আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মোহ-দ্বন্দ্বের অন্তর্জালে (ছোট গল্প).......নীলাঞ্জনা নীলা

আনন্দবতী মেয়ে আমি হাওয়ায় উড়াই চুল,চোখের ভেতর ছলাৎ ছলাৎ মনের ভেতর নীল ঘাসফুল পৃথিবীতে কতো কিছুরই তো বদল হলো , সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য কতো অভিনয় করে যাচ্ছে মানুষ । পৌলমী ভাবছে এতো কিছু নিয়ম মেনে কেন চলা ? প্রকৃতির খেলায় মানুষ কেন এতো অসহায় ? নিজের তৈরী চরিত্রে নিজেকে দিয়ে অভিনয় করানো , এ যে কতো কষ্টের , কতো যন্ত্রণার ! ভালোবাসা শুধু কেন একজনের জন্যই ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখতে হবে ? ইচ্ছে মতো ভালোবাসতে , ভালোবাসা পাবার প্রবল আকুতি এই মন জুড়ে । একবার ভালোবাসি বললেই যেনো এই শব্দটা সেই মানুষের সম্পত্তি হয়ে যায় , তারপর বিয়ে করে পাকা-পোক্ত দলিল । একবার ওই দলিল ছিঁড়ে ফেললেই সমাজ বিচিত্র দৃষ্টি নিয়ে চেয়ে থাকে আর বুঝিয়ে দেয় কতো জঘণ্য সেই মেয়েটি । তার চেয়ে এই জীবন অনেক ভালো , দলিল না হয়ে ভালোবেসে যাওয়া ।

ভাবনা কে সিদ্ধান্তে স্থির করতে পেরে বেশ আনন্দ পেলো , চোখ বন্ধ হলো শ্রান্তি নিয়ে । ভোরের গালে গাল ঠেকাতে খুব কম দিনই পেরেছে পৌলমী । মা ডাকতো কতো , তবুও কান বন্ধ করে মটকা মেরে পড়ে থাকতো । এখন আর কেউ ডাকেনা , বিরক্তিকর অ্যালার্মে ঘুম ভাঙ্গে । সব কিছু গুছিয়ে , হাল্কা সাজগোজ করে দৌঁড় বাস ধরতে ।

ঢাকা শহরের পথ এ সময় মানুষের পায়ের নীচে পিষ্ট হয় আর মানুষের মাথায় আকাশ ঢাকা পড়ে গিয়ে ঢাকা নামকরণ সার্থক রূপ নেয় । বাসে উঠলেই মাথাটা গরম হয়ে যায় , বিশেষ করে মহিলা সিটে পুরুষদের বসা দেখে । হাজার বললেও কান এমন ভাবে বন্ধ করে রাখে যেনো পৃথিবীর সমস্ত শব্দ থেকে বিচ্ছিন্ন । তাহলে কেনইবা এমন আলাদা করে মহিলা আসন রাখা ? কোনোভাবে অফিস পৌঁছে প্রথমেই রিপোর্ট করা বসকে । তারপর নিজের চেয়ারে বসে একটু জিরিয়ে নেয়া ।

ঠিক দশটার সময় আসে অশোক , অফিসের জি. এম বলে কথা । সবাই জানে গভীর ভালোবাসা চলছে অশোক আর পৌলমীর মধ্যে । এটাও ঠিক শরীরও শরীর কে চিনে ফেলেছে । তবে পৌলমীর ইচ্ছা চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর না করে এভাবে চালিয়ে যাওয়া । আর অশোক চাইছে লক্ষ্মী বৌ হয়ে জীবনে আসুক পৌলমী ।

এ নিয়ে কিছুটা মনোমালিন্য হয়েছে । কিন্তু পৌলমী জানে সংসার তার জন্য নয় । মা কে দেখেছে চাকরী করে ঘর - সংসার সব এক হাতে করতে । বাবা অনেক ভালোবাসলেও কখনো তেমনভাবে সহযোগিতা করেনি দৈনন্দিন কর্মে । না সে বিয়ে করবেনা ।

