আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বই হƒদয়ের সঙ্গী, আর প্রযুক্তি দৃষ্টি কিংবা বৈষয়িক প্রয়োজনের সঙ্গী অসীম সাহা, কবি

সাইফ শাহজাহান গ্রন্থগার গড়ে তোলার সামাজিক উদ্যোগ নেয়া জরুরি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, প্রফেসর ইমেরিটাস শুচি সৈয়দ ‘একুশের বইমেলা বইয়ের সঙ্গে পাঠকের যোগাযোগ ঘটিয়ে দেয়, এটা এখন আমাদের একটা অন্যতম উৎসবও বটে। উৎসব মূলত মৈত্রী রচনা করে মানুষে মানুষে। বিনিময় ঘটে মানবিকতারও। ’ দেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী প্রফেসর ইমেরিটাস ড. সিরাজুল ইসলাম একুশের বইমেলা প্রসঙ্গে একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এখন বইমেলা একটা বাণিজ্যে পরিণত হচ্ছে, প্রকাশনার মান নিশ্চিত করার দিকটায় গুরুত্ব দেয়া হচ্ছেনা, দেশের বড় প্রকাশকরাও বইয়ের জন্য কোনও সম্পাদক রাখেন না, মনে হয় বই বের করতে পারলেই হল।

প্রচ্ছদ, অলংকরণ ও বাঁধাইয়েÑ তথা বাহ্যিক সৌন্দর্যে অনেক অগ্রগতি হলেও ছাপার ভুল, সম্পাদনায় অবহেলা আমাদের সাংস্কৃতিক দৈন্যকে ঢেকে দিতে পারছে না। প্রকাশনা যে একটা গুরুত্বপূর্ণ পেশা সেটা গড়ে ওঠার প্রক্রিয়া দেখা যাচ্ছেনা। পুস্তক প্রকাশনা শিল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেনা, শিল্পের স্বীকৃতি পাচ্ছেনা। দেশের দুই তিনটি প্রতিষ্ঠান আছে যারা লেখকদের কিছুটা রয়্যালিটি দেয়। বেশির ভাগ প্রকাশকই রয়্যালিটি দূরে থাক বই কত ছাপা হল কত কপি বিক্রি হল, না-হল তারও কোনও হিসেব দেয়না।

অথচ মেলা এলে এরা লেখকদের একপ্রকার ধরপাকর করে বইয়ের জন্য অস্থির হয়ে ওঠে। মেলা চলে গেলে সৌজন্য সাক্ষাতের প্রয়োজনও বোধ করেনা। এর মূল কারণ প্রকাশনায় পেশাদারিত্ব গড়ে না ওঠা। ’ ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমার একটা প্রস্তাব হচ্ছে, বর্তমান ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়কে কেন্দ্র যে মার্কেটটি গড়ে উঠেছে সেই মার্কেটটিকে বইয়ের মার্কেটে রূপান্তরিত করা। এখান থেকে পশুপাখি ও ফার্নিচারের দোকানগুলো উঠিয়ে দিয়ে যদি সম্পূর্ণ বইয়ের মার্কেট করা যায় তাহলে এ মার্কেটটিকে ঘিরে শিক্ষার্থী, শিক্ষানুরাগী, লেখক-পাঠক, সংস্কৃতিমনস্ক মানুষের পদচারণা কেন্দ্র হয়ে উঠবে।

বই বিপণনে যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গত কয়েক বছর তরুণ ও নবীন প্রকাশকরা নানা উপলক্ষে কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে ছোট ছোট বইমেলার আয়োজন করছে। এই উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে বিশ্বদ্যিালয়ের এই এলাকায় দেশের প্রতিনিধিত্বশীল প্রকাশনাসংস্থাগুলোকে যদি স্থান করে দেয়া যায় তা হবে বইয়ের জন্য, সংস্কৃতির জন্য কল্যাণজনক। আমার মনে হয়, পাবলিক লাইব্রেরির ক্যাফেটেরিয়াটিকে বহুতল বিল্ডিং করে নিচে ক্যাফেটেরিয়াটিকে রেখে উপরে প্রকাশকদের স্থান করে দেয়া যায়। এতে করে সাংস্কৃতিক বলয়ের যে ধারণা সেটি যথার্থ এবং অর্থবহ হয়ে উঠবে।

