কলেজে-এলাকায় যাদের সাথে চলতাম তাদের বেশীরভাগই ছিল ছাত্র লীগের সক্রিয় কর্মী।
৫-ই মে এর পরে কেউ কেউ আমাকে গোপনে বলেছে, তারা লীগের প্রতি সমর্থন ছেড়ে দিয়েছে।
এখন প্রকাশ পেলে বিপদ অনিবার্য, তাই তারা সেটা গোপন রাখছে।
এক জন কেঁদেই বলেছিল, বাপ-দাদা সবাই লীগ করত, তাই আমিও লীগার। কিন্তু হেরা কেমনে হুজুরদের উপরে গুলি চালাইল!
আর বাকী যারা আছে সবার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছি।
সংখ্যাটা শয়ের উপরে।
=============================
হয়্ত এই কাজগুলো করার সময় খারাপ লাগার কথা।
কিন্তু আমার খারাপ লাগে না।
যখন মনে পড়ে, রঙ মেখে শুয়ে থাকা মালিবাগ জামিয়া শারইয়্যার শিক্ষা সমাপনী বর্ষের ছাত্র এবং একই সাথে ঢাকা কলেজের ছাত্র আনোয়ার শাহ ভাইয়ের কথা।
রানা প্লাজা ধ্বসে যাওয়ার পর যেই মাদ্রাসার ছাত্রদের থেকে সাভার এলাকার খোজ-খবর নিয়েছিলাম,
যেই মাদ্রাসার ছাত্ররা আহতদের রক্ত লাগবে শুনে রক্ত দেওয়ার জন্য ছুটে এসেছিল
সেই মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর রঙ মেখে শুয়ে থাকা দুই ছাত্রের কথা ।
যখন মনে পড়ে, আমাদের পাশের গ্রামের একজন আলেমের কথা যিনি শাপলা চত্বরে রং মেখে শুয়েছিলেন।
যখন মনে পড়ে, দুই সপ্তাহ পূর্বে ভোলা থেকে ঢাকায় আসা সেই লোকটির কথা, সেই রাতে নিখোঁজ তিন স্বজনের খোঁজ নিতে যিনি ঢাকায় এসেছেন।
সেই সব পরিবারের কথা, লীগ-পুলিশের হয়রানির ভয়ে স্বজন নিখোঁজের সংবাদও যারা দিতে ভয় পান।
মনে পড়ে জুনায়েদ বাবুনগরীর কথা, জোরপূর্বক স্বীকারোক্তির জন্য পুলিশ যাকে আইসিইউতে পাঠিয়ে দিয়েছে।
তাই সেই সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে গিয়ে আজ আমি অনুতপ্ত নই।
ইসলাম এবং আলেমদের প্রতি ভালোবাসার কাছে আমি তুচ্ছ করেছি আমার ব্যক্তিগত সকল সম্পর্ক।
আজ আমি আনন্দিত
আজ আমি গর্বিত ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।