আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেয়ামত-পূর্ববর্তী পৃথিবী ও ইলুমিনাতি (ILLUMINATI) এজেন্ডা ৩

মানুষ নিদ্রিত এবং মৃত্যুর পরপরই সে জেগে উঠবে। সর্বশেষ নবী হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লার পক্ষ থেকে আগত শেষ বার্তাবাহক। তারপর আর কোন নবী-রসুলের আগমন হবে না। তাই কেয়ামতকাল পর্যন্ত মানব জাতিকে কোন্ পথ অবলম্বন করে চলতে হবে, এ সম্পর্কে যেমন তিনি সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ দিয়ে গেছেন, তেমনি স্ব স্ব দুষ্কর্মের পরিণামে মানব জাতিকে যেসব বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে, সে সম্পর্কেও তিনি বিস্তারিতভাবে উম্মতের জন্য রেখে গেছেন। আমরা এখন যে দুঃসময় অতিক্রম করছি, সম্ভবত এ সময়কেই আখেরী নবী হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ) “ফেতনার জামানা” রূপে আখ্যায়িত করে এ-সময়ে যা’ যা’ কিছু ঘটবে, তার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন।

হাদীছ শরীফের সবকয়টি নির্ভরযোগ্য সংকলন গ্রন্থে এ সম্পর্কিত বর্ণনা বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে। প্রতিদিন আমরা যেসব পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছি, সে সবের সাথে বর্ণিত হাদীছগুলো একটু মিলিয়ে দেখলে আমরা নিঃসন্দেহে যুগের সকল ফেতনা থেকে আত্মরক্ষা করে চলার পথ পেতে পারি। ধর্মীয় পরিভাষা 'ফেতনা’ হচ্ছে ব্যাপক রাজনৈতিক, সামাজিক, আর্থিক, নৈতিক বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য। রসুলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন - এমন এক সময় আসবে, যখন ইসলাম ও এর ধারক-বাহকগণ প্রথম অবস্থার মুসলমানদের মতই অসহায় ও অপরিচিত হয়ে যাবে। কিন্তু সে দুর্দিনে যারা সকল প্রকার বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ইসলামের উপর দৃঢ়পদ থাকবে, তাদের জন্য অফুরন্ত সৌভাগ্যের সুসংবাদ রয়েছে।

মুসলিম শরীফের একটি হাদীছে রয়েছে - এ সময় স্বাচ্ছন্দ্যগর্বে তৃপ্ত এমন এক শ্রেণীর লোক আরাম কেদারায় হেলান দিয়ে বলতে থাকবে, “কোরানই আমাদের জন্য যথেষ্ট। কোরানে যা’ হালাল করা হয়েছে, সেসব হালাল এবং যা’ কিছু হারাম বলা হয়েছে, তা’ হারাম গণ্য করলেই চলবে (হাদীছের কোন প্রয়োজন নেই)” ; অথচ কোন কিছু হালাল বা হারাম সাব্যস্ত হওয়ার জন্য রসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর বক্তব্যের গুরুত্বও ততটুকু যতটুকু পবিত্র কোরানের বক্তব্যে রয়েছে। অন্য একটি হাদীছে রয়েছে, - সে সময় পর্যন্ত কেয়ামত হবে না, যে পর্যন্ত এমন একটি শ্রেণীর উদ্ভব না-হবে, যারা বাক-চাতুর্যের দ্বারা জীবিকা অর্জন করতে অভ্যস্ত হবে, যেমন করে গবাদি পশু সর্বক্ষণ জিহ্বা নাড়াচাড়া করে পেট পুরে থাকে। (আহামদ)। ঐ হাদীছের ব্যাখ্যায় মেশকাত শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ মেরকাত-এ বলা হয়েছে, এরা হবে ঐ সমস্ত লোক, যারা মানুষের মধ্যে প্রভার বিস্তারের লক্ষ্যে সব সময় গলাবাজি করে ফিরবে এবং এই গলাবাজিই হবে ওদের জীবিকার মাধ্যম।

জীবিকার হালাল কোন পথ ওদের থাকবে না। প্রত্যক্ষ শ্রম বা অন্য কোন বৈধ উপায়ে জীবিকা অর্জনের ফিকির না-করে যারা শুধু রাজনৈতিক নেতৃত্ব কর্তৃত্বকেই রাজকীয় জীবন যাত্রার একমাত্র মাধ্যম সাব্যস্ত করে সমাজে দাপটের সাথে বিচরণ করে থাকে, ঐ সমস্ত লোকের স্বরূপ আলোচ্য হাদীছের আলোকে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। ইবনে মাজাহ শরীফের এক হাদীছে রয়েছে - “ আমার উম্মতের মধ্যে এমন এক শ্রেণীর লোক সৃষ্টি হবে, যারা কোরান এবং দ্বীনের এলেম শিক্ষা করবে। ওরা দুনিয়াদারীর স্বার্থ উদ্ধারের লক্ষ্য নিয়ে ক্ষমতাসীন ও পুঁজিপতিদের পিছনে ঘুরঘুর করবে। মুখে বলবে, আমরা ওদের কাছে যাই পার্থিব প্রয়োজনের তাকিদে।

তবে দ্বীন বাঁচিয়ে ওদের সাথে ওঠাবসা করি। কিন্তু, তা’ কি করে হয়? ক্বাতাদ নামক কাঁটা গাছের ভিতর ঘোরাফেরা করে কেউ কাপড় বাঁচিয়ে আসতে পারবে - একথা কি চিন্তা করা যায়? একাধিক হাদীছ গ্রন্থে রয়েছে এমন একটি হাদীছ যা’ হজরত আবু আবাস গেফারী (রাঃ) বর্ণনায় এসেছে - যখন নিম্নোক্ত ছয়টি বিষয় প্রকাশ্যে দেখতে পাবে, তখন জীবিত থাকার চাইতে মৃত্যু কামনা করাই মুমিন বান্দাদের জন্য বেশী প্রিয় হয়ে উঠবে- মুসলিমদের এ রকম করুণ ও দূর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় মুক্তির দিশারি হিসেবে ঈমাম মাহদী (আঃ) আত্মপ্রকাশ করবে। তিনি হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) কন্যা হজরত ফাতেমা (রাঃ) এর বংশধরে (Blood Line) জন্মপ্রাপ্ত। উঁনার নাম হবে, “মোহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ”। তিনি সমগ্র মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ করবেন।

হজরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর আসল শিক্ষা ও পথনির্দেশসমূহ পুনর্জীবিত করবেন। চলবে ……..  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।