অসম্ভব ! প্রায়ই গাড়ীতে পৌঁছে দেয় অশোক । "মী চলো বিয়ে করে ফেলি । এভাবে আর ভালো লাগছে না । " জানতো পৌলমী আজও একই কথা শুনতে হবে এবং হলোও তাই । যদি এখন চুপ থাকে , আবার কিছু বলেও উত্তেজিত হবে অশোক ।

তাই কিচ্ছু না বলে ঠোঁট ছুঁয়ে দিলো ঠোঁটের উপর । এই একটু স্পর্শে সব শান্ত হয় । অনুভূতি বলছে আজ একটা ঝড় উঠবে , ভেসে যাবে পৌলমী । আবার ডুবেও যাবে রহস্যের অতলে । কারুকার্যময় প্রেম পৌলমী কে নতুন করে তোলে আর অশোকের মধ্যে সেইটুকু পায় , যা অনেকেই বিয়ে করে একসাথে থেকেও পায় না ।

ভোরের একটু আগে চলে গেলো অশোক । আবার এলিয়ে দেয়া অশোকের রেখে যাওয়া স্পর্শে । কি দরকার বিয়ে করার ? বিয়ে করার প্রথম কারণ শারীরিক চাহিদা কে সামাজিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া । যদিও এ কথা নিয়ে বেশীরভাগ মানুষই বিতর্ক করে । আর কিসের সমাজ ? সমাজ তো মানুষেরই সৃষ্টি ।

বিয়ে করে ডিভোর্সী হয়ে থাকার চেয়ে এই যে ভালোবাসা এবং সাথে শরীরের তৃপ্তি , সে তো পাচ্ছেই । শুধু কষ্ট মা হতে পারবেনা কোনোদিন । সন্তানধারণ ক্ষমতা আছে কিন্তু এ দেশ মানেনা অবিবাহিত মায়ের সন্তান কে । শুধু নিজের অস্তিত্ত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য সন্তান চাওয়া । মন-মানসিকতায় সৃষ্টিকর্তা বাংলাদেশের নারীদের মতো করে পাঠাননি ।

এই দেশে যে কেন জন্ম হলো , ওদিকে বিদেশে একাকী মায়েদের কতো সম্মান । চলে যাচ্ছিলো দিন । অফিস - বাসা , এর ফাঁকে প্রায়ই এদিক - ওদিক ঘোরা ফেরা । কোনো পিছুটান নেই । ইচ্ছে হলে রান্না করছে , নইলে নয় ।

যদিও মাঝে - মধ্যে জ্বর , মাথা ব্যথা হলে কারুর সেবা , আদর পেতে ইচ্ছে হয় । অবশ্য অমন হলে পৌলমী বেশ আনন্দ পায় । প্রতিদিন অফিস শেষে সন্ধ্যায় অশোক আসে । এতো যত্ন করে সারাদিনের নিঃসঙ্গতা , কষ্টগুলো ভয় পেয়ে গুটিয়ে নেয় । অশোকের এমন স্নেহযুক্ত ভালোবাসায় বাবার কথা মনে পড়ে ।

চিরন্তন কথা ---- মেয়েরা নিজেদের বাবার মতো স্বামী চায় , আর ছেলেরা বৌ-এর মাঝে নিজেদের মা কে খোঁজে । একেকবার লোভ হয় বৌ সাজার , পরক্ষণেই মনে হয় দীর্ঘদিনের নিয়ম কেউ এসে বদলে দেবে । পিছিয়ে পড়ে পৌলমী । কঠিনভাবে সিদ্ধান্ত নেয় আজ অশোককে এ ব্যাপারে কিছু বলবে । অফিসে কাজের ফাঁকে জানিয়ে দেয় জরুরী কথা আছে ।

পৌলমী নিশ্চিত আজ আশুলিয়ার দিকে ছুটবে গাড়ী আর এখন অশোক নতুন জীবন শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে মনে মনে । এরই মাঝে কবিতা এসে জানিয়ে গেলো অশোকের পরিবর্তন । "জানিস পৌলমী , স্যার কে দেখলাম বেশ উচ্ছ্বল ? নতুন খবর - টবর আছে নাকি রে ?" পৌলমীর বান্ধবী কবিতা । এখানে চাকরীটা পাইয়েও দিয়েছে পৌলমী । এখনও কাজের বা কোনো কিছুর জন্য বন্ধুত্ত্বে ফাঁটল ধরেনি ।