’ তাঁর মতে, ‘মেলা এলে আমরা উপলব্ধি করি বই বিপণনের দৈন্য। শাহবাগের আজিজ মার্কেটটি শুরু হয়েছিল তরুণ প্রকাশক, বই বিক্রেতাদের পরিশ্রমে কিন্তু পুঁজি দৌরাÍ্যে তারা টিকতে পারছেন না, মার্কেটটি এখন তার পূর্বপরিচিতি হারিয়ে কাপড়ের মার্কেটে পরিণত হচ্ছে। আমাদের শৈশবে আমরা দেখেছি সব মফস্বলে একটি এলাকায় বইয়ের মার্কেট। যেখানে স্কুল-কলেজের বইসহ গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ তথা সৃজনশীল বই বেচাকেনা হতো। এখন সে চলটি দেখিনা।

প্রত্যেক শহরের পৌর কর্তৃপক্ষের উচিত বইয়ের মার্কেট গড়ে তুলতে সহযোগিতা করা। এক সময় পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় গ্রন্থাগার ছিলÑগ্রন্থগার গড়ে তোলার সামাজিক উদ্যোগ ছিল এখন আবার সেই উদ্যোগ নেয়া জরুরিÑ কেননা গ্রন্থাগার সামাজিক মিলনের জায়গা, গ্রন্থাগার সংঘবদ্ধ করে এবং মানুষে মানুষে মৈত্রীর সেতুবন্ধন গড়ে দেয়। গ্রন্থাগার মানুষকে আশ্রয় দেয়, শীতের দেশ ইংল্যান্ডে এক সময় মানুষ যেত যে সেখানে উষ্ণতা মিলবে। আমাদের দেশেও এক সময় প্রায় সমস্ত সাংস্কৃতিক উদ্যোগ গ্রন্থাগারগুলোকে কেন্দ্র করেই হত। গ্রন্থাগার মুক্তচিন্তা ও প্রগতিশীল কর্মকাণ্ডের সূচনাগৃহ।

আমরা যে সামাজিক বিপ্লবের প্রত্যাশা করি, সমাজ পরিবর্তন তথা সমাজ বদলের কথা ভাবি তার জন্যও পাঠাগার আন্দোলনের প্রয়োজন। ’ এবারের মেলায় তাঁর নতুন বই ‘ছত্রভঙ্গের পূর্বাপর’ বের করছে বিদ্যাপ্রকাশ। শুদ্ধস্বর থেকে উপর কাঠামোর ভেতর, জাগৃতি বের করছে রাষ্ট্র ও সংস্কৃতি এবং পার্ল থেকে আমরা আছি মধ্যখানে-র নতুন সংস্করণ বেরুচ্ছে। এ ফেব্র“য়ারিতেই চাই আমাদের গ্রন্থসরণি Ñআন্দালিব রাশীদ, ঔপন্যাসিক, প্রবন্ধিক, অনুবাদক শুচি সৈয়দ আন্দালিব রাশদী ঔপন্যাসিক, প্রবন্ধকার, অনুবাদক বললেন, বাঙালির উৎসব নিয়ে যত বড়াই করা হোক না কেন ফেব্র“য়ারির বইমেলার মতো এমন জাঁকালো এবং দীর্ঘমেয়াদি উৎসব আর একটিও নেই। পাঠক-লেখক-প্রকাশক এবং সংস্কৃতিমনস্ক বাঙালির সম্মিলনের প্লাটফর্ম আর কোথায়?’ আন্দালিব রাশদী বলেন, টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তাটিকে এ ফেব্র“য়ারিতেই ‘গ্রন্থসরণি’ নাম দেয়া হোক।

