আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শেখ হাসিনার জীবনের সব চাইতে বড় ভুল।

কবঠ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ওয়াজেদ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বা মুল চালিকা শক্তি। তিনি বিপুল ভোটে দুইহাজার আট এর নির্বাচনে র্নিবাচিত হয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর গুরু দ্বায়িত্ব নিজ কাধে ২য় বারের মত তুলে নেন। বঙ্গবন্ধুর সাড়াজীবনের সংগ্রামের ফসল আওয়ামী লীগ তথা বাংলাদেশ। বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতেই গড়ে উঠে মুজিবের চিন্তা ও চেতনা।

শেরে বাংলা এ, কে ফজলুল হক ও সরোওয়ার্দির সাহ্নিদ্ধে থেকেই তার নেতা হয়ে বেড়ে উঠা। বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের মুল ভাবনাটাই ছিল শেরে বাংলার। বঙ্গবন্ধু তা মনে প্রানে গ্রহন করেছিলেন। তিনি স্বপ্ন দেখতেন ধর্মবর্ণ র্নিবিশেষে এমন একটি আবাস ভুমির যেখানে সবাই বাঙ্গালী। দু:খ, কষ্ট ও সুখের প্রকাশ ঘটবে বাংলায়।

কবিগুরু, নজরুল ও সুকান্তর দেশে থাকবে না কোন ধর্মের বিদ্বেষ। তিনি তার ভাষায় কথাটা এভাবে বলেছিলেন, প্রথমে আমি মানুষ তারপর আমি বাঙ্গালী তারপর আমি মুসলমান। ব্যাস ধর্মান্ধদের রোসনলে সেই যে পড়লেন, জীবন দিয়েও স্বপ্নের সেই দেশটা আর গড়া সম্ভব হয়ে উঠলো না। ক্ষমতা গ্রহনের সাড়েতিন বছরের মাথায় তাকে সপরিবারে হত্যা করলো প্রতিক্রীয়াশীলচক্র। কপাল গুনে বিদেশে অবস্থানের কারনে বেচে গেলেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

বহু ত্যাগ, তিতিক্ষা ও সংগ্রামের পর র্দীঘ একুশ বছর পর শেখ হাসিনার নেত্রীত্বেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসতে পেরেছিল। কিন্তু এই একুশ বছরের ব্যাবধানে পাল্টে গিয়েছিলো অনেক কিছু। স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি ইতিমধ্যেই একত্রিত হয়ে গুছিয়ে নিয়েছিল একটি আওয়ামী বিরোধী মোর্চা। যার মুল পরিকল্পনায় ছিল জামাত। বিএনপি নামের মোর্চার আড়ালে ছিল সবার অবস্থান সুসংহত।

এখানে মুসলিম লীগ থেকে শুরু করে বাংলাদেশ চেতনার বাইরের সমস্ত শক্তি একত্রিত হয়ে মুলত বাংলাদেশের বিপক্ষেই অবস্থান নিয়েছিলো বা অদ্যাবধি সেই অবস্থানই অটুট আছে। বিএনপির প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াই মুলত এই অসাধ্য কর্মটি সম্পন্ন করেছিলেন। তার ২৭মার্চের ঘোষনার আলোকে বাঙ্গালী তাকে বিশ্বাস করেছিল। তিনি সেই বিশ্বাসকেই পুজি করে একের পর এক কুর্কম নির্দিধায় করে গিয়েছিলেন, যা বুজতেই বুঝতেই বাঙ্গালী অনেকটা সময় হাড়িয়ে ফেলেছিল। বঙ্গবন্ধুর পক্ষের সেই অকুতভয় মেজর জিয়াই যে বাঙ্গালী জাতীর সবচাইতে বেশী ক্ষতি করবেন তা কি কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পেরেছিল? পচাত্তর পরবর্তি আওয়ামী লীগের অবস্থা ছিল ছেড়ে দে মা কেদে বাচি।

নেত্রিত্বশুন্য আওয়ামী লীগ তখন অস্তিত্ব রক্ষা করতেই অস্থির। জেল, জুলুম ও অত্যাচারের খরগ তলে তখন স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি গুলো নিশ্পেষিত হচ্ছিল র্নিবিচারে। রাষ্ট্র জনগনকে এমন একটি ধারনাই দিয়ে চলছিল যে, স্বাধীনতা যুদ্ধটা আদৌও আমাদের প্রয়োজন ছিল কি? দুই ভাই এর সমস্যা আলোচনা করেই তো মিটিয়ে ফেলাতে পারতন শেখ সাহেব। পাকিস্তান আমলে প্রচলিত বিজাতীয় বিদ্বেশ গুলি পুনরায় খুব কৌশলে জাতীর অন্তকরনে প্রবেশ করাতে থাকলো স্বাধীনতা বিরোধী চক্রটি। বঙ্গবন্ধুর সাড়াজীবনের পরিশ্রম মাত্র একুশ বছরের মাথায় তারা ধুয়ে মুছে প্রায় পরিস্কার করে এনেছিল।