সব কিছুই তাই নিজেদের মধ্যে শেয়ার করে । পৌলমী বললো আগামীকাল সব জানাবে । অফিস শেষে ভাবনা কে বাস্তব রূপ দিতে আশুলিয়ার দিকে ছুটলো গাড়ী । এদিকে বেশ কিছু দারুণ রেষ্টুরেন্ট হয়েছে । তারই একটায় গিয়ে বসলো দুজন ।

অশোক আজ যেনো শিশুদের মতো করছে । পৌলমী জানে এমন ভালোবাসা খুব কম পুরুষের মাঝেই আছে । তা নইলে যথেষ্ট সুদর্শন , অনেকেই এমন ব্যক্তিত্ত্বসম্পন্ন পুরুষ চায় । কিন্তু অশোকের এক কথা বিয়ে করলে পৌলমীকেই , নয়তো কাউকেই না । আজকাল যেখানে মিনিটে মিনিটে সম্পর্ক বদলায় , সেখানে ওরা সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন থেকে প্রায় দশ বৎসর পরস্পরকে ভালোবেসে যাচ্ছে ।

এর মধ্যে যে জোয়ার - ভাটা আসেনি , তা নয় । কিন্তু আবার নিজেরাই সচেষ্ট হয়েছে স্বাভাবিক ছন্দে পা ফেলতে । আচমকা অশোকের ডাকে ভাবনায় ছেদ পড়লো । ------মী বলো কি বলবে ? ------অশোক প্লিজ মন খারাপ করো না । আমি বিয়ে করবো না ।

অনেক ভালোবাসি বলেই এই সম্পর্কটাকে নষ্ট করতে চাই না । না , তুমি শোনো , এখন কিচ্ছু বলো না । নিজেকে বুঝি , জানি বলেই এ কথাগুলো বললাম । তোমার ইচ্ছে হলে অন্য কাউকে বিয়ে করো । কষ্ট হবে , জীবনভর এলোমেলো ভাবে টানতে হবে নিজেকে ।

আর বিয়ে না করে আমরা কি খুব খারাপ আছি ? আর যদি বলো একসাথে থাকার কথা , তাহলে চলো থাকি । সমাজ মানে আমি , আমি নেই মানে সমাজও নেই । ------মী তুমি জানো একবার যা বলি তার বদল হয়না কোনোভাবেই । ঠিক আছে বিয়ের কথা আর বলবো না । তবে তোমায় ছেড়ে আর কাউকে সে অসম্ভব ! আর একসাথে থাকতে গেলে মিথ্যার আশ্রয় নিতে হবে , কারণ সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করা কিছুতেই যাবেনা ।

বড়ো কথা বলে তো লাভ নেই । এটাও জানি মিথ্যে তুমি সহ্য করোনা । তবু মী , যদি কোনোদিন মতের বদল হয় আমায় ভেবো । ঐ ঘটনার পর তাদের ভালোবাসার পালে শারদীয়া হাওয়া আরো গভীর তরঙ্গে ভাসিয়ে নিচ্ছিলো । বান্ধবী রীনির মেয়েটার জন্মদিন ।

একটা চমৎকার পুতুল কিনলো । কি সুন্দর গান গায় "ট্যুইঙ্ক্যাল ট্যুইঙ্ক্যাল লিটল স্টার , হাউ আই ওয়ান্ডার ওয়াটস ইউ আর । " আর মেয়েটাও দেখতে পুতুলের থেকেও সুন্দর । পৌলমী কে বেশ চেনে । গেলেই বলবে , "মম মম পু আতি , পু আতি ।

" নামটাও পৌলমীর দেয়া , রোদেলা রাজকন্যা । অফিস শেষে বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে রওয়না দিলো । দু' মাস পরে এলো পৌলমী । রীনির বর রুমন ভাইও খুব ভালো মানুষ । অনেকদিন পর রীনির জমজ ভাই পল্লবকে দেখলো ।

