শরীরে আচড়ের দাগ, নষ্ট হল বুঝি আবার মানবতা! ১)
সে ছিল এক আশ্চর্য সুনীল সুপ্তি রাত!
ধাবমান শব্দধারার দল জোছনায় মগ্নস্নান ফেলে পালাচ্ছিল সর্বনাশের গহনবিবরে। কী বিশাল ডানাহীন সে পক্ষীরাজ ! প্রবল মায়ার ছলনা তার, ইন্দ্রজিতের মতন।
শব্দবালক তখনো আনমনা, ঠিক এখন যেমন।
শাদা অফসেট, বিষন্নতার ছাঁচে ডোবা কালি দিয়ে ভালবাসার আচড়
অনুচ্চারিত আনকোরা শব্দমালার আবারো নবজীবনের কান্না !
শব্দবালক আলতো হাসিতে মগ্ন। ঘাসফড়িয়ের পাখনা পোড়ানোর সুখ, শব্দকল্প সৃষ্টির বেদনায় হল ম্লান !
২)
রসালো কর্দমে শেকড় ছড়িয়ে দেয়া,
স্নেহকাতর তৃনশিশু এক, জল তৃষ্ণা
মিটে গেলে পরে পাতাদের সূর্যস্নান
জীবনের পরম সত্য।
শেকড়ে ও পাতায়
লুকানো কবিতা, ছন্দময় ধূসরতা
যত, জীবনের অবাক সব বিষ্ময়।
৩)
বিষণ্নিনার নগ্ন নরম চোখে ধানশালিখের হাসি!
৪)
ধুমশলাকার বখাটে ধোয়া, আঘাত করুক
বুকপাঁজরে, নিকোটিন অসভ্যতায়।
রক্তধারায় ছড়িয়ে পড়ুক প্রলয়
নীল পিপড়ে। শাদা স্বপ্ন করুক কালো
আটপ্রহরের বিষ!
৫)
নীল রক্তে ভেজা বিষাদী রাতপ্রহর, এখন শিকারে নেমেছে!
আমাকে লোভ দেখায় পরাবাস্তবতার; সেখানে আশৈশব মৌনতা চাষি অদ্ভুত এক ডানা ঝাপটানো বিহঙ্গের কাছে নিয়ে যাবে।
দুঃখ নামক কাঁচপোকাদের জন্য সে এক নিষিদ্ধ শহর, রৌদ্রের ওম লাগানো শান্ত সবুজ নিয়ে তার পাখনায় আঁকা সুখপাখিদের দেশের ম্যাপ।
সে এমন আহ্লাদে ডাকছে যেন মন চাইছে এখনি ছুটে যাই। যাব, চলেই যাব। ফিরে যদি নাই বা আসি আর কি আসে যায়! আমাদের যেতেই তো হবে আজ অথবা কাল।
৬)
আমাদের পাখিজীবন এমনি করেই শেষ হবে হয়ত!
মননসুখের একটি কবিতার খোঁজে, পৃথিবীর আকাশে
আমাদের বিপন্ন ভ্রমণ। দাহকালের টুকরো বেদনায়
বিলীন হবার পরিযায়ী বাসনা, উষ্ণতার সন্ধানে
হাজার মাইলের অধিক, এ ওড়াউড়ি কার্যত অর্থহীন।
জীবন শুধুই সমস্টি, এইসব যাপিত কিছু আচারের।
৭)
জলের গেলাসে গন্ধমের রস
পোকাদের গায়ে ভ্রান্তির লোবান
৮)
কুয়োর ব্যাঙেরা তাকাও এই চার দেয়ালের বাইরে।
এখানের এই পাতার বিষে পচা জল শেষ কথা নয়
অই দেখ বাইরে ধুলো ধোয়া বরষার প্রথম কোমল জল, কেমন নরোম করে দেয় শক্ত অকর্ষিত জমিন!
৯)
জানি না কাকে বলে ভালবাসা ?
আমার অলিন্দে, রক্তধারার স্পন্দনে
তোমার পালক ভরা পাখনার ছোঁয়াচ
আমায় আশাবাদী করে! জানিনা কেন
অনুভব করি অস্ফুট ভালবাসা?
তোমার স্পর্শ আমার শুষ্ক শীতের
.....................এই টুকু প্রগাঢ় উষ্ণতা!
এটাই কি তবে পরম পার্থিব পাওয়া
এটাই কি ভালবাসা?
১০)
বুড়ো অশ্বথের পাতাহীন ডালে
অনাদিকালের আবাস
.......................ক্লান্ত শকুনের!
কোঠর বহির্ভূত লাল চক্ষু নিয়ে
....................সে অপেক্ষা করে
মস্ত মৃত্যুর।
হাজার হাজার মাইলের বিষাদ সাগর পার হয়ে
.......................মরতে আসা সরালির ঝাঁক
বলে যায় কানে কানে ,
জীবন যদি হয় কম্পমান
................................সরল দোলক
মৃত্যু তার সুকঠিন সাম্যাবস্থা।
১১)
পোড়াবই যখন, রক্ত পানি করা কষ্টের দামে
পোড়াই নিজেকে;
বেদনার অমর্যাদা হয় সস্তা অগ্নিশলাকাতে!
১২)
স্ফটিক শাদা পদ্মপুকুরের জল
............... ক্রমশ ম্রিয়মান সন্ধ্যালোকে
রং পাল্টায়।
পাখি চোখ সব দেখে !
নির্বাক পৃথিবীর বিপন্নতা
নতুন করে জাগে এইসব বিচিত্র
শব্দহীন সন্ধ্যায়!
উৎসর্গ: আমার মাঝে বাস করা ছোট্ট শিশুটিকে। সে শিশুই থাক, সুখে থাক ঝামেলার জগৎটা এড়িয়ে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।