শুধু ফেব্র“য়ারিতে কেন সারা বছরই সপ্তাহে সাত দিন বিকাল পাঁচটা থেকে রাত ১০-এ রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকুক, সবগুলো বইয়ের স্টল খোলা থাকুক, পর্যায়ক্রমে সব প্রকাশকই বইয়ের পশরা নিয়ে এখানে বসবেন। চা-সিঙ্গাড়া, ফুচকা-চটপটি, মুরালি-বাতাসা সবই থাকুক প্রতিদিন মানুষের চিত্ত জাগ্রত হোক গ্রন্থসরণিতে। দাবিটা জোরদার হয়ে উঠলে গ্রন্থসরণি কলেজ স্ট্রিটকেও ছাড়িয়ে যেতে পারবে। ‘১৪টি নতুন বই ১টি পুনর্মুদ্রণ, আমি নিজেই অবাক, কেমন করে সম্ভব হল! লেখকের ভাগ্য নির্ধারণ করেন তার পাঠক, কুঞ্চিত নাসিকা-সমালোচকের ভূমিকা অতি সামান্য। বইমেলার প্রাণ একাকী কিংবা দলবেঁধে আসা পাঠক ও দর্শক।

আমার প্রকাশক জানেন আমার পাঠক আছেন, নতুবা কি আর গাঁটের পয়সা খরচ করে বই ছাপতেন! আমিও আমার পাঠকদের চিনতে শুরু করেছি। আর সে জন্য বাংলা একাডেমীর বইমেলা প্রাঙ্গণের চেয়ে উত্তম কোন জায়গার কথা মনেও করতে পারছি না। এখন বইমেলার সঙ্গে এতটাই একাÍ হয়ে গেছি যে আর প্রকাশকরা মেলাতে সুবিধাজনক স্থানে স্টল না পেলে আমারই মন খারাপ হয়ে যায়। ’ গত মেলা থেকে কেবল পাঠক নয় লেখক হিসেবেও মেলার কিছুটা অংশীদারিত্ব নিয়ে নিয়েছি। এতগুলো বই লিখতে পারায়, প্রকাশকের সহযোগিতা এবং পাঠকেরও সাড়া পাওয়ায় অন্তত এ বছর আমার শ্রদ্ধের খ্যাতিমান ও বিশিষ্ট লেখকদের ঈর্ষা করা থেকে নিজেকে নিরস্ত করার চেষ্টা করছি।

তিনি জানালেন তার ২০১২-র প্রকাশক অন্বেষা, ঐতিহ্য নালন্দা, শুদ্ধম্বর, বাংলাপ্রকাশ, জয়তী এবং বাঙলায়ন। এবারের মেলার প্রকাশনা ৬টি উপন্যাস : অমরাবতী জীবন, সেকেন্ড লেনের হেলেন (অন্বেষা), শর্মিষ্ঠা (শুদ্ধস্বর), কাকাতুয়া বোনেরা (নালন্দা) হুসনে জান্নাতের একাত্তর যাত্রা (ঐতিহ্য), পপির শহর (জয়তী); কিশোর উপন্যাস : কোব্বাদ ফ্রায়েড চিকেন এবং কিশোর গল্প ভূতশুমারি বাংলাপ্রকাশ বের করেছে। প্রবন্ধ ও অনুবাদ গ্রন্থ ছয়টি: বিদেশীর চোখে ১৯৭১ (নালন্দা), নোবেল বিজয়ী পাঁচজন (অন্বেষা), ট্রান্সট্রোমার : কবি ও কবিতা (জয়তী), আমলা শাসনের হুকুমনামা (ঐতিহ্য), অনুবাদ উপন্যাস: প্রিন্সেস (নালন্দা) এবং মুন্নি বাই ও এককুড়ি দক্ষিণ এশিয় গল্প (বাঙলায়ন)। পুনর্মুদ্রিত হয়েছে গত মেলার সাড়া জাগানো উপন্যাস প্রতিমন্ত্রী (অন্বেষা)। প্রাণের মেলা ফেব্র“য়ারি বইমেলা।

