আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

২৯ মার্চ হরতাল নয় কেন? প্রস্তুতির অভাবে হরতাল প্রত্যাহার বিএনপির

মুখে হিন্দু সম্প্রদায়ের লাঙ্গলবন্দের অষ্টমী স্নানের কথা হলেও ভেতরের খবর হলো, প্রস্তুতির অভাবে ২৯ মার্চের হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিএনপি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ২৯ মার্চের হরতাল কর্মসূচি অন্য হরতালের মতো নয়, অন্য রকমভাবে পালিত হবে প্রত্যাশা করেছিলেন বিএনপির হাইকমান্ড। এজন্য নিজ দলের পাশাপাশি সম্প্রসারিত জোটের শরিক নেতাদেরও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন জোটনেত্রী খালেদা জিয়া। কিন্তু পরে উভয় দিকের অনাগ্রহের কারণে ধর্মীয় কারণ দেখিয়ে হরতাল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন তিনি। জোট সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ মার্চ মহাসমাবেশ থেকে ২৯ মার্চের হরতালসহ এপ্রিল-মে জুড়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি সমপ্রসারিত জোটের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হলেও জোটের নাম ও ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত না হওয়ায় নাখোশ শরিক দলগুলো।

বিভিন্ন জটিলতার কারণে জোটের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা যাচ্ছে না, বিএনপির পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হলেও তা মানতে রাজি নন জোটভুক্ত নেতারা। তারা চান, আগে এর সুষ্ঠু সমাধান, এরপর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। জানা গেছে, জোটের নাম নিয়ে বিএনপি, জামায়াত, এলডিপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের আপত্তি আছে। এজন্য সম্প্রসারিত জোটের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে বিলম্ব হচ্ছে। আর এ সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে অনেকটা অনিশ্চয়তা থেকে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, সম্প্রসারিত জোটের নাম ঘোষণা করতে একটু দেরি হলেও আন্দোলনের ক্ষেত্রে এর কোনো প্রভাব ফেলবে না। নতুন জোটের নামকরণ কিংবা অন্য কোনো বিষয় নিয়ে জটিলতা নেই দাবি করে তিনি বলেন, শিগগিরই সমপ্রসারিত জোট আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ করবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেন, জোটবদ্ধ আন্দোলন সফল করতে জোটভুক্ত দলগুলো যে যার মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার বিষয়টিও শিগগিরই নিষ্পত্তি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান জানান, সমপ্রসারিত জোটের আনুষ্ঠানিক নাম ঘোষণা ছাড়া বিভিন্ন কর্মসূচি করতে গেলে এ নিয়ে সমালোচকরা প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাবে।

বলা হতে পারে, কর্মসূচিগুলো কাদের? তখন এ নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে। এজন্য যতদ্রুত সম্ভব জোটের আনুষ্ঠানিকতার কাজ সেরে ফেলা ভালো। বিএনপি সূত্রমতে, আসন্ন ঢাকা সিটি নির্বাচন, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে বিএনপি নেতাকর্মীরাও হরতালে আগ্রহী ছিলেন না। ঢাকা মহানগর বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা এখন ব্যস্ত সিটি নির্বাচন নিয়ে। হরতালের মতো কোনো কর্মসূচীর কারণে নগর নেতারা নির্বাচনের আগে নতুন কোনো ঝামেলায় যেতে চায় না।

এজন্য হরতালের প্রস্তুতির জন্য ঢাকা মহানগর বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামত নিতে গিয়ে সাড়া পাননি নেতারা। উল্টো তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলেছেন, হরতালের সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকদের মারমুখী ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কঠোর অবস্থার কারণে যেখানে কেন্দ্রীয় নেতারাই মাঠে নামতে সাহস পান না, সেখানে তারা কিভাবে মাঠে নামবেন। এছাড়া কর্মসূচি সফল করতে মাঠে নামলে বাস্তব অবস্থা কি দাঁড়াবে তাও বিবেচনায় রাখতে হবে হাইকমান্ডকে। সূত্রগুলো আরো বলছে, সিটি নির্বাচন ছাড়াও ঢাকা মহানগরের থানা ও ওয়ার্ড যেভাবে কমিটি করা হচ্ছে তাতেও সন্তুষ্ট নয় ত্যাগী নেতাকর্মীরা। এছাড়া বিবদমান মহানগরের দুই প্রভাবশালী নেতা মির্জা আব্বাস ও সাদেক হোসেন খোকার অনুসারীদেরও ঐক্যবদ্ধ করা যাচ্ছে না।

কমিটি করার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ করছেন দুই নেতার অনুসারীরা। এছাড়া দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলা কমিটি নিয়ে কোন্দলের বিষয়টি নতুন নয়। আন্দোলনের আগে এসব কোন্দল নিষ্পত্তি করার চাপও আছে। সূত্রমতে, কোন্দল ও সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে দলকে আন্দোলনের উপযোগী করে তুলতে তড়িঘড়ি করেই নির্বাহী কমিটির বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপির হাইকমান্ড। আগামী ৮ এপ্রিল এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

অবশ্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির অভাবে হরতালের কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে এ ধরনের বক্তব্য মানতে রাজি নন বিএনপির নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। দেখুন_ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।