আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৮-দলীয় জোটের আশা পূরণ হয়নি

পঁচা মানুষ হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ কর্মসূচি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের। তারা আশা করছিল, হেফাজতে ইসলাম অন্তত টানা দুই দিন হরতাল দিয়ে পুরো জমায়েত নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করবে। হেফাজতে ইসলাম টানা হরতাল বা অবস্থান কর্মসূচিতে গেলে তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি ছিল বিএনপি ও জোটের অন্য শরিকদের। কিন্তু হেফাজতে ইসলাম কর্মসূচি দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান ও বিরোধী দলের চাওয়াকে সামনে রেখে একটি মধ্যপন্থা অবলম্বন করেছে বলে ১৮ দলের নেতারা মনে করেন। তবে গত রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় দলের পূর্বঘোষিত ১০ এপ্রিলের ঢাকার সমাবেশ স্থগিত করে ৯ ও ১০ এপ্রিল টানা হরতাল আহ্বানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

যদিও গতরাতে এ কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। আজ জোটের সঙ্গে আলোচনার পর তা ঘোষণা করা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। হেফাজতে ইসলাম কাল সোমবার (৮ এপ্রিল) হরতাল আহ্বান করেছিল। ১৮-দলীয় জোটের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা প্রথম আলোকে বলেছেন, লংমার্চে বাধা দেওয়াকে কারণ দেখিয়ে হেফাজতে ইসলামকে ৭ ও ৮ এপ্রিল হরতাল দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল জোট। এই প্রস্তাব দেওয়ার আগে সম্ভাব্য হরতালে বিএনপি ও জোটের সমর্থন এবং সরাসরি অংশগ্রহণ করা নিয়ে গত শুক্রবার রাতে জোটের বৈঠকে আলোচনা হয়।

বৈঠকে হেফাজতের সম্ভাব্য টানা কর্মসূচিতে আগাম সমর্থনের সিদ্ধান্ত হয় বলে বৈঠকে উপস্থিত সূত্র জানায়। ওই বৈঠকের পর ১৮-দলীয় জোটের অবস্থানের কথা হেফাজতে ইসলামের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের জানানোও হয়। জোটের সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার দিবাগত রাতে লালবাগ মাদ্রাসায় হেফাজতে ইসলামের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের এক বৈঠকে ১৮-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে হেফাজতের লংমার্চ-পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে ১৮-দলীয় জোটের ভাবনা তুলে ধরা হয়। বৈঠকে হেফাজতের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিকে জামায়াতে ইসলামীর স্বার্থ উদ্ধারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সরকারসহ বিভিন্ন পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। বিভিন্ন মহল থেকেও এমন কথা উঠেছে। হেফাজতের শীর্ষস্থানীয় নেতারা মনে করছেন, এতে তাঁদের সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৮-দলীয় জোটের একজন নেতা বলেন, মূলত এই কারণে কর্মসূচি দেওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের সূত্রে জানা গেছে, গত রাতের ওই বৈঠকে হেফাজতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দাবি তুলেই কঠোর অবস্থানে যাওয়া যায় না।

দাবি বাস্তবায়নের জন্য সময় দেওয়াও দরকার। তা না করলে হেফাজতের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ আছে বলে প্রচার হবে। এসব বিবেচনায় নিয়েই ১৮-দলীয় জোটের আশা ও ভাবনাকে হুবহু কর্মসূচিতে স্থান দেওয়া হয়নি। তাদের মনোভাব হলো সরকার সময় নিচ্ছে। বিরোধী দল তাড়াহুড়ো করছে।

এ অবস্থায় হেফাজতে ইসলাম একটি মধ্যবর্তী অবস্থান বেছে নিয়েছে। জানতে চাইলে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী প্রথম আলোকে বলেন, ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে হেফাজতের অবস্থান। সেই অনুযায়ী তারা কর্মসূচি দিয়েছে। রাজনৈতিক কোনো বিষয় সেখানে নেই। আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, ১৮-দলীয় জোটের অবস্থান তাদের জানানো হয়েছে।

সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতারা যেটা ভালো মনে করেছেন, সেটাই করেছেন। বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, হেফাজতকে টানা কর্মসূচিতে নেওয়া যাবে, এমন ভাবনা থেকে বিএনপি প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছিল। গতকাল শনিবার তারা যেমন হেফাজতের কর্মীদের খাদ্য ও পানি সরবরাহ করেছে, তেমনি আগামীর প্রস্তুতি হিসেবে দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পানি ও প্রচুর পরিমাণ শুকনা খাবার মজুত করতে দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গতকাল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতা-কর্মীদের আসতে দেখা গেছে। গতকাল সারা দিনই কার্যালয়ের সামনে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল সকাল থেকে এই কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের হেফাজতকে সহায়তার বিষয়ে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেখা গেছে। কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা স্থানীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন, যেসব স্থানে হেফাজতের লোকজন অবস্থান করছে তাদের সব ধরনের সহায়তা করার জন্য। বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতাকে ফোনে এও বলতে শোনা গেছে, ‘তারা (হেফাজত) অবস্থান চালিয়ে গেলে আপনারাও তাদের সঙ্গে অবস্থান করবেন। ’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ১৮-দলীয় জোটের লক্ষাধিক নেতা-কর্মী হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।