ইন্টারনেট যুগে বইয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে যারা অতিরিক্ত চিন্তিত ছুটির দিন বিকাল বেলা বইমেলাতে ঢোকার জন্য একবার এক কিলোমিটার লাইনে দাঁড়িয়ে দেখুন এখনও বইয়ের পাঠক আছেন! সবশেষে আন্দালিব রাশদী বলেন, উপন্যাসেই তার স্বস্তি। তিনি চেনা-জানা মানুষের কথা লিখেন, পাঠকের হয়ে তার গল্পটি তিনি লিখে থাকেন। শুচি সৈয়দ কবি অসীম সাহা বলেন, ‘সাধারণ বইমেলা আর অমর একুশের গ্রন্থমেলার মধ্যে মৌলিক পার্থক্যটি মূলত রাজনৈতিক। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত চেতনার সারাৎসারকে বহন করেই এই মেলা এতো জীবন্ত, এতো প্রাণময় এবং এতো তাৎপর্যবাহী হয়ে উঠেছে। এই মেলা শুধু বই বিক্রির মেলা নয়, এ মেলা হচ্ছে প্রাণের সঙ্গে প্রাণের মিলনের এক মধুরতম আবেশের মেলা।

এখানেই একুশের মেলার সঙ্গে অন্য বইমেলার এতো পার্থক্য। ’ তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে যখন থেকে এ মেলার প্রচলন শুরু হয়েছে, তারপর অনেক বছর কেটে গেছে। এখন অনিয়ন্ত্রিত আবেগের বাইরে এসে একুশের বইমেলাকে আরও সংগঠিত, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এবং দুর্বৃত্ত প্রকাশকদের হাত থেকে বাঁচানোর সময় এসেছে বলে আমি মনে করি। কবি অসীম সাহা জানান, ‘একসময় একুশে ফেব্র“য়ারিকে কেন্দ্র করে সারাদেশের আনাচে-কানাচে যে সকল স্মরণিকা প্রকাশের কথা বলেছেন, সেই সময়টা ছিল ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির চেতনার বিপ্লবের সময়। আর চেতনার বিপ্লবের সঙ্গে স্মরণিকা, পুস্তিকা, বুলেটিন কিংবা ইশতেহার প্রকাশের ব্যাপারটি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।

গণজাগরণের সঙ্গে আবেগের যে উš§াতাল অন্তরঙ্গতা বিপ্লব-সংগ্রামকে গতিবেগ দান করে, এসব প্রকাশের মধ্য দিয়ে তা আরও প্রবল হয়ে ওঠে। দেশ স্বাধীন হবার পর আবেগ ও উচ্ছ্বাসের প্রাবল্যে কিছুদিন পর্যন্ত এ ধরনের স্মরণিকা প্রকাশিত হলেও গণতান্ত্রিক শক্তির বদলে স্বৈরাচারের আবির্ভাবের ফলে মানুষের চেতনায় যে অভিঘাতের সৃষ্টি হয়, তা তাদের আবেগকে স্তিমিত করে তোলে। আর সে কারণেই এই সব প্রকাশের ইচ্ছেটাও মরে যেতে থাকে। একুশের বইমেলায় যে এতো বই বের হয়, তার পেছনে একুশের আবেগ আর কাজ করে না, কাজ করে নৈতিক অবক্ষয়ের অন্যতম প্রধান ধারক প্রকাশ নামক মুনাফাশিকারীদের লোভ। এ সব থেকে বাঁচার জন্য আরও সংগঠিত, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এবং এ ধরনের মুনাফালোভী দুর্বৃত্ত প্রকাশকদের প্রতিহত করার সময় এসেছে বলে আমি মনে করি।

