একজন বেকার মানুষ ইহা সিলেটে শিবির কর্তিক আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতার একটি প্রশ্ন। প্রথম পুরুষ্কার ৩০০০ টাকা
আমার এক অনুজ ৩০০০ টাকার লোভে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করিয়া এই কুইজখানা আমার কাছে নিয়া আসে। সুধায় এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিব কি না। প্রশ্ন শুনিবামাত্রই আমার মনে হইয়া গেল চট্টগ্রামে কাফেরদের সহিত সেই যুদ্ধের কথা বলিলাম উত্তর হইল ভ্রাতা মুজাহিদুল ইসলাম ও ভ্রাতা মাসুদ বিন হাবীব বলিয়া আবার চিন্তায় পড়িয়া গেলাম। উত্তর সঠিক হইল কি না।
তাই ফোন দিলাম আমার এক সাংবাদিক বন্ধুকে। বন্ধু বলিল উত্তর সঠিক নহে আমি সুধাইলাম তাহলে কে? বন্ধু বলিল সিআইডি রিপোর্ট অনুযায়ী সর্বশেষ ভ্রাতার নাম পাওয়া যায়নি জিজ্ঞাস করিলাম তিনি কোথায় শহীদ হইয়াছেন? বন্ধু বলিল বৃশ্চিক সাহেবের বাসায় আমি বলিলাম চল বিস্তারিত জানিয়া আসি। অতঃপর বৃশ্চিক সাহেবের বাসায় উপস্থিত হইয়া তাহাকে জিজ্ঞাস করিলাম ভ্রাতার নাম কি? তিনি বলিলেন জানিনা। আবার জিজ্ঞাস করিলাম তাহার বাপের নাম কি? তিনি বলিলেন তাহার বাপকে সনাক্ত করা যায়নি। বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাস করিলাম কে তাহাকে শহীদ করিয়াছে? তিনি বলিলেন আমার বাসার কাজের ছেলে আমার বন্ধু এইবার জিজ্ঞাস করিল তাহার কোনো ছবি আছে কি না? তিনি আছে বলিয়া তাহার একখানা ছবি দেখাইলেন।
আমার দ্বীনি ভ্রাতার শান্ত সৌম্য চেহারা দেখিয়া আমার মন দুঃখে ভারাক্রান্ত হইয়া উঠিল
ভ্রাতার মুখপানে তাকাইয়া আমি মনে মনে বলিলাম তুমি দ্বীনের জন্য জান কুরবান করিয়াছ অন্যদিকে বৃশ্চিক সাহেব তখন শহীদ করিবার কারন বর্ননা করিতেছিলেন। বেশী ম্যাৎকার করিতেছিল, বেশী ল্যাদাইতেছিল ইত্যাদি। যাহাহোক মন খারাপ করিয়া আমরা চলিয়া আসিতে লাগিলাম, সহসা বৃশ্চিক সাহেবের একখানা কথা শুনিয়া থমকে দাড়াইলাম। তিনি আমাদিগকে তাহার অর্থাৎ আমার বেওয়ারিশ ভ্রাতার মাংস খাইয়া যাইবার অনুরোধ করিলেন। আমার গরম রক্ত আরো গরম হইয়া উঠিল।
ইচ্ছা হইল বৃশ্চিক সাহেবের মাংস খাইয়া ফেলিকিন্তু বৃদ্ধ দেখিয়া বৃশ্চিক সাহেবকে ছাড়িয়া দিলাম। বলিলাম আমরা এত অধম নহে যে ভ্রাতার মাংস খাইব অতঃপর বৃশ্চিক সাহেবের কাছ থেকে বিদায় না লইয়াই আমরা দুই বন্ধু রাস্তায় নামিলাম। আপন মনে সুধাইলাম উত্তর তাহলে বেওয়ারিশ ভ্রাতা। বন্ধু বলিল নাও হতে পারে, চল বংগাই মিয়াঁকে জিজ্ঞাস করি। উল্লেখ্য বংগাই মিয়াঁ একজন বিখ্যাত কসাই।
বেওয়ারিশ ভ্রাতার কথা শুনিয়া বংগাই মিয়াঁ তীব্র প্রতিবাদ জানাইলেন। বলিলেন সর্বশেষ জনকে আমি নিজ হাতে শহীদ করিয়াছি আমার বন্ধু সুধাইল তাহার নাম কি? বংগাই মিয়াঁ বলিল লাইলি!! নাম শুনিবামাত্রই আমি নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবর বলিয়া বংগাই মিয়াঁর উপর ঝাঁপাইয়া পড়িলাম ভ্রাতা শহীদ হইয়াছে সহ্য করিয়াছি কিন্তু ভগ্নীর বেলায় কোনো ছাড় নাই
আমার বন্ধু কোনোমতে বংগাই মিয়াঁকে আমার কবল থেকে রক্ষা করিল। তা না হলে বংগাই মিয়াঁর ছুরি দিয়াই বংগাই মিয়াঁর সব রগ কাটিয়া ফেলিতাম এরই মধ্যে আমার বন্ধু হিসাব করিয়া দেখিল যে দুজনে প্রায় একই সময়ে শহীদ হইয়াছে।
যাহাহোক ঘরে ফিরিয়া অনুজকে বলিলাম উত্তর হইল ভ্রাতা বেওয়ারিশ ও ভগ্নী লাইলি আমার অনুজ তাহার দন্ত বিকশিত করিয়া একখানা হাসি উপহার দিল যাহার অর্থ হইল 'জিইত্যা গেছি জিইত্যা গেছি'
আমার অনুজ আমার সামনে থেকে চলিয়া যাইবার পর বুঝিলাম এই উত্তরও সঠিক নহে বংগাই মিয়াঁর দোকান হইতে বাসায় আসিতে আসিতে আরো হাজার হাজার ভ্রাতা ভগ্নীর ভবলীলা সাংগ হইয়া গিয়াছে তাহাদের এই আত্নত্যাগ দেখিয়া আমার দু চোখ দিয়া জল নামিতে লাগিল চোখ মুছিতে মুছিতে বিধাতার উদ্দেশ্যে চিৎকার করিয়া সুধাইলাম
এ তোমার কেমন অবিচার?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।