জামাতের দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা অনুযায়ী পাড়ায় পাড়ায় কিন্ডার গার্ডেন স্কূলের রমরমা পসরা বসলো। ব্যাবসা ও ব্রেনওয়াশ চললো যা এখনো চলমান চলছে কিন্তু বাংলাদেশের বিবেক বলে পরিচিত মুক্তবুদ্ধির চিন্তাবিদরা তাদের বিভিন্ন ক্রিয়া কর্মের মধ্যে দিয়ে বাঙ্গালীর চেতনার সেই মুল শক্তিটিকে জ্বালিয় রেখেছিল বলেই আজও শাহাবাগের মতো আন্দোলনের জন্ম নেয় । এই পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙ্গালী জাতীর একমাত্র স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হল বাংলাদেশ। ষোল কোটি মানুষের এই দেশে শতকরা আটানব্বই জন বাংলায় কথা বলে। এমন ভাগ্য নিয়ে আর কোন জাতী পৃথিবীতে আছে কি না সন্দেহ।

বাকি দুইভাগ উপজাতী, তার মধ্যে চাকমা ছাড়া আর কারো কোন স্থায়ী ভাষা নেই। কালের বির্বতনের সাথে সাথে চাকমারাও বাংলা শিক্ষার প্রয়োজনিয়তা অনুধাবন করে নিয়েছে। তা সত্বেও আমাদের দ্বীজাতী তত্বের সুশীলরা তাদের ঐতিহ্যের জন্য যে রকম মায়া কান্না করেন তা দেখলে পিত্তিটা জ্বলে যায়। বাঙ্গালী জাতীসত্তায় তাদের সর্মথন নেই কারন কলকাতার দাদারা যে তাদের বাঙ্গালী বলে দাবী করেন তাই শহীদ জিয়াকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিজেদের বাংলাদেশী বানিয়ে ফেললেন রাতারাতি। এতে করে তারা দুটি জিনিস অর্জন করেছিল এক, কলকাতার হিন্দু বাঙ্গালী দাদাদের সাথে তাদের পার্থক্যটা সুস্পষ্ট করা দুই, বাংলাদেশীর মধ্যে একটি মুসলিম ও ইসলাম ইসরাম জজবা অনুভব করে আত্নপ্রসাদ।

এভাবেই বাঙ্গালী হাড়িয়ে গেল তার মুল ভুখন্ড থেকে নিজ দেশে হয়ে রইল পরবাসী। কিন্তু প্রকৃতি তার কাজ চালিয়ে যেতে থাকলো নিরবে। বঙ্গবন্ধুর অদর্শে লালিত কতিপয় বোদ্ধা বিচারপতি বিভিন্ন ছুতোয় আওয়ামী লীগের হাতে একের পর এক তুলে দিতে থাকলো বঙ্গবন্ধুর অর্দশে ফিরে যাবার পথ সমুহ। এত দীর্ঘ পথ পরিক্রমের পর আওয়ামী লীগে্ও ঢুকে পরেছিল প্রতিক্রিয়াশীল চক্র তারা শেখ হাসিনাকে বার বার ভুল পথে পরিচালনা করে, জামাতবিএনপির প্রতিদন্ডি হিসাবে আওয়ামী লীগের ধর্ম নিরপেক্ষ দর্শনটা মুছে দিতে ধর্মের হিজাব পড়িয়ে খোলাআম রাজপথে ছেড়ে দিল। তারা শেখ হাসিনাকে বোঝাতে সক্ষম হলো যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে মুসমানিত্ব বির্ষজন দিলে মস্ত বড় ভুল হবে।

ক্ষমতার মোহে অন্ধ শেখ হাসিনা ক্ষমতায টিকে থাকতে গিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করে বাঙ্গালী জাতীকে চির জীবনের জন্য হাড়িয়ে দিলেন। উন্মেষ ঘটলো মৌলবাদের, উন্মেষ ঘটলো হেফাজতের। জামাতবিএনপি সেই সুযোগে হেফাজতে ইসলামের মাধ্যমে দেশে ঘটিয়ে ফেললো একটি গনবিষ্ফোরন যা কিনা রাষ্ট্রধর্ম ও ধর্মরাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলে কোন অবস্থাতেই শাখা প্রশাখা মেলতে পারতো না। ফলাফল এত কাজ করা সত্তেও চার সিটি করপোশনে আওয়ামী সর্মথিত প্রার্থীর শোচনীয় পরাজয়। যার প্রভাব সংসদ নির্বাচনেও পড়বে, এতে কোন সন্দেহ নেই।

গুজব বিশ্বাসি বাঙ্গালী জাতী কানে হাত না দিয়েই চিলের পেছনে পেছনে তারা করতে থাকবেন। অতএব, এখনো সময় আছে সংসদ কার্যকর থাকতে থাকতে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাবার। আগামীতে আর কোন দল একক ভাবে সরকার গঠন করতে পারবে বলে মনে হয় না। তাই শেখ হাসিনার ভুল সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকেই সংশোধন করতে হবে। তা না হলে আগামী একশত বছরেও এর থেকে বাঙ্গালীর মুক্তি মিলবে না।

মানুষ যখন সৌরজগতের বাইরে যাবার সমস্ত প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করে এনেছেন আমরা ঠিক তখনি আস্তিক ও নাস্তিক নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করছি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।