’ লেখকদের রয়্যালিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ নিয়ে কথা বলে আমি আগেও অনেক প্রকাশকের বিরাগভাজন হয়েছি। এখনও বিরাগভাজন হব। কিন্তু সত্য বলা থেকে আমাকে কেউ বিরত রাখতে পারবে না। আসলে আপনি যাদের কথা বলছেন, তারা প্রকাশক নন, প্রতারক। লেখকদের ঠকানোই তাদের কাজ।

কয়েকজন ব্যতিক্রমী প্রকাশক বাদে ‘সব শেয়ালের এক রা’। এদের আমি প্রকাশক হিসেবে স্বীকারই করি না। অধিকাংশ প্রকাশক আমাকে রয়্যালিটি প্রদানের ব্যাপারে ঠকিয়েছেন, ক্রমাগত মিথ্যাচার করে গেছেন এবং একটি বই চিরজীবনে বিক্রি না হওয়ার কল্পকাহিনী শুনিয়েছেন। আসলে অশিক্ষিত, ফুটপাতের হকার কিংবা সেলসম্যান থেকে বাঁধাইকাররা যখন প্রকাশক বনে গেছেন, তখন আমার অভিজ্ঞতা আরও অনেকের মতোই তিক্ত। আর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলতে গেলে তো এ নিয়ে আর একটি মহাভারত রচনা করতে হবে, পরিসরের অভাবে আপাতত সে কাজ থেকে বিরত রইলাম।

তিনি বলেন, আসলে সবার জন্য লিখেই আমি আনন্দ পাই। তাই প্রায় সব বিষয় নিয়েই আমি লেখালেখিতে নিমগ্ন আছি। তবে ইদানীং গান লেখা ও গানে সুর দেয়ার প্রতি আমার ঝোঁক বেড়েছে। কিছুদিন এ নিয়ে আরও বেশি তৎপর থাকতে চাই। বইয়ের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রযুক্তির দিক থেকে পৃথিবী কিন্তু এখন বহু বহু দূর এগিয়ে গেছে।

কিন্তু খোঁজ নিলে দেখা যাবে, পৃথিবীজুড়ে বইয়ের কাটতিতে তেমন ভাটা পড়েনি। কারণ বই হƒদয়ের সঙ্গী, আর প্রযুক্তি দৃষ্টি কিংবা বৈষয়িক প্রয়োজনের সঙ্গী। কোন বিশেষ একটি বই আমাকে অনুপ্রাণিত করেনি। বাংলা ভাষার বইসহ নানা দেশের নানা ভাষার বই শুধু আমাকে অনুপ্রাণিতই করেনি, আমাকে উজ্জীবিত করেছে। তবে যদি সাধারণ পাঠকদের কোন বই পড়ার কথা আমাকে বলতে বলেন, তাহলে আমি ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’ বইটির কথাই সবার আগে বলব।

তিনি বলেন, আমি তরুণ লেখক এবং পাঠকদের পরামর্শ দেয়ার যোগ্যতা রাখি বলে মনে করি না। এখনকার তরুণরা আমাদের চেয়ে অনেক সচেতন ও ঋদ্ধ এবং পড়াশোনার ব্যাপ্তির কথা বললেও তারা আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে বলে মনে করি। তবে একজন অগ্রজ হিসেবে তাদের উদ্দেশে একটা কথাই বলতে পারি, প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে না পারলে প্রকৃত লেখক হওয়া যায় কি না, তা নিয়ে আমার মনে সংশয় আছে। তরুণ লেখক ও পাঠকরা সেই লক্ষ্য নিয়ে যদি লেখালেখি এবং বই পাঠ করেন, তাহলে তাদের সাধনা অন্তত বিফলে যাবে না, এ আমার স্থিরবিশ্বাস। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।