আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছাত্র-শিক্ষক সবার সনদই জাল! প্রাইভেট মেরিন ইন্সটিটিউটে জালিয়াতি।

পেশায় নাবিক নেশায় যাযাবর আমি কিছুদিন পূর্বে মেরিনে প্রাইভেট পড়া নিয়ে একটি প্রতিবেদন লিখে ছিলাম এবং বলেছিলাম প্রতারণা হতে সাবধান। আজকে দুটো পত্রিকাতে দুটো প্রতারণার নিউজ এসেছে আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। দুই মাসের ফাউন্ডেশন কোর্স করে সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর থেকে অনাপত্তিপত্র নিতে যান সাবি্বর আহমেদ। কিন্তু তার আবেদনে আঁতকে ওঠেন অধিদফতরের মহাপরিচালক। কারণ অনাপত্তিপত্র নিতে ফাউন্ডেশন কোর্স লাগে নূ্যনতম ছয় মাসের।

বিষয়টি সাবি্বর আহমেদকে জানালে সাত দিন পরই ছয় মাস প্রশিক্ষণ নেওয়ার ফাউন্ডেশন সার্টিফিকেট নিয়ে আসেন সাবি্বর। মাত্র সাত দিনে ছয় মাসের সার্টিফিকেট নিয়ে আসায় সন্দেহ বাড়ে সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মহাপরিচালক গঠন করেন তদন্ত কমিটি। আর এ তদন্তে কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসে সাপ। দেখা যায় প্রশিক্ষণ না দিয়ে বেসরকারি বেশিরভাগ একাডেমীই ব্যবসা করছে জাল সনদের।

২৫ থেকে ২৮ লাখ টাকার বিনিময়ে এসব জাল সনদ নিয়ে সমুদ্রগামী জাহাজে ক্যাডেট পদে উঠছে দেশের বেকার যুবকরা। এতে বাড়ছে নিরাপত্তা ঝুঁকি। বিদেশে ক্ষুণ্ন হচ্ছে দেশের সুনামও। তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেরিটাইম ট্রেনিংয়ের (আইআইএমটি) অনুমোদন বাতিল করেছে সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর। ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুটি শাখায় তারা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছিল।

মেরিটাইম ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) অনুমোদন বাতিলের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। শাহ মেরিন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পরবর্তী কোর্স কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবার এ প্রতিষ্ঠানের এক প্রশিক্ষক ভুয়া ক্যাপ্টেন পদবি ব্যবহার করায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার শিপিং মাস্টারকে এ প্রশিক্ষকের সিডিসি (ধারাবাহিক নিষ্কৃতি সনদ) বাতিল করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, সরকারিভাবে মেরিন একাডেমী ক্যাডেট তৈরি করলেও সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর থেকে অনুমোদন নিয়ে নয়টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ক্যাডেট তৈরি করছে। তাদের কেউ ছয় মাসের ফাউন্ডেশন কোর্স সম্পন্ন করে দেশি-বিদেশি সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরি নিচ্ছে, আবার কেউ দুই বছরের কোর্স সম্পন্ন করে যোগ দিচ্ছে মেরিন ক্যাডেট হিসেবে। শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষকের জাল সনদে বাণিজ্য করার বিষয়টি স্বীকার করে সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর জোবায়ের আহমেদ বলেন, "প্রথম শ্রেণীর কম্পিটেন্সি সার্টিফিকেট না থাকার পরও ক্যাপ্টেন পদবি ব্যবহার করে শাহ মেরিন ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন সালাউদ্দিন আহমেদ নামে এক ব্যক্তি। অবসর নেওয়ার পর কেবল নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের 'অব.' শব্দটি ব্যবহারের বৈধতা থাকলেও নিজের ক্যাপ্টেন পদবির সঙ্গে 'অব.' শব্দটিও ব্যবহার করছিলেন এ প্রশিক্ষক। আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করায় এখন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে পুলিশ।

আইএমওর নির্দেশনা অমান্য করেই একই প্রতিষ্ঠান এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্স করতে ২৯ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২৫ থেকে ২৮ লাখ টাকা নিয়ে ইংল্যান্ডে পাঠিয়েছে। তাই তাদের পরবর্তী কোর্সের কার্যক্রম স্থগিত করেছি। জাল সনদের ব্যবসা করায় অনুমোদন বাতিল করেছি আইআইএমটির। অনুমোদন বাতিলের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে এমআইএসটির। " আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থার (আইএমও) নিয়ম অনুযায়ী সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর থেকে অনুমোদন নিয়েই বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ক্যাডেট তৈরির প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট দিচ্ছে বলে জানান তিনি।

তদন্ত কমিটি সূত্র জানায়, যে সাবি্বর আহমেদকে কেন্দ্র করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, তার দুটি সনদের একটি জাল। সঠিক থাকা সনদটিও প্রশিক্ষণ না নিয়ে টাকার বিনিময়ে পেয়েছেন তিনি। এমআইএসটি ঢাকার ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে মাত্র দু'জন শিক্ষার্থীর নাম পায় তদন্ত কমিটি। আবার নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে থাকার কথা থাকলেও তাদের কাউকেই ইনস্টিটিউটে পাওয়া যায়নি। ব্যক্তিগত নম্বরে যোগাযোগ করে একজন রাঙামাটি আছেন বলে নিশ্চিত হয় তদন্ত কমিটি।

আবার শাহ মেরিন ইনস্টিটিউটে অতিরিক্ত ফি নেওয়ার পাশাপাশি প্রশিক্ষকদের বিরুদ্ধেও সনদ জালিয়াতির প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি। তিনটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তিনটিতে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে জালিয়াতি পাওয়ায় অবশিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমনকি সরকারি মেরিন একাডেমীর প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও তদারক করা হবে বলে জানান অধিদফতরের মহাপরিচালক। সুত্র দৈনিক সমকাল আরেকটি নিউজ। Bangladeshi cadet becomes engineer with fake certificate এখানে বলার কিছু নেই ।

শধু বলব সাধু সাবধান।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।