আসলে রীনির বিয়ে হয়ে যাবার পরে ওর বাবার বাড়ীতে তো যাওয়াই হয়ে ওঠেনা পৌলমীর । কি যে খুনসুটি চলে ওদের জমজ দুই ভাই-বোনের । মজাই পেতো ওদের বাড়ীতে গেলে । --------কেমন আছো পল্লব ? অনেকদিন পর , কি করো এখন ? আমার খবরই তো নাও না । একটু মিষ্টি হেসে বললো পল্লব , ------খবর ঠিকই নেই , রাখিও ।

ভালোবাসা যে কি তা তো আর জানলে না । --------বলো কি ভালোবাসো নাকি ? রীনি আর আমায় সব সময় বিরক্তির চোখেই তো দেখতে । তারপর বলো তোমার সেই প্রেমিকা কোথায় ? বলেছো তাকে , নাকি সেও গেছে ? --------ভালোবাসি মানে তো এই নয় যে তাকে পেতেই হবে । যদি সে আমার হয়ে থাকে , তবে সে আসবেই । আর না এলে ভাববো কখনোই সে আমার ছিলোনা ।

না ওর বিয়ে হয়নি । আসলে করছে না আমার জন্য । আর আমি তো বিয়ে করতেও চাই না । মনের বন্ধনে নিজেদের বাঁধতে চাই । একটু চমকে গেলো পৌলমী একেবারে তার কথা হুবহু কিভাবে বলে ফেললো পল্লব ? অনেক রাত হয়ে গেছে বাসা পর্যন্ত পৌঁছে দিলো পল্লব ।

বহুবার বলার পরও বসলো না , বলে গেলো কিছু কথা বলবে খুব শীঘ্রি , ফোন করে আসবে । ব্যস্ততায় চলছিল জীবন । ঘড়ির কাঁটা মেপে চলা । সামনে অডিট , অনেক কাজ করতে হচ্ছে । আর অশোক ওর উপরে অনেক ভরসা করে ।

এরই মধ্যে অচেনা নম্বরের ফোন । "হ্যালো" বলতেই পৌলমী শুনলো আজ পল্লব আসবে বাসায় সন্ধ্যা সাতটায় । শুনে ভালোই লাগলো যাক কাজ ছাড়া কথা বলা যাবে । কয়েকদিন ধরে তো অফিস আড্ডাটাও হচ্ছে না । হঠাৎ আবার ভাবনায় এলো পল্লব আসছে কেন ? কি কথা বলবে সে ? ধ্যুৎ কি আর বলবে এমনিই হয়তোবা ।

ফেরার পথে চায়নিজ খাবার কিনলো , বাসায় কিচ্ছু রান্না নেই । তাছাড়া আজ রান্না করতেও ইচ্ছে করছেনা । তড়িঘড়ি করে ফ্রেশ রুমে ঢুকলো । শাওয়ার শেষ করে কাপড় পড়তেই শব্দ পেলো কলিং বেলের । দৌঁড়ে গিয়ে দরোজা খুলে দিয়েই পল্লবকে বসতে বলে কোনোভাবে ভেঁজা চুল আঁচড়ে এসে বসলো চেয়ারে ।

"তারপর , হঠাৎ আমায় মনে পড়লো যে ? কি খবর বলো তো ?" --------ভেঁজা চুলে তোমায় খুব অন্যরকম লাগে । --------ও , তাই বুঝি ? কি রকম খুব পঁচা ? খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো পৌলমী । “নিশ্চয়ই অফিস থেকে আসছো ? চলো খুব ক্ষিধে পেয়েছে । খেয়ে নেই । যাও ফ্রেশ হয়ে নাও ।

” সব গুছিয়ে দু'জনে বসলো এসে । -------পৌলমী একটা কথা । তুমি কি বিয়ে করবে না ? -------“হঠাৎ এ প্রশ্ন কেন ?” মন একটু কাঁপছে , কিছুর আভাস দিচ্ছে । অথচ পৌলমী বুঝতে পারছে না । পল্লবের চোখ দুটো টানছে চুম্বকের মতো ।

ওর চোখ নিয়ে রীনি আর পৌলমী প্রায়ই বলতো এতো আকর্ষনীয় চোখ অথচ প্রেমিকা নেই । পৌলমীকে সে সবসময়ই নাম ধরে ডেকেছে , একই বয়সী বলেই । কখনো এই ডাক নিয়ে কিচ্ছু মনে করেনি , আজ জানি কেমন কেমন লাগছে । --------পৌলমী আমি তোমার সাথে , তোমার হয়ে থাকতে চাই । কতো বৎসর হয়ে গেলো বলবো বলবো করে বললাম আজ ।

তোমায় আমি তোমার মতো করেই ভালোবাসি । কোনো চুক্তি বা দলিল না করে থাকতে চাই একসাথে । আমার ভালোবাসা দিয়ে গেলাম । ইচ্ছে হলে রেখো , নয়তো ফেলে দিয়ো । আসি এখন ।

কতোক্ষণ পাথরের মতো বসে রইলো পৌলমী । এখন কি করবে সে ? তার মানে পল্লবের প্রেমিকা সে নিজে ? এ কেমন কথা ! নাহ্ এ কোনোভাবে ঠিক নয় । সব সময় মনের কথায় চলে পৌলমী । আজ মন যেনো বোবা হয়ে গেছে । কেমন একটা থমথমে আবছা স্বপ্নের মধ্য দিয়ে সারাটি রাত কাটিয়ে দেয়া ।

সকালে আবার গতানুগতিক জীবনে ফিরে গেলো । কাজের ব্যস্ততা অনেকটাই কমে গেছে অফিসে । এর মধ্যে এক শুক্রবার অশোক এলো । সারাটি দিন দুজনে মিলে রান্না , সেই রাত আবার সাঁতার কাটা । শনিবারও ছুটি , কিন্তু অশোককে ঢাকার বাইরে যেতে হবে ।

দরোজা লাগিয়ে রুমে ঢুকতে যাবে এমন সময় আবার বেল । কি ব্যাপার অশোক কি কিছু ফেলে গেলো ? দরোজা খুলেই "কি হলো অশোক ?" চমকে গেলো পল্লবকে দেখে । "অশোক নই , আমি পল্লব । অশোক মানে কি তোমার আর রীনির সেই বন্ধু ?" ------------"হ্যা , যাকে আমি ভালোবাসি । " ------------"খুব ভালো ।

শুনে খুশী হলাম । তারপরও বলবো আমার প্রেম তোমাকেই ঘিরে । কি ভেতরে আসতে বলবে না ?" সম্বিৎ ফিরে পেলো পৌলমী ,"ওহো স্যরি । এসো এসো । তুমি বসো , আসছি আমি ।

" রুমে গিয়ে বিছানায় বসলো পৌলমী । চোখ ভেঙ্গে জল পড়ছে । শব্দহীন কান্নায় শরীর থরথরিয়ে কাঁপতে লাগলো । কেন কাঁদছে কোনোভাবেই বুঝে উঠতে পারছেনা । হঠাৎ শক্ত হাতের স্পর্শ পেয়ে কোনো কিছু না ভেবেই আঁকড়ে ধরলো পরম নির্ভরতার সাথে ।

"কেঁদোনা । আমি আছি তো । তোমার অবচেতন আমায় ভালোবাসে । " ---------"পল্লব আমি অশোককে ভালোবাসি । আমাদের বিয়ে হয়নি শুধু ।

ও আমায় অনেক ভালোবাসে । কেন তুমি এমন করছো ? কেন পল্লব ?" ---------"আমি কি না করেছি ? তুমি অশোককেই ভালোবেসো । আর আমি আমারটুকু ঠিক নিয়ে নেবো , দেখো । আমার প্রাপ্য আমি পেয়ে যাবো । কেন চিন্তা করছো ? ভয় পেয়োনা ।

ছিনিয়ে নেবো না কিছু । একান্ত নিজস্ব কিছু কখনো কেড়ে নিতে হয়না পৌলমী । " সময় যেনো ঘড়ির কাঁটার আগে ছুটছে । তৃষিত ক্ষণ ভয় পেয়ে কোথায় পালিয়েছে , কে জানে । নাহ পৌলমী কিছুতেই মোহের অন্তর্জালে নিজেকে দেখতে চায়না ।

অশোকের ফোনটা পেয়েই বলে উঠলো , “তাড়াতাড়ি ফিরে এসো । ” ল্যুভেন - লা - ন্যুউভ , বেলজিয়াম ১০ ফেব্রুয়ারী , ২০১০ ইং । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।